![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশের বিরোধিতা তথা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নগ্ন হস্তক্ষেপের বিষয়টি দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনীতির মেরুকরণে মূল ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মিত্র রাষ্ট্র প্রতিবেশী ভারত ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকে এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এই বিচার প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়েছে। অন্যদিকে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পর্কে পাকিস্তান পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবকে বাংলাদেশের জনগণ এ দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পাকিস্তানের নগ্ন হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য করছে। সর্বশেষ জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ার প্রেক্ষিতে তাকে নিশান-ই-পাকিস্তান পদকে ভূষিত করে দুই দেশের সম্পর্ককে বিঘি্নত করার পদক্ষেপ নেয়া হলো! বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ পাকিস্তানের সরকারের গৃহীত এ ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ কারণে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখাটিও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে!
ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম সংখ্যালঘুদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি হিসেবে সৃষ্ট 'পাকিস্তান' সমগ্র বিশ্বের জন্য জঙ্গিবাদ উৎপাদন ও রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে কুখ্যাত। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা পাকিস্তানে এত ব্যাপক বিস্তৃত লক্ষণ হিসেবে দেখা দিয়েছে যে পাকিস্তান বলতেই এখন একটি মূর্তিমান আতঙ্ক বোঝায়। অথচ পাকিস্তানের কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ সংখ্যালঘুদের দাবির চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গণ্য হতেন। সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য, এমনকি তিনি লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে দ্বিজাতি তত্ত্বের পক্ষে প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছিলেন। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, অসাম্প্রদায়িক জিন্না, মুসলিম সংখ্যালঘুদের স্বতন্ত্র আবাসভূমির দাবিকে জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য 'দ্বিজাতি তত্ত্বের' পক্ষে কথা বলা শুরু করেছিলেন। এভাবে তার সহ-ধর্মাবলম্বীদের অধিকার সংরক্ষণের পক্ষে যুক্তি দেখানোর প্রয়োজনে জিন্নাহ্ 'সাম্প্রদায়িক' মতাদর্শের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেন। জিন্নাহ্ সম্পর্কে জসওয়ান্ত সিংয়ের একটি পরিচিত বই হচ্ছে বিগত এক হাজার বছরের কাহিনীর কোনো পর্যায়ে ভারতীয় মুসলমানরা একটি সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন? প্রশ্নটি স্পষ্টতই আলঙ্কারিক। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানরা কখনই সংখ্যাগত দিক দিয়ে মেজরিটি ছিলেন না।
এর পরে এই বইতে আরো একটি প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে, তা হলো 'মুঘল শাসন আমলে কি মুসলমানরা নিজেদের সংখ্যালঘু বিবেচনা করতেন,একশ বছরেরও বেশিকাল ধরে নির্জীব থাকার পরে চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৮৫৭ সালে যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের নিচে কবরস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত?... ব্রিটিশ যুগে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশীয় রাজ্য হায়দরাবাদের মোট জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ১১ ভাগ ছিলেন মুসলমান, আর হিন্দু ছিলেন শতকরা ৮৪ ভাগ। নিজাম-উল মূলক কর্তৃক শাসিত হওয়ার কালে হায়দরাবাদের মুসলমানরা কি নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করতেন? উত্তর হচ্ছে, 'না'। এভাবে প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে তারপর জসওয়ান্ত সিং সংখ্যালঘুর সংজ্ঞা দিয়েছেন। বলেছেন, ' তাহলে মাইনরিটি কোনো সংখ্যা তাত্তি্বক ফল নয়, এটি ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত একটি ব্যাপার (সংজ্ঞা)। রাষ্ট্রের সঙ্গে মুসলিমরা যতক্ষণ সম্পৃক্ত ছিলেন, ততক্ষণ তারা অর্থনৈতিক মুনাফা এবং আমলা, বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর চাকরি এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষিত হওয়া সম্পর্কে আশাবাদী ছিলেন, এখানে জনমিতিক সংখ্যা অপ্রাসঙ্গিক ছিল। (পৃ.৪৮৯)
কিন্তু ইংরেজরা ক্ষমতা দখলের পর থেকে 'মাইনরিটির' ধারণা পরিবর্তিত হওয়া শুরু করে। সম্প্রতি 'দ্বিজাতি তত্ত্ব' সম্পর্কে আফগান-পাকিস্তানবিষয়ক স্ট্র্যাটেজিক বিশ্লেষক নাদিম আলিজাইয়ের পর্যবেক্ষণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আলিজাই বলছেন, 'কোথা থেকে এই দ্বিজাতি তত্ত্বের উদ্ভব হলো যে হিন্দু এবং মুসলিমরা দুটি আলাদা জাতি! যখন মুসলমানরা ভারত শাসন করছিল তখন কেন এটি আসে নাই? তার মতে এটি একটি ভিত্তিহীন তত্ত্ব! এটি তাদের জন্যই করা হয়েছে যারা 'পাকিস্তান'-এর জন্য একটি ভিত্তি খুঁজছিলেন।' তিনি বলছেন, 'কোনো দিক দিয়েই পাকিস্তান একটি ইসলামী রাষ্ট্র নয়। এমনকি মুসলিম পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিলেন।' শেষ পর্যন্ত ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যখন পাকিস্তান সৃষ্টি হয় তারপর থেকে 'ক্ষমতা' ও 'সংখ্যা' উভয় দিক দিয়ে গরিষ্ঠতার কারণে ক্ষমতাসীন সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের মনমানসিকতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে তারা মনে করতে থাকে যে, পাকিস্তানের মধ্যে যারা সংখ্যাগত দিক দিয়ে 'মাইনরিটি' তাদের জীবন, সম্পত্তি ও স্বাধীনতা হচ্ছে তাদের (মেজরিটির) খেয়াল-খুশির ব্যাপার। মাইনরিটির জীবন, সম্পত্তি ও স্বাধীনতাসহ ইহজাগতিক ও পারলৌকিক সবকিছু ধর্মীয় পরিচিতির বিচার-বিবেচনা করার কারণে শেষ পর্যন্ত 'পাকিস্তান', অন্তঃসারশূন্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়। 'পাকিস্তান'-এর এই পরিস্থিতি এখনো বজায় আছে। সেটি এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। তবে ব্যর্থ রাষ্ট্রই শুধু 'পাকিস্তান'-এর জন্য সর্বশেষ তকমা নয়! এই রাষ্ট্রটির জন্য আরো কিছু অপেক্ষা করছে?
আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম 'খামা ডট কম'-এ 'আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের গণতন্ত্র' সম্পর্কে হুমা নাসেরির একটি কলাম প্রকাশিত হয়েছে। এখানে নাসেরি বলছেন পাকিস্তানের (এবং আফগানিস্তানের) সম্পূর্ণ এলাকা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার শাসন করে না। উভয় দেশের অনেক এলাকা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং (এগুলো) মিলিশিয়া বা অরাষ্ট্রীয় শক্তি শাসন করছে যা প্রকারান্তরে ভঙ্গুর গণতন্ত্রের জন্য পুনরায় হুমকির সৃষ্টি করেছে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আন্তরিকভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে আসলে যা করা হচ্ছে তাতে 'অরাষ্ট্রীয়' শক্তি উৎসাহিত হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীগুলো ২০১৪ সালের ১৫ জুন থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে 'অপারেশন জার্ব-ই-আজব' পরিচালনা করছে। এটি একটি বিতর্কিত