![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হোটেল ওয়েষ্টিনে এক সংবাদ সমে§লনে মহাজোট সরকারের সমালোচনা ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের একটি রূপরেখা প্রদান করেন। রূপরেখায় উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত¦াবধায়ক সরকারের ২০ জন উপদেষ্টার মধ্য থেকে ১০ জন উপদেষ্টাকে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী ০৫ জনের নাম প্রস্তাব করবে ক্ষমতাসীন দল ও অবশিষ্ট ০৫ জনের প্রস্তাব করবে বিরোধী দল । এছাড়া সরকার ও বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ০১ জন স¤মানিত নাগরিককে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথাও তিনি বলেন। সংসদ যেভাবে রাষ্ট্রপতি, ¯িপকার ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদের নির্বাচিত করে, একইভাবে বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে যাবার আগে প্রয়োজনে ঐ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও সেভাবে নির্বাচিত করার প্রস্তাব করেন বিরোধীদলীয় নেতা। অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা ছাড়াও বেগম জিয়া তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও সৎ লোকদের দিয়ে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার উšèয়ন ও জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস দমনে প্রতিবেশী দেশ গুলোকে নিয়ে একযোগে কাজ করা হবে। এছাড়া তাঁর বক্তব্যে একটি তিনি বলেন, যারা তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরূদ্ধে অতীতে নানা অন্যায়-অবিচার করেছেন, ব্যক্তিগত আক্রমন করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন, তিনি তাদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করেন। ভবিষ্যতে সরকারে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিশোধ নেবেন না ।
খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও রাজনেতিক সংগঠনগুলো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। প্রবীণ আইনজীবী ব্যারি¯টার রফিক-উল-হক বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রস্তাব সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হলেও এটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সরকারী দল প্রস্তাবটি কীভাবে নেবে, তার উপর নির্ভর করবে সমঝোতার উদ্যোগ । ড. আকবর আলী খান এর মতে, সমঝোতার পথ রূদ্ধ হয়েছে বলেই মনে হয় । কারণ এজন্য সংবিধানে ৩টি সংশোধনী আনার প্রয়োজন হবে । তবে সমঝোতায় পৌঁছাতে হলে দু’পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। যদি এক পক্ষ মনে করে অন্য পক্ষ স¤পূর্ণ আত্মসমর্পন করবে তা ভুল । কারণ বাংলাদেশে এখন সেই পরিস্থিতি নেই । দুই দলের দুটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসলে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান আসতে পারে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব সংবিধান পরিপন্থী । বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়েই সরকার গঠন করতে হবে । অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে সরকার গঠন করা যাবে না। তবে সংবিধান মানুষের কল্যাণে তেরী করা হয় । রাজনেতিক দলগুলো চাইলে প্রয়োজনে তা সংশোধন করতে পারে। খালেদা জিয়ার এই প্রস্তাবনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এফবিসিসিইই ও ডিসিসিইই এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে, দু’টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং এ জন্য তারা উদ্যোগ নেবেন ।
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও যুগ্ম-সাধারণ স¤পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব ¯¦বিরোধী। কারণ তিনি ১৯৯৬ সালে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের উপর অনাস্থা জানিয়েছিলেন। বিএনপি আগের অবস্থানে অনঢ় । তবে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা হতে পারে। সিপিবি’র মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন যে, দুই প্রস্তাবের মধ্যে মৌলিক মতবিরোধ আছে । দ্রুতই সমঝোতা হওয়া উচিত, যাতে নির্বাচন করা যায় ।
তবে খালেদা জিয়ার প্রস্তাবিত প্রস্তাবে ১৯৯৬ এবং ২০০১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাগণের মধ্যে ০৪ জন ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন, কয়েকজন অসুস্থ, ০২ জন দুই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই উপদেষ্টা ছিলেন এবং ০২ জন ইতোমধ্যেই নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। যারা বর্তমানে আছেন তাদের শারীরিক অবস্থাও ভালো না।
১৯৯৬ সালের তত্ত¦াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে : (১) বিচারপতি হাবিবুর রহমান (প্রধান উপদেষ্টা, বর্তমানে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিšè শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বলে জানা যায়)। (২) ব্যারি¯টার সৈয়দ ইসতিয়াক ইহমেদ (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এবং ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন)। (৩) প্রফেসর ড. মুহা¤মদ ইউনুস (গ্রামীন ব্যাংক ইস্যুতে বর্তমানে বিতর্কিত)। (৪) অধ্যাপক মোঃ শামসুল হক (ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন)। (৫) সাবেক গভর্ণর সেগুফতা বখত চৌধুরী (বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরে কাজ করছেন)।(৬) মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রহমান খান। (৭) সাবেক সচিব, এজেডএম নাসির উদ্দিন। (৮) অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ (বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন)। (৯) সৈয়দ মঞ্জুরে এলাহী (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন) । (১০) অধ্যাপক ড. নাজমা চৌধুরী (বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ)। (১১) অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (বেসরকারী এশিয়া প্যাসিফিক বিশ¡বিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন) ।
