![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আন্তর্জাতিক বিশ্বে আমেরিকা একটি শক্তিধর রাষ্ট্র এটা সবার জানা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকার অবস্থান আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না। নিক্সন প্রশাসন মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিপক্ষে ছিল। '৭৪ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ঢাকা সফর করে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। সেই আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায় স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করেন। দু'দেশের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছিল সফরের প্রধান লক্ষ্য। আমেরিকার একমাত্র রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করেন। বিগত ২০০০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন সে সময় শেখ হাসিনা দীর্ঘ ২১ বছর পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তার সরকারের সে সময়ে বিল ক্লিনটন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে আসেন। সে থেকেই বাংলাদেশ আমেরিকা তো বটেই বহির্বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি অর্জন করে। ইতোমধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সফর করে গেছেন। মাত্র একদিনের সফরে জন কেরি গত ২৯ আগস্ট ঢাকা আসেন। ওবামা প্রশাসনের একেবারে শেষ মেয়াদে জন কেরির এ সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একজন ব্যক্তির বাংলাদেশ সফর অবশ্যই অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ সফরের অন্যতম প্রধান দিক ছিল সামাজিক নিরাপত্তা, জঙ্গিবাদ মোকাবেলা। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সমস্যা কোনো একক রাষ্ট্রের নয় বৈশ্বিক সমস্যা। এ দুটি সমস্যা মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থেকে এক সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে যে সহায়তার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা প্রকৃত অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে জঙ্গি মোকাবেলায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের সহযোগিতাও জরুরি। তাই আমরা আশা করতে পারি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক মহলের সহায়তায় জঙ্গি দমন সম্ভব হবে। এ ভূখ-ে জঙ্গিবাদ তার অশুভ তৎপরতা চালাতে পারবে না। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ শুধু রক্ত ঝরায় সামাজিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। তবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ কিভাবে, কোন পথে, কোন পদ্ধতিতে দমন করা হবে সর্বোপরি সহযোগিতার ধরন কেমন হবে সে বিষয়ে স্পষ্টতা না থাকলেও দুদেশের মনোভাবের ওপর তা অনেকটা নির্ভর করবে।
বাংলাদেশ আয়তনে ছোট দেশ হলেও দেশটির গুরুত্ব যে, কোনো অংশেই কম নয় তা বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তার নিজস্ব গতিতে। এ অগ্রগতি উন্নয়নে যাত্রা শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সহযোদ্ধা এদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। দীর্ঘ ২১ বছর পর অনেক চড়াই উৎরাই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ৭৫'র রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ যে পেছনে যেতে শুরু করে তার গতি রোধ করে শেষ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই তিনি বহির্বিশ্বে বিশেষ করে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে তিনি যে সাফল্য অর্জন করেন তাতে তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশে সফরে আসেন বিশ্বের অনেক বরেণ্য নেতা। তাই শুধু ক্লিনটন নয়, তার সরকারের প্রথম মেয়াদে সফর করেন দক্ষিণ আফ্রিকার মহান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিলিস্তিন নেতা ইয়াসির আরাফাত, জাপান, ভারত, ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রীসহ সারা বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফর করেন। বর্তমানে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে; বিশ্ববরেণ্য নেতাদের সফরই তা প্রমাণ করে। বাংলাদেশ এখন আর মঙ্গা বা তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি দক্ষতা, তথ্য-প্রযুক্তির দিক থেকেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। শেখ হাসিনার গতিশীল ও দক্ষ নেতৃত্বে দেশ ইতোমধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং মধ্যম আয়ের দ্বারপ্রান্তে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে স্বীকৃতি ও সাফল্যের পাল্লা দিনে দিনে ভারি হচ্ছে। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। ভারত, চীন, জাপান এখন বাংলাদেশের ভালো বন্ধু। একই সঙ্গে এ দেশগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের অংশিদার।
যা হোক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। তবে এ সফরকে কেন্দ্র করে বিরোধী রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী মহলে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ মনে করেছিলেন, গত নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল তাতে আগাম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু না হয়নি। তবে এ কথা সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় গণতন্ত্র, উন্নয়ন, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে। আমি মনে করি এটা যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের সহজাত প্রবৃত্তি। তবে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। আর সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এ বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে এক জোটে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে গুলশানের ঘটনাসহ কয়েকটি ঘটনা নিজেদের মতো করে মোকাবেলা করেছে। এদেশের তরুণরা কেন জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ছে এর পেছনে অন্যান্য কারণের মধ্যে সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কারণ রয়েছে, মূলত এক ধরনের হতাশা থেকেই তরুণরা জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়ছে। তবে হতাশা দূর করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। জন কেরির সফরের অন্যতম কারণ ছিল সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে যে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে তা পরিষ্কার করা। তার আলাপ আলোচনায় উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে এদেশের জঙ্গিদের যোগসূত্র রয়েছে। বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের অপকর্মের সঙ্গে বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী