নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চ্যাম্পিয়ন্স অফ দ্য আর্থ সমাচার

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:০৯

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ‘বিচক্ষণ নেতৃত্বের’ স্বীকৃতি হিসাবে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অফ দ্য আর্থ’ গ্রহণ করিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত রবিবার নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক আচিম স্টেইনার তাঁহাকে ‘পলিসি লিডারশিপ’ ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার প্রদান করেন। পুরস্কার গ্রহণ করিয়া প্রধানমন্ত্রী নিজের অভিমত ব্যক্ত করিয়া বলেন, ‘ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমার দেশের মানুষ শিখেছে কীভাবে বাঁচতে হবে, কীভাবে লড়তে হবে। আর আমরা তা করেছি নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে।’ তাঁহারই উদ্যোগে ও নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম রাষ্ট্র হিসাবে নিজস্ব জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে। এই ফান্ডে বাংলাদেশের বাজেটের ৬-৭ শতাংশ নির্দিষ্ট করিয়া রাখা হইতেছে। ইহার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলার সাফল্যে এই দেশের মানুষের লড়াকু মনোভাব কাজ করিয়া যাইতেছে।
বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ দেশ ও অবকাঠামোগতভাবে অনুন্নত রাষ্ট্র হইলেও অতীতের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হইতে আমাদের প্রশাসন ও জনগণ অনেক শিক্ষা গ্রহণ করিয়াছেন। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাইতে সাধ্যমত লাগসই প্রস্তুতি গ্রহণের ফলাফল এখন হাতেনাতে পাওয়া যাইতেছে। গত চার দশকে বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করিয়াছে। ইহার তুলনা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে হয় না। গত মার্চ মাসে জাতিসংঘ গঠিত ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসি’র এক প্রতিবেদনে দুর্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও গৃহীত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য গাথা তুলিয়া ধরা হয়। এই প্রতিবেদন তৈরি করেন নোবেল বিজয়ী জলবায়ু বিশেষজ্ঞগণ। তাহাতে দেখা যায়, ১৯৭০ সালে ক্যাটাগরি তিন শ্রেণিভুক্ত একটি জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপজেলা ভোলায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারান। আর ২০০৭ সালে ইহার চাইতে অনেক প্রবল এক জলোচ্ছ্বাস সিডরে মারা যান ৪,২০০ মানুষ। প্রাণহানির মতো এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে অনেক আগাইয়াছে বাংলাদেশ। কমিয়াছে অন্যান্য ক্ষয়-ক্ষতিও। পক্ষান্তরে ২০০৮ সালে একই আকারের দেশ মিয়ানমারে এক জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ। ইহা হইতেই সফলতার বিষয়টি সম্যক উপলব্ধি করা যায়।
উপরোক্ত পরিস্থিতির পরও আমাদের অনেক করণীয় আছে। বিশেষত সামনে তীব্র দুর্যোগকাল আসিতেছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশসহ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলসমূহে আরো বেশি জলোচ্ছ্বাস, প্লাবন, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক দেখা দিবে বলিয়া জলবায়ু বিশেষজ্ঞগণ সতর্ক বার্তা প্রদান করিয়া আসিতেছেন। দুনিয়া জুড়িয়া তাপপ্রবাহ বাড়িতেছে। এমন চরমভাবাপন্ন জলবায়ুতে উন্নত দেশগুলিও রেহাই পাইবে না। আমেরিকার মিয়ামি হইতে ভারতের মুম্বাই সর্বত্র দেখা দিবে দুর্যোগের ঘনঘটা। ইহাতে বাংলাদেশের ন্যায় ঘনবসতি ও অনুন্নত অবকাঠামোর দেশগুলি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। শুধু সাইক্লোন নহে, বাংলাদেশ ভূমিকম্পের দিক দিয়াও ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। তাই আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা আরো বাড়াইতে হইবে। বাড়াইতে হইবে আশ্রয়কেন্দ্র ও উন্নত করিতে হইবে দুর্যোগ পূর্বাভাসের প্রচার ব্যবস্থা। বিশেষত সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোবাইলেও পূর্বাভাস প্রচার করিতে হইবে। তাহাছাড়া এখন ভূমিকম্প মোকাবিলাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া অত্যাবশ্যক। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইহার ছাপ থাকা বাঞ্ছনীয়।
ইত্তেফাক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.