![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের দুজন নাগরিক সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড ২১ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করা হয়। এই ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা প্রসঙ্গে ২২ নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি ইস্যু করা হয়। বিবৃতিতে বিচারের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং বিচারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নামান্তর হিসেবে উল্লেখ করে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে পাকিস্তান মিথ্যাচারের সীমা লঙ্ঘন করে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় (ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান) চুক্তির ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। সংগত কারণেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশের সব মানুষ প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। এ রকম চলতে থাকলে আগামীতে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা হবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। অভিজ্ঞ কূটনীতিকরা বলেছেন, এটা সম্পূর্ণ কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহিভর্‚ত কাজ এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল, যা পাকিস্তান কিছুতেই করতে পারে না। এটা অনাকাক্সিক্ষত এবং অগ্রহণযোগ্য।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দণ্ড দেওয়ায় পাকিস্তান ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচবার বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব এনে সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়েছে। তারা যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাকে শহীদ ঘোষণা করেছে। এগুলো যে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য সহায়ক নয়, সেটি বাংলাদেশ স্পষ্ট করেই বলেছে। কিন্তু আমলে নেয়নি পাকিস্তান। সাকা, মুজাহিদদের ফাঁসির শোক যেন পাকিস্তান কাটিয়ে উঠতে পারছে না। দু-তিন দিন আগেও পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারা পুনরায় কটাক্ষ করেছে। একাত্তরে তাদের যুদ্ধ ছিল নাকি কেবল ভারতের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এ কথার মাধ্যমে পাকিস্তান ধৃষ্টতার সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। ঐতিহাসিক সত্য নিয়ে মিথ্যাচার ও বিষোদ্গার অব্যাহত রেখেছে। এভাবেই দুই দেশের সম্পর্ককে পাকিস্তানই তিক্ত করে তুলেছে। তবে এটা ঠিক যে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন গর্হিত কাজ ভেবেচিন্তে ও বুঝেই পাকিস্তান করে যাচ্ছে একের পর এক। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শোচনীয় ও অমর্যাদাকর পরাজয়, একাত্তরের অব্যবহিত পর জামায়াতের প্রয়াত আমির গোলাম আযম কর্তৃক পাকিস্তান ও লন্ডনে বসে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন, এই আন্দোলন বাতিল না করে জিয়াউর রহমানের সময় ১৯৭৮ সালে গোলাম আযমের বাংলাদেশে আগমন এবং স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়া, জামায়াত, মুসলিম লীগসহ রাজাকার-আলবদরদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে জিয়াউর রহমান কর্তৃক পুনর্বাসন, পঁচাত্তরের পর সামরিক ফরমানবলে জিয়াউর রহমান কর্তৃক বাহাত্তরের মূল সংবিধানের পাকিস্তানীকরণ, বাংলাদেশকে ঘিরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের তৎপরতা এবং জিয়া, এরশাদ, জামায়াত-বিএনপি সরকারের সময়ে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে পাকিস্তান কর্তৃক অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান ইত্যাদি ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, পাকিস্তান কর্তৃক যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়া কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এর প্রতিটি ঘটনা একটির সঙ্গে অন্যটির যোগসূত্র রয়েছে।
পাকিস্তান তার অবস্থান থেকে এমন বিবৃতি দেবে তাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই এবং এটা অপ্রত্যাশিতও নয়। পাকিস্তানের কাজ পাকিস্তান করেছে, সেটাই স্বাভাবিক। উপমহাদেশকেন্দ্রিক পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক কথা হলো-একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে হবে। এর থেকে পাকিস্তান আজ পর্যন্ত এক ইঞ্চিও সরে আসেনি। এই নীতির আওতায় পাকিস্তান কী ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে, সেটি আমাদের উপলব্ধিতে থাকা উচিত, যাতে যথাসময়ে পাকিস্তানের সব দুরভিসন্ধিকে আমরা প্রতিহত করতে পারি, সমুচিত জবাব দিতে পারি। রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। নিজেদের সার্বভৌমত্ব বলতে কিছু নেই। অনুমতি ছাড়াই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত ড্রোন হামলা চালাচ্ছে আমেরিকা। তাতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিহত হচ্ছে শত শত নিরীহ মানুষ। এ কারণেই সেদিন একজন খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা এ বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে আমাকে বললেন, ‘এটা নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। পাকিস্তান ঘেউ ঘেউ করতে করতেই একদিন শেষ হয়ে যাবে, আমাদের কিছু করা লাগবে না।’ এই মুক্তিযোদ্ধার কথার সঙ্গে আমি আংশিক একমত হয়েছি। সম্পূর্ণ একমত হতে পারিনি এ কারণে যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানপন্থী বড় রাজনৈতিক পক্ষ রয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও তার দর্শন, আদর্শ, চেতনা, অনুভূতি-সব কিছু ধুলায় মিশিয়ে পাকিস্তানের আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য বাংলাদেশের খোলসে আরেকটি পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপর ও উদগ্রীব। এখানেই আমাদের ভয় ও আশঙ্কা, আর এ কারণেই এটা নিয়ে আমাদের ভাবার বিষয় আছে। কিছু করারও বিষয় আছে, নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকা যাবে না। পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যের সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার শিকড়ে হাত দিতে হবে এবং তার সমাধান করে জাতীয় ঐক্যের পথ সুগম করতে হবে। নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে পাকিস্তান এমন দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। সংবিধান রাষ্ট্রের মৌলিক চরিত্রের নির্দেশক, রাষ্ট্রের শিকড়। মুক্তিযুদ্ধের চরিত্রখচিত বাহাত্তরের মূল সংবিধানকে পঁচাত্তরের পর সামরিক ফরমানবলে মুক্তিযুদ্ধসংশ্লিষ্ট সব শব্দ, বাক্য ও অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়। পরে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সেটিকে বৈধতা দেওয়া হয়। অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্মের বিধান সংবিধানে সংযোজন করার পর দুই সামরিক শাসকের কৃপায় সংবিধানের যে চরিত্র দাঁড়াল, তাকে কি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বলা যায়, নাকি সেটি হয়ে গেল বাংলাদেশ নামসংবলিত আরেকটি পাকিস্তানের সংবিধান। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করায় প্রমাণিত হয়, পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাকিস্তানীকরণ হয়েছিল। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলনকারী ও তাদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনকারী এবং পাকিস্তানের প্রতিশোধপরায়ণের আকাক্সক্ষা তখন অনেকাংশেই পূরণ হয়েছিল। বাংলাদেশ আজ সেখান থেকেই আবার টার্ন করছে, প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে-হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমরা পরিপূর্ণভাবে আবার মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ফিরে পাব। পাকিস্তানের গাত্রদাহ এখানে। তাদের হয়ে যারা এত দিন বাংলাদেশে কাজ করেছে তাদের ফাঁসি হয়ে যাচ্ছে, আর পাকিস্তান একেবারে চুপচাপ বসে থাকবে, এটা ভাবা বাস্তবসম্মত নয়। পাকিস্তান যে ডাহা মিথ্যাচার করেছে, তার ওপর এখন একটু নজর বোলাই। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ১৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, 'The excess and manyfold crimes committed by these prisoners of war constituted, according to the relevant provisions of UN general Assembly Resolution and International law, war crimes, crimes against humanity and genocide, and that there was universal consensus that persons charged with such crimes as the 195 pakistani prisoners of war should be held to account and subjected to the due process of law.' সুতরাং ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা কখনো বলা হয়নি। বাংলাদেশের নাগরিক, যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক হয়ে হত্যা, গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের ব্যাপারে চুক্তির কোথাও কিছু বলা হয়নি। সুতরাং সাকা, মুজাহিদ, কাদের মোল্লার বিচার ও দণ্ডাদেশ নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার পাকিস্তানের নেই। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি অনুযায়ী গণহত্যার কোনো ক্ষমা হয় না। ১৯৬৯ সালে গৃহীত ভিয়েনা কনভেনশনের ৫৩ নম্বর ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে, গণহত্যাকারীকে কেউ যদি ক্ষমা করেও থাকে, তবে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের পর যুদ্ধের প্রথমভাগে বাংলাদেশে গণহত্যার অন্যতম সেনানায়ক, তখনকার ১৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা কর্তৃক লিখিত 'A stranger in my own country' গ্রন্থের ভূমিকার দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, 'We exploited East Pakistan and when the people rose demanding their right of self determination, the Pakistan military, then in power, retaliated with genocide.' সুতরাং একদিন না একদিন পাকিস্তানকে গণহত্যার বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।
