![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নামের সার্থকতা রক্ষার চেষ্টায় আছি।
১মার্চ, ১৮৯৬ সাল।
আদওয়া শহর, ইথিওপিয়া[প্রাচীন আবিসিনিয়া]।
সর্বমোট ১৮০০০ পদাতিক সৈন্য এবং ৫৬টি আর্টলারি পিসে সজ্জিত, জেনারেল ওরেস্তে বারাতিয়েরির(Oreste Baratieri) ইটালিয়ান সেনাবাহিনী রাতের অন্ধকারে আদওয়া শহরের দিকে অগ্রসর হয়। তাদের উদ্দেশ্য, সংখ্যার দিক দিয়ে আধিপত্য বিস্তারকারী কিন্তু যুদ্ধসরঞ্জামের দিক দিয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা আবিসিনীয় বাহিনীকে, চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়া। যদিও জেনারেল বারিতিয়েরি এই আক্রমণের ব্যাপারে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন। একজন ফিল্ড কমান্ডার হিসেবে তিনি আগেই টের পেয়েছিলেন, মার্চ মাসের ভয়ানক গরমে ৭৩০০০ সৈন্যের বিশাল ইথিওপীয় বাহিনীর ভরণ পোষণ করা একটি দুঃসাধ্য কাজ হবে। ইথিওপীয় সেনাবাহিনীর ভরণ পোষণের জন্যে মূল রসদ আসতো স্থানীয় দরিদ্র গ্রাম্য কৃষকদের কাছ থেকে। বারিতিয়েরি সঠিকভাবে অনুমান করেছিলেন, কৃষকদের ভান্ডার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে এবং ইতিমধ্যে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। তার হিসেব মতে, ইথিপিও বাহিনী আর অতিরিক্ত পাঁচ দিনের বেশী টিকবে না।
বারাতিয়েরির পরিকল্পনা ছিল, তিনি অপেক্ষা করবেন। আদওয়া শহরে ইথিওপীয় বাহিনীকে আটকে রাখতে পারলে, তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হবে। বাস্তবে এই পরিকল্পনাই সঠিক ছিল।
কিন্তু বারাতিয়েরির এই সিদ্ধান্তে ইতালীয় সরকারের আঁ তে ঘা লাগে। তারা চটজলদি বারাতিয়েরিকে আদওয়া শহর আক্রমণ করার আদেশ দেন। বারাতিয়েরি শুধুমাত্র পাঁচটা দিন অতিরিক্ত চেয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রার্থনা মঞ্জুর করা হয় নি।
পরিকল্পনা অনুসারে বারাতিয়েরির বাহিনী রাতের অন্ধকারে তিন দিক থেকে আদওয়ার পথে অগ্রসর হয়। কিন্তু তাদের কাছে থাকা মানচিত্র বেশ পুরোনো ছিল বলে, তারা পথ হারিয়ে ফেলে। সকাল বেলা দেখা যায়, বারাতিয়েরির তিন দল একটি বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে যুদ্ধ পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে আঁতকে উঠার মতো বিষয় হল এই যে, পথ হারিয়ে ফেলায় তারা পুরোপুরি ইথিওপীয় বাহিনীর বন্দুকের গুলির আওতায় চলে আসে, যা তারা নিজেরা ঘুনাক্ষরে টের পাই নি।
ইথিওপীয়রা তাদের সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা জানতো স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার এটাই একমাত্র সুযোগ। তাদের হাতে সময়ও বেশী ছিল না। অতঃপর তারা ইটালীয়দের উপর আক্রমণ করে। এক ভয়ানক যুদ্ধে ইথিওপীয়দের শেষ পর্যন্ত জয় হয়। ইটালীয়দের পক্ষে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়ায়, ৭০০০ নিহত এবং ১৫০০ আহত। অন্য দিকে, ইথিওপীয় বাহিনীর ৩০০০-৪০০০ সৈন্য নিহত হয় এবং প্রায় ৮০০০ সৈন্য আহত হয়।
এই যুদ্ধ লাইবেরিয়ার পাশাপাশি ইথিওপীয়াকে আফ্রিকার দ্বিতীয় সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে আফ্রিকার বাকি সব দেশ, কোনো না কোনো ভিনদেশী রাষ্ট্রের কলোনি ছিল।
ইটালীয়রা এই হারের কথা সহজে ভুলতে পারেনি। এই চরম অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে তারা বদ্ধপরিকর ছিল।
***
১৯৩০ সাল।
ইটালীয় কলোনিয়াল সীমান্ত এবং ইথিওপীয় সীমান্তের মাঝামাঝি স্থান, ওয়েল-ওয়েল(wel-wel/wal-wal/ual- ual) ওয়াসিস।
উক্ত স্থানে, ইটালী এবং ইথিওপীয়ার মধ্যে সাক্ষরিত সীমান্ত চুক্তিকে লঙ্ঘন করে ইটালীয়রা একটি দুর্গ নির্মাণ করে। পরে দেখা যায়, ইটালীয়রা ইচ্ছাকৃতভাবে ইথীওপীয় সীমান্তের ভিতরে তা নির্মাণ করেছে। এতে ইটালী এবং ইথিওপীয়ার মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ইথিওপীয়রা লীগ অফ নেশন্সে এর প্রতিবাদ করে।
***
১৯৩৪ সাল, ডিসেম্বর মাস।
ওয়েল-ওয়েল ওয়াসিসের দুর্গ।
ইটালীয় এবং ইথিওপীয়দের মধ্যেকার এক ভয়ানক দাঙ্গায় ১৫০জন ইথিওপীয় এবং ২জন ইটালীয় নিহত হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে ফের অবস্থার অবনতি ঘটে।
***
১৯৩৬ সালের ৭ই মার্চ, জার্মানি ফরাসি-জার্মান সীমান্তবর্তী রাইনল্যান্ড এলাকা দখল করে নেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় বিশ্বশক্তি তাজ্জব বনে যায়। জার্মানিকে এতদিন তারা কেউ গণনায় ধরেনি আর হঠাৎ করে সেই পুরোনো বাঘ পুনরায় জেগে উঠেছে!
ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো রাইনল্যান্ড দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের কথা চিন্তা করে তারা তা নেয়নি। এতে শাপে বর হয় জার্মানির। বিশেষ করে তাদের নেতা এডলফ হিটলারের। রাইনল্যান্ড দখল করার মত এরূপ দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত তিনি নিজে একা নিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে চরম বিরোধিতা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, রাইনল্যান্ডে হিটলারের ছোট্ট বাহিনী প্রবেশের সাথে সাথে ফরাসি বাহিনী তা ধুলোয় মিশিয়ে দিবে। কিন্তু হিটলার ছিলেন অনড়। এবং শেষে দেখা গিয়েছে, হিটলারের কথাই সঠিক ছিল। ফরাসিরা সেই ক্ষুদ্র জার্মান বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি। এক ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তার কারণে হিটলার তার জীবনের এক চরম পরীক্ষায় উৎরে যান।
রাইনল্যান্ড তো দখল হল। কিন্তু রাইনল্যান্ড দখল করার সাফল্যে তৃপ্তির ঢেকুড় তুলে বসে থাকা যায় না। রাইনল্যান্ড জার্মানদের নিজস্ব সম্পত্তি, যা জোড়পূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। হিটলারের সামনে আরও বড় কিছু পাবার হাতছানি। আর তা পাবার জন্যে দরকার কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য। ইতিমধ্যে সমরাস্ত্র কারখানাগুলো রাতদিন অস্ত্র উৎপাদন করছে। সেই সাথে, পুরোদমে সেনাবাহিনীর জন্যে নতুন সেনা বাছাই এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাগরিক জীবনেও, ইহুদীদের নিয়ে বিষয়টি বাদে, ফিরে এসেছে স্বস্তি। হিটলারের জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বেকারত্ব প্রায় নেই বললে চলে। সময়টা হল ধৈর্য ধরার। সঠিক মুহুর্তে আঘাত হানতে পারলে, রাইনল্যান্ডের চেয়েও বড় পুরষ্কার ঘরে আসবে।
জার্মানরা অপেক্ষা করতে লাগলো। তাদের এখন প্রয়োজন একজন শক্তিশালী মিত্রের। এই মিত্র হতে পারে ইটালী। কেননা জার্মানি এবং ইটালীর তৎকালীন সরকারের মধ্যে আদর্শগত মিল ছিল। যেখানে আদর্শের মিল থাকে, সেখানে অন্যান্য মিল হতে বেশী সময় লাগে না। কিন্তু মুসোলিনির দেশের সাথে মিত্রতা স্থাপন করার মত তেমন কোনো সুযোগ জার্মানির আসছে না। রাইনল্যান্ড দখলের পর জার্মানি একটি মজবুত ভিত পায়, যার উপর দাঁড়িয়ে সে ইটালীর সাথে তার মিত্রতার বন্ধন জোড়দার করতে পারে।
তবে এখানে জার্মানির জন্যে আরেকটি বড় বাঁধা ছিল। রোমের সাথে তখন প্যারিস এবং লন্ডনের দহরম মহরম সম্পর্ক। তাদের মধ্যে গলায় গলায় ভাব। যদিও আদর্শের দিক দিয়ে তাদের মাঝে কোনো মিল নেই। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স চায়, হিটলার যাতে কোনো ভাবেই তার মাতৃভূমিকে, তথা অস্ট্রিয়াকে, জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করতে না পারে। এ কারণে, তারা ইটালির শরণাপন্ন হয় এবং মুসোলিনির সাথে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। বন্ধুত্বের শর্তানুযায়ী, ইটালী জার্মান-অস্ট্রিয়ান সীমান্তের কাছাকাছি ব্রেসা(Bressa) নামক স্থানে, এক বিশাল সেনা সমাবেশ করিয়ে রাখে।
হিটলার জানতেন, অষ্ট্রিয়াকে কব্জা করতে হলে আগে ইটালিকে নিজের আওতায় আনতে হবে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি অপেক্ষা করবেন। আগেও সুযোগ আপনা আপনি তার হাতের মুঠোয় এসেছিল, এবারো আসবে।
হিটলারের কাছে সুযোগ আসতে বেশীদিন লাগেনি।
***
অক্টোবর, ১৯৩৫ সাল।
ওয়েল-ওয়েল ওয়াসিসে নির্মিত সেই দুর্গকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া দাঙ্গার জের ধরে, ইটালি এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যায়। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স এই অন্যায় যুদ্ধে ইটালীকে সমর্থন না জানালেও, তারা নিষ্ক্রিয় থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩৬ সালে, হিটলার রাইনল্যান্ড দখল করার দুই মাস পর তথাপি মে মাসে, ইটালী এবং ইথিওপিয়ার মধ্যবর্তী যুদ্ধ শেষ হয় ইটালীর জয়ের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু, ৭মাস ধরে চলা এই অন্যায় যুদ্ধের কারণে, বিশ্ব দরবারে মুসোলিনির ইটালীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সাথে তার সম্পর্কেরও অবনতি হয়।
