![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপ বিশ্বমানের বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিকমানের স্বীকৃতি দিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের এই অর্জন তুলে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে পৃথিবীর যে কোনো দেশ এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে বিনিয়োগ করতে পারবে এবং তারা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউয়ের অপারেশনাল হেড দেবপ্রসাদ দেবনাথসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, বাংলাদেশের যতগুলো বড় অর্জন রয়েছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। তিনি বলেন, এপিজি কর্তৃক ৩য় পর্বের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। এই অর্জনের ফলে ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন রিভিউ গ্রুপভুক্ত (আইসিআরজি) প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এপিজির বার্ষিক সম্মেলনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসে বাংলাদেশ। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ৫ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগো শহরে এপিজির বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
রাজী হাসান বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি) ওয়েবসাইটে শিগগিরই বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। যেখানে বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত বিশ্বের সমতুল্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে পৃথিবীর যে কোনো দেশ এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে বিনিয়োগ করতে পারবে এবং তারা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সময় মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সক্ষমতা অর্জন করায় পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ও পুঁজিবাজারে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ আসার ক্ষেত্রে এই প্রতিবেদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি জানান, কেউ বাইরের দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে এপিজির প্রতিবেদন, দেশটিতে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কী অবস্থা- তা পর্যবেক্ষণ করেন। আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান আশা প্রকাশ করেন, এই প্রতিবেদনে ভালো করার কারণে বাংলাদেশে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বাড়বে। ডেপুটি গভর্নর বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রেটিং নরওয়ে, শ্রীলঙ্কা, ফিজি থেকে ভালো। সন্ত্রাস, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, জঙ্গিবাদ, মানি লন্ডারিংসহ অন্য অপরাধ নির্মূলে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সন্ত্রাস, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, জঙ্গিবাদ, মুদ্রা পাচারসহ অন্য অপরাধ দমনে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া পদক্ষেপ অ্যাসেসমেন্ট টিম কর্তৃক প্রস্তাবিত রেটিংগুলোর মধ্যে দুটি ইমিডিয়েট আউটকামের (আইও) রেটিংয়ে উন্নত হয়েছে। কয়েকটি সদস্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশের চারটি রেটিং কমানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা সভায় বিবেচনায় নেয়া হয়নি। এর ফলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুদ্রাপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ নরওয়ে ও শ্রীলঙ্কা থেকে ভালো অবস্থানে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক উন্নত দেশ থেকেও ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এতে সন্ত্রাস, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, জঙ্গিবাদ, মুদ্রাপাচারসহ অন্য অপরাধ নির্মূলে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে এসে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখে এপিজি যে খসড়া মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছিল, তাতে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সর্বশেষ চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে এপিজির ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছিল। তখন অর্থ পাচার ও জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এপিজি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে টানা ১৬টি বৈঠক করে বিএফআইইউ।
©somewhere in net ltd.