![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে বিএনপি দোটানায়। দলের একাংশের নেতারা চাচ্ছেন এখনই কঠোর আন্দোলনে গিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করতে। আর আরেক অংশ বাস্তবতার আলোকে এখনই আন্দোলন সফল করা যাবে না মনে করে আগে দল গুছিয়ে আরও সময় নিয়ে তারপর সে পথে এগুতে চায়। এ রকম পরিস্থিতিতে আন্দোলন কর্মসূচী প্রণয়নের ব্যাপারে বিএনপির হাইকমান্ডও দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সিনিয়র নেতাদের মতামত নিতে আজ রাতে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগ যে কঠোর অবস্থানে আছে তাতে এখনই কঠোর আন্দোলনে যাওয়া এত সহজ কাজ নয়। আগে দল গুছিয়ে তার পর স্বাভাবিক কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সংগঠনমুখী করে আস্তে আস্তে আন্দোলনের দিকে যেতে হবে। দলের অপর এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপির সামনে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করে নির্বাচনে যেতে হবে। আর নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে অবশ্যই বিএনপি ক্ষমতায় যাবে।
জানা যায়, ঈদের আগেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দলের ক’জন সিনিয়র নেতাকে কি ধরনের আন্দোলন কর্মসূচী দেয়া যায় তার একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট নেতারা এ ব্যাপারে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রস্তাব পেশ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। কারণ আন্দোলন নিয়ে খোদ দলের নেতাকর্মীরাই দোটানায় থাকায় খালেদা জিয়ার কাছে কি ধরনের প্রস্তাব পেশ করা যায় তা নিয়ে তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকেন।
এদিকে যখন থেকেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা বলতে থাকেন ঠিক তখন থেকেই আওয়ামী লীগ নেতারাও রাজপথে এ আন্দোলন মোকাবেলার কথা বলতে থাকেন। এ নিয়ে ক’দিন ধরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বাগ্যুদ্ধ চললেও তা এখন কিছুটা কমেছে। তবে সরকারী দলের পক্ষ থেকে বিএনপির ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগ এখনও অব্যাহত আছে। শনিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে যে ভুল করেছে তা সংশোধনের জন্য বিএনপিকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ হবে না।
সূত্র মতে, আজ রাতে খালেদা জিয়া বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আন্দোলনের ব্যাপারে সবার মতামত নেবেন। এর পর তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরদিন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়টি তাদের অবহিত করবেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কঠোর কোন আন্দোলন কর্মসূচী এখনই নেয়া হচ্ছে না। তবে আগাম ঘোষণার কারণে মান রক্ষা করতে গতানুগতিক কিছু আন্দোলন কর্মসূচী নেয়া হবে। এর মধ্যে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী থাকতে পারে। এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে জাঁকজমকভাবে অন্তত ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচী পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে কমিটি পুনর্গঠন না হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে সর্বস্তরে এবং অধিকাংশ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেরই হ-য-ব-র-ল অবস্থা। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল শেষে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি ৩৮৬ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের পর থেকেই বিএনপিতে কোন্দলসহ নানামুখী সমস্যা দেখা দেয়। ২০১১ সালের ১৬ মার্চ মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা যাবার পর সংস্কারপন্থী কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় কোন্দল চাঙ্গা হয়ে ওঠে। আর এর ঢেউ যেয়ে লাগে সারাদেশের সকল স্তরে। এর পর ওই বছর ৬ এপ্রিল সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার পর দলে আরেক দফা সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক সিনিয়র নেতাকে ডিঙ্গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব করার বিষয়টি ভালভাবে নিতে পারেননি কেউ কেউ। এ জন্য কোন কোন সিনিয়র নেতা প্রকাশ্যেই ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করতে থাকেন। এখন আবার এ সমস্যাটি বড় হচ্ছে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচন বানচালের ঘোষণা দেন বিএনপি হাইকমান্ড। কিন্তু সারাদেশে আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ঢাকার রাজপথে নামতে দেখা যায়নি বিএনপির কোন সিনিয়র নেতাকেই। বরং সব নেতারা গ্রেফতার এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আত্মগোপনে চলে যান। এ কারণে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়লে বিএনপির আন্দোলন সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। পক্ষান্তরে বিএনপির আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি সমমনা দলকে নিয়ে নির্বাচন করে ফেলে এবং সরকার গঠন করে সারাবিশ্বের সমর্থনও পেয়ে যায়। এর পর বিএনপির নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে আসেন।
কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সিনিয়র নেতাদের প্রতি ক্ষোভ থাকায় দলীয় কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়ে। তবে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে দল গোছানোর উদ্যোগ নেয় বিএনপি হাইকমান্ড। তবে তা করতে গিয়েও হোঁচট খায় বিএনপি। এ কারণে দেশব্যাপী সকল সাংগঠনিক জেলা কমিটি গোছাতে গিয়েও মাঝপথে থামিয়ে দেন খালেদা জিয়া।
বর্তমানে বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে অধিকাংশ জেলায়ই একাধিক কমিটি রয়েছে। আবার কোন কোন জেলায় কোন কমিটিই নেই। বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেরও একই অবস্থা। এ পরিস্থতিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করলে এর পরিণতি কি হবে এ বিষয়টিই দলীয় হাইকমান্ডকে ভাবিয়ে তুলছে। আর এক সময় ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জামায়াতের আন্দোলনের ব্যাপারে যে ক্ষিপ্র গতি ছিল তাও এখন আর দেখা যাচ্ছে না। জামায়াত এখন আন্দোলনের চেয়ে কৌশল প্রয়োগ করে দলের সিনিয়র নেতাদের জীবন রক্ষা করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে। তাই বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনের ব্যাপারে তাদের তেমন আগ্রহ নেই।
এদিকে আন্দোলন শুরুর আগেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর বিভিন্ন স্তরে গ্রুপিং কোন্দালে চাঙ্গা হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী ঢাকা। কিন্তু ঢাকা মহানগর বিএনপিকে আন্দোলনে সক্রিয় করার জন্য ১৮ জুলাই নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হলেও এ কমিটির নেতারা এখন নতুন করে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়েছেন। আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের অসহযোগিতার কারণে সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কিছুই করতে পারছেন না। অপরদিকে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাকে দেশের বাইরে রেখে নতুন কমিটি করায় তিনি এবং তাঁর অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ কারণে তাঁরা এখন সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। ঢাকা মহানগর বিএনপির এই বড় অংশটিকে সক্রিয় না করে বিএনপি কিভাবে আন্দোলন সফল করবে এ নিয়ে দলের মধ্যে ভাবনার শেষ নেই।
ঢাকা মহানগর বিএনপির মতো দলের অন্যান্য স্তরেও একই অবস্থা। এক সময় বিএনপি আন্দোলনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল। কিন্তু ছাত্রদল এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। নেতায় নেতায় দ্বন্দ্বের কারণে এ সংগঠনটি এখন কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের সিংহভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কোন কর্মকা- নেই। এই সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিরাজমান কোন্দলে জের ধরে গত ২ বছরে কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্রদলের কোন কোন নেতা বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করারও দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি হাইকমান্ড নতুন কমিটি ঘোষণার আশ্বাস দিয়েও তা ঝুলিয়ে রাখায় নতুন কমিটিতে ভাল পদের আশায় থাকা নেতারা এখন হতাশ হয়ে পড়ছেন। আর বর্তমান কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতারা মনে করছেন তারা তো বাদই পড়ে যাচ্ছেন তাই আন্দোলনের ঝুঁকি নিয়ে লাভ কি?
বিএনপির আরেক অঙ্গ সংগঠন যুবদলেরও অনেক দিন ধরে নতুন কমিটি হয় হয় অবস্থা। এ কারণে সংগঠনের বর্তমান এবং ভবিষ্যত নেতারা এখনই আন্দোলনের দিকে যেতে চাচ্ছেন না। তারা আগে সংগঠনের পদ-পদবি পেয়ে পরে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে চায়। এ ছাড়া এ সংগঠনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরবের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় এ দ্বন্দ্ব সারাদেশের সর্বস্তরে পৌঁছে গেছে। এ অবস্থায় এ সংগঠনটি আন্দোলনের জন্য অপ্রস্তুত রয়েছে। বিএনপির অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোরও একই অবস্থা। এসব সংগঠনের নেতারা এখন সাংগঠনিক কাজ বাদ দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে বিএনপি হাইকমান্ডকে ম্যানেজ করে পদ রক্ষা করে চলছেন। তাই বিএনপি এখনই আন্দোলনে গেলে তারা সবাই আগের মতো গা বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২| ১০ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: তেলাপোকাও একটা পাখি, ইভা রহমান একজন গায়িকা আর বিএনপি করে আন্দোলন।
বিএনপি আর আন্দোলন - শব্দ দুইটা এক বাক্যের মধ্যে দেখলেও বিরক্তি লাগে।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:১৮
লেখোয়াড় বলেছেন:
যে যেমন ভাবে কাজে করবে সে তেমন ভাবে ফল পাবে যোগ্যতা অনুযায়ী।
তবে বি এন পি জনগণের কাছে আসতে পারছে না।