![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনার পর সতের দিন অতিবাহিত হয়েছে। অথচ তনু হত্যাকাণ্ডের কোনো কুল, কিনারা হয়নি। সকলের দাবি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে। না হলে অনেকেই এই বিষয়টিকে পুঁজি করে ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করবে। ইতোমধ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সেখানে তনুকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তাহলে ফেসবুক ও অনলাইনে রক্তাক্ত নারীর ছবিটি কার? সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী দ্রুত ধরা পড়ুক এবং শাস্তি পাক এই প্রত্যাশা আমাদের। তবে এই হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে নানা মাত্রায় এবং বিচিত্র ভঙ্গিতে অপপ্রচার চলছে। সেখানে সেনানিবাস এবং সেনাবাহিনীকেও জড়িত করা হয়েছে। বর্তমানে সেনাবাহিনী তাদের পেশাদারিত্বের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে। এজন্য সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য বা কর্মকর্তা তনু হত্যায় জড়িত থাকলে তার বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক।
২০ মার্চ হত্যার পর ঢাকা সেনানিবাসে আইএসপিআর থেকে বিবৃতির মাধ্যমে তনুকে সেনা পরিবারের সন্তান দাবি করে এ ঘটনায় দোষীদের ধরতে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ‘অসাধারণ’ কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বলেছে- তনুর বাবা মো. ইয়ার হোসেন বিগত ত্রিশ বছর যাবত্ কুমিল্লা সেনানিবাস ‘ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে’র একজন বেসামরিক কর্মচারী। তিনি সেনাপরিবারের সদস্য এবং তনু কুমিল্লা সেনানিবাসেই বড় হয়েছে। তাই তনুর নির্মম হত্যাকাণ্ডে সেনাসদস্যরা দারুণভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছেন। তাছাড়া সেনাবাহিনী জনসাধারণের অংশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেদিন সেনাবাহিনী তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আকাঙ্ক্ষা তাদেরও। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী প্রথম থেকেই সকল তদন্তকারী সংস্থাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী সম্পর্কে অনুমাননির্ভর ও মনগড়া বক্তব্য প্রদান ও প্রচার করছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের মতামতের দিকে দৃষ্টি দিলে সেনাবাহিনী এবং তনু হত্যা সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্যের উপস্থাপনা চোখে পড়ে। এ বিষয়ে তারা দায়িত্বশীল হওয়ার পরিবর্তে নির্বিচারে নানা মন্তব্য করে পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টায় লিপ্ত। হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার দায় কোনোভাবেই পুরো বাহিনীর নয়। সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনী আমাদের অহংকার। অথচ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার জন্য তনুকে নিয়ে মিথ্যাচারে মেতে উঠেছে কুচক্রী ও ষড়যন্ত্রকারীরা। দেশ ও জাতির গৌরব এবং শক্তির প্রতীক আমাদের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে ক্ষমতালোভীদের হাতে দেশকে তুলে দেয়ার স্বপ্ন-জাল বুনছে অনিষ্টকারীরা। এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে।
সেনাবাহিনী তনুকে নিজেদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিচার দাবি করেছে। এমনকি তাদের কেউ জড়িত থাকলে শাস্তি পেতে হবে সেটাও বলা হচ্ছে। তবু সুশীল সমাজ গলা ফাটাচ্ছে কেন সেটাই আমাদের বোধগম্য নহে। এমনকি হত্যার ঘটনায় তদন্তে সর্বপ্রকার সহায়তা দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এজন্য প্রমাণ হওয়ার আগেই সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়। সেনাবাহিনীকে হেয় করা বা আসল খুনিকে আড়াল করার চেষ্টা, সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে শান্তিরক্ষা মিশনে অনন্য ভূমিকা পালন করেও বিশ্বজুড়ে প্রশংসা অর্জন করেছে। গোটা বাঙালি জাতি এখন তাদের নিয়ে গর্ব বোধ করে। প্রকৃত খুনি কে তা প্রমাণ করার সুযোগ না দিয়ে দোষারোপ করলে তা হবে ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তের অংশ। অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি তাদেরও। সেনাবাহিনীকে তদন্ত করার সময় ও সুযোগ না দিয়ে উস্কানিমূলক কথা বলে দোষী হিসেবে প্রচার করা হলে তা হবে আত্মঘাতী।
অন্যদিকে তনুর ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত এবং বিবস্ত্র দেহের যে ছবি প্রচার করা হয়েছে তাও সত্য নয়। মাথার চুল কাটা ছবিটিও তনুর নয়। তনুর মৃতদেহ স্ট্রেচারে শায়িত, শান্ত, ছিন্ন-ভিন্ন নয়- এই ছবি কোনো মিডিয়া প্রচার করল না কেন? বরং একজন মৃত নারীকে ধর্ষণের অপবাদ দিয়ে ছোট করা হচ্ছে সারা দেশ জুড়ে।
মূলত বর্তমান পরিস্থিতিতে এক শ্রেণির লোকের অতি উত্সাহ মানুষকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করতে পারে। প্রতিবাদ বা আন্দোলন হবে হত্যাকারীর বিরুদ্ধে, নিশ্চয় কোনো সুশৃঙ্খল বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে দ্রুততম সময়ে বিচার করা গেলে সাধারণ মানুষের সংশয় দূর হবে।
ড. মিল্টন বিশ্বাস লেখক :অধ্যাপক এবং পরিচালক, জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১৩
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: শুধু তনুর ক্ষেত্রেই নয় অন্যান্য খুন, গুম বা জাতীয় কোন ঘটনার বেলায়ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা এমনকি মন্ত্রীদের মুখ থেকেও তদন্ত শুরু হওয়ার আগে এমনকি তদন্দ চলাকালীন সময়েও মন্তব্য বের হয়ে আসে।যা তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। আসল অপরাধের কারণ এবং অপরাধী দুটিই আড়ালে অন্ধকারে রয়ে যায়।ভিকটিম বা ভিকটিমের আত্মীয়স্বজন সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়।যা সত্যিই আনাকাংখিত।
তনুর ব্যাপারটি নিয়ে জনমনে সন্দেহের উদ্বেগ হওয়ার কারণ হচ্ছে প্রথম পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।