অপারেশন এবং ফলাফল বলতে গেলে 'শূন্য'। পাকিস্তানকে না জানিয়ে সে দেশের জঙ্গি নির্মূলের নামে মার্কিন বাহিনীর হামলা করতে দেখা যাচ্ছে। কারণ মার্কিন সরকারের অভিমত হচ্ছে জঙ্গিদের ওপর হামলার খবর পাকিস্তানকে জানানো হলে সে খবর অতিদ্রুত জঙ্গিদের কাছে চলে যায়। অতএব শেষ পর্যন্ত তা সফল হয় না। তাই পাকিস্তানকে না জানিয়েই মার্কিন হামলা হচ্ছে পাকিস্তানে। সংবাদমাধ্যম খবর দিচ্ছে ওবামা সরকারের আমলে পাকিস্তানের ওপর এ পর্যন্ত প্রায় ৬৩১ বার মার্কিন ড্রোন হামলা করা হয়েছে। দৃশ্যত পাকিস্তান মানেই হচ্ছে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র! পাকিস্তানের ডেইলি টাইমসে ২ মে, ইয়াসীর লতিফ হামদানির একটি লেখার শিরোনাম হচ্ছে, এই লেখাটিতে পাকিস্তানি নাগরিক হামদানি তুরস্ককে আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের মতো ভুল না করার জন্য। তুরস্কের প্রতি এই আহ্বান জানানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে হামদানি বলছেন, পাকিস্তানের অনুসৃত নীতির ফলে 'সাংবিধানিকভাবেই বিভক্তিবাদকে বৈধতা দেয়া হয়েছে' আফগানিস্তানের একাডেমি অব সায়েন্সের সদস্য এবং একজন বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক আব্দুর রশিদ ওয়াজিরি বলছেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য উপমহাদেশে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন বা (এসনকি) খ্রিস্টীয় মতবাদের প্রসার বা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য কোনো লাভজনক কিছু করার ব্যাপারে আদৌ আগ্রহী ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল শুধু সাম্রাজ্য বিস্তার। তিনি পাকিস্তান সৃষ্টিকে একটি নাটকীয় ঘটনা বলছেন। ওয়াজিরি বলছেন, পাকিস্তানের সৃষ্টি এই দিক দিয়ে নাটকীয় যে, এটির না আছে কোনো ভৌগোলিক কাঠামো না আছে যথাযথ কোনো মতাদর্শগত ভিত্তি। এটি বলা হয়ে থাকে যে পাকিস্তান এবং ইসরাইল ধর্মীয় মতাদর্শের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে। তবে এই দুটি রাষ্ট্রই পাশ্চাত্যের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে পাশ্চাত্যের স্বার্থ রক্ষা করছে। অন্যদিকে পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ায় পাশ্চাত্যের স্বার্থ রক্ষা করছে। এই দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, শুধু মতাদর্শগুলোর প্রকৃতি ছাড়া। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ব্যক্তিগত জীবনে ধর্ম পালন করতেন না। শৈলেশ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'জিন্না/পাকিস্তান নতুন ভাবনা' শীর্ষক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চে দিলি্লতে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় জাতীয় সম্মেলনে 'জিন্না তার কুশলী আইনজীবীর যাবতীয় কলা প্রয়োগ করে ব্যাকুল' স্বরে বলেছিলেন, 'সংখ্যালঘুরা সর্বদা সংখ্যাগুরুদের আতঙ্কে দিনযাপন করে। ধর্মীয় সংখ্যাগুরুরা তার মতে সচরাচর নিপীড়ক ও অত্যাচারী হয়। সুতরাং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দাবি করার অধিকার সর্বদাই আছে।' এরপর তিনি বললেন, 'আমাদের সম্মিলিতভাবে থাকতে হবে, মিলেমিশে কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে যে যে বিষয়েই মতভেদ থাকুক না কেন, আমরা যেন তার অধিকন্তু আর পারস্পরিক দ্বেষ সৃষ্টি না করি। যদি আমরা সহমত হতে না পারি, আমরা যেন ভিন্নমত পোষণ করার ব্যাপারে সহমত হতে পারি এবং যেন বন্ধু হিসেবে এখান থেকে যেতে পারি। আমার কথা বিশ্বাস করুন যে হিন্দু ও মুসলমানরা মিলিত হতে না পারলে ভারতবর্ষের অগ্রগতি হবে না। তাই একটা আপস নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে কোনোরকম যুক্তি-তর্ক, দর্শন অথবা বাদ-বিবাদ যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য প্রত্যক্ষ করার চেয়ে আর কিছু আমাকে সুখী করতে পারবে না।' (পৃ.