নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

বর্তমান বিশ্বে বিদ্যুৎ অপরিহার্য একটি বিষয়। যত দিন যাচ্ছে মানুষ বিদ্যুতের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের জোগান চাহিদামতো না হলে একটি দেশের শিক্ষা, প্রযুক্তি, শিল্প-কলকারখানাসহ সব কিছুর ওপরই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আশার কথা যে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রগামী। সম্প্রতি দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বর্তমানে ১৫ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করেছে। যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। দুই মেয়াদে অর্থাৎ বর্তমান সরকার সাড়ে সাত বছরে বিদ্যুতের এই উৎপাদনে এক অনন্য মাত্রা যুক্ত করল নিঃসন্দেহে। আমরা মনে করি, রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন দেশের সামগ্রিক চাহিদার দিক বিবেচনায় অত্যন্ত ইতিবাচক।
তথ্য মতে, ২০১৩ সালে ১০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হওয়ার পর গত তিন বছরে ছয়টি কেন্দ্র থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। এ সময়ে আরও কয়েকটি তেলচালিত ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্রও নির্মিত হয়েছে। আবার মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় আগামী বছরের মাঝামাঝি আরও কয়েকটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে বলেও জানা যায়। বলাই বাহুল্য, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে, যার সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। বাস্তবতা হলো, তথ্যানুযায়ী দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ এখনো বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে রয়েছে। সঙ্গত কারণে, দেশের সার্বিক উন্নয়নে আপামর জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি।
অস্বীকার করা যাবে না যে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। সরকারের বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগের কথাও জানা যায়। যার মধ্যে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ছয় হাজার মেগাওয়াটের কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। আবার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকার যদি ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করতে না পারে তাহলে দেশের মানুষকে শতভাগ বিদ্যুৎসুবিধার আওতায় আনার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি হবে। শুধু উৎপাদন বাড়ানোই নয়, নিরবচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে বিদ্যুৎ পেঁৗছে দিতে সঞ্চালন ব্যবস্থার ওপরও জোর দেয়ার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। কেননা বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থায় ত্রুটি ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগও পুরনো। যা সংশ্লিষ্টদের অজানা নয়। আমরা মনে করি, উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দুর্নীতি রোধ এবং সঞ্চালন ত্রুটি নিরসন করা গেলে তা বিদ্যুতের অপচয় রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তথ্য মতে, ২০২১ সালের মধ্যে সব মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার বিস্তৃতির জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে (আরইবি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি বিনিময় ও পরস্পরের সম্পদ ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো পারস্পরিক সহায়তাও বাড়িয়েছে। সার্কের আওতায় এসংক্রান্ত একটি ফ্রেমওয়ার্ক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সে অনুযায়ী ভারত থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিও করা হচ্ছে। যা আগামী বছরের শেষ নাগাদ আরও ৫০০ মেগাওয়াট এবং ২০১৭ সালের জুনের আরও ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। আবার ভুটানের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করছে। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারত হয়ে আমাদের দেশে আসবে। দক্ষিণ এশিয়ায় অভিন্ন বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক স্থাপন করে ২০২১ সালের মধ্যে আরও ছয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। সরকারের এ পরিকল্পনাকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
সর্বোপরি বলতে চাই, চাহিদার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে তা হবে সার্বিকভাবেই দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক। এটা মনে রাখা সঙ্গত যে, দেশের যে কোনো উন্নয়নই আজ বিদ্যুৎনির্ভর, তাই এই খাতের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা জরুরি। বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি মানেই জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে স্থবিরতা নেমে আসা। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। রেকর্ড উৎপাদনের পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার, চালু কেন্দ্রগুলোর ওপর নজরদারি বৃদ্ধিসহ রক্ষণাবেক্ষণের কার্যকর পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতের যে কোনো অনিয়ম রোধে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা। সামগ্রিক এ বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা এলেই বিদ্যুতের আরও উন্নয়ন হবে, যার সুফল পাবে দেশ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.