![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের তিন বছরের মাথায় জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। এ পর্যালোচনা শুধু সরকারের দায়িত্বশীল মহল বা সংস্থাই করছে না, একই মূল্যায়ন ও আলোচনা হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও। এই আলোচনায় হয় হাটে-ঘাটে-মাঠে বাজারে, চায়ের দোকানে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। একই সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় পৃথক করে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কার্যক্রম মূল্যায়ন শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের তিনবছর পূর্ণ হচ্ছে ১২ জানুয়ারি। তাই সরকারের তিন বছর পূর্তিকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার তথা মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া মোটামুটি সন্তোষজনক বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মেগা প্রকল্পের সন্তোষজনক অগ্রগতিতে স্বস্তিতে রয়েছে সরকার।
সরকারের দ্বিতীয়মেয়াদে তিন বছরে চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন সার্বিক অগ্রগতিতে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যয় ও সবচেয়ে বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে গত কয়েক বছরে। ফলে অবকাঠামো খাতে নতুন স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের উন্নয়নযজ্ঞে যুক্ত হচ্ছে নতুনমাত্রা। এ ছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) গ্রহণে নজির সৃষ্টি হয়েছে। মূলত একটি দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, যোগাযোগসহ অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের বিকল্প নেই। পাশাপাশি এজন্য দরকার সরকারের ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। কিশোরগঞ্জের মরমি কবি, গবেষক ইবনে সালেহ মুনতাসির রচিত 'বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা' শীর্ষ লিরিকটি প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে। তার লিরিকটি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ আজ অনেকদূর এগিয়ে/বাংলাদেশিরা আজ পণ করেছে উন্নয়নের সকল সূচক তারা নেবে বাগিয়ে/ মধ্যম আয়ের দেশের পরে তারা উন্নত দেশের কাতারে যেতে চায়/ তাই তো তারা সারা দুনিয়ার সব বিনিয়োগ আকর্ষণ আহ্বান করে যায়। বাংলাদেশ আজ সক্ষম নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে দেশ-জাতি রক্ষায়/ যোগাযোগ ব্যবস্থায় তারা গড়ে তুলতে চায় বিশ্বমান আর সহায়/ গড়ে তুলবে তারা উত্তর-দক্ষিণ আর পূর্ব-পশ্চিম জাতীয় মহাসড়ক/ দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটবে বিপ্লব থাকবে না আর যানজটের যন্ত্রণা/ চার লেন, আট লেনের জাতীয় সংযোগ মহাসড়ক আজ বিশেষ প্রয়োজন/ সাথে থাকবে স্থানীয় সংযোগ সড়ক করতে হবে বিশেষ আয়োজন/ আন্ডার পাস ও ভাব পাসের মাধ্যমে যোগাযোগ সহজ হবে/ স্থানে স্থানে থাকবে রাডার সিস্টেম বেষ্টনী দুর্ঘটনা প্রতিরোধ হবে বাংলাদেশ আজ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেকদূর এগিয়ে/ আধুনিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বুলেট ম্যাগনেটিক ট্রেন নিয়ে যাবে বাগিয়ে/ রাজধানীতে হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে যানজট যাবে চলে/পাতাল রেল, ট্রেন, নৌপথ নির্মাণ হবে সবাই তাই তো বলে ইবনে সালেহ মুনতাসির বলেন, সাবাস পিতার সাবাস দেশ, জাতির জনকের বাংলাদেশ/ বাংলাদেশ খুঁজতে শিখেছে বাংলাদেশ আজ নিজ পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে/ ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে চলেছে/বাংলাদেশ আজ সক্ষম, বাংলাদেশ আজ শিল্পোন্নত দেশ হতে চলেছে দুই দেশের সুরক্ষার প্রয়োজন সীমান্ত ভারত দিল কাঁটাতারের বেড়া/ নির্মাণ করল ভারত সাড়ে চার হাজার মাইল কাঁটাতারের বেড়া/ উভয় দেশের সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান বন্ধ হবে।
