নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির আন্দোলন জমছে না

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৩১

পুরনো ইস্যু দিয়ে আর আন্দোলন জমাতে পারছে না বিএনপি। তাই সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য নতুন ইস্যু খুঁজছে দলটি। তবে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের হাইকমান্ড থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করার ব্যাপারে যেভাবে হাকডাক দেয়া হয়েছিল সেভাবে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাড়া জাগানো যায়নি। নির্বাচনের কদিন আগেই আন্দোলনের নামে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। একেকটি নাশকতামূলক কর্মকা-ের পর বিএনপির একাধিক নেতার নামে মামলা করা শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে মামলার ভয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা একে একে পালিয়ে যাওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা চরম হতাশ হয়। এ কারণে নির্বাচনের আগে বিএনপি আন্দোলনের যে কটি কর্মসূচী দেয় তার অধিকাংশই ব্যর্থ হয়। এ কারণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন শেষ করে দেশে আরেকটি নতুন সরকারও গঠিত হয়ে যায়।

আর নতুন সরকার গঠন ও জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি এখন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদাও হারায়। আর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেতার পদবি হারানোর পাশাপাশি এ সংক্রান্ত সকল সরকারী সুযোগ-সুবিধা ধেকে বঞ্চিত হন। তবে খালেদা জিয়ার বদলে জাতীয় পার্টির নেতা বেগম রওশন এরশাদ এখন বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে গেছেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন প্রচণ্ড হতাশা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে দলের যে সকল নেতাকর্মী আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল তারা এখন মামলা, হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে ঘরে থাকতে পারছে না। নিজ এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দলের পক্ষ থেকেও তারা কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না। তাই এ সকল বিএনপি নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এখন চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। তবে এই অসহায়ত্বতা কাটাতে কোন কোন তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মী এখন আওয়ামী লাগে যোগ দিয়ে নিজেদের নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র মতে, পুরনো ইস্যুতে আন্দোলন জমাতে না পেরে বিএনপি এখন সকল দলের অংশগ্রহণে পরবর্তী নির্বাচনের দাবিসহ যে কোন জাতীয় ইস্যুতে আন্দোলন নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। এ জন্য নতুন নতুন ইস্যুও জন্য অপেক্ষা করছে দলটি। যখনই কোন নতুন ইস্যু পেয়ে যাবে সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করবে তারা। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। এ জন্য সারাদেশে একক প্রার্থী দিচ্ছে দলটি। তবে এ নির্বাচনে কোন কারচুপি হলে এই ইস্যুতেও বিএনপি আন্দোলন করবে। আর নতুন কোন ইস্যু না পেলে সভা-সমাবেশসহ স্বাভাবিক কর্মসূচী দিয়ে দলের সর্বস্তরেরর নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করে যাবে।

দলকে চাঙ্গা করতে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির ইউনিট কমিটিগুলো গঠনের পাশাপাশি দলের জাতীয় কাউন্সিলও করতে চায় বিএনপি। যদিও গত বছর কয়েক দফা চেষ্টা করেও বিএনপি জাতীয় কাউন্সিল করতে পারেনি। তবে এবার জাতীয় কাউন্সিল করার জন্যই দ্রুত নিজ নিজ এলাকার কমিটিগুলো গঠন করতে জেলা কমিটির নেতাদের প্রতি কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকেও ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিএনপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা যে সব নেতা দলীয় কর্মকা-ে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে না তাদের অধিক সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড। এই তাগিদের পর কাজ না হলে নিষ্ক্রিয় নেতাদের পরবর্তী কমিটিতে আর রাখা হবে না। আলাপকালে বিএনপির এক তৃণমূল পর্যায়ের নেতা জনকণ্ঠকে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে দলের সিনিয়র নেতারা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে যেভাবে পালিয়ে গেছেন তারপর একটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলন সফল হতে পারে না। দলের সিনিয়র নেতারা আন্দোলনের ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারবেন না। কারণ সিনিয়র নেতারা যখন পালিয়ে বেড়ায় তখন তৃণমূল নেতারা পুলিশের গুলির মুখে মাঠে থাকে কি করে। এখন আবার দেশব্যাপী চলছে ধরপাকড়। এ অবস্থায় দলের কোন নেতাকর্মী মাঠে নামতে সাহস করবে না। তাই বিএনপিকে আন্দোলনে যেতে হলে কিছুটা সময় নিয়ে আন্দোলনের নতুন ইস্যুর সন্ধান করতে হবে। সেই সঙ্গে দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে।

বিএনপির আরেক তৃণমূল নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, যেভাবেই হোক একটি নির্বাচন করে নতুন সরকার ক্ষমতা নিয়েছে। এ সরকার কি করে তা দেখার জন্য সময় দিতে হবে। তারপর সরকারের কোন ব্যর্থতা পেলে সেই ইস্যু নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে হবে। আর পুরনো ইস্যুতে আন্দোলন করলে সে আন্দোলন হালে পানি পাবে না। এ ছাড়া দলের সিনিয়র নেতাদের এখন দল পরিচালনার ব্যাপারে ভেবে-চিন্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইমোশনাল হয়ে আন্দোলনের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিলে তা বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে। আন্দোলনসহ যাই করা হোক না কেন তা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়।

