![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত দশক থেকেই আমাদের উন্নয়ন ভাবনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বদল লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের ভাবনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে নানা আনুষঙ্গিকতায় বিশ্বে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, যা নিঃসন্দেহে আশাবাদী হওয়ার মতো ঘটনা। বিশ্বের প্রতিটি দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আলাদা আলাদা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোও এ ব্যাপারে বিভিন্ন জনের অভিমত জানার সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তত সেদিক থেকে বিচার করলে দারিদ্র্য ও সামাজিক অসমতার চিত্রটি আলাদা করে বিশ্লেষণ করা উচিত। অসাম্য ও দুর্নীতি যেভাবে সমাজকে গ্রাস করে নিয়েছে, সেখান থেকে উত্তরণে আমাদের উচিত লভ্য সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারে বৈষম্যের পাশাপাশি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি লাভ করা। আমরা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে একীভূত হয়ে উন্নয়ন ভাবনায় কিছু নতুনত্ব যোগ করতে পেরেছি। পরিস্থিতি বিচারে সেটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তা সময় বলে দেবে। তবে এটুকু আগে থেকে ধরে নেয়া যেতে পারে, এখন সময় উন্নয়নের। সেজন্য যেক্ষেত্রে যা প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। তবে আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার চিত্রটা একটু ভিন্ন। এখানে উন্নয়ন প্রশ্নে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হতে হয়, সেগুলো অত সহজে সমাধান করা সম্ভব নয়।
নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, সেখানে নির্ধারণ করে নিতে হবে উন্নয়ন বিষয়ক ভাবনাগুলো। এখানে দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে যে বিনিয়োগগুলো করতে দেখা যায়, সেখানে অনেক ধরনের অসঙ্গতি, দুর্নীতি ও গোষ্ঠী-ব্যক্তিগত স্বার্থ গুরুত্ব পায়। তবে এ বিনিয়োগকে পুরোপুরি উন্নয়নমুখী করা সম্ভব হলে তা থেকে আরো ভালো ফল লাভ করা সম্ভব হবে। পরিস্থিতি বিচারে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যা সময়ের দাবি মেটাতে যথেষ্ট হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নজরদারি করা উচিত, কোন খাতে বিনিয়োগ করা হলে অধিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যাবে। এতে দারিদ্র্যের মতো অভিশাপমুক্ত হয়ে সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যাবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উদ্যোগ হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। সেটা করা সম্ভব হলে বেশির ভাগ মানুষকে উন্নয়নের ধারায় যুক্ত করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে যত বেশি মানুষের পক্ষে কর্মক্ষেত্রে যোগদান সম্ভব হবে, তত বেশি কর্মক্ষম মানুষ উন্নয়নের ধারায় যুক্ত হওয়ার পথ পাবে। দক্ষিণ এশিয়ার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে বোঝা সম্ভব হবে। কারণ এ অঞ্চলে প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন লোকের বাস, যাদের মধ্যে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সমস্যা দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আগে থেকে যে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়ে থাকে তাবত্ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তীতে তার বদল ঘটে না বললেই চলে। কোনো ধরনের বদল না করে এহেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ নানা দিক থেকে বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে যেখানে দারিদ্র্য সীমারেখা কোন মানদণ্ডে নির্ধারিত হবে তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই সেখানে কারো পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য, বস্তুনিষ্ঠ ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। কোন বিশেষ অঞ্চলে কী পরিমাণ দরিদ্র মানুষ বাস করছে, তাদের সমস্যা কী, কোন বিশেষ উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হলে তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা সম্ভব হবে সেটা আগে থেকে অনুসন্ধান করে নিতে পারলে ভালো ফল মিলতো। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যমান অনুন্নত অবকাঠামো সে সুযোগ রাখেনি। ফলে সময়ের আবর্তে বিশ্ব বদলে গেলেও কোনো রদবদল চোখে পড়ে না দক্ষিণ এশিয়ায়। তাই এখানে এখনো বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সীমাহীন। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হচ্ছে। অন্তত তারা জানে না জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে গেলে কী করতে হবে, কী ধরনের উন্নয়ন চেষ্টা তাদের ভাগ্য বদলে যথেষ্ট হবে, সেটা জানা থাকলেও ভাগ্যদেবী বরাবর তাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে। সুন্দর রঙিন স্বপ্নগুলো তাদের জন্য বরাবর অধরাই থেকে যায়। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী মানুষের কথা বলা যেতে পারে। তারা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়তে লড়তে বড় ক্লান্ত, নেই জীবনের কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা। বলতে গেলে প্রকৃতি তাদের তাড়িয়ে ফিরছে দিনের পর দিন। জীবন তাদের থমকে আছে সেই দারিদ্র্য সীমারেখার নিচেই। অন্তত একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ার পর তাদের ভাগ্য কী হবে, সেটা এক অব্যাহত দুর্ভোগের অন্য নাম বলেই জানে সবাই।
নানা সমস্যায় জর্জরিত দক্ষিণ এশিয়ায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দারিদ্র্য। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, আর অনিয়ন্ত্রিত রাজনীতিকীকরণ এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘশ্বাস দিনের পর দিন দীর্ঘতর করছে। আর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরো অবনতি ঘটেছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে যেটুকু নজরদারি করা প্রয়োজন ছিল, সেখানেও এক হতশ্রী অবস্থা দৃশ্যমান। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিক থেকে যেটুকু সুযোগ পাওয়া প্রয়োজন, প্রাথমিকভাবে সেটুকুও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এমন সমস্যার অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে চিহ্নিত না করে প্রাথমিকভাবে দৃশ্যমান সমস্যাকে সামনে এনে অনেকটা মুখস্থ বুলি আওড়ে যাচ্ছেন অনেক বিশ্লেষক। যার ফলে সমস্যার সমাধান না হয়ে দুর্ভোগের প্রহর দীর্ঘায়িত হচ্ছে দিন দিন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন যে স্বপ্নের সূচনা করে, তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে বারবার। তাই শিক্ষা, চিকিত্সা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে জনহিতকর আরো যেসব কাজের কথা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত; সেখানকার দৈন্যদশা আরো স্পষ্ট হয়েছে সময়ের আবর্তে। আমি মনে করি, অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি তার উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করাটাও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা থেকে উত্তরণ ঘটানো সম্ভব না হলে সহজেই উন্নয়নের আলোয় আলোকিত হবে না দেশ, আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে থাকা মানুষগুলোও পাবে না একরত্তি স্বস্তির সন্ধান। সেজন্য সরকারি পরিসর তো বটেই, এগিয়ে আসতে হবে বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোক্তাদেরও। তাদের বিনিয়োগকে সফলভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হলেই উন্নয়নের আলোয় আলোকিত হবে সবাই, দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তি পাবে দেশ।
নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার একটি কাঠামোগত জটিলতা রয়েছে, যার থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে চাই বহুমুখী উদ্যোগ। কোন বিশেষ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা আগে থেকে চিহ্নিত করা সম্ভব হলে এ ধরনের ঝামেলা থেকে উত্তরণ অনেক সহজ হয়ে যায়। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক পরিসর থেকে গৃহীত কিছু সিদ্ধান্ত পারে সময়ের চাহিদা মিটিয়ে সব দরিদ্র মানুষকে একটি সহনশীল জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতে। সামাজিক অবকাঠামোর মধ্য থেকে এ ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করতে গেলে অনেক ধরনের সমস্যা থাকাটা অবাস্তব কিছু নয়। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া কিংবা আফ্রিকার অভিজ্ঞতা কোনো আশার কথা বলে না। অন্তত গ্রামীণ এবং শহুরে জীবন দুটি ক্ষেত্রেই সমস্যার চিত্র অনেকটা একই। এক্ষেত্রে সরকার যেমন অধিক জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ, সেখানে নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি করছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি থেকে শুরু করে নানা অব্যবস্থাপনা। এর থেকে উত্তরণ অনেক কঠিন হওয়ায় সময়ের বিচারে সমস্যাগুলো বেড়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। সেখান থেকে যে সোসিও-ইকোনমিক ম্যাট্রিক্স জন্ম দিয়েছে, তা দিনের পর দিন দুর্বোধ্য ও অনতিক্রম্যই থেকে গেছে। তবে এখানকার সমাজ কাঠামোয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু বদল দৃশ্যমান, যা আশার কথা বলে। এ বদল সময়ের সঙ্গে অধিক জনসংখ্যাকে বোঝা হিসেবে না দেখে বরং তাদের সম্পদ হিসেবে কাজে লাগানোর পথ করে দিতে পারে। সেজন্য কাজ করতে হবে নানা দিক থেকে। এজন্য যে সত্-উদ্যোগ নেয়া জরুরি এখন সেক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া কিংবা আফ্রিকা কতটা সফল হয়, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে উঠতে পারে এখন।
দারিদ্র্য বিমোচন নিয়ে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের চিন্তাটা প্রণিধানযোগ্য। তিনি অর্থ ব্যবস্থার সমন্বয় করে এ ধরনের সমস্যা থেকে উত্তরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীকে কীভাবে চিহ্নিত করা যায়, তা দেখিয়ে সমস্যা সমাধানের পথ করে দিয়েছিলেন। পুরো বাজার ব্যবস্থা কীভাবে সমাজের ওপর আরোপিত হয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তা অন্তত এখান থেকে বোঝার সুযোগ রয়েছে। সমাজের নানা স্তর থেকে শুরু করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি পর্যন্ত যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে অন্তত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিন্তাগত বদল ঘটানো যেতেই পারে। অধিক জনসংখ্যার চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধারণাগত বদল হয়ে ওঠে অবশ্যম্ভাবী। এক্ষেত্রে যে ডিনামিক্স কাজ করে, তা অন্তত দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচ্য। মানুষের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দিয়েই নীতিনির্ধারণী প্রকল্পগুলো প্রণয়ন করা উচিত। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশে ভূমি মালিকানা নির্ধারণের প্রসঙ্গ টানা যেতে পারে। এ ভূমি মালিকানা শুধু আয় বৃদ্ধি ও সামাজিক প্রতিপত্তির সঙ্গে যুক্ত নয়। এক্ষেত্রে আরো আনুষঙ্গিকতা যুক্ত হতে বাধ্য। কেউ কেউ মনে করে, ভূমি শুধু আয় বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত এমনটি নয়, পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে একজন নাগরিকের অবস্থান কী হবে, তাও নির্ধারণ করে দেয় ভূমি অধিকারের বিষয়টি। অন্তত কৃষিনির্ভর দেশ হওয়ার কারণে এ দেশের অর্থব্যবস্থায় ভূমি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্যও প্রয়োজন রয়েছে উপযুক্ত পরিমাণ ভূমির।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের উন্নয়ন প্রশ্নে অনেকটাই ভূমির ওপর নির্ভরশীল। তারা দেশের উন্নয়নে যেটুকু ভূমিকা রাখে কৃষিকাজের মাধ্যমে বলতে গেলে তার পুরোটাই ভূমির পরিমাণ ও উর্বরতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পাশাপাশি এটাও বলে রাখা ভালো, তাদের এমন কর্মকাণ্ড শুধু রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির চাকাই সচল রাখে না, পাশাপাশি দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্ত হতে তাদের উন্নয়নের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কথা বিচার করতে গেলে এ বিষয়টিকে আরো গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করার প্রয়োজন রয়েছে। অন্তত বাংলাদেশের গ্রাম, শহর কিংবা শহরতলি যে অঞ্চলের কথাই বলা হোক না কেন, উন্নয়ন ভাবনা ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হবে, তা অনেকটা সমপর্যায়ের। আর ব্যাষ্টিক কিংবা সামষ্টিক পরিসরে অধ্যাপক রেহমান সোবহান এ বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে বলেছেন।
গ্রামীণ পরিসরে আর্থিক উন্নয়নের জন্য অন্তত কৃষিকাজ ও মাছ চাষের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া যেতেই পারে। সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে গ্রামের মানুষ খুব সহজেই দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে। বাণিজ্য প্রসারের জন্য মানুষ যে পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করছে, সেখানে দুর্নীতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে নানা দিক থেকে। অন্তত গ্রামের মানুষ সেলফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো কৃষিজাত পণ্য বিক্রির আগে তার ন্যায্যমূল্য জেনে নিতে পারছে। এতে তাদের প্রতারিত হওয়ার শঙ্কা কমে গেছে বহুলাংশে। পাশাপাশি তাদের ঠকিয়ে যেসব মধ্যস্বত্বভোগী অধিক মুনাফা করত, তাদের দৌরাত্ম্যও কমে গেছে বহুগুণ। সৌভাগ্যবশত দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, বাংলাদেশের মানুষও তথ্যপ্রযুক্তির এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজেকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। অন্যদিকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পাশাপাশি বিবিধ অনুষ্ঠান সম্প্রচারের অভাবনীয় উন্নতি চোখে পড়ার মতো, যা অন্তত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, যেকোনো খাতের জন্যই দারিদ্র্যের অভিশাপ কাম্য নয়। এর উপযুক্ত কারণ চিহ্নিত করে যেভাবে সম্ভব এর থেকে শাপমুক্তির প্রয়াসে নিরলস শ্রম দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। কাজটি যদি হয় অন্তর্ভুক্তিমূলক, তাহলে খুব সহজেই নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সফলতা অর্জন করা সম্ভব হবে।
মোহাম্মদ জমির, লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২
চাঁদগাজী বলেছেন:
কথার কথা