নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপি রাজনীতির পরিবেশটা নষ্ট করে দিল

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৭

বাংলাদেশে নাশকতার ভয়ঙ্কর মাত্রা এবং অগ্নিসংযোগ করে বাস জ্বালানো ও মানুষ হত্যার তৎপরতায় শুধু দেশের সাধারণ জনগণই অনিরাপত্তায় ভুগছে না। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পরিবহন শ্রমিক এবং সংবাদকর্মীরাও হত্যার শিকার হচ্ছেন। ক্রমাগত অবরোধ ও হরতালের সহিংসতায় সরকারি ও বেসরকারি সম্পদের প্রচুর ক্ষতিসাধন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। একদিনের হরতালে দেশের অর্থনীতিতে দু’হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়, বিপর্যস্ত হয় জনজীবন ও নিরাপত্তা। সামাজিক কর্মকা- ব্যাহত হয়। মাত্র এক বছরে পরিবহন খাতে নাশকতায় একশত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিহত হয়েছে ৪২ জন পরিবহন শ্রমিক। তাতে তিন হাজার পরিবহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিলাসবহুল বাস ও এসি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে আটশত। দেশের সর্বমোট তিন লাখ গাড়ির মধ্যে দুই লাখ গাড়ির রয়েছে ব্যাংকঋণ। দেশের সম্পদ এভাবে বিনষ্ট করে যারা তারা নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলায় লিপ্ত।

এসব জঙ্গি সন্ত্রাসের হুকুমদাতা, উস্কানিদাতা এবং গণতান্ত্রিক সরকার পতনের হুমকিবাজরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী, খুনী ও বোমাবাজদের নেতা হলেও জনগণের নেতা এবং দেশপ্রেমিক নেতা নন কোনোভাবেই। এদেরকে বারবার গাড়ি পোড়ানোর মামলা এবং সন্ত্রাস ও ভাঙচুরের হুমকিদানের কারণে গ্রেপ্তার করা হলেও জেল থেকে জামিনে বেরিয়েই পুনরায় সচেতনভাবে মানুষ হত্যার প্ররোচনা দেয়। সমাজকে অশান্ত ও অনিরাপদকারীদের জনবিচ্ছিন্ন স্থানে রাখাই সমাজের জন্য মঙ্গল। পৃথিবীর সর্বোচ্চ সংস্থা জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো দু’দফায় সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য ঢাকায় আসেন। তার সংলাপ তৎপরতা এবং সমঝোতার লক্ষ্যে সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা চলাকালে দু’বারই হরতাল ও অবরোধ দেওয়া হয়েছে। তিনি হরতাল-অবরোধ উপেক্ষা করেই সংলাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া, এইচএম এরশাদ, জামায়াতে ইসলামী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।

ব্যবসায়ীরা সংকট নিরসনে ঘন ঘন তাগিদ দিলেও দেশের ব্যাবসাবাণিজ্য ও অর্থনীতি রক্ষার অনুরোধে হরতাল-অবরোধ বন্ধ না করে আরো কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হলো। ক্ষুব্ধ নাগরিক, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণ সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং, আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হরতালের আগের দিন থেকেই শুরু হয় নাশকতা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। মানুষকে আতঙ্কিত ও অনিরাপদ করার নোংরা রাজনৈতিক কৌশল জনগণ কর্তৃক ধিক্কৃত হলেও তা পরিহার করা হচ্ছে না। বিএনপির কিছু হুমকিদাতা ও উস্কানিদাতা নেতা গ্রেপ্তার হয়ে এখনও জেলবন্দি আছেন, কিছু নেতা পালিয়ে গোপন স্থান থেকে লাদেনীয় কায়দায় সংবাদমাধ্যমে ভিডিও বার্তা প্রেরণ করছেন। একের পর এক গণবিরোধী ও হিংসাত্মক কর্মসূচি দিয়ে জনজীবনকে অনিরাপদ ও শঙ্কিত করে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল না হওয়া সত্ত্বেও সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে জনগণের ওপর প্রতিহিংসা চালাচ্ছেন। হরতাল ও সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের আক্রমণ থেকে নিরাপদে পালিয়ে আত্মরক্ষা করছে সন্ত্রাসীদের নেতারা। দায়িত্বহীন, জবাবদিহিহীন রাজনীতির এ ধারায় ধ্বংসের মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি জনগণের সমর্থন ও আস্থা। জনগণের ক্ষতিসাধন করে কীভাবে জনসমর্থন ও গণসম্পৃক্ততা থাকবে! জনগণের প্রতি ভরসাহীন নেতারা নির্বাচনে অংশ না নিয়ে, সংলাপভিত্তিক সমঝোতায় অগ্রসর না হয়ে জনগণের ক্ষতি করতেই আরো কঠোর কর্মসূচির আশ্রয় নিচ্ছে। দেশকে ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো অনিরাপদ ও ভয়ঙ্কর ভূখ-ে পরিণত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জঙ্গিবাদী আদর্শ ও তৎপরতা নিয়েই সন্ত্রাসবাদী নেতাদের আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে সশস্ত্র প্রক্রিয়ায়। বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ করে অগ্নিদগ্ধ করা হচ্ছে অগণিত মানুষকে। বিরোধী দলীয় নেতা-নেত্রীরা অগ্নিদগ্ধ আহত-নিহতদের দেখতে যাননি, তাদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানাননি। এ ধরণের জাতীয় নেতাই কি গণতন্ত্রের ভরসা!

