নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হোসেন মৌলুদ তেজো

লিখতে ভালোবাসি

হোসেন মৌলুদ তেজো › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাংসলোভী কুকুর এবং মজিদদের অন্নগ্রাস

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৬

বৈশাখ মাসের কড়া রোধ, মাঠ পুড়ে ছাই, গাছের ডালে ডালে সজীবতার আর্তনাদ। প্রচন্ড গরম আর মগজ উত্তপ্ত করা রোধে অতিষ্ট মানুষ, গরু, ছাগল, মহিষ, পাখি… এই ভর দুপুরে পুরো তেজ নিয়ে সূর্য মধ্য আকাশে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে স্বগর্বে। গাছের পাতায় অসহ্য নীরবতা দেখে মনে হয় প্রকৃতিতে যেন ধর্মঘট চলছে। এই দুপুরে সাধারণত সবাই চায় ঘরে থাকতে। এই রোদে বাইরে যাওয়ার বিলাসিতা কেউ করে না। কিন্তু আজ কেউ ঘরে নেই, পুরো গ্রাম জুড়েই হৈচৈ, চিৎকার, আনন্দ আর দৌড়াদৌড়ি। আজ চৌধুরী বাড়িতে যে সিন্নী… উৎসব। তিন গরুর সিন্নী এই গ্রামে শেষ করে হয়েছিলো কেউ বলতে পারে না। শহর থেকে বড়ো বড়ো লোক আসবে, গ্রামের ছেলে বুড়ো সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে শহরের মানুষ দেখার জন্য। এই গরুর গাড়ির রাস্তায় আজ ইঞ্জিনের গাড়ি আসবে। যারা এর আগে দু’একবার দেখেছে তাদের মুখে গাড়ির বর্ণনায় যারা দেখেনি তারা অবাক বিস্ময়ে শুনে আর ভাবে আজ স্বচক্ষে দেখবে। মাইকিং করে আশেপাশের গ্রামে দাওয়াত দেয়া হয়েছে তাই পিঁপড়ার মতো মানুষ আসতে শুরু করেছে। মিষ্টির দেখা পেলে পিঁপড়া যেমন দলবেঁধে আসে সে রকম। কেউবা এই রোদে পুড়েও মাঠের মধ্য দিয়ে, কেউবা আবার বাড়ির ভিতর দিয়ে একটু ঘুরে আসছে। আর সবার মতো মজিদও আজ সকাল সকাল গোছল করে যাকাতের লুঙ্গিটা পড়ে নেয়। একটু পড়ে বউয়ের উদ্দেশ্যে হাঁক ছাড়ে, “কি হইলো রে। মাইয়া দুইডারে কাপড় পড়াইছ।” “হ, পড়াইছিতো।” হাসতে হাসতে উত্তর দেয় মজিদের বউ। মজিদও হাসে, তৃপ্তির হাসি গরুর মাংস খাওয়ার হাসি। মজিদের বউ বলে, “দেখুম কেমন খাইতে পারো আইজ”। উত্তরে মজিদ তার বউকে বলে, “খামু কিরে তোর লাগিয়া নিয়া আমুনা!” মজিদের মেয়ে দুইটা খুশিতে লাফাতে থাকে। মজিদের হাত ধরে ওর মেয়েরা টানতে থাকে। মজিদ রওয়ানা দেয় চৌধুরী বাড়ির উদ্দেশ্যে… মজিদ ভাবতে থাকে ওর সামনে কলা পাতায় সাদা ভাত আর গরুর মাংস… সাদা সাদা ভাট, বকুল ফুলের মতো। মজিদ ভেবে পুলকিত হয়। ক্ষিদার মাত্রা বেড়ে গেলে সে তার মেয়েদের তাড়া করে। এই কাঠফাটা রোদে ওরা আর সবার মতো হাটতে থাকে তাদের মাথার ঘাম সরিসৃপের মতো নেমে আসে পায়ের দিকে ধীরে ধীরে। তাদের গায়ের কালো চামড়ায় ঝিলিক দিয়ে ওঠে রোদ তাদের এদিকে কোন খেয়ালই নেই। তারা দ্রুত পা বাড়ায় চৌধুরী বাড়ির দিকে। তাদের চোখে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়ার স্বপ্ন।

