নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংঘাত বিপদ ডেকে আনবে...

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

রাজনৈতিক বিরোধের কারণে গত দুই দিনের প্রাণহানির ঘটনা অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানে সহায়তা করবে। এমন রক্তপাতের রাজনীতি কোনো দলের জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না। বরং সংঘর্ষ, জ্বালাও-পোড়াও চলতে থাকলে বিবদমান দলগুলোর জন্য বিপদ ঘনিয়ে আসবে। এ মত দেশের বিশিষ্টজনদের। তাঁরা মনে করেন, সংঘর্ষের পথ ছেড়ে সমঝোতার মনোভাব নিয়ে দুই দলের আলোচনায় বসা উচিত। হরতাল কর্মসূচি আলোচনার পথে বাধা সৃষ্টি করবে বলেও মত প্রকাশ করেন তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। বিরোধী দলের এ প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত ছিল। এতে সংকট সমাধানে সরকার কতটা আন্তরিক সে পরীক্ষাও হয়ে যেত। কিন্তু বিরোধী দল হরতাল-আলটিমেটামের যে পথ নিয়েছে, তাতে সমাধান আসবে না। এতে বরং সংঘাত বাড়বে।' তিনি বলেন, 'সংঘাতের কারণে দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে সামরিক সরকার আসার আশঙ্কা বাড়ছে। এটি দুশ্চিন্তার বিষয়। জনগণ ও রাজনীতিবিদদের নিজেদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে মীমাংসায় আসা উচিত। সংঘাতের ভয়াবহ ফল দুই দলের রাজনীতিবিদদেরই সবার আগে ভোগ করতে হবে।'

এবারের রাজনৈতিক সংঘাতে অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি হতাহতের আশঙ্কা প্রকাশ করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'এর আগে সংঘাতের মাত্রা বেশি থাকত রাজধানী ঢাকায়। প্রাণহানির বেশির ভাগই ঘটত ঢাকায়। কিন্তু এবার বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সংকটের সমাধান না হলে বহু প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।'

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সংঘাতের রাজনীতির এ ট্রেন চলতে থাকলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতেই থাকবে। এটি নিয়ে দুই দলের নেতারা ভাবছেন না। কারণ রাজনৈতিক সংঘর্ষে উচ্চ পর্যায়ের নেতারা প্রাণ হারান না। দলের নিম্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মৃত্যু নিয়ে নীতিনির্ধারকরা খুব একটা ভাবছেন না।' তিনি বলেন, 'প্রাণহানির যে রাজনীতি চলছে, তা রাজনীতিকদের জন্য কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে না। এমন সংঘাত ও প্রাণহানি চলতে থাকলে এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এবার আরো বেশি রক্তক্ষয় ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের মেয়াদের শেষ ৯০ দিন শুরু হয়ে গেছে। আর সময় নেই। এখনই দুই দলকে সমঝোতার মনোভাব নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।'

লেখক-বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কী হবে তা আগেই ফয়সালা হলে এখন যে রক্ত ঝরছে, হানাহানি হচ্ছে, তা হতো না। দুই পক্ষের কারো হাতেই এখন আর সময় নেই বলে এ সংঘাতময় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন যত দ্রুত মীমাংসা করা যায় জনগণ ও নেতাদের জন্য ততই মঙ্গল। আশা করি, দলগুলো একটি সমাধানের দিকেই যাবে।'

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাজনীতিতে সংঘাত শুরু হওয়ার ফলে অহেতুক প্রাণহানি ঘটছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা হচ্ছে। জনগণের জানমাল নিরাপদ নয়। দেশে একটি চরম অরাজকতাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই দায়ী।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্বানে বিরোধী দলের সাড়া দেওয়া উচিত ছিল। অবিশ্বাসের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ফলে হয়তো বিরোধী দল সাড়া দেয়নি। কিন্তু অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করা উচিত। না হলে জনগণ ও রাজনীতিক- উভয়ের জন্যই কঠিন সময় আসবে।'

সংঘাতের রাজনীতি দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ ঘটাবে বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিরোধীদলীয় নেতার উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেওয়া। হরতালের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত ছিল। কারণ সংলাপের আহ্বানের পর হরতালের সিদ্ধান্ত আলোচনার পরিবেশকে নষ্ট করবে। আলোচনার পথকে সংকীর্ণ করে এমন কর্মসূচি থেকে সরে আসা উচিত।' তিনি আরো বলেন, 'সংঘাতের ফলে যে প্রাণহানি ঘটছে, তার দায় বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে। এমন সংঘাতের ফলে দেশে গণতন্ত্রের পরিপন্থী শক্তি বিকশিত হবে।'

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.