![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর যাগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভারত যথেস্ট উদ্বিগ্ন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
শনিবার আনন্দবাজার পত্রিকা ‘খালেদা-পুত্রের সহযোগী আইএসআই, উদ্বিগ্ন দিল্লী ‘ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে শুরু হয়েছে সংঘাত। শুক্রবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে জনসভা করে রোববার থেকে টানা তিন দিন হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধী দল বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া। দেশের বিভিন্ন শহরে সরকার ও বিরোধী দলের কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। এ দিনই মারা গিয়েছে কমপক্ষে সাত জন, আহত শতাধিক। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের পাঠানো বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়ে দিল্লীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের কার্যকলাপ।
ঢাকার পাঠানো তথ্য অনুযায়ি, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই পুরোদস্তুর সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছে লন্ডনের অ্যাডমন্টনে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা তারেক ও তার দলবলকে। একই সঙ্গে উপমহাদেশে সক্রিয় মৌলবাদী ও জঙ্গি নেতাদের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিএনপির এই নেতা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গোয়েন্দা সমন্বয়ের মাধ্যমে দিল্লীর হাতে আসা এই সব তথ্যের ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট তৈরি করে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে। লন্ডন থেকে ঢাকা, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করা তারেকের যাবতীয় ফোন কলের রেকর্ডও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা দিল্লীকে দিয়েছেন। সেই ‘কল লিস্ট’ ও এখন খতিয়ে দেখছেন দিল্লীর কূটনৈতিক কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকরা বলছেন, বাংলাদেশ সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেখানে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, বাংলাদেশের মানুষই তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্ধারণ করবেন। কোনও বিশেষ দলের প্রতি নয়াদিল্লীর পক্ষপাতের প্রশ্ন নেই। বিরোধী নেত্রী হিসেবে দিল্লী সফরে আসা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং তৎকালীন কেন্দ্রীয় শীর্ষ মন্ত্রী প্রণব মুখার্জী। শাসক দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব তাতে নাখোশ হলেও দিল্লী তা আমল দেয়নি।
কিন্তু ভারতের উদ্বেগের কারণটা অন্য। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের পাঠানো তথ্যে স্পষ্ট, বাংলাদেশে ক্ষমতায় ফিরতে আইএসআই ও মৌলবাদী শক্তির সাহায্য নিচ্ছেন বিএনপির উদীয়মান নেতা তারেক রহমান। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আগের বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশ কার্যত মৌলবাদীদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত শুধু বাংলাদেশের প্রশাসনকেই চ্যালেঞ্জ জানায়নি, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলেছিল। ভারত-বিরোধী নানা জঙ্গি গোষ্ঠীকেও বাংলাদেশের মাটিতে ঘাঁটি গাড়তে দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া দিল্লীতে এসে অঙ্গীকার করে গিয়েছিলেন, ফের ক্ষমতায় এলে অতীতের সেসব ভুল তার দল আর করবে না। কিন্তু তারেকের কার্যকলাপ মোটেই খালেদা জিয়ার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
যদিও এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ধারাবাহিক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বলেন, ‘তারেকের জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই এই সরকার তার বিরুদ্ধে কুৎসায় নেমেছে। তিনি মেরুদণ্ডের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে রয়েছেন, পড়াশোনাও করছেন। আইএসআই বা জঙ্গি শক্তির সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই।’
কিন্তু বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের থেকে তারেকের আইএসআইয়ের সঙ্গে সংস্রব ও মৌলবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য পাওয়ার পর আশু ও দীর্ঘমেয়াদি দুধরনের বিপদই দেখছে দিল্লী।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে সংঘাত যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বিএনপির সহযোগিতায় মৌলবাদীরা এই সুযোগে সক্রিয় হলে সেই অশান্তি যত বাড়বে, সংখ্যালঘুদের জীবন-জীবিকাও বিপন্ন হয়ে পড়বে। অশান্ত আবহাওয়ার সুযোগে ফের সেনা-অভ্যুত্থানের মতো অবাঞ্ছিত ঘটনার আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছে তারা।
ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, কংগ্রেসের মতোই নেতৃত্ব পরিবর্তনের একটি প্রক্রিয়া চলছে বিএনপিতে। কংগ্রেসে যেমন সোনিয়া গান্ধীর পরের প্রজন্মের নেতা হিসেবে রাহুলকে তুলে আনা হচ্ছে, ৬৮ বছরের খালেদা জিয়াও তেমনই বিএনপির দায়িত্ব ধীরে ধীরে তুলে দিচ্ছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ৪৬ বছরের তারেকের হাতে। বস্তুত ২০০১ সাল থেকেই রাজনৈতিকভাবে অতিসক্রিয় তারেক রহমান। সেই সময়ে ঢাকায় খালেদার বাড়ি হাওয়া ভবনে বসে নির্বাচন পরিচালনায় বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তী কালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি ছিলেন ক্ষমতার দ্বিতীয় কেন্দ্র। পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান তারেক। কিন্তু বিএনপির শীর্ষ নেতারা মাঝেমধ্যেই লন্ডন গিয়ে তার নির্দেশ নিয়ে আসেন।
২০০৯ সালে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাত দিন ধরে নানা অনুষ্ঠানে তারেকের জন্মদিন পালন করে। খালেদা জিয়া নিজেও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের এমন এক ভাবী নেতার সঙ্গে আইএসআইয়ের যোগাযোগ নিশ্চিত ভাবেই ভারতের পক্ষে সুসংবাদ নয়। কারণ ভবিষ্যতে বিএনপির নীতি-নির্ধারণেও এই পাক ও মৌলবাদী ঘেঁষা স্বর শোনা যেতে পারে। বাংলাদেশ ফের জঙ্গিদের ঘাঁটি হয়ে উঠুক এটা কখনোই দিল্লীর কাম্য নয় বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে বলা হয়, পুরো বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে ঢাকার সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে না। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্পর্শকাতরতার বিষয়গুলি বিবেচনায় রেখেই দিল্লী যা পদক্ষেপ করার করবে।
বাংলামেইল২৪ডটকম/এসএম
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯
সাদা পাখি বলেছেন: তারেক রহমান ২১ এ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জঙগীদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। কেউ মানুক, না মানুক এটাই সত্য।