![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছর ধরেই ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে যারা বিরোধিতা করেছিল, তারাই বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে দেশটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন সবদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই টিআইবি দেশের বিরুদ্ধে আবারও নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২৫ অক্টোবর রোববার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান জাতীয় সংসদকে 'পুতুল নাচের নাট্যশালা'র সঙ্গে তুলনা করেন।
জুন ২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৫ পর্যন্ত গবেষণা চালিয়ে টিআইবি প্রতিবেদন 'পার্লামেন্ট ওয়াচ'-এ বলা হয়, ১১২ কার্যদিবসে সরকারি দলের সদস্যরা ৭ হাজার ৫০০ বার নিজ দলের প্রশংসা এবং ৭ হাজার ২৬৮ বার সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী জোটের সমালোচনা করেছে। নির্বাহী পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, 'আইন প্রণয়নে মোট সময়ের ৬ শতাংশ ব্যয় হয়েছে, যা অতীতের চেয়ে বেশি। প্রতিটি বিল পাস হতে গড়ে ৩০ মিনিট সময় ব্যয় হয়েছে। কিন্তু অর্থবিল ছাড়া ২৪টি বিলের ওপর মাত্র ২৯ জন সংসদ সদস্য আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। এর অর্থ আইন প্রণয়ন বিষয়ে সংসদ সদস্যদের যোগ্যতা নেই অথবা যোগ্যতা থাকলেও আগ্রহ নেই।' ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, দশম সংসদ নির্বাচন ছিল বিতর্কিত। তথাকথিত বিরোধী দল দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না। প্রমাণ করতে পারেনি যে, তারা প্রকৃত অর্থে বিরোধী দল।' একপর্যায়ে টিআইবি মহাসচিব অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
এদিকে টিআইবির অন্যায়, অসাংবিধানিক ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যে রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। জাতীয় সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালা আখ্যায়িত করে টিআইবির বক্তব্যকে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, সংস্থাটি সংবিধান ও সংসদকে অবজ্ঞার পাশাপাশি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরও অপমান করছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল সংবিধানসম্মত। ওই নির্বাচন না হলে দেশে অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক শাসন কায়েম হতো। কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন, টিআইবি নতুন নির্বাচন দাবি করার কে? টিআইবি কি বিএনপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন? কেউ বলছেন, 'টিআইবি নিজেই নাচের পুতুল এবং কোনো চক্রের পেইড এজেন্ট।'
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ১ বছর ১০ মাস পর টিআইবির নির্বাহী পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলছেন ওই নির্বাচনটি ছিল বিতর্কিত। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্টকে তিনি বলছেন 'পুতুল নাচের নাট্যশালা'। প্রকৃতপক্ষে ওই নির্বাচন ছিল সংবিধানসম্মত। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ ৫ বছর। মেয়াদ শেষে আরেকটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হতে হবে। টিআইবি ও তাদের পুতুল বেগম খালেদা জিয়া না জানলেও বিশ্ববাসী জানে, সব দলকে নিয়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। কিন্তু খালেদার এক দাবি ছিল হাসিনাকে সরে যেতে হবে। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে কথাও বলেন বেগম জিয়ার সঙ্গে। কিন্তু সংবিধানে কোথাও খালেদার দাবি অর্থাৎ নির্বাচন চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর সরে যাওয়ার কথা নেই। খালেদা বা উনার পুত্র ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী হলেও মেয়াদ শেষে সেই প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় রেখেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। বেগম জিয়া শুধু বর্জন করেই ক্ষান্ত থাকেননি, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত ও বানচাল করার জন্য আন্দোলনের নামে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করিয়েছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের সব চাল ব্যর্থ করে দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেন।
