নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

বাংলাদেশের অগ্রগতি, সমৃদ্ধি আর উন্নয়নে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা পদ্মা সেতুর নির্মাণে মূল কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। গত শনিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে পদ্মা সেতু। বিজয়ের মাসে এ সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরেকটি ইতিহাস তৈরি করলো। এ ইতিহাস বিস্ময়ের, এ ইতিহাস গৌরবের। অসীম সাহসিকতার সঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিতে সক্ষম হয়েছেন। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে বিশ্বের পরাশক্তিদের নানারকম কঠিন শর্ত আরোপ, ঋণপ্রদান নিয়ে গড়িমসি কোনো প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করতে পারেনি। কথিত দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যায়। জটিলতায় পড়ে আরো কয়েকটি উন্নত দেশের ঋণসহযোগিতাও। পদ্মা সেতু নির্মাণে অনিশ্চয়তা তৈরিতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত শুরু হয়। এসব অবলীলায় উপেক্ষা করেন শেখ হাসিনা। ঘোষণা দেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের। চলতে থাকে প্রক্রিয়া। দ্রুত এগিয়ে চলে কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার পদ্মা সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো।
রাজধানী ঢাকা শহরের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সহজ করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম ১৯৯৮ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর ১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব দিতে বলেন। ২০০১ সালের ৪ জুলাই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতা ও অর্থসংস্থান না হওয়ায় কাজ শুরু হতে ১৩ বছর লেগে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আবারো উদ্যোগ নেয় সেতু নির্মাণের। এতে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ্বব্যাংক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথিত দুর্নীতির অভিযোগে তারা সহযোগিতা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু বাঙালি দমবার পাত্র নয়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নতুন পরিকল্পনা নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে দেশ গড়তে উদ্যোগী হন। সে সময় বিশ্বব্যাংক ঋণ সহযোগিতার প্রস্তাব দিলে বঙ্গবন্ধু তাদের বলেছিলেন, আমি যেভাবে দেশের উন্নয়ন করতে চাই তাতে তোমরা সহযোগিতা দিয়ে বিনিময়ে আমাদের কাজে নাক গলাবে, তখন পরিকল্পনা মত কাজ হবে না। বরং তোমরা আমাকে কিছু হালের বলদ কিনে দাও, আমি সেগুলো দিয়ে ফসল উত্পাদন করি। এতে দেশের খাদ্য সমস্যার সমাধান হবে। বঙ্গবন্ধু সে সময় দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, কারো সহযোগিতা নয়, আমাদের সাত কোটি মানুষ আছে, তাদের দুটি করে হাত আছে। আর আমাদের আছে উর্বর ভূমি, প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ। এগুলোর যথাযথ ব্যবহার হলে বাঙালির উন্নয়ন রোখা যাবে না। বাঙালি বীরের জাতি। যে জাতিকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এই সেতু দিয়ে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলা। এ সেতু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে, প্রতিবছর শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হবে। দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। অর্থ ব্যয়ের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহত্ প্রকল্প।
বাংলাদেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতিতে বাধা তৈরিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র এখনো সক্রিয়। তবে এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। একাত্তরে যখন বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধিকার বিষয়ে কথা বললেন, যখন ৭ মার্চ স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা করলেন, তখন থেকেই এর শুরু। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হওয়ার পর থেকে শোষণ আর নির্যাতনের হরেক রকম কৌশল আর পন্থা দেখায় পাকিস্তান। এ দেশের কষ্টার্জিত মুদ্রা দেদারছে পাচার করে নেয় পাকিস্তান। এদেশের রাজস্বের অর্থ দিয়ে উন্নয়ন হয় পশ্চিম পাকিস্তানের। মূলত দীর্ঘ এই দুই যুগে বাংলাদেশে তেমন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমই হয়নি। সর্বশেষ যখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ডাক দিলে শেষ কামড় মারতে উদ্যত হয় তারা।
