নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাবাশ শিবির তোমরা আছো বলে আমাদের এ কলঙ্কিত অর্জন

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৩৮

১৯৬৪ সালে গঠিত কলম্বিয়ার বামপন্থী গেরিলা সংগঠন ফার্কের সদস্যসংখ্যা ১৩ হাজার ৮০০, যার প্রায় অর্ধেক সশস্ত্র। মুক্তিপণ, স্বর্ণ ও মাদক চোরাচালানের টাকায় পরিচালিত সংগঠনটি কলম্বিয়াকে বামপন্থী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ৫০ বছর ধরে লড়াই করছে। দেশটির সরকার ও ফার্ক গেরিলাদের মধ্যে যুদ্ধে প্রতিবছর প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এলাকাছাড়া হতে বাধ্য হয় বহু মানুষ।

ভয়ংকর ওই সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় আছে। তবে এর আগে কোনো দেশেরই তালিকায় না থাকা বাংলাদেশের ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের নৃশংস কর্মকাণ্ডের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় ৩ নম্বর অবস্থানে উঠে এসেছে। ফলে তারা পেছনে ফেলেছে কলম্বিয়ার ফার্ক, সোমালিয়ার আল-শাবাব, ইরাকের আল-কায়েদা ও ভারতের মাওবাদীদের মতো ভয়ংকর সংগঠনগুলোকে।

ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে ২০১৩ সালের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে, যে বছর শিবির তার প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে বেশি সহিংসতায় লিপ্ত ছিল। বাংলাদেশজুড়ে এদের একক নৈরাজ্যে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫২ জন মানুষ।

‘গ্লোবাল টেররিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি অ্যাটাক ইনডেক্স-২০১৩’ শীর্ষক ওই বার্ষিক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘আইএইচএস জেন্স টেররিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি সেন্টার’ ২০১৩ সালে সবচেয়ে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় ৩ নম্বরে রেখেছে শিবিরকে। আইএইচএস ইনকরপোরেশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনো অনলাইনে প্রকাশ করেনি। শুধু একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে অন্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুটা উল্লেখ থাকলেও শিবির সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। শিবির সম্পর্কে তাদের কাছে থাকা বিস্তারিত তথ্য চেয়ে কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। তবে বাংলাদেশে শিবিরের ২০১৩ সালের কর্মকাণ্ড এবং তালিকায় থাকা বিশ্বের অন্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড তুলনা করলে তালিকার ৩ নম্বরে শিবিরের নাম থাকা মোটেও অযৌক্তিক নয়।

২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলগতভাবে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন শিবিরের ২৪ দিনের হরতাল ও অন্যান্য সহিংসতায় নিহত ১৫২ জনের মধ্যে সাত পুলিশ সদস্যও আছেন। আহত কয়েক হাজারের বেশির ভাগই নিরীহ। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সাক্ষী ও তাঁদের পরিবারের সাত সদস্য খুন হয়েছে তাদের হাতে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার এ বিষয়ে বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানটি ওই তালিকা করেছে তারা তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই শিবিরকে ৩ নম্বরে রেখেছে। শিবির ২০১৩ সালে যে সহিংসতা ও সন্ত্রাস করেছে তার সাক্ষী বাংলাদেশের মানুষ। সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর থেকে থানায় হামলা, পুলিশ সদস্য হত্যা, নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা, আগুন দেওয়া, রেললাইন উপড়ে ফেলার তথ্য তারা সংগ্রহ করেছে। সুতরাং ওই তালিকা যথার্থ।’



ফার্ক বা অন্যান্য জঙ্গিবাদী সংগঠনকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করলেও শিবিরকে সেই দৃষ্টিতে দেখে না কেন- জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সব তথ্যই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে। হরকাতুল জিহাদ বা জেএমবির মতো সংগঠনগুলো যে শিবিরেরই সহযোগী তা আমেরিকাও জানে। তবু তারা জামায়াতকে নরম দৃষ্টিতে দেখে।’

