![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেল ছিল এক মৃত্যুপুরী। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের ধরে এনে এখানে নির্যাতনের পর হত্যা করা হতো। এসব অপকর্ম পরিচালিত হতো সে সময় চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলবদর বাহিনীর প্রধান মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। সে কারণেই ১৯৭১ সালে মীর কাসেম পরিচিত হয়েছিলেন ‘বাঙালি খান’ নামে। তখনকার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ দুটি অভিযোগে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এখন আসামির পক্ষ থেকে রিভিউ আবেদন করা যাবে। তাতেও যদি মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ভিক্ষা না করেন কিংবা ক্ষমা না পান, তাহলে এই রায় যথাসময়ে কার্যকর করা হবে। এই রায়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। কোথাও কোথাও আনন্দ-উল্লাস করা হয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বরাবরের মতোই রায়ের প্রতিবাদে আজ বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।
সত্তরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও পাকিস্তানি শাসকরা সেদিন বাঙালির হাতে ক্ষমতা না দিয়ে রাতের অন্ধকারে ট্যাংক-কামান-মেশিনগান নিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেই পৈশাচিক হামলার জবাব দিতে পুরো জাতি যখন জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন এ দেশেরই কিছু কুলাঙ্গার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হয়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর জঘন্য অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছিল। তেমনি একজন অপরাধী এই মীর কাসেম আলী। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর একাত্তরের ঘাতকরা পুনরায় রাজনীতিতে ফিরে আসে। ১৯৭৭ সালে এই কাসেম আলীকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতে ইসলামীর অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী নামের একটি বিদেশি সংস্থার এ দেশীয় পরিচালক নিযুক্ত হন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম এ ছাড়াও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও ইবনে সিনা ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জামায়াতের প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
স্বাধীনতার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ শুরু হলেও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা পাকিস্তানপন্থীরা বিচারকাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে জাতিকে প্রায় চার দশক অপেক্ষা করতে হয় একাত্তরের নরঘাতকদের বিচার দেখার জন্য। আজ তাই প্রতিটি রায়ের পর দেশব্যাপী আনন্দ-উল্লাস করতে দেখা যায়। অন্যদিকে একাত্তরের পরাজিত শক্তি, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীকে দেখা যায়, প্রতিটি রায়ের দিন অথবা তার পরদিন হরতাল ডেকে সহিংসতা চালাতে। দেশের প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ সুবিধা নেওয়ার পরও হরতালের নামে নাশকতা চালানোর যেকোনো অপচেষ্টা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন। আমরা চাই, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক এবং প্রত্যেক অপরাধী তাদের যথোপযুক্ত শাস্তি পাক।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫
রাজু বলেছেন: সবাই চায় একাত্তরের বিচার কিন্তু অবশ্যই ন্যায় বিচার। যেখানে প্রধান ম.. বেয়ায় রাজাকার!! তারপর স্কাইপি কেলেংকারি। সব চাইতে বড় কথা এই রাইয়ের প্রধান বিচারকগন পাল্টা-পাল্টি মন্তব্য ইত্যাদি মিলে অনেক গজামিল দেখা মানুষের মনে অনেক প্রশ্নই যাগে....সত্যই কি ন্যায় বিচার হচ্ছে???