চতুর হিটলার এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। এর আগ পর্যন্ত তিনি অস্ট্রিয়ার উপর কোনো প্রভাব খাটাতে পারেননি। কিন্তু ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই, বিশ্ব রাজনীতির নাজুক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জার্মানির সাথে অষ্ট্রিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়ে যায়।
***
তৎকালীন সময়ে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় জার্মান মন্ত্রী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ফ্রাঞ্জ ভন পাপেন। দুই বছর আগে, ১৯৩৪সালে, তিনি ভাগ্যের জোরে হিটলারের আদেশে পরিচালিত গণহত্যা থেকে বেঁচে যান। আর তার দুই বছর পর,ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, তাকে হিটলারের পক্ষে ভিয়েনায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে! ভিয়েনায় পাপেনের প্রধান কাজ ছিল কি করে অষ্ট্রিয়াকে বিনা যুদ্ধে জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা নিশ্চিত করা। ১৯৩৬ সালে, ইথিওপিয়া নিয়ে ইটালীর সাথে ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতি ঘটায়, পাপেনের কাছে তার বহু প্রতীক্ষিত সুযোগ চলে আসে। তিনি জার্মানির পক্ষে অষ্ট্রিয়ার তরুণ প্রধানমন্ত্রী কার্ট শুজনিগের সাথে শান্তি চুক্তি সাক্ষরের জন্যে উদ্যেগী হয়ে উঠেন।
****
১৯৩৬ সালের ১১জুলাই, ফ্রাঞ্জ ভন পাপেনের উদ্যেগে জার্মানির সাথে অষ্ট্রিয়ার একটি শান্তি চুক্তি স্থাপিত হয়। চুক্তি অনুসারে, জার্মানি অষ্ট্রিয়ার সার্বভৌমত্বকে সম্পূর্ণরূপে স্বীকৃতি প্রদান করে। জার্মানি এই অঙ্গীকারও করে যে, তারা অষ্ট্রিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাবে না। বিনিময়ে অষ্ট্রিয়া অঙ্গীকার করে, তারা নিজেদেরকে সর্বদা জার্মানিরই একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করবে।
চুক্তিটি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত, এবং তা অষ্ট্রিয়ার জন্যে মঙ্গলজনক হত। কিন্তু জার্মানির কড়া হুমকিতে এখানে আরও কিছু গোপন শর্ত যুক্ত হয়।
শর্তানুযায়ী, অষ্ট্রিয়ায় বন্দী সকল নাৎসি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এবং সেই সাথে, কোনো ব্যক্তি নাৎসি পার্টির সমর্থক হলেই তাকে অষ্ট্রিয়ার রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
অষ্ট্রিয়া এ গোপন শর্তগুলি মেনে নেয়।
আপাত দৃষ্টিতে চুক্তিটি দেখতে নিরীহ গোছের মনে হলেও, এই চুক্তির জোড়েই অসংখ্য নাৎসি সমর্থক অষ্ট্রিয়ার রাজনৈতিক দায়িত্ব পেয়ে যায়। আর তাদের কারণেই একদিন অষ্ট্রিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত হয়।
****
এই চুক্তি সাক্ষরের পরপরই উচ্ছসিত পাপেন বার্লিনে হিটলারকে ফোন করেন। চুক্তিটি এত দ্রুত সাক্ষরিত হয়েছিল যে, হিটলার পর্যন্ত এর গোপন শর্তগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন না। পাপেন যখন তাকে ফোনের উপর চুক্তির কিছু অংশ পড়ে শুনাচ্ছিলেন, তখন হিটলার রাগে ফেটে পড়েন। এ কেমন শান্তি চুক্তি!!! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, স্বরচিত স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থে পাপেন সেই সময়কার কথা স্মরণ করে বলেন, "হিটলারের প্রতিক্রিয়ায় আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। যেখানে আমার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কথা, সেখানে তিনি আমাকে খারাপ ভাষায় জর্জরিত করলেন। "আমি তাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছি", তিনি বললেন। পুরো জিনিসটি নাকি জার্মানির জন্যে একটি ফাঁদ!"