‘জেন্স টেরোরিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি সেন্টার’ জেন্স ইনফরমেশন গ্রুপের একটি সংস্থা। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানটিকে ২০০৭ সালে ‘আইএইচএস ইনকরপোরেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়। এদের কাজ হলো তথ্য ও মতামত প্রদান করা। নভোযান ও বিমান, গাড়ি, রাসায়নিক, জ্বালানি, আর্থিক, সমুদ্র ও প্রযুক্তি খাতের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাছ থেকে তথ্য ও মতামত নেয়। প্রায় ৫০ বছর ধরে আইএইচএস ইনকরপোরেশন এই কাজ করে আসছে।

শিবিরের ওপর কড়া নজরদারি সব সময়ই রাখে পুলিশ। তবে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় নাম ওঠা ও জেএমবির সক্রিয়তার পর আরো বেশি সতর্ক পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, শিবির আগে থেকেই সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত। দেশে তারা ব্যাপক নাশকতার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এখন এরা আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় পুলিশি নজরদারি আরো বাড়ানো হয়েছে।

ভয়ংকরদেরও ছাড়িয়ে শিবির: যেসব ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠনকে পেছনে ফেলে শিবির ৩ নম্বর অবস্থানে এসেছে সেগুলোও ভয়ংকর। তবে ওই সব দেশের সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিরোধের ফলে ওই সব সংগঠন শক্তি খুইয়েছে। অন্যদিকে শিবির যেকোনো সময়ের তুলনায় ২০১৩ সালে ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) সে দেশের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়। নিষিদ্ধ ওই সংগঠন ২০০৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) জনযুদ্ধ ও ভারতের মাওবাদী কমিউনিস্ট সেন্টার মিলিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখণ্ড, আসামসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এর শক্ত অবস্থান আছে। তবে সরকারের কড়া অভিযানের মুখে মাওবাদীরা অনেকটাই কোণঠাসা। ফলে তাদের সদস্যসংখ্যা দুই হাজারের মতো কমে এখন আট থেকে ৯ হাজারে নেমেছে। আইএইচএসের তালিকায় সংগঠনটির অবস্থান শিবিরের পরে, ৪ নম্বরে।

আল-কায়েদা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন। ইরাকে এর শক্ত অবস্থান আছে। ২০১৩ সালে ‘আল-কায়েদা, ইরাক’ আগের বছরের চেয়ে সক্রিয় ছিল বলে উঠে এসেছে ‘গ্লোবাল টেরোরিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি অ্যাটাক ইনডেক্স-২০১৩’ প্রতিবেদনে। গত বছর সংগঠনটি ২০৭টি হামলা চালিয়েছে, আগের বছর যা ছিল ৭৯। তবুও এটি ১০ সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় ৫ নম্বর অবস্থান পেয়েছে।

‘হরকাত আল-শাবাব আল মুজাহিদিন’ বা ‘আল-শাবাব’ সোমালিয়ার ইসলামী জঙ্গি সংগঠন। গত বছর কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির শপিং মলে হামলায় এরা জড়িত, যে ঘটনায় ৬৯ জন নিহত হয়। ২০০৬ সালে সোমালিয়া সরকারের সমর্থনপুষ্ট ইথিওপিয়ান সেনাদের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ব্যাপক পরিচিতি পায় সংগঠনটি। এই জঙ্গিগোষ্ঠী সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু কয়েক মাসের জন্য দখল করে নিয়েছিল। এত দিনে বেশ দুর্বল হয়ে পড়লেও দক্ষিণের কিছু পল্লী এলাকায় আল-শাবাব শক্তি ধরে রেখেছে। আইএইচএসের তালিকায় এদের অবস্থান ৬ নম্বরে।

তালিকায় শিবিরের পরে থাকা বাকি সংগঠনগুলো হলো : ৭. কলম্বিয়ার ফার্ক, ৮. ফিলিপাইনের নিউ পিপলস আর্মি, ৯. সিরিয়ার জাবাত আল নুসরা ও ১০. ইউনিফাইড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল।