জনগণের ক্ষতি, হত্যা ও সম্পদ ধ্বংসের জন্য যাদের রাজনীতি তাদের বিদায় দেবে জনগণ। এজন্য নির্বাচনে অংশ নিতেও তারা বিমুখ। কখনো তত্ত্বাবধায়ক পুনরুদ্ধারের নামে সংসদে না গিয়ে রাজপথের ধ্বংসাত্মক আন্দোলনে সন্ত্রাসী নেতারা সোচ্চার হয়েছেন। কখনো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তার বিচার প্রক্রিয়া ও রায়ের বিরুদ্ধে তৎপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রগতিশীল সাংবাদিক ও মুক্তিকামী গণজাগরণকর্মীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবৈধ ও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতকে ১৮ দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ রেখে তাদের চালিত ধ্বংসাত্মক জঙ্গি হামলার দায় বিএনপিকে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতে এসব ধ্বংস ও হত্যার বিচার করা হবে। সাংবাদিক, নিরাপত্তাকর্মী, নারী, শিশু, শিক্ষক, ছাত্র কেউ রেহাই পায়নি ধারাবাহিক অবরোধ ও সন্ত্রাসের অপতৎপরতা থেকে। অবরোধ ও হরতালে দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিকল্পিত নাশকতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে দেশকে অনিরাপদ ও অনিশ্চিত গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে নাশকতার শক্তি প্রয়োগ করে। সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতা এবং আগুনে মানুষ পোড়ানোর ঘটনা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

দলীয় টিভি চ্যানেলে দলীয় টকশোওয়ালারা সন্ত্রাস ও নাশকতায় জানমাল ক্ষতিগ্রস্ত করার তৎপরতার নিন্দা না জানিয়ে সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে। সন্ত্রাসীদের প্রতি দরদী টকশোওয়ালারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনা নিয়েও শঙ্কিত নন। জামায়াত-বিএনপির পক্ষে বিবেকবন্ধক রাখা টকশোওয়ালা ধান্দাবাজদের নির্লজ্জ্ব অতিকত্থনে দর্শক-শ্রোতারা অতিষ্ঠ। চ্যানেল ঘুরিয়ে তারা অন্যত্র চলে যান ভালো কিছুর সন্ধানে। গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলায় এসব টকশোওয়ালাদের নেই আশঙ্কা, নেই উদ্যোগ। ১৮ দলীয় জোটের সশস্ত্র আন্দোলন, সহিংস বিক্ষোভ আর নৃশংস হরতাল সফল করতে রাজপথে নামিয়ে দেওয়া হয় ভাড়াটে বোমাবাজ, ককটেল বিস্ফোরণকারী ও খুনীদের। ভাড়াটে ও দলপোষ্য বুদ্ধিজীবীরাও থাকে টকশোর আলোচনায় তৎপর। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ও যুদ্ধাপরাদের সন্ত্রাস দমন তৎপরতা নিয়ে বিতর্কে তারা অতি উৎসাহী।

যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো আর রাজনৈতিক ও নির্দলীয় ব্যক্তিদের হত্যা করে নাগরিক নিরাপত্তা বিঘিœতকারীদের তৎপরতাকে ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই। তাদের উপযুক্ত শাস্তি আর ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিকারই কাম্য। ১২ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার যে মৃত্যুদ-ের রায় কার্যকর করা হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর এ রায় কার্যকর হওয়ার আভাস পেয়ে রাতের বেলা সারা দেশে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করা হয়। সেই রাতে রিভিউ পিটিশনের পর রায় পরদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। পুনরায় শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ থেকে কাদের মোল্লার রিভিউ পিটিশন চূড়ান্তভাবে খারিজ হওয়ার পর ঐদিন ১২ ডিসেম্বর রায় কার্যকর করা হলো রাত ১০টা ১ মিনিটে। তারই প্রতিক্রিয়ায় সারাদেশে ১১৬ জন মানুষ নিহত হলো এবং অসংখ্য যানবাহনে হামলা হলো। আরও সহিংস হামলার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি এবং পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী। এতে শঙ্কিত মানুষ। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার হওয়ার পরও তার সহিংস প্রতিক্রিয়া করলো জামায়াত-শিবির। গণজাগরণ মঞ্চেও হামলা, বোমাবাজি হয়েছে। আন্দোলন-বিরোধিতার নামে এদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের পালে হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।

যানবাহন দেশের সম্পদ। হরতাল-অবরোধের জন্য কোনো সরকারি ছুটি নেই কর্মজীবীদের, ব্যবসায়ীদের কোনো বিরতি নেই। দরিদ্র, ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও দিনমজুরদের কাজ না করে উপায় নেই। বাধ্য হয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্যই নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েও তারা যানবাহনে চড়েন। যেসব পরিবহন হরতাল-অবরোধে চলাচল না করে বাসস্ট্যান্ডে রাখা হয় তার ওপরও দেওয়া হয়েছে আগুন। চলন্ত বাসে আগুন, বাস ডিপোতে থেমে থাকা বাসে আগুন দিয়ে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে সন্ত্রাসীরা। এর কঠোর প্রতিকার চায় জনগণ। সরকারের উদারতা ও দুর্বলতা এ ক্ষেত্রে কাম্য নয়। যানবাহনে আগুন ও মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিরুদ্ধে আইন আছে। তার কঠোর প্রয়োগ করা হোক। রাষ্ট্রকে জনগণের নিরাপদ বসবাসের উপযুক্ত করা হোক। হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ হত্যার উৎসব, গাড়ি জ্বালানোর তৎপরতা বন্ধ হোক। সরকারি তৎপরতা আর প্রচার মাধ্যমের সক্রিয়তা বাড়–ক। তাহলেই রাজনীতির ঘাতক-বাহক নেতাদের তৎপরতা কমবে। রক্ষা পাবে মানুষ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৬

তিক্তভাষী বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.