![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিতে দক্ষ, মেধাবী এবং কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তির বিকল্প নেই। যদি এভাবে দেশের সকল কর্মক্ষম মানুষকে দক্ষ করে গড়ে তোলা যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা কঠিন কোনো কাজ নয়। কিন্তু তরুণ, যুবকসহ যারা চাকরি বাজারে প্রবেশ করছে তাদের ৮০ থেকে ৮৫ ভাগই অদক্ষ হিসেবে আসছে। সরকারের নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশে কারিগরি শিক্ষা এখনো রয়েছে উপেক্ষিত। যে স্বল্পসংখ্যক তরুণ কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কর্মবাজারে প্রবেশ করেছে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। এমনি অবস্থায় সরকারের সামনে কারিগরি শিক্ষার প্রসার, এ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান অপরিহার্য। যথাযথভাবে এসব কাজ করা গেলে দেশের বর্ধিত জনসংখ্যা সমস্যা না হয়ে পরিণত হবে সম্পদে।
বিশ্বে এখন মানুষের জন্য প্রযুক্তি অপরিহার্য হয়ে ওঠছে। আগামীদিনে প্রযুক্তির প্রায়োগে দক্ষতাই অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তিতে পরিণত হবে। এ গুরুত্ব বিবেচনায় বিশ্বের ভবিষ্যৎ কর্মবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দেশে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবির)। সম্প্রতি তাদের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ আহ্বান জানান। এটি সত্য, বিশ্বে প্রযুক্তির নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বাংলাদেশের সামনে অনেক সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য বৈশ্বিক কর্মবৈচিত্র্যতার নিরিখে দেশের কর্মক্ষম মানুষকে অধিকতর সৃজনশীল ও দক্ষ করে গড়ে তোলা দরকার। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে দেশের ঈর্ষণীয় অর্জন, বিশ্বে বাংলাদেশকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। সরকারের নানামুখী কর্মপ্রচেষ্টা ও প্রচেষ্টায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় প্রায় ১৫শ ডলারে উপনীত হয়েছে। নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭.১১ অর্জন করেছে। দক্ষতার সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের আগে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। মোট জনগোষ্ঠীর ৭৫ ভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীতসহ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় দেশে এখন দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে মনে করছে বিদেশিরা। এর মধ্যে ২০৩০ সালে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সোনালি সম্ভাবনা বাংলাদেশের সামনে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আত্মমর্যাদাশীল সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত দেশ গড়ে তুলতে এ সংগঠন প্রতিশ্রুতি বদ্ধ।
ইতোমধ্যে আইডিইবির পক্ষে জাতির নিকট যেসব আহ্বান রাখা হয়েছিল; তার মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তি চিন্তাহীন রাজনীতি শোষণের হাতিয়ার জাতীয় উন্নয়নে এডহক ইজম নয়-সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা চাই, সেচ কাজে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করা, জাতীয় উন্নয়নে জাতীয় ঐকমত্য চাই, জীবন ও উন্নয়নের জন্য পানি, জীবন ও জীবিকার জন্য কারিগরি শিক্ষা, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, উন্নয়ন-উৎপাদনে ইতিবাচক আন্দোলনের সংস্কৃতি পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি টেকসই উন্নয়নে সহায়ক, সচল নদী-সচল অর্থনীতি, পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তি, প্রযুক্তিতে গণমানুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা গণমুখী তথ্যপ্রযুক্তি-বদলে দেবে অর্থনীতি কৃষি জমি রক্ষা কর-পরিকল্পিত গ্রাম গড় গণমুখী প্রযুক্তিই-গণমানুষের মুক্তি, জীবন জীবিকা সমৃদ্ধির জন্য দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা, সংস্কৃতি-জাতীয় সমৃদ্ধি প্রযুক্তি ও দক্ষতায়-মুক্তি সমৃদ্ধি বিল্ড স্কিল বাংলাদেশ ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত: অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়া সত্ত্বেও গণচীন এবং ভারত বিশ্বচ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে দক্ষ চীন, দক্ষ ভারত নির্মাণের ঘোষণা করেছে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী এই গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার হার ২০ ভাগে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জনশক্তির বিকল্প নেই। অথচ দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অদক্ষতা বিদ্যমান। প্রতিবেশী ভারতে একজন আইসিএস অফিসার যে কাজ একজনে করতে পারে, সমপরিমাণ কাজের জন্য এখানে ৫ থেকে ৭জন বিসিএস অফিসার নিযুক্ত থাকে। উন্নত দেশে একজন কৃষক বা শ্রমিক যে কাজ করে এখানে তা করতে ৮ থেকে ১০ জন কৃষক শ্রমিক প্রয়োজন হয়। উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে অনুরূপ চিত্র বিদ্যমান। এ দায়বোধ থেকে আইডিইবির এবারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে গণপ্রকৌশল দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঝশরষষ ভড়ৎ ভঁঃঁৎব ড়িৎষফ ড়ভ ড়িৎশ অর্থাৎ বিশ্বের ভবিষ্যৎ কাজের জন্য দক্ষতা। গত বছর তাদের গণপ্রকৌশল দিবসে প্রতিপাদ্য ছিল 'ইঁরষফ ঝশরষষ ইধহমষধফবংয' বা দক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান বলেন, কর্মক্ষম জনশক্তি থাকার পরও দেশের পোশাক খাতে ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজারের অধিক বিদেশি বিশেষজ্ঞ কর্মরত আছে। এটা দুঃখজনক। সে কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে এখনই গুরুত্ব দেয়া উচিত কারিগরি শিক্ষায়। বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ, স্বল্পসম্পদ ও বিশাল জনরাশির দেশ বাংলাদেশ। ১৬ কোটি মানুষের নূ্যনতম অধিকার-অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। প্রশ্ন হচ্ছে- ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সক্ষমতা-সম্পদ কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়- তার উপায় উদ্ভাবন অপরিহার্য। নতুবা প্রতিযেগিতার এ যুগে টিকে থাকা অসম্ভব।
এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, জাতীয় উৎপাদনে শ্রমশক্তির অবদান দেশে মাত্র ১১১ মার্কিন ডলার, সেখানে ভারতে ১৮৩ মার্কিন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৬৬১ মার্কিন ডলার এবং জাপানে তা ১০৭৯৪ ডলার। অর্থাৎ শ্রমশক্তির অদক্ষতার কারণে এদেশের জাতীয় উৎপাদন বিশ্বের প্রায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে। শ্রমশক্তির অদক্ষতার কারণে ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে মাথাপিছু আয় ১৩১৪ ডলার। সরকারের বাস্তবমুখী উদ্যোগে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৪৬৫ ডলারে। ভারতে ১৬৩০ ডলার, মালয়েশিয়া ১০৮৩০ ডলার, জাপান ৩৬১৯৪ ডলার এবং সিঙ্গাপুরে ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার। আমাদের শ্রমশক্তির অদক্ষতা ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে আমরা এতটা পিছিয়ে। তাই বলা যায়, দারিদ্র্যতা আমাদের নিয়তি নয়। পরিকল্পনা আর প্রযুক্তির সমন্বয়ে যদি দেশকে এগিয়ে নেয়া যায় তাহলে সম্ভাবনার সোনালি ফসল ঘরে তোলা অসম্ভব নয়। স্বাধীনতার সাড়ে চার দশকের পথপরিক্রমায় অনেক অর্জন যেমন রয়েছে, তেমনি হয়েছে অনেক অপার সম্ভাবনার অপমৃত্যু। প্রযুক্তিমনস্ক দক্ষতানির্ভর বাংলাদেশ গড়তে না পারায় সার্বজনীন অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন মন্থরগতিতে এগুচ্ছে। অথচ দারিদ্র্য নিরসনের মূল চালিকা শক্তিই হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও কর্মসংস্থানমুখী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজন পরিকল্পনা। এ বাস্তবতায় ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে সরকার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। সমাজে, রাষ্ট্রে শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায়, দেশে চালু হয়েছে এক ধরনের শ্রমবিমুখ ফাঁকিবাজির সংস্কৃতি। যেখানে মানুষ কাজ না করে ধনী হতে উন্মুখ অনেকেই।
দেশের বিস্ময়কর অর্জন আর অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী দেশি ও আন্তর্জাতিক মহল দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উস্কে দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এই দানবীয় শক্তির উত্থান ঠেকাতে ব্যর্থ হলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, অগ্রগতি বিপন্ন হবে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'মারসার প্রতিবেদনের উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয় 'শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। পরিসংখ্যানে বলা হয় বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের হার ৪৭%। শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে ১২৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৯তম। এছাড়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২২ দেশের মধ্যে ১৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের পরে রয়েছে বাংলাদেশ। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে তাজাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার পর বাংলাদেশের অবস্থান। ১০০ স্কোর ধরে পরিচালিত এ গবেষণায় বাংলাদেশের স্কোর ৫৭.৬২। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের ৮২ শতাংশ কর্মে নিয়োজিত থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ৬.৩ শতাংশ উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন। বাকিদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ মাঝারি দক্ষ ও ৪০.৭ শতাংশ অদক্ষ। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে কর্মেনিয়োজিতের হার ৫৯ শতাংশ।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, বিজনেস স্কুলের মান মাঝারি ধরনের, স্কোর ৭-এর মধ্যে ৩.৭২। এ স্কোর গণিত বা বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে ৩.৩৬, বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ সেবায় ৩.১১, মেধা আকর্ষণ ক্ষমতায় ২.৪ ও মেধা ধরে রাখার ক্ষমতায় ২.৭১। পেশার সঙ্গে শিক্ষার অসামঞ্জতার চিত্রও উঠে এসেছে এ গবেষণায়। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বছরে ৩ লাখ ১৬ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর মধ্যে সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় ও আইন বিষয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার, মানবিক বিভাগে ১ লাখ ১০ হাজার ও বিজ্ঞান বিভাগে ৩৫ হাজার। অথচ প্রকৌশল, উৎপাদন ও নির্মাণ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে মাত্র ১৪ হাজার। স্বাস্থ্য সেবায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী। বাকিরা অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। উন্নত দেশে উচ্চ শিক্ষার হার ৫-৭ ভাগ। বর্তমানে এ হার ৫-৭ ভাগ অর্জিত হয়েছে। চাকরির বাজারে মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ের চাহিদা কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংযোগও সেভাবে নেই। দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি অনীহায় তথ্য অনুযায়ী এ হার শতকরা ১৩.৬ ভাগ। অথচ বিশ্বচ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ জনশক্তির হার বৃদ্ধির বিকল্প নেই। উন্নত দেশসমূহে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার হার ২৫ থেকে ৭৫ ভাগ। যে দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার হার যত বেশি সে দেশের তত উন্নত। জাপান, গণচীন, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের নাম উল্লেখ করা যায়।
দেশে মানসম্মত কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। দেশে সরকারি ও বেসরকারি সাত হাজার ২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নানামুখী উদ্যোগে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার হার ১.৮ ভাগ থেকে বর্তমানে ১৩.৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে। 'দক্ষ বাংলাদেশ' গড়ে তুলতে প্রয়োজন অধিক হারে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা।
'জীবনের জন্য শিক্ষা-জীবিকার জন্য কর্মদক্ষতা' আইডিইবির এই দর্শন উল্লেখ করে সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম এ হামিদ বলেন, এই চিরন্তন দর্শনকে সামনে রেখে জীবন ও কর্মচ্র্চায় বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। বৈশ্বিক বাস্তবতায় জীবনের সকল স্তরে দক্ষতার বিকল্প নেই। সকল উন্নয়ন যেহেতু মানবকল্যাণ কেন্দ্রীক, তাই দক্ষতার ক্ষেত্রে মানবিক দর্শন থাকা বাঞ্ছনীয়। কারণ দক্ষতার সুফল তখনই সার্থক হয়, যখন দেশ জাতির অগ্রগতিতে সেটি নিবেদিত থাকে। পাশাপাশি ব্যক্তির দায়বদ্ধতা, কর্মকৌশলের নৈপুণ্যতা অর্জন ও মানসিকতা সৃষ্টি, সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, দায় এড়ানো নয়-দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করে আইডিইবি। আমরাও অনুরূপ মনে করি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এমন প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলের কাছে।
©somewhere in net ltd.