উভয় দেশের সব সীমান্ত সমস্যার চির সমাধান হবে উজানের দেশ ভারত সকল নদ-নদীর ওপর দিয়েছে বাঁধ/ কৃষি সেচ জলজ বিদ্যুতে ভারত অনেকদূর এগিয়ে যাবে/ ভাটির দেশ বাংলাদেশের যে তাতে অনেক উপকার হবে/ হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল-জলাশয়গুলো যে বিনি পয়সায় গেল ভরাট হয়ে শুকনা কালে বাংলাদেশের সর্বত্র ফসল চাষাবাদ হবে/ বর্ষাকালে বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশ তো কৃষি সেচ জলবিদ্যুৎ পাবে/ বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারত মহাসাগরের দিকে যাবে সব পলি মাটি/ মহীসোপান ভরাট হয়ে সাগর সমুদ্রে হবে অনেক নদ-নদী ফসল পাবো, জল পাবো, জলবিদ্যুৎ পাবো, হবে সৃষ্টি নদ-নদী/ অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ বিস্ময়ে বিশ্বকে করতে পারে যদি/ বাড়তি মানুষের বাস বাংলাদেশে স্রষ্টার লীলাখেলা বোঝা বড় দায়/ বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে স্রষ্টা যদি হন সহায়। ইবনে সালেহ মুনতাসির বলেন, এভাবেই স্রষ্টা ছোট জাতিকে বড় করেন আপন রহমতে/ছোট-বড় সবই স্রষ্টার খেলা বোঝা বড় দায়রে বোঝা বড় দায়/ স্রষ্টা আপন হাতে গড়েন বাংলাদেশ রহমতের নাই যে শেষ/ ভবিষ্যৎই বলে দেবে কেমন হবে আজকের বাংলাদেশ শেষমেশ তিনদিক থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে ভারত মিয়ানমার/ তিনদিক থেকেই সুরক্ষা পাব সুরক্ষা দেবে ভারত মিয়ানমার/ সমর শক্তির পিছনে খরচ করতে হবে না বাঁচবে যে সরকার/ ভারত মহাসাগরের নীল অর্থনীতির খোঁজে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ সরকার' পর্যালোচনা বলা হয়, ২০১৪ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজ বর্তমানে শেষ হচ্ছে। এখন চলছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনার উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা এবং দারিদ্র্যের হার ১৩ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। বর্তমান সরকার পাঁচ বছর দেশ পরিচালনার পর ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এ মেয়াদেরও তিন বছর পার করছে। সরকারের পূর্ব ও বর্তমান মেয়াদকালে দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে আশাজনক অগ্রগতি হয়েছে। এ সময়কালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও অর্জিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি প্রশংসার দাবি রাখে। সরকারের দক্ষ সামষ্টিক ব্যবস্থাপনার ফলে আশা করছি ২০২১ সালের মধ্যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। কেননা গত তিন বছরে প্রবৃদ্ধির হার সর্বাধিক করা হয়েছে।
সরকারের আরেকটি মহৎ উদ্দেশ্য 'আয়ের সুষম বণ্টনের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের ব্যাপক বিস্তৃতি করা, বাস্তবেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সব দরিদ্রজনগোষ্ঠীকে এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার কর্মযজ্ঞ চলছে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানো হচ্ছে। গত তিন বছরে তার ভিত্তি তৈরি হয়েছে। এখনই ১৫ হাজার ২৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া মূল্যস্ফীতিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। প্রতিবেশী ও সমমানের রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। গত অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত জুনে সমাপ্ত হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৫টি। এ সময় উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয় ২৭৮টি। এগুলোর ব্যয় ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৪৯ কোটি ৬৭ হাজার টাকা। এ অর্থবছরে মোট এডিপির আকার ছিল ৯৩ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে ২৫৪টি। এডিপি বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছে ৯৩ শতাংশ। তার আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩১টি। এর মধ্যে ২১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল ৭৭ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। ব্যয় হয়েছিল ৭১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে ২৮০টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়ন হার হয়েছিল ৯১ শতাংশ।