গ্রামের ভিতর দিয়ে তারা মাঠে এসে নামে, বিশাল মাঠ, মাথার উপর সূর্য রীতিমত হিংস্র রূপ ধারণ করেছে। মাঠ পেরিয়ে তারা চৌধুরী বাড়ির আশেপাশে চলে আসে। মাংসের ঘ্রাণে চারপাশ ভারী হয়ে আছে। আত্মতৃপ্তিতে কপালের ঘাম মুছে মজিদ ও অন্যান্যরা। সবাই এসে চৌধুরী বাড়ির সীমানায় দাঁড়ায় কারণ কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সবাই এই কড়া রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে একমুঠো ভাতের আশায়। লোকমুখে মজিদ শুনতে পারে শহর থেকে অনেক বড় বড় লোক আসবে তাদের খাওয়া শেষ হলে শুরু হবে বাকীদের কাঙালীভোজ। মজিদ তার দুই মেয়েকে নিয়ে মাঠের একপাশে বসে। মেয়ে দুটো প্রশ্ন করে, “কহন দিব বাবা?” মজিদ বলে “চুপ থাক!” আকাশের দিকে তাকিয়ে মানুষের সাথে সূর্যের এই আক্রোশটা বুঝে উঠতে পারে না মজিদ। সে ওভাবেই ঠায় বসে থাকে। কিছুক্ষণ পর দূরে দোঁয়া উঠতে দেখে সবাই চিৎকার করে ওঠে… শহরের গাড়ি আসছে। সবাই কিছুক্ষণের জন্য খাওয়ার কথা ভুলে শহরের ওই গাড়ি দেখার জন্য উৎসুক হয়ে উঠে। গাড়ি কাছাকাছি আসতেই সবাই রাস্তার দু’পাশ জুড়ে দাঁড়ায়। মজিদের মেয়ে দুটোও দৌড় দেয়। এতক্ষণে খোলে দেয়া হয় চৌধুরী বাড়ির বিশাল ফটক। চৌধুরী বেরিয়ে আসেন অতিথিদের স্বাগত জানাতে। গ্রামের এইসব হাড্ডিসার, অর্ধনগ্ন মানুষগুলো শহরের মানুষদের দেখে পুলকিত হয়। শহরের ফর্সা আর রিষ্টপুষ্ট মানুষরা হাসতে হাসতে চৌধুরী বাড়ির দিকে এগোয়… সর্বশেষ জন ভিতরে ঢুকার সাথে সাথে ফটক বন্ধ হয়ে যায়। আবার শুরু হয় মজিদদের অপেক্ষ্যার পালা। একটা চিল উড়ে আকাশে আর একটা কুকুর মাঠের একপশে বসে হাড্ডিতে লেগে থাকা মাংসের জন্য সংগ্রাম করতে থাকে। সময়ের সাথে সাথে মাংসের ঘ্রাণে বাতাস ভারী হতে থাকে। মজিদরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষ্যা করে তাদের খাবারের জন্য। বাড়ির ভিতরের ব্যাস্ততা, হাসাহাসি স্পর্শ করে যায় তাদের ঘামে ভেজা শরীর। মজিদ অস্থির হয়ে যেতে থাকে… ও বুঝতে পারে ক্ষিদায় ওর বাচ্চারা ছটফট করতে শুরু করেছে। মাথার উপরের কড়া রোদে মগজ যেন গলতে শুরু করেছে তবুও কারও চোখে মুখে বিরক্তি নেই সবাই যেন মাংস খাওয়ার কথা ভেবেই পুলকিত।

