![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সৈয়দপুর মচমইল চকপাড়ায় আহমাদিয়া মুসলিম জামাত জামে মসজিদে শুক্রবার আত্মঘাতী বোমা হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এর আগে গত শুক্রবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে বাগমারার ঘটনায় ব্যবহার করা হয় ‘বান্ডোলিয়ার’ নামক এক ধরনের জ্যাকেট। এতে বোমা ও অস্ত্রসহ গোলাবারুদ রাখা যায়। এটি সাধারণত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে। এখন এটি জঙ্গিদের হাতে চলে গেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এটি সরবরাহ করে তারাই তা জঙ্গিদের দিয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনেকটা কোমর বেঁধেই নাশকতায় নেমেছে জঙ্গিরা। সামনে বিশ্ব ইজতেমা এবং পৌরসভা নির্বাচন ঘিরেও জঙ্গিদের তত্পরতা বেড়েছে। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের দাবি, জঙ্গিদের পেছনে রাজনৈতিক মদদ রয়েছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মসজিদে হামলা হচ্ছে।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমা, পৌর নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা এবং সামপ্রতিক নাশকতার ঘটনার কারণে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে ও গোয়েন্দারা নজরদারি বাড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিদেশি ও ভিন্ন মতাদর্শী হত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বশেষ দুইজনের ফাঁসি কার্যকর এবং কয়েকটি হামলার পর দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরই মধ্যে ইজতেমা, পৌর নির্বাচন এবং নতুন করে নাশকতার আশঙ্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ ছক এঁকেছে পুলিশ ও র্যাব। ঢাকায় বিদেশি হত্যা, পুলিশ হত্যা ও তাজিয়া মিছিলে হামলার পর উত্তরাঞ্চলে ধারাবাহিক হামলা এবং সর্বশেষ রাজশাহীর বাগমারায় মসজিদে আত্মঘাতী হামলা এবং চট্টগ্রামে মসজিদে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণের ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়ায় কয়েকটি হামলার সঙ্গে জঙ্গিরা জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা তথ্যে আরো গুপ্ত হামলা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর রাজশাহী এবং চট্টগ্রামে মসজিদে হামলার ঘটনায় রাজধানীতেও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীতে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে ২৩৪টি পৌরসভার মধ্যে ঢাকা বিভাগেই সবচেয়ে বেশি- ৬৫টি পৌরসভার নির্বাচন হবে। তাই ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে আগে থেকেই বিশেষ নজরদারি থাকছে। উত্তরাঞ্চলের রংপুরে ২০টি এবং রাজশাহীতে ৪৯টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৩৭, খুলনায় ৩০, বরিশালে ১৭ এবং সিলেটে ১৬টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নাশকতার কারণে উত্তরাঞ্চল ও ঢাকায় নেয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা।
একটি গোয়েন্দা সূত্র বলছে, দেশব্যাপী হামলার পরিকল্পনা রয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর। রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তঃকোন্দল ও দলভেদে কোন্দল উস্কে দিয়ে বিভাজনের রাজনীতিকে চাঙ্গা করে ফায়দা হাসিল করতে চাইছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। নাশকতার পরিকল্পনার ছক তৈরি ও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী সভা সমাবেশে হামলা চালানো হতে পারে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, অধিকাংশ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ‘হট লিঙ্ক’ রয়েছে নিবন্ধন বাতিল হওয়া ও মানবতাবিরোধী ইস্যুতে কাবু জামায়াতের। দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারছে না দলটি। নির্বাচন বানচাল করতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর নাশকতা চালানোর পরিকল্পনায় জামায়াতের মদদ রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ও আশপাশের এলাকায় নানাবিধ অপ্রীতিকর ঘটনার অবতারণা করে সরকারকে জামায়াত-শিবির বিব্রতকর অবস্থায় ফেলাসহ দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা চালাতে পারে। জামায়াত-শিবির আগে থেকেই বিশ্ব ইজতেমা ও তবলীগ জামাতের প্রতি একটি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে আসছে। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ইজতেমাকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহরীর, জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলো অপতত্পরতার মাধ্যমে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলাসহ বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং পয়েন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য আমলে নিয়েই সরকার কাজ করবে।
‘মানুষ মেরে বেহেশতের টিকিট পাওয়া যায় না’
সারাদেশে মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জঙ্গি হামলার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আলেম-ওলামারা। শুক্রবারের খুতবা এবং শীতকালীন বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে এসব নিয়ে নিয়মিত বয়ান দিচ্ছেন তারা। বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ রুহুল্লাহ শাহজুলি বলেছেন, এভাবে মানুষ মেরে বেহেশতের টিকিট পাওয়া যাবে না। ইসলাম কখনই এসব সমর্থন করে না। আমাদের নবীজীর কাছে সকল ধর্মের মানুষ নিরাপদ ছিলেন।
ইসলামি চিন্তাবিদ গোলাম হাকিম মাসকানাহ বলেন, আল্লাহর রাসূলের সাহাবীদের সঙ্গে যুদ্ধে যারা পরাজিত হয়েছেন তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে রাখা হতো। কোন ধরনের কষ্ট তাদেরকে দেয়া হয়নি। জীবন দিয়ে নবীজীর সাহাবীরা যে দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, সেই ইসলামে মানুষ হত্যার প্রশ্নই আসে না। যারা এখন মানুষ হত্যা করে ইসলাম কায়েম করতে চায়- তারা ইসলামের চরম শত্রু। তাদের অবস্থান ইসলামের বিরুদ্ধে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৯
চাদের জোসনা বলেছেন: সরকারে থলেতে মাজার পন্থিরা থাকায় মূলধারা উলামাগণ সরকার বিচ্ছিন্ন। এজন্য তাদের বয়ানে কোন ফল আসছে না।