৫৫) বলা বাহুল্য, দিলি্লর সেই সম্মেলন ব্যর্থ হয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে মি. বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ তুলে ধরেছেন। বলছেন, 'ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী জিন্নার জনৈক পার্সি সুহৃদ পরদিবস যখন রেলস্টেশনে জিন্নাকে দিলি্লতে রওনা করে দিতে গেলেন তখন তার হাত ধরে সজলচক্ষে জিন্না বললেন, 'জামসেদ, এবার আমাদের পথ আলাদা হয়ে গেল।' প্রকাশ্যে জিন্নার চোখে জল আসার যে বিরলসংখ্যক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় এ তার অন্যতম।' (পৃ.৫৬) এর পরের ঘটনাপ্রবাহ জিন্নাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন মতাদর্শের অর্থাৎ ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক বা অনুসারী হিসেবে উপস্থাপিত করে। জিন্না কী হতে বা করতে চেয়েছিলেন, এর চেয়ে তার সৃষ্টি পাকিস্তান বিশ্বে কী হিসেবে পরিচিত তাই এখন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকবলিত বিশ্বের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। সমসাময়িক বিশ্বের উপলব্ধি হচ্ছে, 'জিন্না-সৃষ্ট পাকিস্তান সমগ্র বিশ্বে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ উৎপাদন ও রপ্তানি কেন্দ্র।'
সাম্প্রতিককালে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সূচকগুলোয় বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছরের বিপরীতে পাকিস্তানের মানুষের গড় আয়ু ৬৬ বছর। প্রাথমিক স্তরে ভর্তির অনুপাত বাংলাদেশে ১১২%, পাকিস্তানে এই অনুপাত ৯৪%। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়নের 'রোল মডেল', অন্যদিকে পাকিস্তান এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। গ্লোবাল পোলিও ইরাডিকেশন ইনিশিয়েটিভের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের যে দুটি রাষ্ট্রে পোলিও আছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে 'পাকিস্তান' অন্যটি হচ্ছে 'আফগানিস্তান'। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পোলিও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে আছে 'পাকিস্তানে'। আবার 'সামাজিক ন্যায় বিচার' প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে আছে। অন্যান্য কারণও থাকতে পারে, তবে, মূলত এসব কারণেই বাংলাদশের প্রতি পাকিস্তান বৈরী মনোভাব পোষণ করে। কিন্তু এসব হচ্ছে 'সরকারের বা শাসনব্যবস্থার কার্যকারিতার বিষয়' এসব নিয়ে কথা বললে তো পাকিস্তানের নিজেদেরই দুর্বলতা প্রকাশ পায়! অতএব, ধর্মের দোহাই দিয়ে যে মিথ্যা অপপ্রচার পাকিস্তানের তৎকালীন সরকার ১৯৭০-এর নির্বাচনের সময়েও করেছে, এখনো তাই প্রচার করে এবং তাদের বাঙালি দোসরদের দিয়ে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চাইছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকলে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ!
ড. অরুণ কুমার গোস্বামী:চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এবং পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
২| ০৯ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮
বাংলার জামিনদার বলেছেন: ফাকিস্তান, গো টু হেল, সাথে বাদিয়ারে নিয়া যাও, তোমাদের প্রিয় গেলমান।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: আচ্ছা এই "অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নগ্ন হস্তক্ষেপের" -এই পাকিস্তানী যুক্তিটা আপনাদের কাছে এতো জনপ্রিয় কেন? আপনারা কি জানেন যে একাত্তরে পাকিস্তানীরা এই যুক্তিটা আমাদের এবং আমাদের সকল মিত্রদের বিরুদ্ধে দিনরাত ব্যবহার করত?