চুক্তিটি একপ্রকার ফাঁদই ছিল। তবে তা জার্মানির জন্যে নয়। অষ্ট্রিয়ার জন্যে। এই চুক্তি সাক্ষর করে অষ্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর কার্ট শুজনিগ ফাঁদে পড়ে যান। চুক্তি সাক্ষর করার সময় কোনো পক্ষই আসলে তা বুঝতে পারেননি। যার কারণে, পাপেনকে অভিনন্দন না জানিয়ে হিটলার তার সাথে সেদিন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছিলেন।
অন্যদিকে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে, ইটালি তার প্রতিবেশী দেশ অষ্ট্রিয়াকে সুরক্ষা প্রদান করতে আগের মতো আর সক্ষম নয়। সে ধীরে ধীরে জার্মানির উপর তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। ইটালিকে পাশ কাটিয়ে, নাৎসিদের ক্ষমতা অষ্ট্রিয়ার অভ্যন্তরে পৌছে গিয়েছে এবং দুঃখের বিষয় হল এই যে, মুসোলিনির এখানে আর কিছুই করার নেই।
***
২২শে জুলাই, ১৯৩৬।
অষ্ট্রিয়ার সাথে শান্তি চুক্তি স্থাপনের ১১দিন পর।
বাইরয়েথ(Bayreuth), বাভারিয়া, জার্মানি।
বছরের এই সময়টাতে, হের হিটলার এই ছোট শহরে অপেরা শুনতে আসেন। ২২শে জুলাই রাতে, অপেরা থিয়েটার থেকে তার নিবাসে ফিরে যাওয়ার পর, তার সাথে কিছু লোক দেখা করতে আসেন। এদের মধ্যে দুজনকে তিনি চিনতে পারলেন। তারা নাৎসি পার্টির স্থানীয় নেতা। আরেকজনের পরিচয় জানা গেল, তিনি একজন মরক্কো নিবাসী জার্মান ব্যবসায়ী। একটি অতি জরুরি চিঠি নিয়ে তিনি এসেছেন। ভদ্রলোক চিঠিটি দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন। চিঠিটি ছিল স্প্যানিশ বিদ্রোহী ন্যাশনালিস্ট গ্রুপের নেতা, জেনারেল ফ্রাঙ্কোর লেখা। উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই, ১৯৩৬ সালে স্পেনে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায়।
"
মহোদয়,
আজ এই সংগ্রাম, আমাদের দেশকে দূর্নীতিগ্রস্ত গণতন্ত্র এবং সেই সাথে রাশিয়া কর্তৃক পরিচালিত কমিউনিজমের করাল্গ্রাস থেকে বাঁচানোর জন্যে পরিচালিত হচ্ছে। এই চিঠিটি আপনার কাছে দুজন জার্মান ভদ্রলোক মারফত পৌঁছানো হবে, যারা আমাদের সাথে এই দুঃসহ মুহুর্তের শরিক হয়ে আছেন।
সকল প্রকৃত এবং ভালো স্প্যানিশবাসী আমাদের এই মহান সংগ্রামের সাথে যোগদান করেছে। তারা এটি করেছে স্পেইন এবং ইউরোপের ভালোর জন্যে।
স্প্যানীশ নৌবাহিনীর সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠায়, মরক্কোয় নিয়জিত আমাদের পরীক্ষিত সেনাবাহিনীর একাংশকে, মূল স্প্যানীশ ভুখন্ডে আনায়নের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিকুলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, আপনি আমার সেনাবাহিনীকে ১০টি সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পরিবহন বিমান, ২০টি ২০মিমি বিমানবিধ্বংসী কামান এবং ৬টি হাইঙ্কেল ফাইটার বিমান দিয়ে সাহায্য করবেন। সেই সাথে সর্বোচ্চ পরিমাণে রাইফেল এবং মেশিনগান আমাদের প্রয়োজন। এছাড়া প্রয়োজন বিভিন্ন ভরের এয়ার পাম্প, সর্বোচ্চ ৫০কেজি।
স্পেইন চিরকাল ধরে তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে আসছে। কমিউনিজমের বিরুদ্ধে আজ আপনার অবস্থান সুসংহত ।
ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো বাহামনদে,
সুপ্রীম কমান্ডার অফ আর্মড ফোর্সেস ইন মরক্কো।
"
চিঠিটি পড়ে হিটলার সাথে সাথে তার দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী, ফিল্ড মার্শাল হেরমান গোয়েরিং এবং সমরমন্ত্রী ভার্নার ভন ব্লমবার্গকে তলব করলেন। তিনি তাদের স্পেনে সামরিক সাহায্য প্রদানের জন্যে আদেশ দেন। হিটলার সাহায্য পাঠানোর জন্যে একটুও দ্বিধাবোধ করেননি। কেননা, স্পেনের পরিস্থিতি তিনি অনেক আগে থেকেই পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি জানতেন গৃহযুদ্ধ আসন্ন। এবং তিনি এও জানতেন, জেনারেল ফ্রাঙ্কো শুধুমাত্র তাকে নয়, বরং মুসোলিনির কাছেও সাহায্যের আবেদন করেছেন। এবং স্পেনকে সাহায্য করার অর্থ হল, ইটালিকে বাগে আনা।
***
স্পেনের প্রতি হিটলারের প্রেরিত সাহায্য ছিল অনেক সুপরিকল্পিত। তিনি জেনারেল ফ্রাঙ্কোর দ্রুত বিজয় কোনোদিনও চাননি। বরং তিনি চেয়েছিলেন যুদ্ধটি অনেক বছর চলুক। এই কারণে, স্পেনের প্রতি জার্মান সাহায্য কোনোদিন ইটালির সমপর্যায়ে পৌছায়নি। যেখানে ইটালি প্রায় ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ জন সেনা, সাহায্যের জন্যে পাঠিয়েছিল, সে তুলনায় জার্মান সাহায্য ছিল অতি নগন্য। হিটলারের ইচ্ছাই শেষতক পূরণ হয়। স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধ তিন বছর ধরে চলে। আর এ সময়ে ইটালি হিটলারের হাতের মুঠোয় চলে আসে।