২০০১ সালের তত্ত¦াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে (১) বিচারপতি লতিফুর রহমান (প্রধান উপদেষ্টা, ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বিতর্কিত)। ব্যারি¯টার সৈয়দ ইসতিয়াক ইহমেদ (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এবং ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন) । বিচারপতি বিমলেন্দু বিকাশ রায় চৌধুরী (ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন)। (৪)সাবেক ইইজিপি, এএসএম শাহজাহান (বর্তমানে বিভিšè সামাজিক কর্মকান্ড ও পুলিশের সংস্কার বিষয়ে তৎপর রয়েছেন)। (৫)সৈয়দ মঞ্জুরে এলাহী (উভয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন)।(৬) সাবেক সচিব, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী (বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের সাথে জড়িত বলে জানা যায়)। (৭) ইঞ্জিনিয়ার একেএম ইমানুল ইসলাম চৌধুরী (বিদ্যুৎ সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা যায় (৮)সাবেক অডিটর জেনারেল, এম হাফিজ উদ্দিন খান (টিইইবি এর সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। নতুন করে দায়িত্ব নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন)। (৯) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল মালেক (হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের তত্ত¦াবধান করছেন)।(১০) মেজর জেনারেল (অবঃ) মইনুল ইসলাম চৌধুরী (ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন)। (১১) রোকেয়া ইফজাল রহমান (এফবিসিসিইই এর দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন) ।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, বেগম জিয়ার প্রস্তাব সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক । কারণ, সংসদ সদস্য হতে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টার হওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে । সংবিধানের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ অনুচ্ছেদ একসাথে ব্যাখ্যা করলে দেখা যায় যে, বর্তমান মন্ত্রীসভা যদি পদত্যাগ না করে তাহলে তাঁদের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি কোন কারণে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন বা সংসদের আস্থা হারান তাহলেও নির্দলীয় কোন ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই । প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কোন আস্থাভাজন সদস্যকে অর্থাৎ সংসদ সদস্য ছাড়া প্রধানমন্ত্রী/প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কোন সুযোগ নেই ।
এছাড়া ত্রয়োদশ সংশোধনীর বাতিল মামলা রায়ে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বাধ্যবাধকতা । ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের সংক্ষিপ্ত রায়ে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ আগামী দু’টি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার অভিমত দিয়েছিল । কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধুমাত্র জনগনের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যগণ দ্বারা গঠিত হতে পারে । কারণ জনগণের সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমাতয়ন, গণতন্ত্র, প্রজাতান্ত্রিকতা, বিচার বিভাগের ¯¦াধীনতা এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বিষয়ে এই রায়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে । বেগম জিয়া রাষ্ট্রপতি, ¯পীকার ও মহিলা আসনের সংসদ সদস্যরা যেভাবে নির্বাচিত হন সেভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও ¯পীকারের নির্বাচন জাতীয় সংসদ করে থাকে । অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন হয় সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত আনুপাতিক হারে । তাই সংবিধান সংশোধন ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় উপদেষ্টা নিয়োগ সম্ভব নয় ।
পরিশেষে এটুকু বলা যায় যে, বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আলোকে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা প্রদান করলেও, তিনি মূলতঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরকার প্রধান রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান না । তাই জেনে শুনেই দর কষাকষির জন্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক প্রস্তাবনা দিয়েছেন। যা একেবারেই সংবিধান পরিপন্থী। এ সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো, সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে জনগণের দেয়া রায়কে মেনে নেওয়া।
২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৪০
কাজের কথা বলেছেন: উনার কাছ থেকে এইরকম এটা সিদ্ধান্তে ১৬কোটি বোকা** বাঙ্গালী বড়ই হতাশ।
আচ্ছা, উনি সে সময় "পাওয়া" মাইরা আসেন নাই?
৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
এন ইউ এমিল বলেছেন: হোম ওয়ার্ক করে ক্লাশের ভাল ছাত্র/ছাত্রীরা
৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২৮
কে বা কারা বলেছেন: আবদুল মালেক, আবদুর রহমান আর সেগুফতারে মৃত দেখাইলেন না? এ তো সেই পরশু থেকে আপনাদের মিডিয়াগুলো যা বলছে, তাই কপি-পেস্ট মারলেন।
আসেন এইবার আমি একটা কপি-পেস্ট মারি...