নিউ পিপলস আর্মি ফিলিপাইনের কমিউনিস্ট পার্টির সশস্ত্র শাখা। এটি ১৯৬৯ সালে গঠিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এর শক্তি কমে গেছে। ২০০৮ সালের এ বিশ্লেষণে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, নিউ পিপলস আর্মির সদস্যসংখ্যা আশির দশকের ২৬ হাজার থেকে কমে ওই বছর পাঁচ হাজারের নিচে নেমে গিয়েছে। আর দেশটির ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ১০টিতে তাদের লড়াই চলছে।

জাবাত আল নুসরা সিরিয়ায় আল-কায়েদার সহযোগী। তাদের সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার। ‘ইউনিফাইড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল’ নেপালের একটি মাওবাদী দল। বর্তমানে তারা অস্ত্র ছেড়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতি করছে। তালিকায় থাকা প্রথম দুটি সংগঠন হলো ১. থাইল্যান্ডের বারিসান রিভিলিউসি ন্যাশনাল ও ২. তালেবান।

২০১৩ সালে নজিরবিহীন সহিংসতা শিবিরের : পাকিস্তান আমলে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠনের নাম ছিল ‘পাকিস্তান ছাত্রসংঘ’। ১৯৭৭ সালে ছাত্রসংঘ ‘ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির কারণে শিবির দরিদ্র মানুষের সন্তান ও মাদ্রাসাছাত্রদের দলে ভেড়াতে পারে। শিবির কর্মীদের পড়াশোনায় সহায়তা দেয়। পাশাপাশি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে শিবিরকর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তাও আছে। ফলে শিবিরের কর্মী সংকট হয় না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে তারা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে দলগতভাবে যুক্ত জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন শিবির আরো নানা কুকর্মে যুক্ত। বিরোধী ছাত্রদের রগ কেটে দেওয়ার মাধ্যমে তারা ‘রগকাটা’ শিবির পরিচিতি পায়। পাশাপাশি অস্ত্রধারী ক্যাডার রাজনীতি, পরিকল্পিতভাবে খুন, শিক্ষক হত্যাসহ নানা কারণে আলোচিত এরা। ২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত নেতাদের বাঁচাতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে শিবির। ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর দেশজুড়ে এত বেশি সহিংসতা আর কখনো করেনি শিবির। ফলে তাদের নাম উঠেছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র বা বাংলাদেশে এটি এখনো নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়নি।

২০১৩ সালে শিবিরের সহিংসতা ব্যপকভাবে শুরু হয়েছিল জানুয়ারির শেষ দিন থেকে। ঝটিকা মিছিল বা ঘূর্ণি সন্ত্রাস প্রতি সপ্তাহেই চালাত তারা। তবে ৩১ জানুয়ারি দেশজুড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠন করা ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে নেতাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াত হরতাল পালন করে। এতে সহিংসতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন জামায়াতকর্মী। ফেব্রুয়ারি মাসে দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ভয়াবহ সহিংসতা শুরু করে সংগঠনটি। ওই সময় গুজব ছড়িয়ে গ্রামবাসীকে নিয়ে থানায় হামলা, সরকারি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়াসহ যত রকমের সহিংসতা আছে তার সবই চালায় শিবির।

সড়কপথের পাশাপাশি তাদের নাশকতার বড় লক্ষ্য ছিল রেলপথ। হরতালে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন, রেলপথের ফিশপ্লেট ও স্লিপার তুলে ফেলার পাশাপাশি স্টেশনে থেমে থাকা রেলে আগুন দেওয়াও বাদ দেয়নি দলটির কর্মীরা। তাদের নাশকতায় যানবাহন ও সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

- See more at: Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৫৭

নিরীহ বালক বলেছেন: ভাই , একটা লিংক দিবেন ??? কইত্তে পাইসেন দেখতাম :D :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.