![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের ডাকে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ কনভেনশন থেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। কনভেনশনে ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানোকে দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘এ দেশের রাজনীতিবিদরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, যার কারণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আমরা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছি।’
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের রায় কার্যকর করা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিহত করা ও আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো, তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর পাঁয়তারা প্রতিহত করা ও নারীর অধিকার সমুন্নত রাখা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়া ও মুক্তচিন্তার পথ খোলা রাখাÑ এই পাঁচ দফা দাবিতে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। গত ৫ অক্টোবর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভের লেকের পাড়ে অস্থায়ী মঞ্চে আয়োজিত কনভেনশনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সারাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী রাজনৈতিক দলও সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম রেখে দিয়েছে। এর দায় নাগরিক হিসেবে আমাদেরও নিতে হবে। আমরা ভোটের যুদ্ধে জবাবদিহিতা আদায় করতে পারছি না।’
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি এ কে খন্দকার বীরউত্তম বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ রাজনীতিতে জায়গা করে নিয়েছে। এখন তালেবানি আতঙ্ক লক্ষ্য করছি।’
এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান দেশের বাইরে থাকায় তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের যে স্বপ্ন ছিল তাতে সাম্প্রদায়িকতা ও বৈষম্য ছিল না। এখন সাম্প্রদায়িকতা রুখতে দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সকল নষ্টের শেকড়। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে সবাইকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতৎপরতা দেখে আমরা শুধু বেদনাহত হচ্ছি। অন্যায় ও পশুশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গণমানুষের ঐক্য অপরিহার্য।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বলেন, একাত্তরে যারা অপরাধ করেছে আর ২০১৩ সালে এসে তাদেরকে যারা সমর্থন দিচ্ছে তারা সমান অপরাধী, তাদের সবাইকেই প্রতিহত করতে হবে।
কনভেনশনে উদ্যোক্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি গোলাম রব্বানী, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সভাপতি অজয় রায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মহাসচিব রানা দাশগুপ্ত, গার্মেন্ট শ্রমিক নেত্রী নাজমা আখতার, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম এবং গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালক ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।
দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের ধারাবাহিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় জাতীয় সম্মেলন এবং এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের কনভেনশনের মাধ্যমে নাগরিকদের এই উদ্যোগকে সাংগঠনিক রূপ দেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে জাতীয় পরিষদ। পরিষদের সভাপতি হলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আহ্বায়ক করা হয়েছে সুলতানা কামালকে। নির্বাহী কমিটির সদস্যরা হলেন সৈয়দ শামসুল হক, কামাল লোহানী, ড. আকবর আলি খান, ডা. সারওয়ার আলী, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, আবেদ খান, রামেন্দু মজুমদার, রানা দাশগুপ্ত ও এম এম আকাশ। পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে প্রতি জেলায় সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
কনভেনশনের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘দেশ এক দুঃসময় অতিক্রম করছে। পবিত্র ধর্মের নামে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা মহান মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন ও চেতনা নস্যাৎ করতে উদ্যত হয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিশ্চয়তায় দেশে সংকট ঘনীভূত হয়েছে এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি চক্র আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের তত্ত্ব আমদানি করে ধর্মের উগ্রবাদী ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠা করে জনগণকে প্রভাবিত করতে চাইছে। এই ধর্মান্ধ শক্তি বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্জনের অংশীদার নারী সমাজের শিক্ষা ও কর্মজীবনকে কলঙ্কিত করে তাদের অবরোধবাসিনী করতে উদ্যত হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে কখনো ধর্মানুভূতিকে আহত করার মতো কোনো বক্তব্য প্রচার না হওয়া সত্ত্বেও তারা নাস্তিকতার অপবাদ দিয়ে কয়েকজন কর্মীকে হত্যা করেছে।’
ঘোষণাপত্রে বিরোধীদলের সমালোচনা করে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ও তার প্রয়োগে কোনো সংশোধনী সুপারিশ না করে বিরোধীদল এবং কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। তাদের লক্ষ্য এ বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করা।’ ঘোষণাপত্রে প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলা হয়, ‘দেশের মানুষ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে রাজনৈতিক শক্তির পাশাপাশি অগ্রসর হলে রাজনৈতিক দোদুল্যমানতা দূর করা যাবে এবং দেশ ঘুরে দাঁড়াবে। একাত্তরের মতো বাংলাদেশ আবার এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬
রাখালছেলে বলেছেন: আরও লিখুন । রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই । শহীদ জিয়া একটা দেশের জন্য যে ক্ষতি করে দিয়ে গেছে তার কোন মোচন নাই । তার উত্তরাধীকারগন একই পথের পথিক । সবই রাজনীতির খেলা যার কোন শেষ নাই ।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮
মোঃ সাবিকুল ইসলাম (হৃদয়) বলেছেন: nice