এ দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড আগেই ভেঙে দিয়েছিল তারা। রাজনীতির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিকাশ রোধ করতেও তারা মরিয়া হয়ে ওঠে। ২৫ মার্চের কালো রাত থেকে তারা এ দেশের মেধাবী আর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। ওইদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে কয়েকজন অধ্যাপককে হত্যা করা হয়। মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, চিত্রশিল্পী, প্রকৌশলী, চিকিত্সকসহ পেশাজীবীদের হত্যা করা হয় খুঁজে খুঁজে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে চলে এ হত্যাযজ্ঞ। সর্বশেষ ১৪ ডিসেম্বর, পরাজয়ের একদম দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের সৃজনশীল আর মননশীল মেধা ধ্বংসের লক্ষ্যে শেষ মরণ কামড়টা দেয়। তারা চেয়েছিল, স্বাধীন হলেও অন্তত যেন বাঙালিরা কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। পাশাপাশি আল বদর, আল শামস, রাজাকার প্রভৃতি বাহিনী তৈরির মাধ্যমে এ দেশে তাদের দোসরদের স্থায়ী করে রাখার পরিকল্পনাও করেছিল। কিন্তু দুই প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হতে চলেছে। আর যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের দোসরদের নিধন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে কেবল জননেত্রী শেখ হাসিনার একক ও সফল নেতৃত্বের ফলেই।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাও ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গিরই ফসল। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলেও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেল না। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকায় অনেক মুসলিম লীগ নেতাই খুশি হলেন। সে সময়েই তরুণ মুজিব বুঝেছিলেন, রাজনৈতিকভাবে অদূরদর্শী ও ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এর ফল হিসেবে দীর্ঘ ২৩ বছর অর্থনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতিসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই শোষিত, নির্যাতিত ও বঞ্চিত থাকতে হলো বাঙালি জাতিকে। এর সীমা যখন মাত্রাতিরিক্ত হলো তখনই বাঙালি জাতির স্বপ্নপুরুষ স্বাধীনতার ডাক দিলেন, আহ্বান জানালেন মুক্তি সংগ্রামের। সে ডাকে সাড়া দিয়ে শ্রেণি-পেশা ভেদাভেদ ভুলে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হলো। গুটি কয়েক পাকিস্তানপন্থি সংগঠন, আজকের জামায়াতে ইসলামসহ আল বদর, আল শামস বাদে পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এ ঘটনাও মানব ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধুর রোপিত স্বপ্নবীজ এবং স্বাধীনতার আহ্বানে গভীর দেশপ্রেম ও মানবপ্রেমের অঙ্গীকার নিয়ে বাঙালিরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল। ১৬ ডিসেম্বরের রঙিন সূর্যটা আমাদের বিজয় নিশ্চিত করে। বিশ্ব দরবারে স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালি, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রতিষ্ঠা করলো। দীর্ঘদিনের পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত হলো বাংলাদেশ।
শুরু হলো বাঙালির অগ্রযাত্রা। নতুন পরিকল্পনা নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশগড়ার কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করলেন। দীর্ঘ বঞ্চনার পর বাঙালি জাতি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হলো। ভঙ্গুর অর্থনীতির চাকা সচল হলো। আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ব্যাপক পরিকল্পনা নেন বঙ্গবন্ধু। পরিকল্পনার আলোকে শুরু হয় কাজ। কিন্তু এ অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় এ পাকবাহিনীর রেখে যাওয়া দোসরদের হাতেই। এরপরের দুই দশকের ইতিহাস আবার সেই পিছিয়ে পড়ার ইতিহাস। ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে বহুবার, পরিবর্তন হয়নি এ দেশের মানুষের ভাগ্যের। দেশের টেকসই উন্নয়নে নেয়া হয়নি কোনো পরিকল্পনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে উপেক্ষা করা হয়। মূলমন্ত্র হিসেবে নেয়া হয় মৌলবাদী ধ্যান-ধারণা ও সাম্প্রদায়িকতাকে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা হয়। এ দেশের অস্তিত্ব অস্বীকারকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্বও দেয়া হয়। এই সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালি জাতির মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মপদ্ধতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে অস্বীকার ও উপেক্ষা করতে গিয়ে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, তা প্রত্যক্ষভাবে পাকিস্তানের অনুসরণেই। স্বাধীন দেশের কর্মকৌশল যে ভিন্ন হতে পারে, হতে পারে দেশ ও সমাজের প্রয়োজনে, এক্কেবারে সময়োপযোগী, তা পরিলক্ষিত হয়নি এই সময়ে। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামই বাধাগ্রস্ত হয়েছে এ রকম উল্টোনীতির কারণে।