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে একনেক বৈঠক হয়েছিল ২৬টি। মোট ২১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ২১ হাজার ৯৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল ৬৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন হার দাঁড়িয়েছিল ৯৩ শতাংশ। এ সময় প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছিল ২৩৬টি। গত তিন বছরে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন সময় এসেছে প্রকল্পের সঠিক ও গুণগত বাস্তবায়নের দিকে নজর দেয়া দরকার। কেননা ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ করতে হলে এর বাস্তবায়ন অপরিহার্য। একইভাবে গত তিন বছরে বৃহৎ প্রকল্পগুলো পরিণতির দিকে গেছে। আগে যেগুলো পরিকল্পনায় সীমাবদ্ধ ছিল, সেগুলো আলোর মুখ দেখার ব্যবস্থা হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের রাস্তা। এগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে নভেম্বর পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৮ শতাংশ। যেভাবে বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে চলছে তাতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যেই কাজ সমাপ্ত হবে। এ ছাড়া গত তিন বছরে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। সম্প্রতি ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কাজ শুরুর আশাবাদ সরকারের।
এসব মেগা প্রকল্পের বাইরে বাইরে স্বপ্ন জাগানো আরও বেশকিছু প্রকল্প অনুমোদন, কাজের উদ্বোধন বা সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। এগুলো হলো, কর্ণফুলী নদীর নিচে দেশের প্রথম টানেল তৈরি প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ২০ লাখ এবং চায়নিজ এক্সিম ব্যাংকের ঋণ থেকে ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সাংহাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এ ছাড়া ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটারের এই টানেল নির্মিত হলে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। সেই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের জাতীয় মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে এবং এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন হবে।
দেশের মেগা প্রকল্পের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আরেকটি স্বপ্নময় প্রকল্প। যেটির নাম ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নির্মিত হলে গুরুত্বপূর্ণ দুই অংশের মধ্যে সহজ ও দ্রুত সড়ক যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিটেইল্ড ডিজাইনের কাজ শেষ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। ৪টি প্যাকেজে বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। এ প্যাকেজের বাইরে সেতু ও সেতু কালভার্টসহ অন্যান্য কার্যক্রম করতে আরও ১০ হাজার কোটিসহ মোট ব্যয় হতে পারে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সওজ। ৪ প্যাকেজে কাচপুর থেকে চট্টগ্রামের সলিমপুর পর্যন্ত এটি নির্মাণ করা হবে। এটি ২০২২ সালের মধ্যে নির্মাণে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এক নাম্বার প্যাকেজে মদনপুর থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার ৫৫০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজে কুমিল্লা থেকে ফেনী পর্যন্ত ব্যয় ৪ হাজার ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। তৃতীয় প্যাকেজে ফেনী থেকে চট্টগ্রামের কুমিরা পর্যন্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩০৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। প্যাকেজ চারের আওতায় কুমিল্লা থেকে সলিমপুর পর্যন্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮০০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া ওভারপাস ও আন্ডারপাস তৈরি করতে হবে ১০৭টি, দুটি বড় সেতু (মেঘনা ও গোমতি সেতু) এবং অন্যান্য ২৮ সেতু, এলিভেটেড সেকশন তৈরি করতে হবে ১৬টি এবং দুটি প্রধান টোলপ্লাজা এবং ৫টি ইন্টারচেঞ্জ টোল প্লাজা তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া ৩টি রেস্ট এরিয়া থাকবে। এ ছাড়া রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের পাশাপাশি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি)। এজন্য বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া যানজট নিরসনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। মূল প্রকল্পটি ৮ হাজার ৭০৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড বিনিয়োগ করবে। এ ছাড়া ২ হাজার ২৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ড (ভিজিএফ) হিসেবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মহল শতভাগ তৎপর হবেন। তবেই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
©somewhere in net ltd.