![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পাকিস্তানের নির্জন কারা প্রকোষ্ঠে বন্দি ছিলেন। যুদ্ধ কিভাবে চলছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্বের কোন ক্ষমতাবান দেশের অবস্থান কী ছিল, তার কোনো কিছু তখন বঙ্গবন্ধুর জানার সুযোগ ছিল না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য দেশদ্রোহিতার অভিযোগে জেলের অভ্যন্তরে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর বিচার শুরু করেছিল। ওই আজ্ঞাবাহী ট্রাইব্যুনাল ইচ্ছা করলে এক মাসের মধ্যে বিচার শেষ করে বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দিতে পারতেন। কিন্তু প্রাপ্ত দলিলে দেখা যায়, ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হয় ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১, যখন পাকিস্তান বুঝতে পারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যায়, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষমতার পালাবদলে ইয়াহিয়ার পরিবর্তে জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতায় আসাতে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির দণ্ডাদেশ আর কার্যকর হয় না। বিলম্বে ফাঁসির আদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা বিষয় বোঝা যায়, যুদ্ধের ৯ মাস পাকিস্তানি শাসকরা সব রকম চেষ্টা করেছে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে একটা আপসরফা করানোর জন্য, যাতে কোনোমতে এ যাত্রায় পাকিস্তান রক্ষা পায়। কিন্তু তাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে শেষ সময়ে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর দিগন্তের মতো সীমাহীন ও সাগরের মতো গভীর অন্তর্দৃষ্টির দ্বারা বুঝতে পেরেছিলেন, নিজের ফাঁসি বা মৃত্যু হলেও বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যাবে, কেউ তা ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এ জন্য অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসে, বিশ্বের সব যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানিদের আপসের সব প্রস্তাব বঙ্গবন্ধু ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবন চরিতকাল স্বল্প, মাত্র ৫৫ বছর। কিন্তু দুনিয়ার সব ব্যক্তিগত লোভ ও প্রাপ্তির উর্ধ্বে উঠে দেশের মাটি ও মানুষকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসার কারণে রাজনীতির মধ্য বয়সেই তিনি গভীর অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী হন।
বঙ্গবন্ধুর এই অন্তর্দৃষ্টির শক্তির বলেই স্বাধীনতার পর অল্প সময়ের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশ আবার উঠে দাঁড়িয়েছে এবং পাহাড় সমান প্রতিকূলতা ও হুমকির মুখে শূন্য হাতে নবজাত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু লন্ডন ও দিল্লি হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসেন। লন্ডনে পৌঁছানোর পর থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সব কিছু জানতে শুরু করেন। লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য কখন ফেরত যাবে। এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। তখন পর্যন্ত ভারত ও ভুটান ব্যতীত আর কোনো রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। হিথের প্রশ্নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হয়তো বুঝে নিলেন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে হলে ও প্রভাবশালী দেশের স্বীকৃতি পেতে হলে ভারতীয় সৈন্য দ্রুত ফেরত যাওয়া প্রয়োজন। সংগত কারণেই এই প্রশ্ন ঘিরে তখন বহুমুখী পারস্পরিক দ্বন্দ্বমূলক সংকট উদয় হওয়ার কথা। ভারতীয় সৈন্য চলে গেলে বহির্দেশীয় আক্রমণ থেকে দেশের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত হবে, যার হুমকি তখনো প্রবলভাবে উপস্থিত। দ্বিতীয়ত্ব, ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হবে। এই রকম জটিল পরিস্থিতি বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব্ব নেওয়ার পর কিভাবে সব কূল রক্ষা করে নবজাত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন, সেটিই আজকের প্রবন্ধের মূল বিষয়। সংকটের সমাধান কিভাবে হয়েছিল তা বোঝার জন্য ওই সময় বাংলাদেশের নিরাপত্তার ওপর যেসব হুমকি ছিল, তার স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রথমে আলোচনা প্রয়োজন। সদ্য স্বাধীন দেশে অর্থাৎ বাহাত্তরের প্রারম্ভে বাংলাদেশের নিরাপত্তার প্রতি হুমকির মাত্রা বোঝার জন্য মুক্তিযুদ্ধের একেবারে শেষপ্রান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরকেন্দ্রিক ঘটনার সামান্য বর্ণনাও দরকার। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার পাকিস্তান রক্ষার সম্ভাব্য দুটি পথ বের করেন। এক. বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয়ের আগেই যুদ্ধ বিরতি ও ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের পক্ষে জাতিসংঘকে ব্যবহার করা। দুই. পঞ্চাশের দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির অজুহাতে সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য বাংলাদেশের উপকূলে সপ্তম নৌবহর মোতায়েন করা। তবে সপ্তম নৌবহরের ব্যবহার নির্ভরশীল ছিল দুটি শর্তের ওপর। প্রথমত, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অন্তত তিন সপ্তাহ নিজ শক্তিতে বাংলাদেশের রণক্ষেত্রে পাকিস্তানকে টিকে থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতের উত্তর সীমান্তে চীনের যুগপৎ তৎপরতা আবশ্যক। যুদ্ধ বিরতির দুটি প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটোর কারণে ভণ্ডুল হওয়ার পর ৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন ফিলিপাইনের উপকূলে অবস্থিত সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন। বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর সর্বাত্মক পতন রোধের জন্য নৌ, বিমান ও স্থল তৎপরতার সম্ভাব্য মিশন দেওয়া হয় সপ্তম নৌবহরকে। ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নকে জানিয়ে দেয়, ভারত যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত না হলে সপ্তম নৌবহর নিয়োগসহ শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ১২ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক চরম হুমকি ভারত উপেক্ষা করার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে পাকিস্তানকে উদ্ধারের জন্য সামরিক হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চীন সরাসরি সামরিক পদক্ষেপে অংশ নেওয়া থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কারণে এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনড় অবস্থানের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ওই সময় আপাতত সপ্তম নৌবহরকে চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