অবশেষে ১৯৯৬ সালের পর বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা আবার দেশের হাল ধরলেন। কিছুটা বাধাবিঘ্নের পর পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সাল থেকে তাঁরই হাত ধরে শুরু হলো দেশের প্রকৃত উন্নয়নযাত্রা। দেশের উন্নয়নে সর্বাগ্রে আদর্শিক চেতনার ঐকমত্য গঠনে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য জাতিকে এটি অর্জন করে নিতে হয়। এরপর দেশের এগিয়ে যাওয়ার পালা। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্ত হয় উন্নয়নের সর্বশেষ সংস্করণ ডিজিটাল পদ্ধতি। একদিকে পরিকল্পনা নেয়া হয়, সারাদেশে বিদ্যুতের আলো ছড়িয়ে দেয়ার। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ বিস্তারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলটিতেও কম্পিউটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। গ্রামের অশিক্ষিত তরুণটিও অবলীলায় ইন্টারনেট, কম্পিউটার আর স্মার্টফোন ব্যবহারের মাধ্যমে প্রযুক্তিকে নিজের কাজে লাগানোর কৌশল আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে দেশের বিপুল জনশক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এ শিল্পের বিকাশ ঘটছে দ্রুতগতিতে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তৈরি পোশাক শিল্পের চেয়ে বেশি রপ্তানির লক্ষ্য নিয়ে মাননীয় উপদেষ্টা কাজ করছেন। ২০০৯ সালের আগে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ আর এ খাতে রপ্তানিতে আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে, আর আয় পৌঁছেছে ৩ শ’ মিলিয়ন ডলারে। সৃষ্টি হয়েছে ২ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে দেশের নিজস্ব অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। এরই ফলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে অস্বীকৃতির পরও পদ্মা সেতুর মত বড় প্রকল্প গ্রহণে বাংলাদেশ পিছপা হয় না। দেশ পরিণত হয় মধ্যম আয়ের দেশে। জাতিসংঘের নেতিবাচক আহ্বান সত্ত্বেও জাতির কলঙ্কমুক্তিতে বাস্তবায়ন করা হয় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির রায়। এমডিজি অর্জনের পাশাপাশি এসডিজি অর্জনেও সমানতালে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। অগ্রগতির সূচকের মাত্রা ঊর্ধ্বগতিতে চলতে থাকে ক্রমান্বয়ে।
স্বাধীনতার চারদশকও পার হয়েছে। এখন সময় কেবল সামনে এগিয়ে যাওয়ার। বর্তমান সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে উন্নত দেশের তালিকায় স্থান নিতে আর সময় লাগবে না বাংলাদেশের। এ লক্ষ্যে দেশের তরুণসমাজকে কাজে লাগাতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে তাদের পারদর্শী করে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে । তাহলে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সত্যিই সোনার বাংলায় পরিণত হবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দৃঢ়চেতা ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নন, আদর্শেরও যথার্থ উত্তরাধিকারী। মুসলিম লীগ থেকে পৃথক হওয়ার পর আওয়ামী লীগে মূলত বঙ্গবন্ধুর একক প্রভাব ছিল। সেই প্রভাবেই দলটি জনগণের মৌলিক দাবিসহ স্বাধিকার প্রশ্নে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। সে সময়ে পাকিস্তানি শাসকরা আওয়ামী লীগের দুরন্ত বিস্তারকে কোনোভাবেই রুখে দিতে পারেনি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দলটিকে নিঃশেষ করার নতুন পরিকল্পনা করে পাকিস্তানের উত্তরসূরীরা। তবে দৃঢ়চেতা আদর্শ ও বাঙালির চেতনাই আওয়ামী লীগের মূল ভিত্তি হওয়ার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর পর একমাত্র শেখ হাসিনাই বাঙালি ও মাটিকে আপন করে নিয়েছিলেন। এর ফলেই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশের গণতন্ত্র আজ বলীয়ান। এগিয়ে চলেছে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। বিশ্বের পরাশক্তিদের আপত্তি ও নিষেধ সত্ত্বেও বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী তাঁর গৃহীত পদক্ষেপে আজও অটল। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভারতসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে আজন্ম বিরাজমান সমস্যাগুলোর একে একে সমাধান করে চলেছেন। সর্বোপরি, নিজেকে শুধু এশিয়া নয়, বিশ্বপরিসরে প্রভাবশালী ও মর্যাদাবান নেতাদের সারিতে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন। এরই ফল হিসেবে বিশ্বের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকাতেও নিজের আসনটি পাকাপোক্ত হয়েছে। বিজয় দিবসে আজ এ উপলব্ধি— আমাদের, বাংলাদেশের ও বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য যে আমরা পঁচাত্তরের কালো রাতে সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত ও অপ্রত্যাশিতভাবে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। তবে আমাদের সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুর পর দিকভ্রান্ত বাঙালি জাতির অভিভাবক হিসেবে, দেশের কল্যাণকামী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। বিজয়ের মাসে প্রত্যাশা, উন্নয়নের ফলক নিয়ে প্রতিবার বিজয় দিবস আসুক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাতে জননেত্রীর হাত ধরে অবিরত বিস্তৃত হোক বাংলাদেশের সমৃদ্ধিধারা। ড. শরীফ এনামূল কবির, জা'নগর বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.