![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অর্জন
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সকল ভয়-ভীতি, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা ভোটদাতাদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছেন। এই নির্বাচনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি পুরো নির্বাচনকেই বানচাল করতে চেয়েছিল। একটি ভোটারও যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায় সে নির্দেশও দিয়েছিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী। কিন্তু জনগণ তার ডাকে সাড়া না দিয়ে ভোট দিতে গিয়েছে এবং অন্তত ৪০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধরণের অর্জন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি-না এ নিয়ে নির্বাচনের ৩/৪ দিন আগেও সংশয় ছিল। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দৌড়ঝাঁপ ছিল লক্ষ্য করার মতো। একদিকে বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা; অন্যদিকে গুটি কয়েক সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিদেশিদের নির্বাচন বন্ধ করার পায়তারায় ধারণা করা হচ্ছিল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত জোট নাশকতা চালিয়ে এবং দেশি-বিদেশিরা চক্রান্ত করে জোর করে হলেও বন্ধ করে দেবে। সীমাহীন সন্ত্রাস, অরাজকতা, ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধাপ্রদান, সংখ্যালঘুদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি সত্ত্বেও ভোটকেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি আওয়ামী লীগের এই নির্বাচন থেকে বড় অর্জন।
আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, নির্বাচনের আগেই শুধু নয়, বহু আগে থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তিনি সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়বেন না। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ তার কথা রাখতে পেরেছে। সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে তারা নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা অনুযায়ী তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়েননি। এ কথা বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী যদি আবেগের বশবর্তী হয়ে সংবিধান থেকে এক চুল নড়ার সুযোগ দিতেন অনির্বাচিত কয়েকজন লোক দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় তিন মাসের জন্য নয় হয়তো তিন বছরের জন্য বসে যেতে পারত। প্রধানমন্ত্রী তা হতে দেননি। তিন বছর আগে তিনি যা বলেছেন, তার কোনো অন্যথাই তিনি করেননি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
এই নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অর্জন হলো, তারা এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের মহান সংসদে যাওয়ার সুযোগ দেয়নি। তাদের এই সংসদে না যাওয়ার কারণে দশম জাতীয় সংসদে তারা থাকবে প্রতিনিধিত্বশূন্য। সবচেয়ে বড় কথা প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চেয়ারপারসন হারালেন সংসদে তাঁর বিরোধীদলের নেতার পদ। খালেদা জিয়াই এই নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হননি, তাঁর দলের এমপিরা হারালেন সংসদ সদস্যের পদ। দশম জাতীয় সংসদ ৫ বছর স্থায়ী হলে এই ৫ বছরেই বিএনপি নেত্রী ও তার কোনো প্রতিনিধির সংসদে প্রবেশের অনুমতি থাকলো না। খালেদা জিয়া যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছাড়া অন্য কোনো স্বাদ গ্রহণ করেননি; সেখানে এখন তিনি এমপিও নন, সংসদে বিরোধীদলের নেতাও নন। তিনি এখন শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন। বিএনপির একুল-ওকুল দু’কুল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শেষ করে দেওয়াই ছিল এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বড় ধরণের অর্জন।
নির্বাচনের মাস দুয়েক আগে থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল এবং সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন প্রতিহতের যে আহ্বান জানিয়েছেনÑতা সত্ত্বেও যে ৪০ শতাংশ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য ভোট কেন্দ্রে গিয়েছেন এটা আওয়ামী লীগের একটি বড় অর্জন। বিদেশি গোষ্ঠী নির্বাচন হতে না দেওয়ার জন্য যে চেষ্টা-অপচেষ্টা চালিয়েছেন তা সত্ত্বেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বড় অর্জন। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো এই নির্বাচনের মাধ্যমে দলটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষা করেছে এবং অনির্বাচিত কারো সরকারে আসার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচিত সরকারের অধীনেও যে, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভবÑতা আওয়ামী লীগ দেখিয়ে দিয়েছে। এটা কম অর্জন নয়। আওয়ামী লীগ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করে প্রমাণ করেছে এদেশে আর অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। এখন থেকে ভবিষ্যতে সব নির্বাচনই একই প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে। বলা যায় এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই নির্বাচনে এটা আওয়ামী লীগের একটি বড় অর্জন। আওয়ামী লীগের আরকটি অর্জন হলো, তারা একদলীয় নির্বাচনের তকমা তাদের পিঠে সাঠাতে দেয়নি। তাদের সঙ্গে ছিল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত অন্তত ২০টি দল। এবং এসব দলগুলোর অধিকাংশই এমনকি নির্বাচনের অব্যবহিত আগে নিবন্ধন পাওয়া বিএনএফও সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে। ফলে নির্বাচনটি অগ্রহণযোগ্যতার তকমা থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে। এটি আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী সভানেত্রীর একটি বড় অর্জন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিএনপির অর্জন
আসলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিএনপি কিছু অর্জন তো করতে পারেইনি; উপরন্তু তারা বিসর্জন দিয়েছে অনেক। এ নির্বাচন থেকে আম-ছালা এবং একুল-ওকুল দু’কুল হারিয়েছে বিএনপি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রীর পদই শুধু হারাননি; এমপিত্বও হারিয়েছেন। তাঁর দলের যে ২৮/২৯ জন এমপি এতদিন সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন, এমপি পদ ব্যবহার করে অবাধে বিদেশে ভ্রমণ করেছেন, সংসদ থেকে ভাতা পেয়েছেন বিপুল, ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি পেয়েছেনÑদশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ওইসব এমপিরা তাদের এসব সুযোগ-সুবিধাতো হারালেনই উপরন্তু আগামী ৫ বছরের জন্য এই সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হলেন। এ ক্ষেত্রে বলা যায়, খালেদা জিয়া তার জামায়াতপ্রীতির কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নিজের কপাল পোড়ানোর পাশাপাশি তাঁর নেতাদেরও মাথায় বাড়ি বসিয়েছেন। এ জন্য খালেদা জিয়ার দলের নেতারা যে তাদের নেত্রীর ওপর কতটা নাখোশ হয়েছেন তা বোঝা যাবে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই। যখন বিএনপির নেতারা গোপন আলাপ-আলাচনার মাধ্যমে সরকারি দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করবে, কেউ ফিরে যাবে জাতীয় পার্টিতে কেউ গঠন করবে নতুন বিএনপিÑতখন বিএনপি চেয়ারপারসন বুঝতে পারবেন জামায়াতের পরামর্শে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তিনি কি ভুলটাই না করেছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিএনপি সবচেয়ে বড় যে নেতিবাচক অর্জনটি পেয়েছে তা তাদেরকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। নির্বাচন বর্জনের জন্য তাদের লাগাতার হরতাল, লাগাতার অবরোধের পর এখন অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে জনগণের সমর্থন না পেয়ে। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের কিছু জনগণকে অর্থাৎ তার সমর্থকদের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, যে কোনো উপায়ে হোক ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। যেহেতু খালেদা জিয়া নিজের প্রচেষ্টায়, জামায়াতের নৃশংসতায়, লন্ডনের ভিডিও বার্তায়, হেফাজতে ইসলামের সহায়তায় এবং বিদেশি কূটনীতিকদের আশ্বাস সত্ত্বেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে পানেনি সেহেতু এখন নিশ্চিত করেই বলা যায়Ñদিন যত যাবে খালেদা জিয়ার ওপর তার সমর্থকদের সমর্থন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসবে। বিএনপি এখনো তাদের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ বলবৎ রেখেছে, অথচ অবরোধে ঢাকা স্বাভাবিক। ঢাকার রাস্তায় স্বাভাবিকের মতো ট্রাফিক জ্যাম। পণ্য পরিবহন আগের তুলনায় বেশি। আন্তঃজেলা বাসের চলাচল বাড়ন্ত, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। এক কথায় বলা যায় বিএনপি তথা ১৮ দলের অবরোধের ডাক আছে। কিন্তু রাস্তা থেকে অবরোধ বিদায় নিয়েছে। বিএনপি এখন ছুতা খুঁজছে কীভাবে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ তুলে নেওয়া যায়। তারা এখন ছুঁতা ছাড়া অবরোধ তুলে নিতেও পারছে না আবার জনসম্পৃক্ততাহীন অবরোধ টেনে নিতেও পারছেন না। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী হয়তো বলেছেন বিএনপি একুল-ওকুল দু’কুলই হারালো।
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০২
মাসুদ রশিদ বলেছেন: আপনে মনে হয় নির্বাচনের দিন দেশের খবরাখবর কিছুই রাখেন নাই।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১১
সৈয়দ মোহাম্মদ আলী কিবর বলেছেন: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অর্জন:
১. কলংকের দাগ, যা আওমীলীগের ছিল না।
২. যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেনি, ওৎকালীন আওমীলীগ দেখেনি, ৭৫ দেখেনি তারা বুঝতে পেরেছে আওমীলীগ আসলে স্বাধীনতার পক্ষের এবং বাংলাদেশের জনগনের পক্ষের দল কি না। এছাড়া কেন ৭৫এ হত্যাকান্ড ঘটেছিল।
৩. দেশের ৯০% জনগন এখন আওমীলীগকে অন্তর থেকে ঘৃণা করে।
৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
মেনন আহমেদ বলেছেন: কি যে বলেন ভাই ভোট পড়ছে তো ৯৯শতাংশ ইসি বিএনপি এর পক্ষে ছিলো বলে ভোট দেখিয়েছে ৪০শতাংশ,ইসি এর কারসাজিতেই এটা হয়েছে। এখনি ইসি এর প্রধানকে রাজাকারের দলে ফেলে দেওয়া উচিত। ৫ই জানুয়ারী সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সবকটি আসন আওয়ামিলীগ পেতো
আবাল@লেখক
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০৬
হাসিব০৭ বলেছেন: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের অর্জন
দলান্ধ হলে এমনটাই হয় আর কি।
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সকল ভয়-ভীতি, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা ভোটদাতাদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছেন