নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমডিজিতে বড় সাফল্য

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৪

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর (এমডিজি) ৮টির মধ্যে ৭টিতেই সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন, লিঙ্গসমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং শিশুমৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন মডেল। তবে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত বৈদেশিক সহায়তা পায়নি। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) এমডিজি বিষয়ক সর্বশেষ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এ অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরবেন। এমডিজি অগ্রগতি রিপোর্ট-২০১৫ আগামী বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল
আবদুল মুহিত।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ১৯৯১-৯২ সালের ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ২০১০ সালে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। গত দশকের চেয়ে বর্তমান দশকে দারিদ্র্য হ্রাসের হার ছিল দ্রুততর। সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী প্রতি বছর গড়ে দারিদ্র্য কমেছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ হারে। এমডিজি অর্জনে এ সময়ে প্রয়োজন ছিল গড়ে প্রতি বছর ১ দশমিক ২০ শতাংশ হারে দারিদ্র্য হ্রাস। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে দারিদ্র্যের হার প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশে। এমডিজির প্রথম লক্ষ্য ছিল ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, যা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অর্জিত হয়েছে। দ্রুত দারিদ্র্য কমে আসার পেছনে শ্রমের মজুরি এবং মোট জনসংখ্যায় বয়স্ক, অর্থাৎ কর্মক্ষম লোকের অংশ বৃদ্ধিকে প্রধান কারণ মনে করছে বিশ্বব্যাংক। তাদের মতে, দারিদ্র্যের গভীরতা কমানোর এমডিজি লক্ষ্য পাঁচ বছর আগেই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এমডিজির লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের গভীরতা ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা। ২০১০ সালে তা ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমেছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা মিশনের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন সমকালকে বলেন, এমডিজির লক্ষ্যগুলোর মধ্যে কয়েকটিতে বাংলাদেশ ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে। এর মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যমাত্রা কয়েক বছর আগেই অর্জন করেছে। মূল কারণ কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে ছয় শতাংশের ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান এবং বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স। তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের লক্ষ্যগুলোতেও বাংলাদেশ বিশ্বে উদাহরণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তিতে মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় নানা পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আবার দারিদ্র্য কমে গেলেও স্বাস্থ্য খাতে পরোক্ষ প্রভাব পড়ে। সব মিলে এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ পেয়েছে ঈর্ষান্বিত সাফল্য।
এমডিজির দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন। সব শিশুর জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, বৃত্তি প্রদান, সময় মতো পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ, শিক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি কারণে এ লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়েছে। এ ছাড়া স্কুল জাতীয়করণের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ১৯৯১ সালে ৪৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৪ সালে ৮১ শতাংশ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় নিট ভর্তি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া ঝরে পড়ার হার কমেছে এবং শিক্ষা চক্র সমাপ্তির ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে।
লিঙ্গসমতা অর্জন এবং নারীর ক্ষমতায়ন ছিল এমডিজির তৃতীয় লক্ষ্য। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ২০১৪ সালের হিসাবে ১০০ ছাত্রের বিপরীতে ৬৭ ছাত্রী উচ্চ শিক্ষায় অংশ নিয়েছে। গ্রামীণ অঞ্চলে উপবৃত্তি ও মেয়েদের বিনাবেতনে পড়ালেখার সুযোগ এবং মাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের উপবৃত্তির ব্যবস্থার কারণে এ সাফল্য এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিইডি বলছে, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং শিশু মৃত্যুহার কমানোর দুটি লক্ষ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রোল মডেল। ১৯৯০ সালে মাতৃমৃত্যু হার ছিল এক লাখে ৫৭৪, যা ২০১৩ সালে হয়েছে ১৭০ জন। একই সময়ে ৫ বছরের কম বয়সের শিশুমৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ১৬৪ জন, যা ২০১৩ সালে নেমে এসেছে ৪৬-এ। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য ছিল ২০১৫ সালে ৪৮ জন। অর্থাৎ এই সূচকে নির্ধারিত সময়ের আগেই বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এইডস, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য রোগব্যাধি দমন সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ খারাপ অবস্থায় নেই। ১৯৯০ সালে দেশে বনভূমির পরিমাণ ছিল ৯ শতাংশ, যা ২০১৪ সালে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। মোট দেশজ উৎপাদনের তুলনায় বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার পরিমাণ ১৯৯০-৯১-এর ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এমডিজি বাস্তবায়নে এমন সহায়তার পরিমাণ ছিল চরমভাবে অপ্রতুল এবং উন্নত দেশগুলোর অধিকাংশই সহায়তা প্রদানে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.