১৯৭২ সালে দেশে ফিরে সরকার গঠনের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশকে গড়ে তোলার মহা কর্মযজ্ঞ কাঁধে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নবজাত একটি শিশু রাষ্ট্র, যাকে গলাটিপে হত্যা করার জন্য বিশ্বের পরাশক্তিসহ দেশের অভ্যন্তরীণ পরাজিত গোষ্ঠী ও পাকিস্তান তখনো উদ্যত, সে অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর আত্মবিশ্বাস ও দূরদৃষ্টিই সেদিন বাংলাদেশকে রক্ষা করেছিল। সপ্তম নৌবহর তো বঙ্গোপসাগরে আছেই। উপরন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে সঙ্গে নিয়ে মহা কূটনৈতিক ষড়যন্ত্রও শুরু করেছে। পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় জামায়াতের তৎকালীন আমির (এখন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৯০ বছর সাজাপ্রাপ্ত) গোলাম আযম বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পাকিস্তান হয়ে লন্ডনে অবস্থান নেন এবং পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্দোলনটি যদি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জনসমর্থন পায় তাহলে ওই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সপ্তম নৌবহরকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলা হবে। এই ভরসায় চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো তখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকে। বাংলাদেশ তখনো জাতিসংঘের সদস্য হতে পারেনি চীনের অসহনীয় বিরোধিতার কারণে। তিন-তিনবার চীন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়েছিল, যাতে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হতে না পারে। আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী সংস্থা ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সব সন্দেহ দূর করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি লন্ডন থেকে ফেরার পথেই সিদ্ধান্ত নেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী ফেরত পাঠানো হবে। ফেরার পথে দিল্লিতে বঙ্গবন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও বিষয়টি অবহিত করেন। এখানে প্রসঙ্গক্রমে ইতিহাস থেকে দু-একটি উদাহরণ দিতে চাই। পঞ্চাশের দশকে কোরিয়া যুদ্ধের জের ধরে কোরিয়া দুই ভাগ হয়ে গেল। যুদ্ধের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে প্রায় এক লাখ আমেরিকান সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় কমিউনিস্ট চীন। আর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নও ছিল পরোক্ষভাবে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে। ১৯৫৩ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনাবাহিনী ও উত্তর কোরিয়ায় চীনের সেনাবাহিনী রয়ে গেল দুই কোরিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থের বিবেচনায়। আজ কোরিয়া যুদ্ধের ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছানুসারে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের সম্মতিতে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতের সব সৈন্য বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী তখনো পুনর্গঠিত হতে পারেনি। ফলে সংগত কারণেই একটি কনভেনশনাল সেনাবাহিনীর যে শক্তি-সামর্থ্য থাকে তার কোনো কিছুই তখনো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছিল না। সুতরাং ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা একেবারে নাজুক অবস্থায় পড়ে যায়। এ অবস্থায় পাকিস্তানের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর, চীন বা উভয়ের পক্ষ থেকে যদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো রকম অ্যাডভেনচারিজম শুরু করা হতো, তাহলে সদ্য স্বাধীন দেশের অবস্থা কী হতে পারত, তার উদাহরণ ইতিহাসেই আছে।
১৯৬৪ সালের ৪ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করে প্রচার করে উত্তর ভিয়েতনামের রকেট মার্কিন রণতরীর ওপর আঘাত করেছে। এই অজুহাতে আমেরিকা দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষে যুদ্ধে নেমে পড়ে। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, মার্কিনিদের ওই রকেট আক্রমণের কাহিনী ছিল সম্পূর্ণ নিজেদের তৈরি প্রোপাগান্ডা। ইতিহাসের এ রকম শিক্ষা ও তখনকার বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২৫ বছরমেয়াদি একটি মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করেন ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে। ওই চুক্তিতে মোট ১২টি ধারা ছিল। চুক্তির ৯ নম্বর ধারাটি ছিল নিম্নরূপ, 'কোনো এক পক্ষের বিরুদ্ধে তৃতীয় পক্ষ সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হলে চুক্তিকারী প্রত্যেকে এতদুল্লিখিত তৃতীয় পক্ষকে সব প্রকার সাহায্যদানে বিরত থাকবে। তা ছাড়া যেকোনো পক্ষ আক্রান্ত হলে অথবা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে সেই আশঙ্কা নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে যথাযথ সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে উভয় পক্ষ সঙ্গে সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হয়ে নিজেদের দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে।' ১৯৭১ সালের ৯ আগস্ট ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একই আদলে একই ধারা বিশিষ্ট একটি মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তিটির উল্লিখিত ৯ নম্বর ধারাটি মনোযোগ সহকারে পড়লে সবাই বুঝতে পারবেন ওই সময়ে বাংলাদেশের ওপর তৃতীয় কোনো দেশ যদি আক্রমণ চালাত তাহলে ভারত যেমন সশস্ত্র সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে বাধ্য হতো, ঠিক তেমনি ভারত-সোভিয়েতের চুক্তির ওই একই রকম ধারা বলে সোভিয়েত ইউনিয়নও বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে চুক্তি মোতাবেক বাধ্য ছিল। সেই ধারাগুলোর আন্তসম্পর্কের কারণে সেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো রকম দুঃসাহস দেখায়নি এবং পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনও কোনো রকম নড়াচড়া করার সাহস পায়নি। এভাবে সেদিন নবজাত রাষ্ট্রের নাজুক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মবিশ্বাস ও বিচক্ষণতার দ্বারা নিশ্চিত করেছিলেন। মূললেখক: মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)
©somewhere in net ltd.