নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করছে বিএনপি!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫২

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেও আশাবাদী থাকতে পারছে না বিএনপি। দাবি আদায়ে তাই দলকে আরো সুসংগঠিত করার চেষ্টার পাশাপাশি আন্দোলনের নতুন ছক কষছেন দলটির নেতারা। রাজনৈতিক সংকট সামাল দিতে নিজেদের মধ্যে সব ধরনের মতভেদ দূর করার পাশাপাশি সংস্কারপন্থীদেরও আরো কাছে টানার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।



জানা গেছে, বিএনপির শীর্ষমহল আশঙ্কা করছে, সরকার তাদের দলের সংস্কারপন্থীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে 'সর্বদলীয়' সরকারে যোগদান ও আগামী নির্বাচনে প্রার্থী করার টোপ দিয়েছে। এ অবস্থায় দলের নেতা এবং সংস্কারপন্থীদের ধরে রাখার চেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার বাসায় কয়েকজন সংস্কারপন্থী নেতার সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।



বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে ওই সব নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় করে তোলার চিন্তাভাবনা চলছে। অনেক দিন ধরে ওই নেতারাও দলে সক্রিয় হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করে আসছিলেন।



জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে বৈঠক শেষে খালেদা জিয়া বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জানতে চান জোটসহ দলের কার কার সঙ্গে সরকার যোগাযোগ করেছে। এ সময় যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তাঁদের নাম আলোচনায় আসে। দলের সংস্কারপন্থীদের প্রসঙ্গটিও আসে। খালেদা জিয়া এ সময় মির্জা ফখরুলকে এ ব্যাপারে নজর রাখতে বলেন এবং সরকারের বার্তা পাওয়া সংস্কারপন্থীসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ পেয়ে ওই রাতেই খোকার বাসায় বৈঠকের আয়োজন করা হয়।



ওই বৈঠকে সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, নজির হোসেন এবং সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সংস্কারপন্থী নেতা রেজাউল বারী ডিনা, শহিদুজ্জামান, শামিম কায়সার লিংকনসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতারা দলের 'এই দুঃসময়ে' সক্রিয় হওয়ার আগ্রহ জানান।



জহির উদ্দিন স্বপন বৈঠকের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, 'দলের দুঃসময়ে আমরা মহাসচিবের মাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার আগ্রহ জানিয়েছি। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।'



নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, সংকটময় সময়ে যারা দলে ভাঙন তৈরি করেছিল সেই সংস্কারপন্থীদের দলের মধ্যে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কোনো মানে হয় না। বরং এটি দলের অন্য নেতা-কর্মীদের একটি ভুল বার্তা দেবে। তা ছাড়া বর্তমান মহাজোট সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরা এত দিন ধরে জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করে লড়াই করছেন, তাঁরা এ পদক্ষেপকে সহজভাবে মেনে না নিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারেন।



এদিকে গত সোম ও মঙ্গলবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়। নেতাদের অনেকে আগামী রবিবার থেকে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শ দেন। কেউ কেউ আবার হরতাল না দিয়ে অবরোধ দেওয়ার পক্ষে মত দেন।



বিএনপি নেতাদের বেশির ভাগই মনে করছেন, তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচিতে যাওয়া ঠিক হবে না। তফসিল ঘোষণা হলে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকবে, ওই সময় সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আঘাত হানলে দ্রুত 'ফল' পাওয়া যাবে। দলটির কাছে তথ্য আছে, সোমবার তফসিল ঘোষণা করা হবে। তাই ওই দিন থেকে কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।



ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচির বিষয়ে মির্জা ফখরুল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করব। সরকার সাড়া না দিলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।'



এদিকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে আন্দোলন জোরদার হলেও ঢাকা মহানগর নিয়ে ক্ষুব্ধ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাই আন্দোলন চাঙ্গা করতে ঢাকা মহানগরকে আট ভাগ করে দলের আট নেতাকে অঞ্চলগুলোর দায়িত্ব দিয়ে চলতি সপ্তাহেই চিঠি দিয়েছেন খালেদা জিয়া। জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ কাফরুল, ক্যান্টনমেন্ট ও গুলশান; মির্জা আব্বাস মতিঝিল, খিলগাঁও ও সবুজবাগ এলাকার দায়িত্ব পেয়েছেন; মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালামের দায়িত্ব পেয়েছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়; তেজগাঁও ও বনানীর দায়িত্ব নজরুল ইসলাম খানের; সাদেক হোসেন খোকাকে সূত্রাপুর, কোতোয়ালি, বংশাল, গেণ্ডারিয়া ও ওয়ারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান লালবাগ, নবাবগঞ্জ ও হাজারীবাগ; বরকতউল্লা বুলু উত্তরা, উত্তর খান ও দক্ষিণ খান; ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমেদ ডেমরা, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলীর দায়িত্ব পেয়েছেন।



বিরোধীদলীয় জোট নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তত প্রধান দুই দলের মহাসচিব পর্যায়ের আলোচনা শুরুর ব্যাপারে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতিকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রপতি তাঁদের জানিয়েছেন, সংবিধান অনুযায়ী যত দূর সম্ভব বিরোধী দলের দাবিগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন। এ অবস্থায় অপেক্ষায় রয়েছে বিরোধী দল। তবে সেটা কত দিনের- এ প্রশ্নই ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুব বেশিদিন অপেক্ষা করবেন না তাঁরা। সমঝোতার ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা প্রকাশ না পেলে কঠোর আন্দোলনের লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে আবার রাজপথে নামবে বিরোধী দল।



বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা বলেন, 'আমরা সংকট সমাধানের জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। কিন্তু সরকার কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ জন্যই শেষ চেষ্টা হিসেবে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। রাষ্ট্রপতিকে সব বিষয় জানিয়েছি। তিনি সংবিধান অনুযায়ী যত দূর সম্ভব উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির মতামত সরকার গ্রহণ করবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে ১১ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ডাকা এক সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। তখনো রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি তুলে ধরেছিলাম। কোনো কাজ হয়নি। তাই এবারও হবে কি না তা নিয়ে নানা সন্দেহ কাজ করছে। তবে এর পরও শেষ পর্যন্ত কী ঘটে তা দেখার জন্য আমরা অপেক্ষা করব।'



মির্জা ফখরুল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের দাবিসমূহ রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিতভাবে তুলে ধরেছি। রাষ্ট্রপতিকে সংলাপ ও সমাধানের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এখন আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।'



স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির করার কিছু নেই। এর পরও আমরা দেশের সংকটময় পরিস্থিতি রাষ্ট্রের অভিভাবকের কাছে তুলে ধরেছি।'



ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানানোর পর এখন থেকে সংলাপের ব্যাপারে সব দায়িত্ব সরকারের ওপর নির্ভর করছে। সরকার চাইলে সংলাপ হবে, অন্যথায় সমাধান হবে রাজপথেই।'

- See more at: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.