![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ শিগগিরই স্বনির্ভর হচ্ছে। এ আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। শুক্রবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনাভিত্তিক টক শো এনার্জিপ্যাক পাওয়ার টক অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, একসময় বাংলাদেশের সামনে বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো মাস্টার প্ল্যান ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজ শুরু করে। সেই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে তা আরো বাড়বে এবং একটা সময় আসবে যখন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন করবে।
সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ ও প্রকৌশলী নূরুল আকতার। অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মতো কোনো দেশ এত অল্প সময়ে বিদ্যুৎ খাতে এমন অর্জন দেখাতে পারেনি। দেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে প্রশংসনীয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বর্তমান সরকার। এই খাতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে গত সাড়ে ছয় বছরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এ সরকারের দুই আমলে ৬৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। চুক্তি হয়েছে ৭৭টি কেন্দ্রের। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো সরকার এসেছে তার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার আমলেই বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বেশি সফল। সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্চালক বলেন, আগের চেয়ে এই সরকার আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে বলে সরকারি পর্যায় থেকে দাবি করা হচ্ছে। তার পরও দেখা যাচ্ছে লোডশেডিং কমছে না। কতটা উৎপাদন বাড়লে আমরা এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাব? বা বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কত দিনে স্বনির্ভরতা অর্জন করবে?
আলোচনার এ পর্যায়ে ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদেশে আমরা দেখেছি অনেক বিষয় সরকারের কাছে না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি খাতে আরো বেশি সম্পৃক্ত করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা, যাঁরা আগে বিদেশে যেতেন, দুই লাখ বা দেড় লাখ টাকার জন্য শ্রম দিতেন, তাঁদের অনেকেই এখন দেশে কর্মসংস্থানের পথ বেছে নিচ্ছেন। আমাদের সরকারিভাবে এ কাজে আরো সহায়তা দিতে হবে। যাতে দেশের প্রকৌশলীরা দেশেই থাকতে পারেন।
এ পর্যায়ে প্রকৌশলী নূরুল আকতার বলেন, বিদ্যুৎবিহীন থাকার চেয়ে কিছুটা বেশি দামে বিদ্যুৎ পাওয়াটা বেশি ভালো। বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে সরকারকে অনেক কিছুই করতে হয়েছে। অনেকেই অনেক কথা বললেও ভালো কাজ হয়েছে। সরকারের নতুন কিছু ব্যবস্থা না থাকলে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ত। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা না হলে হয়তো বিদ্যুৎ খাতের এ সাফল্য আজ ধরা দিত না। যারা কাজ করে তাদের সফলতাও থাকে, ব্যর্থতাও হয়তো থাকতে পারে। বর্তমান সরকারকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, এর অর্থ তারা কাজ করেছে।
আলোচনার এ পর্যায়ে সঞ্চালক জানতে চান, দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর কিছু বিদেশি প্রকৌশলী চলে গেছেন বলে জানা যায়। তাঁদের ফেরত আনার জন্য সরকারিভাবে সংশ্লিষ্ট কম্পানিগুলোকে চাপ দেওয়া হয়েছে। আসলে নিরাপত্তার অজুহাতে যদি কেউ কাজ করতে না চান, তবে কি তাঁকে জোর করে কাজে ফেরানো যাবে? কিভাবে বিশ্লেষণ করবেন।
জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করা প্রকৌশলীরা আবারও ফিরে আসবেন। তাঁদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। দেশীয় প্রকৌশলীদের দক্ষ করে তোলার জন্যও আমাদের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামীতে অনেক দেশি প্রকৌশলী বিদেশি প্রকৌশলীর স্থান দখল করতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মহাজোট সরকার দায়িত্বভার নেওয়ার সময় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল তিন হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট। গত ১৫ এপ্রিল দেশে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৫৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। শতকরা হিসাবে গত কয়েক বছরে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে ১০০ ভাগেরও অনেক বেশি।
©somewhere in net ltd.