শেখ হাসিনা যদি নির্বাচন করতে না পারতেন, খালেদা-এরশাদরা যদি নির্বাচন বানচাল করতে সক্ষম হতেন, তাহলে দেশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সেনাশাসন কায়েম হতো। গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হতো। সেই সঙ্গে দেশের অগ্রগতি এবং অগ্রযাত্রাও ব্যাহত হতো। শেখ হাসিনার ওপর মহান সৃষ্টিকর্তার অসীম দয়ার কারণে তিনি যেমনিভাবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বহু হামলা থেকে বেঁচে গেছেন, তেমনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনও সম্পন্ন করে ফেলেন। কাজেই নির্বাচন করে শেখ হাসিনা গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক শাসন চালু রেখেছেন। টিআইবির ইফতেখারের বোঝা উচিত, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিতর্কিত হয়ে থাকলে স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদদাতা, আশ্রয়দাতা ও প্রশ্রয়দাতা খালেদার জন্য হয়েছে। বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশ নিলেই তো নির্বাচন একতরফা বা বিতর্কিত হতো না। ইফতেখার গং 'উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে' চাপাতে চাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন। নির্বাচন চাইতে পারে দেশের রাজনৈতিক দল বা দেশের জনগণ। আপনার নির্বাচন চাওয়ার কোনো অধিকার নেই মি. ইফতেখার। সংবিধানসম্মত এবং গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদকে 'পুতুল নাচের নাট্যশালা' বলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক যে অমার্জনীয় অপরাধ করেছেন, বিভিন্ন মহলের নিন্দা ও প্রতিবাদ বক্তব্যেও তা উঠে এসেছে। আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক একটি জাতীয় দৈনিক (জনকণ্ঠ) কে বলেছেন, 'বাংলাদেশের মালিক জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ সার্বভৌম। আর তাদের প্রতিনিধিদের নিয়েই জাতীয় সংসদ বা হাউস অব দ্য ন্যাশন গঠিত এবং প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই জাতীয় সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালা মন্তব্য করা অনভিপ্রেত ও ন্যক্কারজনক। মন্তব্যকারী যেই হোক। বিশেষ করে এ ধরনের মন্তব্য যদি কোন শিক্ষিত মানুষের মুখ থেকে আসে। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে শুধু জাতীয় সংসদকে অপমান করা হয়নি, বাংলাদেশের মালিক আপামর জনসাধারণকেও অপমান করা হয়েছে।'
বিচারপতি এটিএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, 'দেশের জাতীয় সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালা বলার মাধ্যমে সংসদের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব নাগরিককেও অপমান করা হয়েছে। কারণ, রাষ্ট্রের নাগরিকরাই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। এ ছাড়া সংসদ এমন কিছুই করেনি যে তার মাধ্যমে তা পুতুল নাচের নাট্যশালায় পরিণত হয়েছে বা হবে। একজন দায়িত্ববান মানুষ কখনোই এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে না। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এই মন্তব্যের মাধ্যমে ঠাণ্ডা মাথায় সংসদ ও দেশের মানুষকে অপমান করেছেন।' টিআইবির রিপোর্টের কড়া সমালোচনা করে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, 'আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন ভালো কাজের প্রশংসা এ সংস্থাটির কাছ থেকে শোনা যায়নি। বাংলাদেশ আজ সবদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করছে। কিন্তু টিআইবি কখনো দেশের সুনাম করে কিছু লেখে না বা বলে না। বরং কিভাবে দেশ, সংসদের দুর্নাম ও প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় সংস্থাটি তাই করে আসছে। টিআইবি নতুন নির্বাচন চেয়েছে। এসব কাজ তো পলিটিক্যাল পার্টির। টিআইবি কেন নতুন নির্বাচন দাবি করবে? তাদের তো কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়। দেশের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন টিআইবির রিপোর্ট প্রদানের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে (জনকণ্ঠকে) বলেছেন, 'টিআইবি কী দেশের বিবেক ঠিক করে দেবে? তাদের কী সব বিষয়েই কথা বলতে হবে? সংস্থাটির মূল কাজ ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা) নিয়ে কাজ করা। ওদের দায়িত্ব তো সংসদ নিয়ে কথা বলা নয়। আর বিএনপি যদি গালিগালাজ খাওয়ার মতো কাজ করে, তবে তো তাদের গালি খেতেই হবে। এতে টিআইবির গাত্রদাহ হচ্ছে কেন? ওদের মাথাব্যথা কেন? সংসদকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোন এখতিয়ার টিআইবির নেই।'
টিআইবির ইখতেফার বর্তমান বিরোধী দলকে তথাকথিত বলে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'ওরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।' ইফতেখার মিয়ারা ভুলে গেলেও জাতি ভুলেনি, বেগম খালেদা জিয়া ৫ বছরের সংসদে (২০০১-০৬) মাত্র ১০ দিন উপস্থিত ছিলেন। এই সেই খালেদা জিয়া যিনি সংসদে সরকারি দলের সদস্যদের 'চুপ বেয়াদব' বলেছিলেন। খালেদা জিয়া ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং ২০০৯ থেকে ২০১৪ দশ বছর বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। এই দশ বছরে ওরা কত মাস সংসদে গেছেন? প্রতি ৯০ দিনে একবার সংসদে গিয়ে সংসদ সদস্য পদ রক্ষা করে বেতন-ভাতা সুযোগ-সুবিধা সবই গ্রহণ করেছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যদি বিতর্কিত হয়ে থাকে, তাহলে খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কি বিতর্কমুক্ত ছিল? ওই নির্বাচনে ৩০০ আসনের সব ক'টিই তো বিএনপি পেয়েছিল। কই এসব নিয়ে তো ইফতেখার সাহেবরা ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করেননি। 'ভাশুরের নাম নিতে শরম লাগে', তাই না মি. ইফতেখার?
প্রশ্ন করা যেতে পারে, বেগম জিয়ার সন্ত্রাসী আন্দোলনে মানুষ হত্যা এবং একাত্তরের ঘাতকদের প্রতি দরদ ও ভালোবাসার ব্যাপারে টিআইবি নীরব কেন মি. ইফতেখার? ১০ বছর বেগম জিয়া সংসদে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবে অমার্জনীয় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন, ক্ষমতায় থাকাকালে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই দায় কি বেগম জিয়ার নয়? ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বেগম জিয়া কেক কেটে নারকীয় উল্লাসের মাধ্যমে মিথ্যা জন্মদিন উদযাপন করেন। বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এসব কর্মকা- সম্পর্কে টিআইবি কি প্রতিবেদন পেশ করবে?
আজকে বিদেশি হত্যা, যাজক হত্যার চেষ্টা, তাজিয়া মিছিলের প্রাক্কালে বোমা বিস্ফোরণ এবং বস্নগার হত্যার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে। এ সময়ে পুরো জাতির উচিত সরকারের পাশে থেকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষা করা। কিন্তু টিআইবি সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য প্রতিবেদন পেশ করে পুরো জাতিকে হতাশ করেছে। টিআইবির এই প্রতিবেদন আত্মঘাতী, একপেশে, বিতর্কিত, অসত্য, অস্বচ্ছ এবং ষড়যন্ত্রমূলক। টিআইবির মতো পেশাদার, অরাজনৈতিক, অলাভজনক আন্তর্জাতিক এই সংগঠনকে সাম্প্রতিক পার্লামেন্ট ওয়াচ প্রতিবেদনের মাধ্যমে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। টিআইবিকে জনগণ নিন্দুক ও দোষদর্শীর ভূমিকায় দেখতে চায় না। এ বিতর্কিত অবস্থান থেকে সংস্থাটিকে বের হয়ে আসতে হবে। মূল লেখক: মোহাম্মদ শাহজাহান
২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৩
আমি মিন্টু বলেছেন: ঠিক ঠিক ঠিক বাংলাদেশের রাজনীতি বিদদের জানাই ধিক্ক ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: মজার ব্যাপার হচ্ছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে যারা বিরোধিতা করেছিল, তারাই বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে দেশটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন সবদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই টিআইবি দেশের বিরুদ্ধে আবারও নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
............এটাই হচ্ছে মূল বিষয়।