![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শান্তি, সম্প্রীতি ও অগ্রগতির সার্বিক ধারা অব্যাহত রাখা একটি দেশের জন্য সর্বাংশেই জরুরি। আর তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জারি রাখারও বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, শান্তির নিরিখে ভারতের থেকে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলংকা, মিয়ানমার কিংবা ভুটানেও ভারতের চেয়ে অনেক বেশি শান্তি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে গ্লোবাল পিস ইনডেক্স। প্রসঙ্গত আমরা উল্লেখ করতে চাই, প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক সংস্থা 'ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস' নিয়মিতভাবে গবেষণা, সমীক্ষা বা চর্চা চালায় সারাবিশ্বেই। আর শুধু জাতিসংঘই নয়, অনেক সামনের সারির বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে এই সংস্থাটি। তারা নিয়মিত প্রকাশ করে গ্লোবাল পিস ইনেডেক্স বা বিশ্ব শান্তি সূচক। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিকেন্দ্রিক এই সংস্থার গ্লোবাল পিস ইনডেক্স ২০১৬-তে দেখা যায়, ১৬২টি দেশের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকা অনুযায়ী 'বিশ্ব শান্তি সূচক' ভারত কম শান্তির দেশের তালিকায় আছে। আর তার থেকে আরও পিছিয়ে পাকিস্তান। পাকিস্তান অতি বিপজ্জনক দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বলেও সূচকে বলা হয়েছে। এমন অবস্থায় যখন জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ রয়েছে মোটামুটি বা মাঝারি রকমের শান্ত দেশের তালিকায়, তখন এই চিত্র সামগ্রিক প্রেক্ষাপটেই ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি।
আমরা বলতে চাই, এটা মনে রাখা সমীচীন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তির সূচকে অনেক দূর পর্যন্ত বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। আর সেই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে সরকারকেই। তথ্য মতে জানা যায়, ২০১৬-র বিশ্বশান্তি সূচকে ১৬৩টি বাংলাদেশের অবস্থান ৮৩তম। যেখানে ভারতের অবস্থান ১৪৩-এ রয়েছে। তবে এটিও উল্লেখ্য, সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ নেপাল ও ভুটান এগিয়ে রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি আফগানিস্তানে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির অবস্থান ১৬০তম। যার পরেই রয়েছে সূচক অনুযায়ী সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দেশ ইরাক।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকার-সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেয়া জরুরি, হিংসা, হত্যা, অসামরিক নাগরিকের হাতে অস্ত্র, দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ ২১টি বিষয় মূল্যায়ন করে এই র্যাং কিং এবং সূচক তৈরি করা হয়। ফলে এই বিষয়গুলোকে বিচার বিবেচনা করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণপূর্বক পরিস্থিতি উন্নয়নে সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প থাকা উচিত নয়। যখন ১৬২ দেশকে নিয়ে সূচক তৈরি করার ক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দ্বন্দ্বের সঙ্গে সন্ত্রাসী তৎপরতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, তখন এই বিষয়গুলোতে আরও বাংলাদেশের অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলেই আমরা বিবেচনা করতে চাই। মনে রাখা সঙ্গত, এই পরিস্থিগুলোকে খতিয়ে দেখে যত বেশি অগ্রগতি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে ততই তা দেশ ও মানুষের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যা বসবাস থেকে শুরু করে সবকিছুর ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আমরা মনে করি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি যদি উলি্লখিত ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়ন এবং দেশের যে কোনো ধরনের অস্থিরতা বা সহিংস পরিস্থিতি কিংবা সন্ত্রাসবাদ রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে সুফল পাওয়া সম্ভব। যে দেশে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে এমনকি একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাসের সংস্কৃতি বিদ্যমান, সেই দেশে শান্তির সূচকে আরও অগ্রগতি অর্জন করবে এমনটি আশা করা অযৌক্তিক নয়। ফলে বিভিন্ন সময়ের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে এ ধরনের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর হতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আরও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বের সামনে পরিচিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।
©somewhere in net ltd.