***
জার্মানরা পরবর্তীতে হিসাব করে দেখতে পায়, স্প্যানীশ যুদ্ধে তারা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন রাইখস্মার্ক খরচ করেছে। সেই সাথে এই যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করার জন্যে, তারা তাদের বিমানবাহিনীর একটি ক্ষুদ্র অংশ সেখানে পাঠায়। সেই বিমানবাহিনীর ইউনিটটির নাম দেওয়া হয় "কন্ডর লিজিওন"। এই কন্ডর লিজিওনের মাধ্যমে, গোয়েরিং তার তরুণ বিমানবাহিনীর সদস্যদের, উপযুক্ত বাস্তবযুদ্ধের অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পেরেছিলেন।
"স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধ ছিল আমার তরুণ বিমানবাহিনী লুফট্ওয়াফের জন্যে প্রশিক্ষণের উপযুক্ত স্থান। ফুয়েরারের সম্মতিক্রমে, আমি আমার পরিবহন বিমান বহরের একটি বড় অংশ, এ যুদ্ধে প্রেরণ করি। সেই সাথে পরীক্ষামূলক ফাইটার ইউনিট, বম্বার বিমান এবং বিমান বিধ্বংসী কামানের ইউনিট তো ছিলই। তাদের নিয়োজিত করার মাধ্যমে, আমার বুঝতে সুবিধা হয়েছিল, বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের তৈরি যন্ত্রগুলো সঠিকভাবে কাজ করবে কিনা। বিমানবাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের জন্যে আমি বদলি নীতির ব্যবস্থা করেছিলাম, যাতে সকলে সুযোগ পায়।" ----- হেরমান গোয়েরিং, ন্যুরেম্বার্গ বিচার, ১৯৪৬।
***
এভাবে ঘটনাবহুল ১৯৩৬ সাল পার হয়ে যায়। ইটালী এবং জার্মানি স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধে সরাসরি মদদ দিতে থাকে। তাদের প্রতিপক্ষ, তথা ফ্রান্স এবং ব্রিটেন, নিজেদের অভ্যন্তরীন সমস্যা নিয়ে এতই ব্যতিব্যস্ত ছিল যে, তারা স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের বিরুদ্ধে মৌখিক প্রতিবাদ ছাড়া আর কিছুই করেনি।
১৯৩৭ সালের শুরুর দিকে, হিটলারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন দূত মুসোলিনির দরবারে গমন করেন। তাদের উদ্দেশ্য, মুসোলিনির বন্ধুত্ব পুরোপুরি নিশ্চিত করা। ১৫ জানুয়ারি, ফিল্ড মার্শাল হেরমান গোয়েরিং নিজে মুসোলিনির সাথে দেখা করতে যান। কিন্তু গোয়েরিং অষ্ট্রিয়ার কথা তোলার সাথে সাথে, মুসোলিনি ভয়ানক ভাবে মাথা নাড়েন। তিনি বুঝালেন, অষ্ট্রিয়ার ব্যাপারে ইটালি তখনো অনড়। জুন মাসে, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে পুনরায় রোমে যান এবং মুসোলিনিকে আশ্বস্ত করেন যে, অষ্ট্রিয়াকে দখল করার কোনো ইচ্ছা জার্মানির নেই। জার্মানি এবং অষ্ট্রিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তিটি নিরর্থক নয়।
মুসোলিনির তখন জয়জয়কার। জার্মানিকে তিনি চুপ করিয়ে রেখেছেন। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স তার বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করতে পারে না। তাদের নাকের ডগা দিয়ে তিনি ইথিওপিয়া দখল করেছেন। তাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও, তিনি জেনারেল ফ্রাঙ্কোকে স্প্যানীশ যুদ্ধে মদদ দিচ্ছেন। তার সেনাবাহিনী স্প্যানীশ যুদ্ধে তীব্র পারদর্শীতার সাথে সকল প্রতিরোধ গুড়িয়ে দিচ্ছে। আর এমনই এক সুসময়ে, সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ, ১৯৩৭ সালে, মুসোলিনি বার্লিনগামী এক বিমানে চেপে বসলেন, ফুয়েরারের আমন্ত্রণে, তার প্রথম জার্মান সফরের উদ্দেশ্যে। এই এক সফর, যা পরবর্তীতে ইউরোপের ক্ষমতার মানচিত্র পুরোপুরি পালটে দিবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রধান খেলা, এর পরপরই শুরু হয়ে যাবে।
****
মুসোলিনির এই জার্মানি সফরে, তার সাথে কোনো ধরণের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা করা হয় নি। বরং, এই সফরের শুরু থেকেই, সফরের জন্যে বিশেষ সামরিক পোশাকে সজ্জিত "এল দুচে" খ্যাত মুসোলিনিকে, জার্মানির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, বিভিন্ন সামরিক প্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়া হতে লাগলো। একদিন তাকে S.S বাহিনীর প্যারেডে নিয়ে যাওয়া হয়, তো আরেকদিন নিয়ে যাওয়া হয় মেকেলেনবার্গে ট্যাঙ্ক প্রদর্শনীতে। আরেকদিন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রুহ্র(Ruhr) অঞ্চলের কানে তালা লাগানো সামরিক কারখানাগুলোতে।
সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ, তথা মুসোলিনির সফরের তৃতীয় দিনে, তার আগমনের উদ্দেশ্যে, বার্লিনে একটি উৎসবের আয়োজন করা হয়। ১০লাখ মানুষের এক বিশাল জনসভায়, মুসোলিনি এবং হিটলার বক্তৃতা দেন। মুসোলিনির চোখে তৃপ্তির চরম ঝিলিক ছিল। ১০ লাখ মানুষের সম্মিলিত গগনবিদারী চিৎকারে, এবং সেই সাথে হিটলারের অতি বিনয়ী বক্তৃতায় তিনি উদ্বেলিত ছিলেন। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে আকাশে ভয়ানক বজ্রপাত আরম্ভ হয়ে যায় এবং একটি বজ্রপাত জনসভার কাছাকাছি এসে পড়ে। চারিদিকে সামান্য বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেও, তা মাইকের সামনে দাঁড়ানো মুসোলিনির উৎফুল্ল মনোভাবে কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। তার পাশে দাঁড়ানো হিটলার বুঝতে পারছিলেন, মুসোলিনি তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে ফেলেছেন। ভবিষ্যতে জার্মানির সঙ্গী হবে ইটালি। মুসোলিনির ভবিষ্যত এখন জার্মানদের সাথী করে রচিত হবে।
****
অক্টোবর, ১৯৩৬ সাল।
কমিউনিজমের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিরোধ সৃষ্টি করবার লক্ষ্যে, জার্মান পররাষ্ট্রদূত জোয়াকিম ভন রিবেনট্রপ, ইটালি গমন করেছেন। তার উদ্দেশ্য, একটি কমিউনিজম বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর করা। চুক্তি স্বাক্ষরকালে, তিনি মুসোলিনির কাছে হঠাৎ অস্ট্রিয়ার কথা জিজ্ঞেস করে বসলেন। মুসোলিনির কাছ থেকে উত্তর আসলো, "প্রকৃতিকে তার আপন গতিতে চলতে দাও।" সত্যই, এই মুসোলিনি, আর ১০ মাস আগের মুসোলিনির মাঝে অনেকটুকু তফাৎ। ১০ মাস আগের মুসোলিনি কখনো এই কথা বলতে পারতেন না।
জার্মানির ফুয়েরার এডলফ হিটলার ঠিক এই উত্তরটি শুনার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি জানতেন, অষ্ট্রিয়া দখল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
****
রেফারেন্সঃ ১] দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অফ দ্য থার্ড রাইখ, আলান শাইরার।
২] হিটলার, এ স্টাডি ইন টির্যানি। আল্যান বুলক।
৩] হিটলার'স ওয়ার অ্যান্ড দ্য ওয়ার পাথ। ডেভিড এরভিং।
***
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আমার লেখা দুটো সিরিজ আছে। পড়ে আসুন আমার ব্লগে। ধন্যবাদ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ।
আসলে এটা নতুন সিরিজ বিধায় আগের সিরিজের লেখাগুলো এখানে দিতে চাচ্ছিলাম না। সবগুলো লিঙ্ক এখানে দিতে গেলে পোস্টটি অনর্থক বড় হয়ে যাবে। উল্লেখ্য আমার পুরো ব্লগই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে। অতএব ব্লগে গিয়ে আপনার এত কষ্ট হওয়ার কথা না।
২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৮
মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: ভালো জিনিস...
পর্যবেক্ষণে রাখলাম...
শেষ পর্বটা শোকেসে রেখে দেবো...
৩য় ভালোলাগা (+) ...
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ মুনতাসির নাসিফ।
৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৫
ফয়সাল আহমেদ ইমন বলেছেন: প্রথমত, ১৮৯৬ টু ১৯৩৬ থেকে এত দ্রুত ২০১৪ তে নিয়ে আসলেন সে জন্যে মাইনাস.............................
আপনার ধারা বর্ণনা আসলেই মুগ্ধকর, দ্রুত অক্টোবর, ১৯৩৬ সাল থেকে পরিভ্রমন শুরু করেন....................
পরিশেষে পোস্টে+++++++++++++++++++++++++++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০২
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: আপনার কমেন্ট প্রথমে বুঝতে পারিনি। হা হা হা. পরে অবশ্য বুঝেছি। অনেক ধন্যবাদ। হুম পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১০
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
অনেকদিন পর লিখলেন ৷ আপনার আগের পোস্টগুলো প্রায় পড়া হয় ৷ ইতিহাসের মত কঠিন বিষয়কে প্রাঞ্জলভাষায় লিখেন ভাল লাগে ৷
অনেক অনেক ধন্যবাদ ৷ ভাল থাকবেন ৷
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩১
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: জী ভাই, অনেক পরে আজ আবার লিখছি। এবার থেকে নিয়মিত থাকার ইচ্ছা।
আমার সাথে থাকার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। লেখাগুলো আপনাদের কাছে প্রাঞ্জল লাগছে, এতেই আমার সার্থকতা।
৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৩
ফেরারী আউট-ল বলেছেন: চমৎকার!
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩১
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ ফেরারী আউট-ল।
৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পুরোটা শেষ করতে পারলাম না... কাল বাকীটুকু দেখতে হবে...
