![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটি রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ভোগ ডেকে এনেছিল। সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশের পোশাকশিল্প ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছিল। বহু দেশের সাধারণ ক্রেতারা পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। বিদেশি ক্রেতা সংগঠনগুলো ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিয়েছিল। তিন বছরে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সে অবস্থা শুধু কাটিয়েই ওঠেনি, উন্নয়নের একটি মডেল হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা সহযোগিতা করছিল, তারা এখন বাংলাদেশের কর্মপরিবেশ উন্নয়নের অভিজ্ঞতা তথা ‘বাংলাদেশ মডেল’ পোশাক রপ্তানিকারী অন্যান্য দেশেও প্রয়োগের চিন্তাভাবনা করছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের এই অর্জন যেমন শিল্পটির অর্জন, তেমনি দেশের জন্যও একটি গৌরবের বিষয়।
যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে অনেক কিছুরই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বদলে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও লেগেছে তার ছোঁয়া। বাংলাদেশের শ্রমিকের সামান্য দুর্গতির খবরও এখন মুহূর্তে পৌঁছে যায় আমেরিকা বা ইউরোপের একজন সাধারণ ক্রেতার কাছে। অমানবিক কোনো কিছু দেখলেই তারা প্রতিবাদী হয়। সংশ্লিষ্ট পণ্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। তাই ব্যবসায়ে সুনাম একটি বড় বিষয় হয়ে দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও তা অনুভব করছেন। তাই সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। অ্যালায়েন্স ও অ্যাকর্ড নামে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের দুটি জোট ও আইএলওর অধীনে বাংলাদেশের তিন হাজার ৬৬০টি কারখানার কর্মপরিবেশ পরিদর্শন করা হয়। অসংগতিপূর্ণ হওয়ায় ৩৭টি কারখানা সম্পূর্ণ ও ৩৬টি কারখানা আংশিকভাবে বন্ধ রাখা হয়। অনেক কারখানায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়। শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের সংখ্যাও বেড়েছে। নেওয়া হয়েছে আরো অনেক যৌক্তিক উদ্যোগ। ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে নাক সিটকানোর কোনো সুযোগ নেই। এর ইতিবাচক ফলও পাওয়া গেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই এ খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ১০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বছর শেষে তা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদেশি ক্রেতারাও বাংলাদেশের পোশাক ক্রয়ে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এগিয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবনধারণের মান। বাংলাদেশের এই অগ্রগতি সারা বিশ্বেই প্রশংসিত হচ্ছে। তাই এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যকেও একই তালে এগিয়ে যেতে হবে। এখানে বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতির বক্তব্যটি স্মরণ করা যায়। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতে কর্মপরিবেশ উন্নয়নের কাজটি আমরা কারো তাগিদে করছি না, নিজেদের প্রয়োজনেই করছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের পোশাক খাত নিজেদের প্রয়োজনেই কর্মপরিবেশ উন্নয়নের প্রক্রিয়াটি অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাবে।
©somewhere in net ltd.