![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ব্যাপারে আজ থেকে কানাডার আদালতে বিচার শুরু হচ্ছে। মন্ট্রিলের ফেডা-রেল আদালতে আজ সেদেশের এসএনসি লাভালিনের দুই কর্মকর্তার বিচার শুরু হবে। বিচার চলবে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত। এসএনসি লাভালিনের দুর্নীতির মাধ্যমেই পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি বিশ্ববাসী জানতে পারেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসএনসি লাভালিনের বরখাস্ত হওয়া শীর্ষ দুই কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল ও রমেশ সাহার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ তদারকির কাজ পেতে তারা সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘুষ দেন। বিশ্বব্যাংকের কাছে এ অভিযোগ আসার পর তদন্ত শুরু করে বহুজাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটি। তদন্তে ঘুষ দেয়ার সত্যতার প্রমাণ মেলে। এরপর নানা অঘটনের পর বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে প্রতিশ্রুত ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার চুক্তি বাতিল করে।
পদ্মা সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ পেতে কানাডীয় কারিগরি প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিন মোট দরপত্র মূল্যের ১০ ভাগ ঘুষ দিয়ে কাজটি পেতে নানাভাবে তদবির করেছিল। আর এই ১০ ভাগ ঘুষের মধ্যে মন্ত্রী, সচিবসহ কাকে কত ভাগ দেয়া হবে সে বিষয়টি লিখে রাখা হয় লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ সাহার ডায়েরিতে।
বিশ্বব্যাংক ঘুষের অভিযোগের ব্যাপারে লিখিতভাবে কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে জানালে রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ লাভালিনের অফিসে অভিযান চালিয়ে ঘুষের অংক লেখা ওই ডায়েরিসহ তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু বিভাগের সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম, এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি জিয়াউল হক ও সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী ফেরদৌসকে ওই দেশের আদালতে তলব করার প্রক্রিয়া চলছে। রমেশ সাহার ডায়েরিতে এদের নাম থাকায় সশরীরে হাজির হতে তাদের প্রতি আদালত থেকে সমন জারি করা হতে পারে।
দুদক বলছে, কানাডা পুলিশের কাছে রক্ষিত ঘুষের তথ্যাদি হাতে পাওয়ার পর সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ বিচার কাজ পর্যবেক্ষণ, ঘুষের ডায়েরির অনুলিপি সংগ্রহ ও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলার আসামি হিসেবে লাভালিনের ওই তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই সদস্যের একটি টিম কানাডায় যাচ্ছে। এরা হলেন দুদকের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। এর মধ্যে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সরকারদলীয় সমর্থক আইনজীবী হিসেবে বেশ পরিচিত।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর পরামর্শক সংস্থা হিসেবে নিয়োগ পেতে এসএনসি লাভালিন টেন্ডারে অংশ নেয়। বাংলাদেশী মুদ্রায় মোট ৩৪৫ কোটি টাকার কাজ পায় লাভালিন। এর জন্য বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন লাভালিনের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল ও রমেশ সাহা। কাজ পেতে তারা সেতু ভবনে এসে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেন। বিষয়টি দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এবং ১৭ ডিসেম্বর দুদকের দায়ের করা মামলার এজাহারেও অভিযোগ আকারে বলা হয়েছে।
©somewhere in net ltd.