![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা যখন কোনো সফলতা অর্জন করেন, তখন তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ই তাদের আবিষ্কারের মাধ্যমে সম্মানিত হয়েছেন এবং নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই অবদান রেখেছেন। এবারে দুধ, দুগ্ধজাত ও খাদ্যে মাত্র ৫ সেকেন্ডে ফরমালিন এবং ৩০ সেকেন্ডে মেলামিন শনাক্ত করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী। আর এর স্বীকৃতি হিসেবে মালয়েশিয়ায় 'বেস্ট ইন্টারপ্রেনারশিপ প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৫' পেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে উল্লেখ করা জরুরি, বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর উদ্ভাবিত মাইক্রো ইলেকট্রোড পোর্টেবল ডিভাইস নামে ফরমালিন ও মেলামিন শনাক্ত করার যন্ত্রটি ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদেরও নজর কেড়েছে। আর মাইক্রো ইলেকট্রোড পোর্টেবল ডিভাইস নামে ফরমালিন ও মেলামিন শনাক্ত করার যন্ত্রটি বাজারে আনার প্রস্তুতিও নিয়েছে মালয়েশিয়ার পুন-বি নামে একটি কোম্পানি। ২০১৬ সালের মধ্যে যন্ত্রটি বাজারে আসবে বলে জানা গেছে। মালয়েশিয়ার সরকারি বিজ্ঞান তহবিল এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
প্রসঙ্গত আমরা উল্লেখ করতে চাই, এর আগে বিজ্ঞানী মকসুদুল আলমের নেতৃত্বে ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচিত হয়েছিল। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা এ যুগান্তকারী অর্জনটি সম্পন্ন করেছিলোন। এ রকম অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। আমরা চাই, যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার ভিত্তিতে মেধাবীরা আরো বেশি এগিয়ে যাক, এমন নিত্যনতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে আরো উঁচু করে তুলে ধরুক বিশ্বের সামনে। আমরা মনে করি, যখন ফরমালিন ও মেলামিন শনাক্তকরণ যন্ত্রটি উদ্ভাবিত হলো, তখন তা জনকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। যদিও জানা গেছে, এটি প্রথম অবস্থায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও খাদ্য নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবহার করা হবে, যাতে এর সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পেঁৗছায়। পরে তা সরাসরি ভোক্তার কাছে পেঁৗছানো হবে।
আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের কেউ যখন এ রকম সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হন তখন তা শুধু আনন্দের বিষয়ই নয়, বরং এ অর্জন সামনে রেখে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদেরও উদ্বুদ্ধ করতে হবে সৃষ্টির উন্মাদনায়। যেন অর্জনগুলোর প্রভাব তাদের মনে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়কে আরো দৃঢ় করে। যখন অপর্যাপ্ত লোকবল, ব্যবস্থাপনা ও অর্থসংশ্লিষ্ট সীমাবদ্ধতাকে মোকাবেলা করেও এ দেশের সন্তানরা সারা বিশ্বের সামনে নিজেদের উদ্ভাবন তুলে ধরছেন এবং সফল হচ্ছেন তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক। যাকে আমলে নিয়ে এ ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারকে আরো বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলেই আমরা বিবেচনা করতে চাই। কেননা যদি এ ধরনের সফলতা অব্যাহত থাকে তবে তা যেমনি দেশের জন্য গর্বের তেমনিভাবে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যার সফলতা পাবে সর্বস্তরের মানুষ। আমরা বিজ্ঞানী শফিকুজ্জামান সিদ্দিকীকে জানাই আমাদের আন্তরিক অভিবাদন। একই সঙ্গে এ প্রত্যাশা জারি রাখতে চাই, সারা বিশ্বেই বাংলাদেশিদের জয়জয়কার অব্যাহত থাকুক।
সর্বোপরি বলতে চাই, এর আগেও শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী টেকসই কৃষি উন্নয়নে অবদান রাখার ফলে জাপানের টোকিও থেকে প্রসপার ডটনেট-স্কোপাস ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন। তারও আগে একটি আবিষ্কারস্বত্ব (পেটেন্ট) এবং ১৩টি গবেষণা পুরস্কারও পেয়েছেন। এ রকম অনেক অর্জনই আছে, যেসব অর্জন বার বার দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে। আমরা মনে করি, এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে দেশের বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের উন্নয়নে আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা আমরা মনে করি, যত বেশি সুশিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত হবে, তত বেশি এ দেশের সন্তানরা নতুন নতুন সৃষ্টিতে সক্ষম হবেন।
©somewhere in net ltd.