![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জঙ্গিদের পরিবারভিত্তিক ইউনিট গঠনের কৌশল নতুন করে সব মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযানে জঙ্গিদের ইউনিট গঠনের এই নতুন কৌশল স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ খানের পূর্ব আশকোনায় জঙ্গি অভিযানের পর বিষয়টি আরো উদ্বেগের কারণ ঘটিয়েছে। কারণ জঙ্গি নেতারা এখন পরিবারের নারী ও শিশুদেরও ধর্মীয় উগ্রবাদিতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করছে। ওই অভিযানে গ্রেফতারকৃত নারীদের রিমান্ডে নিলে তারা স্বামীদের চাপে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা স্বীকারও করেছে। অন্যদিকে স্বামী জঙ্গিনেতা মুছার নির্দেশ অমান্য করে তার স্ত্রী শিশুসন্তানসহ আত্মসমর্পণ করেছে বলেও জানিয়েছে। পরিবারভিত্তিক ইউনিট গঠনের সুবিধা হলো, এতে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত পরিবার সম্পর্কে পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি আত্মীয়-স্বজনরা সহজে কোনো কিছু আঁচ করতে পারবে না। যে কারণে জঙ্গিরা নতুন করে সংঘবদ্ধ হতে এই কৌশলটিকেই যথাযথ মনে করছে। গত কয়েকদিনের দৈনিকগুলো পর্যবেক্ষণ করলে জঙ্গিবাদের এই নতুন কৌশল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদগুলোই নজরে পড়ে। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ মানবকণ্ঠসহ সহযোগী কয়েকটি দৈনিকেও এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
গত দুই দশকে আমাদের দেশে জঙ্গি তৎপরতার ধরন পর্যালোচনা করে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, প্রথমদিকে মতাদর্শ প্রচার ও সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধু বা নিজস্ব পরিমণ্ডলের লোকদেরই অগ্রাধিকার দিত জঙ্গিরা। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তারা নিজেদের মধ্যে বিয়েশাদি তথা আত্মীয়তার বন্ধন তৈরিতে নজর দেয়। চলতি বছর একাধিক অভিযানে নিহত-আহত হওয়া, বিচার ও ধরপাকড়ের চাপে পড়ে তাদের জনবল কিছুটা কমে যাওয়ার পর তারা একটি পরিবার একটি ইউনিট কাঠামোয় যাওয়া শুরু করেছে। জঙ্গিদের এই প্রবণতা বা কৌশলকে ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এতে একটি পরিবার চরমপন্থায় যুক্ত হলেও তা অন্য স্বজন বা আশপাশের লোকজনের নজরে সহজে ধরা পড়ে না। ১ জুলাই ২০১৬ তারিখ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার পর বেশ কয়েকটি পারিবারিক ইউনিটের অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। আইএস (ইসলামিক স্টেট) মতাদর্শ অনুসরণকারী ‘নব্য জেএমবি’তে এ প্রবণতা বেশি বলে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের নারী সদস্যদের কেউ নিজ থেকে স্বেচ্ছায় জঙ্গিবাদে জড়ানোর উদাহরণ খুবই নগণ্য। পরিবারপ্রধানের চাপ বা প্রভাবে তারা এসবের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে জš§ নেয়া জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) মূলত পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকেন্দ্রিক জঙ্গি নেটওয়ার্ক বিস্তারের কৌশল গ্রহণ করে। শুরুতেই এর প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আবদুর রহমান পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে আনেন। পরবর্তী সময়ে সংগঠনের বিভিন্ন নেতা ও সদস্যের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি করে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির কৌশল নেন।
আঞ্চলিক গণ্ডি পেরিয়ে জঙ্গিবাদ এখন আন্তর্জাতিকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে স্বস্তির বিষয় এটাই যে, আমাদের দেশে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতা এবং সফলতার সঙ্গে জঙ্গি দমনে কার্যকর ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তারা জীবনের ঝুঁকি নিতেও কুণ্ঠাবোধ করছেন না। তাদের এই সাহসিকতা আমাদের গর্বিত করে, নির্ভর করার সাহস জোগায়। আমরা তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে জঙ্গিবাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডের প্রতি আরো সতর্ক দৃষ্টি রেখে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে এই প্রত্যাশা করছি।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯
প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ। দক্ষতার সাথে সাহস নিয়ে বিষয় গুলোকে মোকাবেলা করার জন্য।