নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ হাসিনা পারেন, খালেদা পারেন নি

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯

লেখার শুরুতে কিছু স্মৃতিচারণা করছি। ২০০১ সালে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অন্যদের মতো আমিও প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গণভবনে গিয়েছিলাম। সেদিন প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছিলেন। একপর্যায়ে আমি তাঁর সামনে পড়ে গেলাম। একুশে টিভির ক্যামেরা ধরা। পাশে মোস্তফা ফিরোজ। আরো ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্তসহ বেশ কয়েকজন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানিয়ে বললাম, আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বললেন, করো করো!
আমি বললাম, আপনার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকার আপনাকে গণভবন লিখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপনি তো বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনি কেন গণভবন নেবেন?
শেখ হাসিনা বললেন, আমার তো কিছুই নেই। ওনার (খালেদা জিয়া) তো গুলশানে বাড়ি আছে। আরো অনেক কিছুই আছে। তার পরও তো উনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ছেন না!
আমি বললাম, উনি তো আর বলতে পারবেন না, উনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা।
শেখ হাসিনা বললেন, আমি কোথায় থাকব? আমি কি রাস্তায় থাকব? আমার তো কিছুই নেই।
আমি বললাম, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনার আর কী চাই? এ দেশের জনগণই তো আপনার। আপনি তাদের ভালোবাসা পেয়েছেন এবং পাচ্ছেন। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের সময় পেছন দিক থেকে সিনিয়র সাংবাদিক এবং কর্মকর্তারা আমাকে থামানোর প্রাণান্ত চেষ্টা করেন। তাঁদের প্রশ্ন, কার এমন বুকের পাটা! প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখে মুখে কথা বলে!
শেখ হাসিনা জাতির জনকের কন্যা। সবার আপা, মায়ের মতো। তাঁকে প্রশ্ন করা যায়। তাঁর সমালোচনা করা যায়। গঠনমূলক সমালোচনা তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। নিজে ভুল করলে তা শুধরে নেন।
একদল লোক আছেন, যাঁরা সব সময় তেল দেওয়ার জন্য বসে থাকেন। সুযোগ পেলেই তেল মারেন। আমলারা তেল মারতে অভ্যস্ত। কিন্তু সাংবাদিকরা কেন সেটা করবেন? তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে সৎ পরামর্শ দিলে সেটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক। এখনকার অবস্থা দেখে মনে হয়, সাংবাদিকরা অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। কে কত বেশি তেল দেবেন, তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
যা-ই হোক, আমার সঙ্গে কথা বলা শেষ করে প্রধানমন্ত্রী সামনের দিকে পা বাড়ালেন। পেছন দিক থেকে সন্তোষ গুপ্ত আমাকে কাছে ডাকলেন। তারপর বললেন, খুব ভালো একটা কাজ করেছ। তাঁর চারপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁরা তো সুপরামর্শ দেন না; বরং তাঁকে ডোবানোর জন্য যা করার তা করে থাকেন। তুমি বিষয়টা উত্থাপন করায় প্রধানমন্ত্রী ভাববেন এবং আমার ধারণা, ওনার নামে গণভবন লিখে দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করবেন।
পরে সন্তোষ গুপ্তের কথাই সত্য হলো। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটি নাকচ করে দিলেন। আর এতে শেখ হাসিনার যাঁরা শুভাকাঙ্ক্ষী, তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা জেলায় জেলায় নির্বাচনী জনসভা করছিলেন। তখন তাঁর জনসভা কাভার করার জন্য গিয়েছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম। রাতে জনসভা শেষ করে খাওয়াদাওয়ার পালা। খাওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করা হলো। তিনি বললেন, আমার সাংবাদিক ভাইদের খাইয়েছ? আগে তাদের ভালো করে খাওয়াও। তারা অনেক কষ্ট করে আমার নির্বাচনী পথসভা, জনসভা কাভার করছে।
কথা শুনে বুকটা ভরে গেল।
১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানি চুক্তির পর গণভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। তখন আমার লেখা দুটি বই প্রধানমন্ত্রীকে দেব বলে সঙ্গে নিয়েছি। কিন্তু দেব কিভাবে?
তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ছিলেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তাঁর দ্বারস্থ হলাম। তিনি বললেন, আপনি নিজেই প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিন। সাহস করে তাঁর কাছে এগিয়ে গিয়ে বই দুটি দিলাম। প্রধানমন্ত্রী হাতে নিলেন। দেখলেন। তারপর বললেন, পড়ে মতামত জানাব।
সে সময় আমার কী যে ভালো লেগেছিল!
আরেকবার ১৯৯৮ সালে ভারত ও পাকিস্তান পরীক্ষামূলকভাবে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটাল। শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি উভয় দেশ সফর করবেন। ভারত-পাকিস্তানের উত্তাপে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেটা বলার জন্যই তাঁর সফর। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। সাতজনের একজন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সঙ্গে পরিচয়ের পালা। শুরু হলো আমার দিক থেকে। শেখ হাসিনা বললেন, বাংলাদেশের কনিষ্ঠ সাংবাদিক। বাজপেয়ি অনেকক্ষণ আমার হাতটা ধরে রাখলেন। আনন্দে আমি রীতিমতো নাচতে থাকলাম।
তখন এক দিনের সফরে অনেক কিছুই অর্জন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আমার প্রথম বিদেশ সফর। ইকবাল সোবহান চৌধুরীও সফরসঙ্গী ছিলেন। তাঁকে বললাম, ইকবাল ভাই, প্রথম বিদেশে এসেছি। এক দিনের সফরে তো কিছুই বুঝলাম না। আর দুই দিন কি থাকা যায়?
ইকবাল ভাই বললেন, দাঁড়াও, প্রধানমন্ত্রীকে বলি।
হোটেল মৌর্য শেরাটনে প্রধানমন্ত্রীর স্যুটে ভয়ে ভয়ে আমরা দেখা করতে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলেন। ইকবাল ভাই আমাকে দেখিয়ে বললেন, ও প্রথম এসেছে। দুই দিন থাকতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বললেন, থাকো থাকো। বেড়িয়ে যাও। আবার কবে না কবে আসা হয়! শফি সাহেব (সি এম শফি সামী তখন দিল্লিতে হাইকমিশনার ছিলেন) ওদের দেখবেন।
এটা কেবল শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।
সাংবাদিকদের তো কত কিছুই করতে হয়। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়াও জেলায় জেলায় পথসভা, জনসভা করেছেন। কোনো কোনো জেলায় জনসভা কাভার করার জন্য সাংবাদিক হিসেবে যেতে হয়েছিল। কিন্তু কেউ সাংবাদিকদের কোনো খোঁজ রাখেননি। খালেদা জিয়ার বেশ কিছু সংবাদ সম্মেলনেও গিয়েছি। বিদেশে সার্ক সম্মেলন কাভার করেছি। সবগুলোতেই নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়েছে। হাতে গোনা ‘দলীয় কিছু সাংবাদিক’ ছাড়া তিনি কাউকে চেনেন কি না সন্দেহ। কবি-সাহিত্যিকদের কারো সঙ্গে কোনো জানাশোনা আছে বলেও মনে হয় না।
রাজনীতি করতে হলে সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকদের আস্থায় নিতে হয়। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি শুরু করেন। তখন থেকেই মানিক মিয়ার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সাংবাদিক খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। একটা সময় তাঁরা পরস্পরের পরিপূরক ছিলেন। তখন ইত্তেফাক বঙ্গবন্ধুর কঠিন লড়াইয়ের সঙ্গী ছিল। ইত্তেফাক না থাকলে বঙ্গবন্ধুকে অনেক বিপাকে পড়তে হতো। কোনো দিন তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরেনি।
শুধু তা-ই নয়, লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের তিনি মাথায় তুলে রাখতেন। তাঁদের বিশেষভাবে মূল্যায়ন করতেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু বারবার ছুটে যেতেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে। যেকোনো সংকটে তাঁর পরামর্শ চাইতেন। পণ্ডিত নেহরুর মেয়ে ইন্দিরা গান্ধীর নামও কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর গুণগুলোই শেখ হাসিনা পেয়েছেন। তিনি লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেন। যেকোনো সংকটে তাঁদের পরামর্শ চান। কাছে ডাকেন। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। সেখানে ছুটে গেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর হাত ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন। তাঁর কথা শুনেছেন। সাহস জুগিয়েছেন। চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহন করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদ নিউ ইয়র্কের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেও ছুটে গেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ রকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে। এ দেশের অসংখ্য অসহায় পরিবার শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহায়তায় সুন্দর জীবন যাপন করছেন। অনেক অনাথ-অসহায় ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ জোগান শেখ হাসিনা।
এ কাজগুলো খালেদা জিয়াও করতে পারতেন। তিনিও দু-দুবার পূর্ণ মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। কিন্তু একজন রাজনীতিবিদের যে গুণাবলি থাকা উচিত, তা বোধকরি বেগম জিয়ার নেই। কোনো সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বোঝার চেষ্টাও করেন না। এ অঙ্গনের কেউ অসুস্থ হলে যে তাঁর পাশে দাঁড়াবেন, তা কখনো তিনি করেননি। কিছু ‘দলীয় সাংবাদিক কিংবা কবি’ তাঁর কাছ থেকে হয়তো সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। আপামর সাংবাদিক-সাহিত্যিক মহলে খালেদা জিয়া কোনো জায়গা করতে পারেননি। তাঁদের কাছে টানতে পারেননি। এটা তাঁর ব্যর্থতা।
কথায় আছে, যিনি রাঁধেন তিনি চুলও বাঁধেন। শেখ হাসিনা বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেন। তিনি এখনো অতিথি আপ্যায়ন করেন। বিশেষ কোনো অতিথির জন্য নিজে রাঁধেন। আবার অতিথিকে বেড়ে খাওয়াতেও পছন্দ করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়।
রাষ্ট্র পরিচালনায় ১০ বছর সুযোগ পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি কাজে লাগাননি। এই দেশ সম্পর্কে তাঁর ভালো ধারণা নেই। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে যে যোগ্যতা-দক্ষতার প্রয়োজন হয়, তাও তিনি রপ্ত করতে পারেননি। দেশের কোথায় কী সমস্যা, কী ধরনের উন্নয়নকাজ করতে হবে, দেশ এগিয়ে নিতে হলে করণীয় কী, তাও তিনি জানেন না। তিনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমলাদের ওপর নির্ভর করতেন। আর কিছু ক্ষেত্রে দলীয় নেতাদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। দেশ নিয়ে তাঁর কোনো ভিশন নেই। ফলে দেশে দৃশ্যমান কোনো কাজ করেননি।
শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় বাংলাদেশের মানচিত্র। তিনি এই দেশটাকে জানেন। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন। দেশের কোথায় কী সমস্যা, তা তিনি টের পান। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেন। প্রতিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কে তাঁর স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা বিব্রত অবস্থায় পড়েন। তাঁরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী এত বেশি ‘ফাইলওয়ার্ক’ করেন যে নিজেরা প্রস্তুতি না নিয়ে গেলে বিপদে পড়তে হয়। শেখ হাসিনা প্রতিটি ফাইল খুব ভালো করে পড়েন। নিজে না বুঝলে অন্যের সাহায্য নেন। কিন্তু না বুঝে কোনো ফাইলে সই করেন না। প্রশাসনিক দক্ষতায় তাঁর তুলনা হয় না।
সবচেয়ে বড় কথা, শেখ হাসিনা অনেক বেশি মানবিক গুণাবলির অধিকারী। তিনি নিজেও একজন লেখক। তাই তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুর খবর শুনে জন্মদিন পালন করা থেকে বিরত ছিলেন। অথচ খালেদা জিয়া কবি সৈয়দ শামসুল হককে একবার দেখতেও যাননি। তাঁর মৃত্যুর পর বিএনপির কোনো নেতাও দেখতে যাননি।
শুধু কি তাই? ১৫ আগস্ট জাতির জনকের শাহাদাত দিবসে জন্মদিন পালন না করার জন্য খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন মহল থেকে অনুরোধ করা হলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেন না। ওই দিন তাঁর জন্ম হলেও তো তা পালন করা উচিত নয়। জাতীয় নেতার প্রতি এতটুকু শ্রদ্ধাবোধ তাঁর নেই। এ কারণেই হয়তো তিনি দিন দিন জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.