+++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০১
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: অবশ্যই। আসলে আপনার উচিত আমার একদম প্রথম পোস্ট থেকে পড়ে আসা। ধন্যবাদ।
৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৩
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৯
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৮
মহানাজমুল বলেছেন: ++
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৬
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৩
চা-ওয়ালা বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো। সময় স্বল্পতার কারণে আগের পোস্ট গুলো পড়তে পারছি না ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৬
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ব্যাপার না। সময় করে পড়ে নিবেন।
১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৭
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: কেমন আছেন? এতোদিন পর! লেখাটি পড়বো তার আগেই মন্তব্য করে গেলাম। ভালো থাকুন বন্ধু। সব সময়।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪২
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: জি ভাই, অনেক দিন পর। মাঝে মাঝে ব্লগে , বিশেষ করে আপনার সহ কয়েকজন প্রিয় ব্লগারের ব্লগে ঘুরে যেতাম অফলাইন থেকে। এখন নিয়মিত হবার ইচ্ছা আছে। আপনাকে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক। ধন্যবাদ।
১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪০
ইমরান আশফাক বলেছেন: প্রিয়তে ডিয়ে রাখলাম সময় নিয়ে পড়ার জন্যে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৩
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ওকে ভাই। ধন্যবাদ।
১২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১০
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
ব্যাপক পোস্ট ! মনোযোগ দিয়ে পুরো লেখাটি পড়লাম ! ++
অনেক কষ্ট করেছেন বিষয়টির জন্য ! ধন্যবাদ ।
সময় করে কিউবান গেরিলা যুদ্ধ নিয়ে আমার লেখা দু'টি পড়বেন !
পর্ব ১
পর্ব ২
ভালো থাকুন ।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৪
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: অবশ্যই পড়ব। আমার ইতিহাসের উপর যে কোনো লেখাই ভালো লাগে। আশা করি, আমার আগের সিরিজও পড়ে আসবেন। না হলে সব তথ্য বোধগম্য হওয়ার কথা না।
১৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০০
যমুনার চোরাবালি বলেছেন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ের খন্ড খন্ড ঘটনা বিভিন্ন সময়ে পড়েছি। পড়েছি দু'একটি উপন্যাসও। ''ওয়ার এন্ড পিস'' তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডিটেইল কখনোই পড়া হয়ে ওঠেনি। আপনার এি লিখাটি পুরোটা পড়েছি এবং খুবই মজা পেয়েছি। আস্তে ধিরে আরো পড়া যাবে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: হুম, আমার ডিটেইলস্ লেখারই ইচ্ছা। পড়েছেন, এই কারণে খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
১৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৯
দাম বলেছেন: দাম বলেছেন: পোষ্ট প্রিয়তে।
------------------------------------------------------------------------
যমুনার চোরাবালি বলেছেন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ের খন্ড খন্ড ঘটনা বিভিন্ন সময়ে পড়েছি। পড়েছি দু'একটি উপন্যাসও। ''ওয়ার এন্ড পিস'' তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডিটেইল কখনোই পড়া হয়ে ওঠেনি। আপনার এি লিখাটি পুরোটা পড়েছি এবং খুবই মজা পেয়েছি। আস্তে ধিরে আরো পড়া যাবে।
@ যমুনার চোরাবালি, ''ওয়ার এন্ড পিস'' প্রকাশিত হয়েছে ১৮৬৯ এ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: লিও টলস্টয়ের ওয়ার অ্যান্ড পিস আমার পড়া হয়নি। এ কারণে কাহিনীর বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতাম না।
কারেক্ট করিয়ে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
১৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
যমুনার চোরাবালি বলেছেন: @ দাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমি নিশ্চয় অন্য কোন উপন্যাসের সাথে ''ওয়ার এন্ড পিস'' কে গুলিয়ে ফেলেছি। হতে পারে লিখাটি ''সানফ্লাওয়ার'' বা অন্য কোন উপন্যাস। যুদ্ধের চরম ভয়াবহতা ও অসাধারণ প্রেমের এক উপন্যাস ছিলো সেটি। সম্ভবত ১০/১২ বছর আগে পড়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
১৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৩
ইয়ার শরীফ বলেছেন: স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধও যে এত ঘটনাবহুল তা আপনার কাছ থেকে জানলাম।
ইটালি মামারা সেই ১৮৯৬ এর মার খাওয়ার শোধ ১৯৩৬ এ এসে নিল! ভাবা জায়?
আর হিটলার আসলেই কিছু করিৎকর্মা লোকবল পেয়েছিল সব কিছু তার পরিকল্পনামাফিক করার জন্য।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২য় মহাযুদ্ধের ফল উল্টিয়ে গেল।
আপনার এই বিষয়ে লেখার আমি একজন গুণমুগ্ধ পাঠক।
ভালো থাকবেন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৭
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ইটালি তক্কে তক্কে ছিল কখন আক্রমণ করবে। কিন্তু মাঝখানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল বলে তারা কিছু করতে পারেনি।
ধন্যবাদ ভাই।
১৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩০
নীল বরফ বলেছেন: কতটা দিন পরে লিখলেন আপনি?!!! ফিরে এসেছেন বলে খুশি হলাম।
ভাল থাকুন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৪
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: হুম অনেক দিন পর। আপনাকে পাশে পেয়ে খুশি হলাম। ভালো থাকবেন।
১৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: হায় !! হায় !! কাকে দেখছি ব্লগে ?? আপনি আছেন তাহলে?? কোন খবর ছাড়া এত লম্বা সময় মানুষ ডুব দিয়ে থাকে ??
