![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সঠিক সময়েই বাস্তবায়ন হোক রাজধানীতে মেট্রোরেল স্থাপনের বিষয়টি বহুল আলোচিত। রাজধানীতে ক্রমেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ সড়কের ওপর চাপ পড়ে অসহনীয় যানজটে নাকাল নগরবাসীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই মেট্রোরেল স্থাপনের দাবি তোলা হচ্ছিল। সরকারও দেশের সার্বিক অবকাঠামো পুনর্বিন্যাস করে রাজধানীকে বসবাসের উপযোগী করতে একটি আধুনিক পরিবেশ সৃষ্টির পদক্ষেপ নেয়। যানজট নিরসনের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে মেট্রোরেল_ এ বিবেচনায় ২০১৪ সালে রাজধানীতে মেট্রোরেল স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। যা রাজধানীবাসীর মনে ব্যাপক আশার সঞ্চার করে। সম্প্রতি স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব ঠিক থাকলে ২০১৯ সালের গোড়াতেই রাজধানীবাসী এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। সঠিক সময়ে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক ভিন্ন আঙ্গিক যুক্ত করবে নিঃসন্দেহে। সংশয় নেই, এর ফলে নাগরিক জীবনেও গুণগত পরিবর্তন আসবে।
গতকালের যায়যায়দিনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দূরত্ব মাত্র ৩৮ মিনিটে পেরিয়ে যাবেন যাত্রীরা। প্রকল্পের আওতায় উত্তরা তৃতীয়পর্যায় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত ৬ নাম্বার রুটের এই নির্মাণকাজে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ২০ কিলোমিটার এই পথে থাকবে ১৬টি স্টেশন। উত্তরা থেকে পল্লবী, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, প্রেসক্লাব হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত এই রুট। যার পুরোটাই হবে উড়ালপথে। আর প্রতিঘণ্টায় উভয়দিক থেকে ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। ঘণ্টায় মেট্রোরেলের গতি হবে গড়ে ৩২ কিলোমিটার।
বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বাধীনতার পর দেশে অনেক সরকার দায়িত্বে এসেছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে এসব সরকার নতুন নতুন অনেক পরিকল্পনাও হাতে নেয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো রাজধানীর যানজট সমস্যা নিরসনে কোনো পরিকল্পনা সহায়ক হয়নি, বরং বেড়েছে কয়েকগুণ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে মেট্রোরেলকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ে সরকার নানা জটিলতায় কাজটি শুরু করতে পারেনি। এবার সরকার বিশ্বের সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন দ্রুতগতির যোগাযোগ ব্যবস্থা এই মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়। এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণেরও একটি দৃষ্টান্ত। জানা যায়, দুই দফা রুট পরিবর্তনের কারণে প্রকল্প শুরু করতে দেরি হয়েছে। প্রথমবার গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী উড়াল সড়কের কারণে এবং দ্বিতীয়বার বিমানবাহিনীর আপত্তির মুখে রুট পরিবর্তন করা হয়। আমরা বলতে চাই, শেষ পর্যন্ত যেহেতু সব ধরনের জটিলতা কাটিয়ে দেশের এই সর্ব বৃহৎ প্রকল্পটির কাজ শুরু করা গেছে, সেহেতু আমাদের প্রত্যাশা থাকবে নির্দিষ্ট সময়েই তা বাস্তবায়িত হোক। মেয়াদকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, ফলে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটুক সেদিকে সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। কেননা, গুরুত্বের দিক থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন একটি বিরাট চ্যালেঞ্জও।
এ কথা জোর দিয়েই বলা যেতে পারে, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা দেশের অর্থনীতিতেও একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি পরিবর্তন আসবে দেশের নাগরিক ও আর্থ-সামাজিক চরিত্রেও। সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, এ প্রকল্পে আরো পাঁচটি রুট রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিআরটি প্রকল্প। এতে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস সংযোজন করা হবে বলেও জানা যায়। বিআরটির এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪০ কোটি টাকা। সরকারের পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা ও গ্লোবাল অ্যানভায়রনমেন্টাল ফ্যাসিলিটি ফান্ড এতে অর্থায়ন করছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রাজধানীর যানজট নিরসন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার গৃহীত এ পদক্ষেপের সাফল্য নির্ভর করছে সঠিক সময়ে এর বাস্তবায়নের ওপর। এ প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সরকারের প্রতি জনআস্থা বহুলাংশে বাড়িয়ে দেবে বলেও আশা করা যায়। বর্তমানের কর্মমুখর সময় ও ব্যস্ত নাগরিক জীবনে মেট্রোরেল হোক সবার জন্যই কার্যকর এক বাহন_ এ প্রত্যাশা আমাদের।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
অতৃপ্তচোখ বলেছেন: স্বাগতম জানাই এমন জনবান্ধব প্রকল্পকে। ভালো পোষ্ট ভাই।