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে সাংবিধানিক ভুল
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৩
স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচনকালে সংসদ ভেঙে দেয়া হবে কি হবে না সে সিদ্ধান্ত গতকালও হলো না। বরং প্রধানমন্ত্রী গতকাল তাঁর আগের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা থেকে সরে দাঁড়ালেন। তিনি আগে বলেছিলেন ২৫শে অক্টোবরই হবে সংসদের শেষ বৈঠক। গতকাল কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আগামী ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত সংসদ চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। এর পরেও চলবে কিনা তা ঠিক করবেন স্পিকার।
এর আগে জাতির উদ্দেশে দেয়া তাঁর আনুষ্ঠানিক লিখিত ভাষণে একটি অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যার ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের ১ দফা অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রধানমন্ত্রীর দেয়া লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন।’’ এটি সত্য নয়। সংবিধানে একথা লেখা নেই। সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে কেবলই সংসদ ডাকতে ও তা ভঙ্গ করতে পরামর্শ দিতে বলেছে। নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে আগ বাড়িয়ে কোনও কাজ করতে বলেনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন।
সংবিধানের ৭২ (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘‘সরকারি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহ্বান, স্থগিত ও ভঙ্গ করিবেন... এবং রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শে দায়িত্ব পালন করবেন।’’ অথচ এমনভাবে বাক্যটি তৈরি করা হয়েছে যাতে মনে হতে পারে সংবিধানেই স্পষ্ট করে লেখা আছে যে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আসলে সংবিধানের অন্যত্র বরং একথাও লেখা আছে যে, প্রধানমন্ত্রী লিখিত পরামর্শ দিলেই রাষ্ট্রপতি সে অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেবেন না। রাষ্ট্রপতিকেও সংবিধান বলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পরামর্শ পেলে তাঁকে কি করতে হবে। সংবিধানের ৫৭ (২) অনুচ্ছেদ বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ রকম পরামর্শ লাভের পর রাষ্ট্রপতি নিশ্চিত হবেন যে, অন্য আর কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠের আস্থাভাজন নন, তাহলে তিনি সংসদ ভেঙে দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী ২৫শে অক্টোবর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ সংবিধান বলেছে, সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে ৫ বছর পরে সংসদ আপনা-আপনি ভেঙে যাবে। প্রথম বৈঠক বসেছিল ২৫শে জানুয়ারি ২০০৯। ৫ বছর পূর্ণ হবে ২৪শে জানুয়ারি ২০১৪। অথচ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৫শে অক্টোবর থেকে ৯০ দিনের হিসাব শুরু হবে।’ অথচ ২৭শে অক্টোবর থেকে গণনা শুরু করলে ৯০ দিন পূর্ণ হবে ২৪শে জানুয়ারিতে। ২৫শে অক্টোবর থেকে শুরু করলে দু’দিন কম হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের বরাতে অত্যন্ত আস্থার সঙ্গে দাবি করেছেন যে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার এখতিয়ার কেবলই তাঁর। তাই তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘নব্বই দিনের মধ্যে যাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য আমি সব দলের সঙ্গে, বিশেষ করে মহাজোটের সঙ্গে পরামর্শ করে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে যথাসময়ে লিখিত পরামর্শ দেবো। এক্ষেত্রে আমি বিরোধী দলের কাছেও পরামর্শ আশা করি।’’ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাংবিধানিকভাবেই সাড়া দিতে পারেন না। কারণ ১২৩ অনুচ্ছেদের আওতায় ২৭শে অক্টোবরের পর থেকে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করার দায়িত্ব কেবল ইসি’র ওপরই বর্তাবে।
সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ থেকে ১২৬ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব-কর্তব্য বর্ণনা করা হয়েছে। ১২৬ অনুচ্ছেদ কার্যত সাফ বলেছে, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে প্রধান নির্বাচন কমিশনের অনুরোধেই বরং প্রধানমন্ত্রী সাড়া দেবেন। এখন নির্বাচন কমিশনরাররা সরকারের দিকে তাকিয়ে একেক সময় একেক কথা বলছেন। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ গতকাল বলেন, আচরণবিধি তৈরির কাজ চলছে। অথচ সংবিধান অনুযায়ী তারা ২৭শে অক্টোবর থেকে ৭ই নভেম্বরের আগেই ভোট গ্রহণ করতে সক্ষম ছিলেন।
Click This Link
৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৪২
হাতীর ডিম বলেছেন: এইট পাসের কাছে এরচেয়ে বেশি কি আশা করেন
৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮
rafiq buet বলেছেন: অশিক্ষিত একটা মহিলার কাছে এর চেয়ে বেশি আর কি আশা করা যায় ? শীর্ষ নেতাদের সাথে পরামর্শ করে কোন প্রস্তাব তৈরি করলে এতটা লজ্জিত তাকে হতে হত না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৭
প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: বিষয়টি নিয়ে আগে দলের শীর্ষস্হানীয় নেতাদের সাথে পরামর্শ করা উচিত ছিল বেগম জিয়ার।