নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোশরেফা মিশুরা চক্রান্তকারী

০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে অনেকেই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করছেন। সম্প্রতি তোবা গ্রুপের শ্রমিকদের অনশন ও গার্মেন্টে অনির্দিষ্টকালে ধর্মঘট আহ্বান করায় ষড়যন্ত্রের বিষয়টি আবার সামনে চলে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমনই একটি নমুনা হলো জার্মান সাংবাদিক থমাসের সঙ্গে গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি মোশরেফা মিশুর ফোনালাপ।



গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি মোশরেফা মিশু জার্মান সাংবাদিক থমাসকে বলেন, মানুষ ঐক্যবদ্ধ। গোটা জাতি সরকার ও বিজিএমইএকে ঘৃণা জানাচ্ছে। জার্মানি থেকে থমাস নামে একজন সাংবাদিক তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এমন মন্তব্য করেন। থমাসকে মিশু বলেন, ৯ দিন ধরে ১ হাজার ৬০০ শ্রমিক নিয়ে তারা অনশন করছেন এবং অনশন করতে তারা বাধ্য হয়েছেন কারণ মালিক তিন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস দেয়নি। শ্রমিকরা ক্ষুধার্ত। এই শ্রমিকরা বিশ্বকাপে জার্মানির জন্যও জার্সি বানিয়েছে_ এমন তথ্য দিয়ে মিশু থমাসকে অনুরোধ করেন যে শ্রমিকদের এই দুর্দশা তিনি যেন সংবাদপত্রের মাধ্যমে ইউরোপ ও আমেরিকার জনগণের কাছে তুলে ধরেন।



বৃহস্পতিবার 'তৈরি পোশাক খাত ও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মোশরেফা মিশুর ষড়যন্ত্র' শীর্ষক একটি ফোনালাপ ইউটিউবে আপলোড করা হয়। আর থমাসের সঙ্গে মিশুর এই কথোপকথন আগের দিন বুধবারের। 'লাল সালাম' দিয়ে থমাস মিশুর সঙ্গে কথোপকথন শেষ করেন।



ফোনালাপের শুরুতেই মিশু বলেন, আমরা অনশনে আছি। তখন থমাস জানতে চান, কতজন শ্রমিক অনশন করছেন? মিশু বলেন, ১ হাজার ৬০০ শ্রমিক। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ নারী শ্রমিক আর ৩০০ পুরুষ শ্রমিক। তারপর মিশু বলেন, বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা অনশন করছে। আমাদের লেবার অর্গানাইজেশন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের নাম তোবা গ্রুপ। তাজরীন ফ্যাশনসের মালিকও এরাই। সব বাম রাজনৈতিক দল, বাম ছাত্র সংগঠন, বাম ধারার প্রগতিশল সব মানুষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের অনশনে সংহতি জানিয়েছেন। তারা আসছেন এবং সংহতি জানিয়ে যাচ্ছেন। আমরা একটা জোট করেছি যার নাম দেয়া হয়েছে তোবা গ্রুপ ওয়ার্কার অ্যাকশন কমিটি। নারী সংগঠনগুলো, বিভিন্ন বাম রাজনৈতিক দল এমনকি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং খুশি কবিরও আমাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং গোটা জাতি সরকার ও বিজিএমইএকে ঘৃণা জানাচ্ছে। আজ ঢাবি শিক্ষকরা প্রতীক অনশন করেছেন।



মিশু থমাসকে আরও বলেন, আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছি। কারণ বেশিরভাগ সময় আমার প্রেসার খুব হাই থাকছে_ ১৭০/১২০। ২০৫ শ্রমিক এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। প্রথম দিন থেকেই আমরা মেডিকেল টিম তৈরি করেছি। দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা ফান্ড জোগাড় করছি শ্রমিকদের জন্য। এসময় থমাস জানতে চান, অনশন কোথায় করছেন আপনারা? মিশু বলেন, ফ্যাক্টরি বিল্ডিংয়েই। এটা উত্তর বাড্ডার হোসেন মার্কেট। ১২ তলা ভনের সপ্তম তলায় আমরা অনশন করছি। গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র সঙ্গে আপনারা আলোচনা করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মিশু বলেন, অনশনে যাওয়ার আগে আমরা তোবা গ্রুপ ও বিজিএমইএকে বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কান দেয়নি। তাই ঈদের আগের দিন আমরা অনশনে যেতে বাধ্য হলাম। আমরা তাদের সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। তারপরও তারা বেতন-বোনাস দেয়নি। শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ'র সঙ্গে আলোচনা করেছি।



শ্রমিকরা ক্ষুধার্ত থাকলেও মালিকরা বিলাসিতা করেন_ এমন অভিযোগ জানিয়ে থমাসকে মিশু বলেন, মালিকরা ঈদে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে নিজেদের জন্য; কিন্তু শ্রমিকরা থাকে ক্ষুধার্ত।



বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এসব শ্রমিক জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের জার্সি বানিয়েছে_ এমন তথ্য জানিয়ে মোশরেফা মিশু বলেন, এসব শ্রমিক বিশ্বকাপে জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার জার্সি বানিয়েছে। আপনি এ বিষয়টি জার্মান জনগণ, ইউরোপের জনগণ এবং বিশ্ববাসীকে জানান যে বিশ্বকাপে কোটি কোটি মানুষ আনন্দ পেয়েছে; কিন্তু আমাদের শ্রমিকরা বেতন পায়নি। এটা খুবই হৃদয়বিদারক। খুবই মর্মান্তিক। খুবই বর্বর।



থমাস এসময় তোবা গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসা করা জার্মান কোম্পানির নাম জানতে চাইলে মিশু নোটবুক দেখে বলতে চান। তখন থমাস বলেন, ই-মেইল করে আমাকে জার্মান কোম্পানির নামটা দিও। এসময় মিশু বলেন, প্লিজ আপনার ই-মেইল আইডি সেন্ড করুন। আমি আপনাকে জার্মান কোম্পানিটির নাম দেব। আপনার সেলফোন নাম্বারটাও দেবেন। তারপর মিশু আবার অনুরোধ করে থমাসকে বলেন, প্লিজ ইউরোপে নিউজটা জানিয়ে দিন, আমেরিকাতেও। আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি থমাসকে বলেন, যতই বলা হোক শ্রমিকরা ভালো আছেন, এটা কিন্তু বোগাস কথা। আমাদের শ্রমিকরা খুবই কষ্টে আছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আমাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে এলেও একজন শিল্প মালিকও আমাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে আসেননি।



সবশেষে থমাস মিশুকে বলেন, আমার ই-মেইল আইডি এবং সেলফোন নাম্বার আপনাকে এসএমস করব। লাল সালাম। প্রত্যুত্তরে মিশুও 'লাল সালাম' দিয়ে ফোন রেখে দেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:১৩

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: কোন সাংবাদিকের কাছে ইন্টারভিউ দিলে, এবং তা সরকারের পক্ষে না গেলেই তা কেন দেশ বিরোধী হবে? আমাদের দেশের সব সরকারই এই ভাবে চিন্তা করে।

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:২৯

ঘাষফুল বলেছেন: Prappo mojuri porisodh korle to eta hotona.

৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬

শফিক আলম বলেছেন: গার্মেন্ট শ্রমিকদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদরা ফায়দা নিতে মুখিয়ে থাকেন, এ কথাটা মিথ্যা নয়। এর আগেও অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে শ্রমিকদের ঘাম-ঝরা পারিশ্রমিক যারা দেয় না তারা পিশাচের অন্তর্ভূক্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.