![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ এগিয়ে গেলে উপকৃত হয় দেশের মানুষ। যে দেশ যতো এগিয়ে, সেই দেশের মানুষ ততো উপকৃত। উপকার পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় কোনো বিভাজন করার কিংবা উপকৃত হওয়া থেকে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না। কেননা উন্নত দেশের সাধারণ উন্নয়নের স্রোত কোনো একদিকে বয়ে যায় না, বরং সেই উন্নয়নের পুরো স্রোতটি সমগ্র দেশের ওপর দিয়েই বয়ে যায়। উন্নয়ন যার হাত দিয়েই আসুক, সুফল ভোগ করার অধিকারী হয়ে যায় সবাই।
একথা বিএনপির স্বীকার করতেই হবে যে, রাজনীতি জনগণের জন্যই। এখন হয়তো ক্ষমতায় নেই বলে উন্নয়নের কাণ্ডারির রশিটি তাদের হাতে নেই। কিন্তু উন্নয়ন যখনই ঘটুক, যেভাবেই ঘটুক, যার হাতেই ঘটুক—উন্নয়নটি হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য। আর সেই আপামর জনগণের একটি অংশ তাদের রাজনৈতিক সমর্থক। তাই তাদের সমর্থকদের স্বার্থে, সকল মানুষের স্বার্থে বিএনপিকে উন্নয়নের রাজনীতির সঙ্গে থাকাই বাঞ্ছনীয়। তাদের রাজনীতির প্যাটার্নটাও এমন হতে হবে, যাতে দেশের মানুষ বুঝতে পারে যে তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের উন্নয়ন সমর্থক।
এদেশে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি সমান তালেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কখনো এর পাল্লা ভারি, তো অন্য সময়ে ওর পাল্লা ভারি। এমন স্বীকৃত একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ক্যাডারভিত্তিক সহিংস রাজনৈতিক কালচারে বিশ্বাসী জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে শুধু দেশের ক্ষতিই নয়, বরং নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষতিও করেছে। বেগম খালেদা জিয়া জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের সহিংসতাকে তার দলের হাতিয়ার হিসেবে পেতে গিয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি করেছিলেন। পুরো ৮০ দিনের সহিংসতা ঘটেছিল বাংলাদেশে। অবরোধ আর হরতালের নামে বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াত এবং শিবিরের সহিংস কর্মীরা সারাদেশে তাণ্ডব ঘটিয়েছিল।
পরিণামে কিছু নিরীহ মানুষ বোমার আঘাতে মৃত্যুবরণ করেছিল, সাধারণ মানুষ আগুনে পুড়ে মরেছিল এবং জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছিল। অবরোধ এবং হরতালকে ঘিরে সহিংসতা হলেও সেই অবরোধ ও হরতালকে একটানা চালিয়ে নিয়েছিল খালেদা জিয়ার বিএনপি। এমন সিদ্ধান্ত যে তাদের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল তা তারা টের পেলেন, যখন দেখলেন তাদের ডাকে তাদের সমর্থকরাও আর মাঠে নামছে না।
এরপরই দলীয় পরিচয়ে মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। একেবারেই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। আর তাদের এই সিদ্ধান্ত বিশ্লেষণ করেই বলা যায়, তাদের আগের নির্বাচনে না আসার সিদ্ধান্ত একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে; ঢাকায় মেট্রোরেলের কাজ শুরু হয়েছে; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হচ্ছে; ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হচ্ছে; ঢাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণে কাজ চলছে তেজগাঁও, মগবাজার, বাংলামটর, মৌচাক, শান্তিনগর ও খিলগাঁও জুড়ে; শান্তিনগর থেকে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত অন্য একটি উড়াল সেতুর পরিকল্পনাও নিশ্চিত; হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে; মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া ও পায়রাতে আরও তিনটি সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে; হাতিরঝিল প্রকল্প এবং অনেকগুলো উড়াল সেতু ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধনের বিশেষ সাক্ষী হয়ে আছে; বাংলাদেশে এ বছর ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা আছে; বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার; বাংলাদেশের পোশাকশিল্প পৃথিবীর কাছে বিস্ময়কর উন্নয়নের চিহ্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এ সবকিছুই বাংলাদেশের উন্নয়নের বর্তমান ছবি।
এ উন্নয়নে বাংলাদেশের জনগণের অবদান আছে, ব্যবসায়ীদের অবদান আছে, সরকারের অবদান আছে। কিন্তু অর্জনটি সবার জন্যই। এই সবার মধ্যে অবশ্যই বিএনপির কর্মী-সমর্থকরাও রয়েছে। এই উন্নয়নের ধারায় বিএনপি বাংলাদেশকে কতটুকু সহযোগিতা করবে তা তাদের বিবেচ্য বিষয়। তবে তারা যদি সুস্থ রাজনীতি করতে মনস্থ করে, তাহলে এই বাংলাদেশের পাশে তাদের অবশ্যই থাকতে হবে। রাষ্ট্রের উন্নয়নে এবং দেশের মানুষের অগ্রসরতায় বিএনপি যদি পাশে না থাকে, তবে তাদের রাজনীতি জনগণের হূদয় ছুঁতে ব্যর্থ হবে। তাই তারা আগামীদিনে কেমন রাজনীতি নিয়ে সামনে আসছে- বিষয়টি বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
©somewhere in net ltd.