বিশেষ করে আইএসের মিল থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সব সময় তা অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে। বলা হয়েছে এগুলো দেশীয় জঙ্গিদের কাজ। সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জন কেরির আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং দু'দেশ এ ব্যাপারে তাদের আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনী কাজের সমন্বয় করতে আগ্রহী। যদি দেশীয় সন্ত্রাসী জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের কোনো সম্পর্ক নাই থাকবে তাহলে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দমনে কেন বাংলাদেশের সমন্বয়ের কথা বলা হচ্ছে। সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ দমন করতে যা দরকার তার মধ্যে একটি হচ্ছে_ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের কারণ, ইন্ধনদাতা কারা। পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদকে নিয়ে রাজনীতি না করা। একে অপরকে দোষারোপ না করে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা।
আশার কথা, দেশের সর্বমহলে এমনকি তৃণমূল পর্যায়েও সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যানলি, মানববন্ধন করে কোটি কণ্ঠে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে তা দেশ জাতির জন্য শুভ।
বহির্বিশ্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও মর্যাদাসম্পন্ন একজন নেত্রী হিসেবে পরিচিতি অর্জনের অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি জাতির জনকের কন্যা। মূলত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, বহির্বিশ্বে তার ভাবমূতিকে আরও উজ্জ্বল করেছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে '৭১র মহান মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিক্সনপ্রশাসন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও সময়ের বিবর্তনে পরবর্তী প্রশাসনের পরিবর্তন ঘটে। বর্তমান আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমেরিকার নেতিবাচক মনোভাবেরও পরিবর্তন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ঠিকই বুঝতে পারছে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভারত, চীন, জাপানসহ অনেক রাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক রয়েছে। জন কেরি ঢাকায় এসেই তিনি চলে যান ধানম-ির ৩২ নাম্বার বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে_ যেটা এখন জাতীয় জাদুঘর। সেখানে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঘুরে দেখে পরিদর্শক বইয়ে যা লিখলেন তা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা ও তার প্রতি শ্রদ্ধার শামিল। তিনি লিখেছেন, এক সহিংস ও কাপুরুষোচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে সাহসী ও উজ্জ্বল এক নেতৃত্বকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। জন কেরির এ সফরকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী মহল যে, উচ্ছসিত ছিল বিশেষ করে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধার ক্ষেত্রে ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে জন কেরির কাছ থেকে স্পষ্টত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। আমাদের দেশের তৈরি পোশাক বিশ্ববাজারে সমাদৃত। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। ভবিষ্যতে এ বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে জিএসপি ও শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার দরকার। দুদেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে।
গোটা বিশ্বের মানুষ বিভিন্ন ধর্মে-বর্ণে বিভক্ত, কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ, কেউ বা খ্রিস্টান। ধর্মে বিভক্ত থাকলেও মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার কথা সব ধর্মে রয়েছে। কোনো হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, রক্তপাত কোনো ধর্মে নেই। এক ধর্মের মানুষের সঙ্গে অন্য ধর্মের মানুষের দ্বন্দ্ব-সংঘাত কোনো ধর্মই অনুমোদন করে না। আবহমান কাল থেকে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ ভূখ-ের মানুষ যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। যুগ যুগ ধরে হিন্দু মুসলমান বা অন্য ধর্মের মানুষ সুখে-দুঃখে মিলে মিশে বসবাস করে আসছে। পবিত্র ইসলাম মানবতার ধর্ম কোনো প্রকার সহিংসতার স্থান ইসলামে নেই। কোনো ধরনের দাঙ্গা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা পবিত্র ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ। এমনকি অন্য ধর্মের মানুষের ওপর কোনো অন্যায় আচরণ ইসলাম অনুমোদন করে না। ইসলামের সুমহান আদর্শ, ঐতিহ্য মহানবী (সা.) অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি যে আচরণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিই হচ্ছে সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি। তাই রাষ্ট্রে বসবাসরত সব ধর্মের মানুষের প্রতি আমাদের আচরণ হওয়া উচিত সংযত, সংহত। তা না হলে রাষ্ট্রে নানা ধরনের বিপত্তি দেখা দেবে_ যা রাষ্ট্রের উন্নয়ন সামাজিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বড় বাধা। তাই আবহমানকাল থেকে এদেশের মানুষ ধর্মীয় সমপ্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। যে আদর্শ ও ঐতিহ্যে এ ভূখ-ের মানুষ যুগ যুগ ধরে লালন করেছে সেখানে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের মাধ্যমে বাংলার মানুষ নতুন কোনো আদর্শ মেনে নিতে পারে না। চাপিয়ে দেয়া এ আদর্শ বাংলার মানুষ ঘৃণাভরে যেমন প্রত্যাখ্যান করেছে তেমনি সর্বস্তরের জনগণ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। কোনো আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই জনসমর্থন প্রয়োজন। হত্যা, খুন, বোমা হামলা, আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে কোনো আদর্শ বাস্তবায়ন করা যায় না। সন্ত্রাসী বা জঙ্গিরাও মরছে আত্মঘাতী হামলায়। শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করলে এটি যে একটি বৈশ্বিক সমস্যা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ কারণেও জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, গর্জে উঠেছে তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কখনো জঙ্গিরা তাদের অশুভ তৎপরতা চালাতে সক্ষম হবে না।
আমরা মনে করি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে। তবুও জন কেরির এ সফরে শুধু সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমন নয়, দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত পণ্যের যে প্রবেশাধিকার চেয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমরা আশা করব যুক্তরাষ্ট্র তা বিবেচনা করবেন।
©somewhere in net ltd.