![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশ জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। সেসময় বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও নাদিম মোস্তফার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাই-শায়খ আবদুর রহমানরা রাজশাহী অঞ্চলে তালেবানি রাষ্ট্র কায়েমের এক ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেছিল। অভিযোগ রয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল হাওয়া ভবনের। এমনও শোনা গিয়েছিল যে, তখন বাংলা ভাইয়ের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই টেলিফোনে কথা হতো তারেক রহমানের। বাংলা ভাই মামা বলে সম্বোধন করতো তারেক রহমানকে। জঙ্গিরা তখন সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর আর্থিক সহযোগিতায়। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে জঙ্গি উত্থানের শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকা অবস্থায় তিনি বলেছিলেন, বাংলার মাটিকে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত হতে দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি তাঁর অঙ্গীকারে বদ্ধপরিকর থাকেন। ফলশ্রুতিতে মহাজোট সরকারের পুরো পাঁচ বছরে দেশে জঙ্গি তৎপরতা ছিল শূন্যের কোটায়। বাংলা ভাই-শায়খ আবদুর রহমানসহ ছয় জঙ্গির ফাঁসি হওয়ার পর মৃত্যুদ- ও যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত অন্তত ২৭ জঙ্গি বন্দি ছিল দেশের বিভিন্ন কারাগারে। ২০১৩ সাল জুড়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যস্ত থাকায় সরকারও ব্যস্ত থাকে এই দুই জোটকে নিয়ে। জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর আন্দোলনে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখলেও তারা ঠিকই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি জঙ্গিদের সঙ্গে। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর আন্দোলন ম্রিয়মান হয়ে পড়ায় বিষয়টিকে চাঙ্গা করার জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল একটি ব্রেকথ্রুর। সেটিই তারা ঘটায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে তিন জঙ্গিকে ছিনতাই করে। উদ্দেশ্য, ছিনতাই করা জঙ্গিদের দিয়ে আবারো সারা দেশে নাশকতার পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলা।
কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই জানিয়ে দেন বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই হবে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। দেশের প্রতিটি মানুষই বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনার সরকার আগামী পাঁচ বছরে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ সম্পন্ন করবে তেমনি দেশ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকেও নির্মূল করবে।
জাতীয় সংসদে ক্ষোভ
ফিল্মি স্টাইলে জঙ্গি হামলা চালিয়ে তিন শীর্ষ জঙ্গি সন্ত্রাসীকে ছিনতাই, নতুন করে জঙ্গি-সন্ত্রাসী তৎপরতা এবং এসব ঘটনায় বিএনপির অশুভ তৎপরতা নিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এসব জঙ্গি তৎপরতায় বিএনপি-জামায়াত সরাসরি জড়িত দাবি করে তাঁরা অবিলম্বে বিএনপি-জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, জঙ্গি অর্থায়নের দায়ে ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।
সরকার ও বিরোধী দলের সিনিয়র নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াত-জেএমবি-তালেবান-আল কায়েদা সবই জঙ্গি সংগঠন। আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরির বিবৃতি আর বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনেই বাংলাদেশের জঙ্গিরা নতুন করে উৎসাহিত হচ্ছে, ত্রিশালে এমন পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালাতে সাহস পেয়েছে। গণতান্ত্রিক দলের সুযোগ নিয়ে বিএনপি জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে, যা দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই এমন জঙ্গি তৎপরতার নেপথ্যে যত বড় শক্তিই জড়িত থাকুক না কেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জড়িত থাকলে তাঁকেও দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ত্রিশালের জঙ্গি হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, খালেদা জিয়া সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে দেশকে জঙ্গি-সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন তার প্রমাণ রয়েছে। চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার হলেও জঙ্গিদের হাতে তৎকালীন সরকার ওই চালান থেকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। বিএনপির অনেক নেতা ওই সময় জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ত্রিশালে জঙ্গি হামলায় এক পুলিশ মারা গেল, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীররা একটি কথাও বলেন না। আল কায়েদার প্রধান জাওয়াহিরির বিবৃতিও সমর্থন করেছে বিএনপি। ছাত্রশিবির বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন, খালেদা জিয়া এদের নিয়েই চলেন। বাংলাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না। বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের সহযোগিতায় আবার জঙ্গি তৎপরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তারা সফল হবে না।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ই জেএমবির উত্থান। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরির বাংলাদেশ সম্পর্কে দেওয়া বিবৃতিতে বাংলাদেশের জঙ্গিরা নতুন করে উৎসাহিত হয়ে উঠেছে। ত্রিশালে ফিল্মি স্টাইলে আক্রমণ চালিয়ে একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে তিন শীর্ষ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। অথচ এদের সমর্থন জানিয়েই বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীররা বক্তব্য দিচ্ছেন, মিথ্যাচার করছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত-শিবির-জেএমবি-আল কায়েদা একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশকে অকার্যকর তালেবান রাষ্ট্র বানানোই এদের উদ্দেশ্যে। এরা সব জঙ্গি সংগঠন। এরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন হতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ঠাঁই না হয়। তিনি বলেন, আল কায়েদা বাহিনীর প্রধান জাওয়াহিরি বিএনপি-জামায়াতের আমলে ৩ বার বাংলাদেশে এসেছিলেন। আল কায়েদা প্রধান এবং খালেদা জিয়ার বিবৃতিও প্রায় অভিন্ন। বিএনপির শক্তি হচ্ছে, জামায়াত-শিবির। সেই শিবির বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ জঙ্গি-সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকায় উঠে এসেছে। তাদের নিয়ে খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে তালেবান-আল কায়েদার রাষ্ট্র বানাতে চান।
হেফাজতের সঙ্গে কিছু বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তার বৈঠকের তীব্র সমালোচনা করে শেখ সেলিম বলেন, এদের সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকরা কী শলাপরামর্শ করে? যারা আমাদের স্বাধীনতা মানে না, জঙ্গি-সন্ত্রাস চালায়, তাদের সঙ্গে এতো গোপন বৈঠক কেন? জাওয়াহিরির বক্তব্য আর বিএনপির ইন্ধনেই ত্রিশালে এই জঙ্গি সন্ত্রাস হয়েছে। এর সঙ্গে যত বড়ই শক্তি থাকুক, খালেদা জিয়াও জড়িত থাকলে অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে জাওয়াহিরির বাংলাদেশে আসার প্রমাণ সংসদে দিলেন মতিয়া চৌধুরী
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরির ৩ বার বাংলাদেশে এসে কয়েক মাস অবস্থানের তথ্য-প্রমাণ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি জঙ্গি-সন্ত্রাসী দল ও সংগঠনের সঙ্গে কিছু বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তার গোপন বৈঠকের ব্যাপারেও তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিএনপি জঙ্গিদের মদদ দিয়ে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে, তাদের মাধ্যমে সহিংস কর্মকা- চালিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, তালেবান ও আলকায়েদার সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নতুন কিছু নয়, লুকানো কিছু না।
জাতীয় সংসদে মতিয়া চৌধুরী বলেন, অনেক দূতাবাসের কর্মকর্তারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন আমার মনে পড়ে যায়Ñ‘হাঁসে ডিম পাড়ে, গুইসাপ না না করে, আসলে ডিম খাওয়ার কুয়ারা করে’। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ওইসব বিদেশি শক্তি জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে আমাদের সুবচন শোনায়। কিন্তু তারা এসব জঙ্গি সংগঠনকে মদদ দেয়, আবার এসব জঙ্গি বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অভাবও দেখি না। তারা আসলে কি চান সেটা দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট।
আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তা ও পরবর্তীতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি হামলায় পুলিশ নিহত ও জেএমবির শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ছিনিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী বলেন, কিছু দিন আগে বাংলাদেশ সম্পর্কে আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আমরা কিছু কথা বলি। আমাদের কথায় তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরাই (আওয়ামী লীগ) নাকি শুধু বলি বিএনপির আমলে বাংলাদেশে জাওয়াহিরির আগমন সম্পর্কে। আর কেউ নাকি বলে না জাওয়াহিরির আগমন প্রসঙ্গে, কেউ কিছু প্রকাশও করেনি।
এ সময় বিশ্বের প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিনের প্রকাশিত একটি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ২০০২ সালে ২০ অক্টোবর টাইম ম্যাগাজিনে সাংবাদিক এলেক্স প্যারি একটি প্রতিবেদন লিখেছেন। এতে বলা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময় ২০০১ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ১৫০ জন আফগান তালেবান ও আল কায়েদা জঙ্গি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তালেবান শীর্ষ নেতা ফজলে করিম ভারতের পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হলে তিনি স্বীকার করেন ২১ ডিসেম্বর আরও এক শ’ তালেবান ও আল কায়েদা জঙ্গি চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, এই রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ওই সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূতাবাসের এক কূটনীতিকের বরাত দিয়ে বলা হয়, বিন লাদেনের সেকেন্ড ম্যান মিশরীয় নাগরিক জাওয়াহিরি চট্টগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং এখানে কয়েক মাস থাকেন। ধারণা করা হয় জাওয়াহিরি মার্চ মাসে ঢাকায় আসেন এবং একজন মৌলবাদী নেতার বাড়িতে অবস্থান করেন। তবে তার বাংলাদেশ ত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। টাইম রিপোর্টে আরও বলা হয়, ডিজিএফআই’র একটি সূত্র জানিয়েছে আল কায়েদা নেতা জাওয়াহিরি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় বার্মা দিয়ে চলে যান। বাংলাদেশে জঙ্গিদের অবস্থান আছে, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হলে তারা রাগান্বিত হয়। যেহেতু ২০০১ সালে অক্টোবর মাসের নির্বাচনে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন এবং তার জোটের দুটি দল তালেবানদের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং একটি দলের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে তালেবান আল কায়েদাদের সম্পর্ক রয়েছে। পত্রিকাটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া নিজে দু’বার অস্বীকার করলেও তার প্রশাসন সরকারের মধ্যে তালেবান ও আল কায়েদা সদস্য থাকার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানও উদ্বেগ প্রকাশ করে টাইমকে বলেন, দলের মধ্যে এরা থাকলে (তালেবান) কম ক্ষতিকর। কারণ তারা দলের ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকবে।
জামায়াত-শিবির ও জঙ্গি সম্পৃক্ততা
কারাগারে বন্দি ও জামিনপ্রাপ্ত জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার অভিমত। গোয়েন্দাদের ধারণা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধে বোমা এবং বিভিন্ন নাশকতার সরঞ্জাম দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে সহযোগিতা করেছে একাধিক জঙ্গি সংগঠন। ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে শীর্ষ তিন জঙ্গি নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে জামায়াত-শিবির জঙ্গিদের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রেখেছে। আন্তর্জাতিক একটি মাধ্যমে বিশ্বের ১০টি সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর তালিকায় ৩ নম্বরে থাকা ছাত্রশিবির এই ঘটনা ঘটিয়েছে নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে। প্রিজনভ্যানে হামলাকারীরা ২০ লাখ টাকায় দুটি মাইক্রোবাস কিনেছিল। অস্ত্র-গুলি ও বোমা সরঞ্জাম কিনতেও অনেক টাকার প্রয়োজন হয়েছিল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জেএমবি সদস্যরা এতো টাকা কোথায় পেল? নিশ্চয় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের অর্থ জোগান দিয়েছে। এসব কারণেই ওই হামলায় জামায়াত-শিবির সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর ফলশ্রুতিতে জামিনপ্রাপ্ত ও মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের গ্রেপ্তার অভিযানের পাশাপাশি স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় ছিনতাই হওয়া জঙ্গি ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যেতে পারে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। এছাড়া জঙ্গিরা কারাগার থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত বলেই গোয়েন্দাদের ধারণা।