পোস্ট পড়ে এসে বাকিটা বলছি
১৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৫
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: যথারীতি চমৎকার পোস্ট হয়েছে। বর্ণনা অসাধারণ। ইউরোপ আর আফ্রিকার একটা ম্যাপ থাকলে আরো সুবিধা হত।
আশা করি নিয়মিত আপনার দারুণ পোস্টগুলো পেতে থাকব। শুভকামনা রইল।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। কেমন আছেন আপনি। আপনারা আছেন। অনেকেই আছেন। আপনাদের মিস করেছি অনেক। এই কারণে একদিন সময় করে ফিরে এলুম। আর তাছাড়া এভাবে সিরিজটি অসম্পূর্ণ রেখে চলে যেতে ইচ্ছে করছিল না।
লেখাটি ভালো লেগেছে জেনে অনেক ধন্যবাদ।
আমি ছবি আপলোড করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল। আচ্ছা ভাই আপনি কি আগের পদ্ধতিতেই ছবি আপলোড করেন? মানে ছবি আপলোড করুন অপশনে গিয়ে এরপর ছবি আপলোড করে দেন? নাকি সামু এরই মাঝে নতুন কোনো পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে?
প্লিজ একটু সাহায্য করবেন। কেননা ছবি না দিলে যুদ্ধের বর্ণনা গুলো আসলেই দেওয়া যাবে না। পাঠকদের বুঝতে অনেক কষ্ট হবে।
২০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১২
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন:
ভাইয়া, আমি জানি না আপনি নতুন বলতে কোন পদ্ধতির কথা বুঝাচ্ছেন তবে আমি যেভাবে পোস্টে ছবি দেই সেটা আপনাকে বলছি। প্রথমে "নতুন ব্লগ লিখুন" বা "এডিট পোস্ট" অংশে যেয়ে ক্যামেরা আইকনে ক্লিক করে উপরের ছবিতে দেয়া উইন্ডোটা নিয়ে আসি। এরপর "ফাইল থেকে ছবি সংযুক্ত করুন" অংশ সিলেক্ট করে, তারপর "ব্রাউজ" অপশনে গিয়ে কম্পিউটার থেকে ফাইল সিলেক্ট করে "আপলোড"এ ক্লিক করে আপ্লোড করে দেই (খেয়াল রাখতে হবে যে উপরের উইন্ডোর নিচে বাম দিকে থাকা "কপিরাইট সংক্রান্ত দ্বায় দায়িত্ব" অংশটিতে যেন টিকচিহ্ন দেয়া থাকে)। ছবি আপ্লোড হয়ে গেলে ঐ উইন্ডোর উপরে ডানদিকে "আপ্লোড কৃত ছবি" অংশে ক্লিক করে, আপ্লোড করা ছবিগুলো নিয়ে আসতে হবে। সেখান থেকে যে ছবিটি ইন্সার্ট করতে চান তা সিলেক্ট করে নিচে ডান দিকের "ইন্সার্ট" এ সিলেক্ট করলেই তা ইনসার্ট হয়ে যাবে।
মন্তব্যের ঘরে ছবি দিতে চাইলেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। কেননা মন্তব্যের ঘরে উইন্ডোটি পুরো দৃশ্যমান হয় না ফলে নিচে "কপিরাইট সংক্রান্ত" অংশটি সিলেক্ট করা যায় না। পরে কপি করে মন্তব্যের ঘরে পেস্ট করে দিলে পুরো ছবিটা চলে আসবে। যেভাবে আমি আপনার পোস্টে করলাম।
আশা করি এতে আপনার সমস্যার সমাধান হবে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৭
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আমি আগে অন্য পদ্ধতিতে আপলোড করতাম। এখন আপনার পদ্ধতিতেই করতে হবে। এই পর্বে ছবি না দিয়ে পার পেয়ে গেলেও, অন্যান্য অনেক পর্বে ছবি না দিলে সেগুলো পুরোপুরি মাঠে মারা যাবে। দেখি চেষ্টা করে।
২১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২০
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: Exceptional blog posts. Salute to u for the effort and hard works ...
২২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১০
সপ্নীল বলেছেন: অনেকদিন পর লগইন করলাম সামুতে। আপনার ব্লগ পরে মন্তব্য না করাটা আমার কাছে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। ঢুকেই আপনার লেখা খুজছিলাম, গত সেপ্টেম্বরের পোষ্টটা পেলাম। বরাবরের মতি অসাধারন, একটানেই শেষ করলাম। আপনি মনে হয় একটু ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন, আজকাল খুব অনিয়মিত আপনার লেখা পাচ্ছি। বুঝতে পারি এমন তথ্যবহুল একটি লেখার জন্য আপনার অনেক সময় দরকার তবুও এমন অসাধারন লেখার অপেক্ষায় থাকি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের এমন প্রানবন্ত আর তথ্যবহুল লেখা সামুতে আমার চোখে পড়েনি, অনেক কিছু জেনেছি আমি আপনার লেখা থেকে।
কেমন আছেন আপনি? আশা আর দোায়া করছি সব মিলিয়ে ভাল আছেন, ভাল থাকুন, নিরন্তর এই কামনা।
২৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: নতুন পোস্ট কই? অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
২৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৪৮
রাতুলবিডি৪ বলেছেন: চমৎকার, এত দিন কোথায় ছিলেন?
২৫| ১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ২:০৩
আমি তুমি আমরা বলেছেন: যথারীতি অসাধারন। এই পোস্টটা কিভাবে মিস করে গিয়েছিলাম-বুঝতে পারছি না।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
২৬| ২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:১৪
সক্রিয় বলেছেন: ভাই অনেক দিন পর লগ ইন করেই চমত্তকার লিখা পড় লাম
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য । অনেক কষ্ট করেছেন
আগের লেখাগুলো এখানে দিতে পারতেন ---
প্রিয়তে নিয়ে গেলাম