আগেই উল্লেখ করেছি, একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়াই উপমহাদেশকেন্দ্রিক পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যসহ ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর ভেতরে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে উসকে দেওয়া এবং তাদের অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, অর্থ দিয়ে সব ধরনের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রদান করাই পাকিস্তানের অনুসৃত নীতির মূল লক্ষ্য। এর মাধ্যমে এক বা একাধিক রাজ্য যদি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়, তাহলে সেটাই হবে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রতিশোধ গ্রহণের উপযুক্ত উদাহরণ। এই নীতি ১৯৭২ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো ঘোষণা করেন, যার ওপর পাকিস্তান এখনো অটল আছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যে পাকিস্তানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সাহায্য দরকার। এ কাজে বাংলাদেশ থেকে আকাক্সিক্ষত সাহায্য পেলে তাতে পাকিস্তানের জন্য এক ঢিলে দুই পাখি মারার সমান হবে। ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ তো হবেই, উপরন্তু এ কাজে বাংলাদেশের সহযোগিতা পাওয়ার অর্থই হবে তখন মুক্তিযুদ্ধের কথা কেউ বলবে না, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থায় থাকবে না, পাকিস্তানের গণহত্যা ও অপকর্মের কথা কেউ বলবে না। তা হতে হলে বাংলাদেশেও পাকিস্তানের মতো প্রচণ্ড ভারতবিরোধী সরকার থাকতে হবে। যারা নীতি ও আদর্শে হবে পাকিস্তানপন্থী এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী।
ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির প্রাধান্য থাকবে সর্বত্র। এটাই চায় পাকিস্তান। এ রকম একটি রাষ্ট্রীয় চরিত্র বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছিল পঁচাত্তরের পর সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে, যার পূর্ণাঙ্গ একটি ব্যবহারিক (প্র্যাকটিক্যাল) বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় ২০০১-২০০৬ মেয়াদে, যখন জামায়াতের দুজন মন্ত্রীসহ বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। সুতরাং জামায়াত, সাকা, মুজাহিদ, নিজামীসহ এদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকদের পক্ষে দাঁড়ানো পাকিস্তানের দায়িত্ব। এ কাজটিই পাকিস্তান করার চেষ্টা করেছে, এ বাস্তবতা আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে। কাদের মোল্লাকে তারা এমনিতেই শহীদ ঘোষণা দেয়নি। এ কারণে পাকিস্তানের মানবাধিকার নেত্রী আসমা জাহাঙ্গীর বলেছেন, পাকিস্তানের বিবৃতিতে প্রমাণিত হয় সাকা, মুজাহিদ পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিল। সুতরাং এটা আদর্শগত দ্ব›দ্ব ও যুদ্ধ, যার শুরু ১৯৫২ সালে; যার একটির আপাত পরিসমাপ্তি ঘটেছিল ১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে। কিন্তু ৪৪ বছরেও পাকিস্তান বাস্তবতা মেনে নিতে পারেনি। ফলে আঞ্চলিক ফোরাম থেকে পাকিস্তান ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। উপমহাদেশে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের নতুন মেরুকরণে পাকিস্তান কোথাও নেই। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল আন্তর্দেশীয় সংযোগ সড়কের মাধ্যমে একজোট হচ্ছে। পাকিস্তানের বিরোধিতার কারণেই আন্তর্দেশীয় রেল ও সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা সার্কের আওতায় হতে পারল না। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি কয়েক মাস আগে বলেছেন, পাকিস্তান হয়ে ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের অনুমতি না দিলে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পাকিস্তানকে আফগানিস্তানের সড়ক ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বাস্তব কারণে চীন আজ বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে গভীর অংশীদারির সম্পর্কে জড়িত। আগের মতো চীনের একতরফা সমর্থন পাকিস্তান পাবে না। আর বৈশ্বিক পরাশক্তি আঞ্চলিক ইস্যুতে ভারতকে বাদ দিয়ে কিছু করতে পারবে না। আঞ্চলিক সম্পর্কের মেরুকরণে বাংলাদেশ এখন অনুঘটকের অবস্থানে। সুতরাং আঞ্চলিক সহযোগিতার ট্রেনে চড়তে হলে একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতা পাকিস্তানকে বুঝতে হবে। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের তারা রক্ষা করতে পারবে না। হম্বিতম্বি করে কোনো লাভ হবে না। বরং একাত্তরের অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অন্য অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানে এগিয়ে এলে সেটি সবার জন্যই মঙ্গলজনক হবে। মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
ডিজ৪০৩ বলেছেন: কুকুরের কাজ কুকুর করেছে তা কি মানুষের শোভা পায় ?