২০১৩ সালের মাঝামাঝি কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পায় জেএমবি নেতা ফয়সাল ও বোমারু মতিন ওরফে ডাকাত মতিন। জেলখানায় থাকতে তারা জামায়াত-শিবিরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। পরে জেল থেকে বের হয়ে এসে তারা জামায়াত-শিবিরের সহিংস কর্মসূচিতে অংশ নেয়। বিশেষ করে সহিংসতার জন্য জামায়াত-শিবিরের যত বোমা দরকার হতো তার বেশিরভাগই বোমারু মতিন ও ফয়সাল সরবরাহ করত। বিকাশের মাধ্যমে জামায়াত-শিবির নেতারা বোমা বানানোর টাকা সরবরাহ করত। গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার হাসিবুল হাসান জানান, ১০ থেকে ১২ জনের একটি টিম জঙ্গি ছিনতাই অপারেশনে অংশ নিয়েছিল। এ ঘটনায় জেএমবি সদস্যরাই জড়িত বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের নেতারা অপারেশনে অংশ নিয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া না গেলেও অর্থ সরবরাহের বিষয়ে এ সংগঠনটিকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের শিকড় জামায়াত-শিবিরে গাঁথা। এসব সংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। জামায়াত-শিবিরের যেসব কর্মী অধিক উগ্র তারা পরে জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়। তাই জামায়াত-শিবিরের প্রতি তাদের সহযোগিতার মনোভাব কাজ করে। সাম্প্রতিক সহিংসতায় জামায়াত-শিবিরকে জঙ্গি সংগঠনগুলো বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করেছে বলে গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। ময়মনসিংহের ত্রিশালের জঙ্গি ছিনতাইয়ে জামায়াত-শিবিরের একটি অংশের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বাংলাদেশে তালেবানি আগ্রাসন
বাংলাদেশে তালেবানি আগ্রাসন ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। এই আগ্রাসনের করালগ্রাসে বাংলাদেশে বিদ্যমান এক ধরণের মাদ্রাসার ঐতিহ্য থেকে মানবিকতা দূর হয়ে হিংস্রতা স্থান পাচ্ছে। তালেবানি আগ্রাসন মানবিকতার ধারণাকে মাদ্রাসা ও মসজিদ থেকে উচ্ছেদ করেছে।
বাংলাদেশে তালেবানি ধ্যান-ধারণা পোষণ করে এমন বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম এদের মধ্যে অন্যতম। আর এদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে। এসব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। বাংলাদেশে এখন, যেসব সরকারবিরোধী রাজনৈতি সংগঠন আন্দোলন তৈরির চেষ্টা করছে, এসব আন্দোলনের প্রথম বলি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা ব্যবস্থায় বার বার আঘাত করা হচ্ছে। এই অপপ্রয়াস থেমে নেই। চলছে পরীক্ষা বন্ধ করার অপচেষ্টা। এ উপলক্ষ্যে সাধারণ মানুষ ও সাধারণ মানুষের সন্তানসন্ততি লেখাপড়ার দিকে দুহাত বাড়িয়ে রেখেছে, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতে ইসলাম আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট করে পরীক্ষা বন্ধকরণের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সার্বিক পরিবেশ নষ্ট করে চলেছে। পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে, স্কুল পুড়িয়ে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে।
নতুন প্রজন্ম এখন একুশের আন্দোলন, আধুনিক লেখাপড়ার আন্দোলন, বাংলা ভাষার চর্চার আন্দোলন করে যাচ্ছে। তরুণদের এসব আন্দোলনের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজত। এরা এমনটা করছে তালেবানি স্ট্রাটেজির কারণে। আধুনিক শিক্ষার আন্দোলন রুদ্ধ করে মানুষকে পশ্চাদমুখী ও অনগ্রসর করে রাখাই হলো তালেবানি স্ট্রাটেজি। এর প্রমাণ আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরির বাংলাদেশ সম্পর্কে সাম্প্রতিক ভিডিও বার্তা এবং প্রিজন ভ্যান থেকে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জঙ্গি ছিনতাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩
সাজিদনজরুল বলেছেন: india bangladesher putki marte jeno subidha hoy and dadader akada sunate jeno jala na kore tar jonno credit e tel kinna putki te lagaya dadar kole boso. Hasinar dalal