![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষায়- আধুনিকীকরণসহ যুগান্তকারী পরবির্তন এনেছে। এর ফলে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত এ প্রজন্ম বিশিষ্ট আলেম-ওলামা-চিন্তাবিদ হওয়ার পাশাপাশি বাস্তব, জীবনমুখী, প্রযুক্তিনির্ভর ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হবে। বাংলাদেশে ইসলামের প্রকৃত পরিচর্যাকারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তারই যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকা-কে যথাযোগ্য মর্যাদায় আসীন করেছেন। ইসলাম ধর্মের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্য মুসলিম সম্প্রদায়কে উৎসাহী করার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ তাঁর। উপরন্তু দেশের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদের জঙ্গিপনা নির্মূলের সাফল্যও তার সরকারের বড় অবদান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর তার শাসনকালেই বলেছিলেন, 'আমি ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলি, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মবিরোধিতা নয়। আমি মুসলমান, আমি ইসলামকে ভালোবাসি।'
বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন শরিফের আওয়াজ শুনতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, মুসলমানরা খুশি হলে মিলাদ পড়ানোর পরামর্শ দিয়ে গেছেন, আর মাদ্রাসা শিক্ষার বরাদ্দ কখনো বাতিল করেননি তিনি। এর আগে ১৯৭২ সালে ১৮ জানুয়ারি ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি একজন মুসলমান এবং মুসলমান একবারই মাত্র মরে, দু'বার নয়। আমি মানুষ। আমি মনুষ্যত্বকে ভালোবাসি। আমি আমার জাতির নেতা। আমি আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি।'
বঙ্গবন্ধু যেমন বাঙালি মুসলমানের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় সংবিধানে ইসলামকে মহিমান্বিত করেছিলেন তেমনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ইসলামের একনিষ্ঠ উপাসক হিসেবে ধর্মপ্রাণ জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলেই মাধ্যমিক পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদের প্রায় ১ হাজার বছরের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশে একটি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস স্থাপন চলছে। দেশের বিভিন্ন মসজিদ ও মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকারি হজ ব্যবস্থাপনায় কেবল গত বছরই ১ লাখ ২০ হাজার হাজি হজে যেতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছে এবং কওমি আলেম-ওলামাদের ইমাম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা নিজে জাতীয় উন্নয়নের ধারায় কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষিত আলেমদের সম্পৃক্ত করে তাদের কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণের জন্য সরকারি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পর্যায়ক্রমে কওমি মুরব্বিয়ানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর ১০ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে সরকারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদানের বিষয় এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। অন্যদিকে কওমি আলেম-ওলামাদের মধ্যে ১ লাখ ৭১ হাজার ইমামকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। দেশের 'ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট' শেখ হাসিনার নিজের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে। বর্তমানে এ ফান্ডে ২৮ কোটি টাকা জমা হয়েছে। তাছাড়া বর্তমান সরকারই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় (ইসলাম) শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আলেম-ওলামার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মের জন্য শেখ হাসিনা সরকারের আরো অনেক কর্মসূচি রয়েছে।
এক নজরে দেখতে গেলে, মহাজোট সরকারের শাসনামলে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ:
ড় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষা সনদ স্বীকৃতি,
ড় কামিলকে মাস্টার্স এর সমমর্যাদা প্রদান,
ড় মাদ্রাসায় আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন
ড় ১০৩৫ টি মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন,
ড় মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ৭৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ভবন নির্মাণাধীন,
ড় মাদ্রাসার সিলেবাসে বিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজী ও বাংলার সংযুিক্তকরণ
ড় স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সাথে মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদায় সমতা বিধান,
ড় ৩১টি সিনিয়র মাদ্রাসায় ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু,
ড় মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য বি এড কোর্স চালু,
ড় গরীব ও মেধাবী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু,
ড় যুগোপযোগী নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন,
ড় এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতনভাতা বৃদ্ধি,
ড় অর্ধ লক্ষাধিক শিক্ষককে সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির প্রশিক্ষণ প্রদান ও
ড় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইন পাশ ও ইউজিসি’র অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া গত ৫ বছরে বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষায় গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষা, জ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে সম্পৃক্ত করেছে এবং এসব পদক্ষেপ পুরো মাদরাসা শিক্ষাকে পুনর্গঠন করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীদেরকে নীতি, আদর্শ ও মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ মহৎপ্রাণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই বর্তমান সরকারের এ সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
এখানে কেবল কয়েকটি সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো। তবু ধর্মব্যবসায়ীরা এ দেশের অনেক নিরক্ষর, নিরন্ন মানুষকে ধর্মের কথা বলে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের ইসলামের অনুসারী বলে প্রচার করে তাদের বাঁচানোর জন্য গুজব আর মিথ্যা কথা ছড়ানোকেই মূল কাজ হিসেবে বেছে নিয়েছে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন। কিছুদিন আগে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক হেফাজতে ইসলামী নামের সংগঠনটি মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সারাদেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও মাদ্রাসা ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে তুলেছে। ৫ মে (২০১৩) ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির সময় হেফাজতে ইসলামীর কর্মীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদে আগুন দিয়েছে, শত শত কোরআন শরিফ ও জায়নামাজ পুড়িয়েছে। একজন প্রকৃত মুসলমান কখনো এসব কাজ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এমন অপপ্রচারও চালানো হয়েছে, ৫ মে রাতে ঢাকায় হেফাজতের কর্মসূচিতে দেশের সব ইমাম-মোয়াজ্জিনদের হত্যা করা হয়েছে। কোনো মসজিদে নাকি আর আজান হবে না! গত নির্বাচনের আগেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে আজানের ধ্বনি শোনা যাবে না, উলুধ্বনি শোনা যাবে! কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশবাসী দেখেছে মসজিদে আজানই হয়েছে, অন্যকিছু হয়নি। বরং বিএনপি ও জামায়াত পবিত্র রমজান মাসেও হরতাল দিয়ে জনজীবন বিঘিœত করেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯
দূষ্ট বালক বলেছেন: এইডা আর কিছু না, যুগ যুগ ধরে কওমী মাদরাসা সমূহের যে স্বকীয়তা ছিল তা নষ্ট করার নীল নকশা। যে কওমী মাদরাসায় কখনও অস্ত্রবাজী, টেন্ডারবাজী ছিল না, সেটাকেই নতুন করে আসার সুযোগ করে দেওয়া।