জানা যায়, আন্দোলনের নতুন কোন ইস্যু হাতের নাগালে আসার আগে নিয়মিত সভ-সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বিভিন্ন জেলা সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিশেষ করে যে সব এলাকায় সংখ্যালঘুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে সব এলাকাগুলো সফরের ব্যাপারে খালেদা জিয়া অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু এলাকা পরিদর্শনে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে ৪টি কমিটি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ৪টি কমিটি ৪টি রিপোর্ট তৈরি করে বিএনপি হাইকমান্ডের কাছে জমা দেবেন। আর এ ৪টি রিপোর্টের ভিত্তিতে বিএনপি একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে এ রিপোর্টটি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠাবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিসহ নতুন ইস্যুতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি। সেই সঙ্গে সরকারের সঙ্গে সংলাপ করে সমঝোতার চেষ্টাও চালাবে। একতরফা নির্বাচনের পর যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা দেশ পরিচালনায় একনায়কতন্ত্র চালাবে। এর ফলে তারা অনেক ‘স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেবে। যা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে। এর ফলে আমাদের হাতে নতুন নতুন ইস্যু এসে যাবে। এসব ইস্যুতে আমরা আন্দোলন চাঙ্গা করব। আর আন্দোলন করেই আমরা আমাদের দাবি আদায় করে নেব।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যুদ্ধে যেভাবে মাঝখানে বিরতি হয় সেভাবেই আমরা এখন আমাদের আন্দোলনে বিরতিতে আছি। তবে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আবারও আমরা আন্দোলন জোরদার করব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

মিতক্ষরা বলেছেন: "বিএনপির আরেক তৃণমূল নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, যেভাবেই হোক একটি নির্বাচন করে নতুন সরকার ক্ষমতা নিয়েছে। এ সরকার কি করে তা দেখার জন্য সময় দিতে হবে। তারপর সরকারের কোন ব্যর্থতা পেলে সেই ইস্যু নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে হবে। আর পুরনো ইস্যুতে আন্দোলন করলে সে আন্দোলন হালে পানি পাবে না। "

বিএনপির কোন গবেট নেতার কথা এটি? ৫ই জানুয়ারীতে কোন নির্বাচন হয় নি। পুরোনো সরকারই গদি আকড়ে রয়েছে। সুতরাং পুরোনো ইস্যু গুলো মোটেও তামাদি হয় নি। সেসব ইস্যুতে জনসমর্থন ছিল বলেই নির্বাচন হতে পারেনি। প্রবীন সাংবাদিক এবিএম মুসা ঠাট্টা করে হাসিনাকে লিখেছিলেন "গনপ্রজাতন্ত্রী ঢাকার প্রধানমন্ত্রী"। ৫ ই জানুয়ারীর নির্বাচনের কারনে সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ - সেটা ভাবা বোকামি।


আন্দোলন কথাটি একটি গভীর তাৎপর্যবহ শব্দ। সরকারবিরোধী আন্দোলনের কৌশল বিএনপিকে বের করতে হবে। বিএনপি একটি নিয়মতান্ত্রিক দল বিধায় তাকে সেভাবেই আন্দোলন করতে হবে। এই আন্দোলনের চরিত্রকে গনতান্ত্রিক এবং জনমূখী হতে হবে। তাতে সরকার পতনে কিছুটা দেরী হলেও হতে পারে। কিন্তু রাজনীতির লাভ ক্ষতির বিষয়টি তাৎক্ষনিক নয়, বরং সুদূর প্রসারী। ৬৯ এ সবাই ধরেই নিয়েছিল আইয়ুব শাহীর পতন আসন্ন। কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় আসে আরো বেশ কিছুদিন পরে। এই মুহুর্তে বিএনপির রাজনীতির স্বল্প মেয়াদী কৌশল বের করাটা দলটির জন্য বেশ চ্যালেন্জ্ঞিং বিশেষত যেখানে যৌথ বাহিনী সাড়াশি অভিযানের মূল টার্গেট বিএনপির নেতা কর্মীরা। যৌথ বাহিনীর অভিযান বিষয়ে বিএনপির উচিত কালক্ষেপন না করে দেশী বিদেশী মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহায়তা চাওয়া এবং ভিকটিম পরিবারকে দ্রুত সহায়তার ব্যবস্থা করা। অন্য বিষয়গুলো আপাতত মূলতবি রেখে নেতা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি এই মুহুর্তে অগ্রাধিকার পাওয়া প্রয়োজন।

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৪২

মো ঃ আবু সাঈদ বলেছেন:

নতুন ইসু অভাব হইবে না..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.