![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ এ মুহূর্তে একটি বিশ্বজনীন সমস্যা। এই সমস্যা কোন কোন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। বাংলাদেশ প্রথম থেকেই সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। জঙ্গীগোষ্ঠী দমনে গঠন করা হয়েছে ‘কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম’ ইউনিটসহ নানা সংস্থা। সরকার দেশে তালেবান ও আইএসের মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের অস্তিত্ব অস্বীকার করলেও নানা আদলে খোদ রাজধানীতেই এদের ছায়া সংগঠনগুলোর তৎপরতা যে চলছে তা সহজেই অনুমেয়।
খোদ রাজধানীতে আবারও জঙ্গী আস্তানার সন্ধান মিলেছে। প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে আরও একটি জঙ্গী আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেল। এর মধ্যে মিরপুরে অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ের একটি বাড়িতে জঙ্গীদের বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পায় ডিএমপি। একই দিন রাতে বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় অভিযানকালে দুই জঙ্গীকে আটক করা হয়। বাড্ডার জঙ্গী আস্তানাটি মূলত আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের হেড কোয়ার্টার্স হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মুক্তমনা প্রগতিশীল মানুষ, সাধারণ মানুষ কিছুই বাদ যায়নি জঙ্গীদের আক্রমণ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। বলা যায় জঙ্গীদের শক্তিমত্তা ও তৎপরতার যতটুকু পরিচয় পাওয়া গেছে তাকে খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই। বিগত সময়ে জঙ্গী তৎপরতা বিষয়গুলোর দিকে তাকালে সহজেই ধারণা করা যায়, জঙ্গীদের প্রস্তুতি দুর্বল নয়। নামে-বেনামে কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এরা সক্রিয় রয়েছে।
এ কথা সত্য যে, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ নানা কারণে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক জঙ্গীবাদসহ কিছু দেশের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে। তারা নানাভাবে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশে জঙ্গী তৎপরতা প্রকাশ্য হয় ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ শতাধিক স্থানে একযোগে বোমা হামলা চালায় জেএমবি নামের জঙ্গী সংগঠন। জেএমবি ছাড়াও সে সময় হুজিসহ আরও কিছু জঙ্গী সংগঠনের নাম শোনা যায়। পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধারাবাহিকভাবে জঙ্গী তৎপরতা মোকাবেলায় বিশেষ মনোযোগ দেয়া হয়। জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত থাকায় বহু ব্যক্তিকে আটকসহ কয়েকটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সংগঠন নিষিদ্ধ হলেও তাদের পলাতক ও জামিনে বেরিয়ে আসা সদস্যরা নতুন নামে সংগঠিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু নতুন জঙ্গী গ্রুপের তৎপরতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিগত সময়ে মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যার দায় তারা স্বীকারও করেছে।
জঙ্গী উত্থানের বিষয়টি যে কোন দেশের জন্যই উদ্বেগের কারণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরবচ্ছিন্ন অভিযানের পরও দেশে জঙ্গী তৎপরতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, এটি একটি বাস্তবতা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায়ই জঙ্গী সংগঠনের সদস্য ধরা পড়ছে। রাজধানীর আশপাশ এলাকায়ও জঙ্গী আস্তানার সন্ধান মিলেছে। জঙ্গীদের এ সক্রিয়তায় তাদের দমনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। জঙ্গী সংগঠনগুলোর অর্থ ও অস্ত্রের উৎস খুঁজে বের করা জরুরী। প্রয়োজনে মানুষের মধ্যে জঙ্গীবিরোধী উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী গ্রহণ করা যেতে পারে। দেশে জঙ্গী দমনে কঠোরতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মতো একটি শান্তিপূর্ণ দেশে জঙ্গী সংগঠন যেন কোনভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, তা নিশ্চিত করা দরকার।
©somewhere in net ltd.