চৌধুরী সাহেব আজ খুব ব্যাস্ত, তার বাড়িতে অনেক বড় বড় মেহমান আজ তাদের ঠিকমত আপ্যায়ন যেন হয় সে দিকে তার কড়া নজর। লাল হলুদ কাপড় দিয়ে প্যান্ডেলে সবাই বসে আছেন। একপাশে বসে মিলাদ-মাহফিল, মানুষকে খাওয়ানোর ফজিলত বয়ান করছেন ইমাম সাহেব এবং চৌধুরী সাহেবের উদার মনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সবাই ইমাম সাহেবের বয়ান শুনে আর চৌধুরীর কথা ভাবে। একসময় শুরু হয় আহার বিতরণ… খাওয়া দাওয়া চলে পুরোদমে কারো যেন কোন কিছুর অভাব না হয় সেদিকে সবার কড়া নজর। খাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে চলে আলোচনা যার মধ্যমণি চৌধুরী সাহেব। তার উদারতায় সবাই মুগ্ধ। আর চৌধুরী সাহেবও আজ তার জীবনের সবচেয়ে ব্যাস্ত দিনটি কাটাচ্ছেন। খাওয়া-দাওয়া অতিথিয়েতায় তার কোন কার্পণ্য নেই।

তখনও ভিতরে খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে তার মজিদরা বাইরে অপেক্ষ্যারত ভাতের জন্য বকুল ফুলের মতো সাদা সাদা ভাত আর গরুর মাংসের জন্য। বৈশাখের এ রোদ তাদের ধৈর্য্যে একটুও বাধ সাধতে পারেনি। দেখে মনে হয় সহস্র বছরের সাধনার কাঙ্ক্ষিত কিছু নিতে এসেছে তারা, কোনভাবেই এতে ছাড় দিতে তারা অপ্রস্তুত। ইমাম সাহেবদের খাওয়া শেষ হলে চলে পান বিতরণের পালা। ইমাম সাহেব লম্বা দোয়া করেন, সবাই বুক ফাটিয়ে বলে “আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌”… যেন আজ তারা আল্লাহ্‌কে জমিনে নামিয়ে তার কাছে তারা নিজ হাতে চৌধুরী সাহেবকে তুলে দিতে চায়। শহরের সবার খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে শুরু হয় চৌধুরী বাড়ির কাছের-দুরের আত্মীয় স্বজনদের খাওয়া। চরম প্রশান্তির ঢেঁকুর তুলে তারা তাদের খাওয়া শেষ করে। তারপর শুরু হয় আশেপাশের গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পালা… গ্রামের মোড়ল, মেম্বার চেয়ারম্যান সবাই আজ চৌধুরী বাড়ির অতিথি। তাদের জন্য আলাদা করাই আছে সব শুধু বাইরের ওই অনাহার ক্লিষ্ট, জীর্ণসার মানুষের জন্য কোন কৌটা নেই। যাদের তিনবেলার খাবারের তালিকায় সবসময় মাংস থাকে তারাই আজকের প্রধান অতিথি কিন্তু যারা শেষ করে মাংস খেয়েছে বলতে পারবে না তারা এখন দাঁড়িয়ে থাকে মাঠে চৌধুরী বাড়ির ফটক খোলার অপেক্ষ্যায়। শকুনের মতো দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রাখে ফটকের দিকে… শুকুরের মতো মাংসের ঘ্রাণ খুঁজে বাতাসে। গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা খাওয়া শেষ হলে চৌধুরী বাড়ির ফটক খুলতে দেখা যায়। ফটক খুলতে দেখে বাইরের অপেক্ষমাণ মানুষ কাকের মতো এক সাথে ছুটে চৌধুরী বাড়ির দিকে কিন্তু ঢুকতে পারে না। আশেপাশে আসতেই দারোয়ান লাঠিপেটা করে অপেক্ষ্যা করতে বলে। মজিদের পায়ে খুব জোরে বাড়ি খায় সে। তারপর আবার মেয়ে দুটোকে নিয়ে মাঠের একপাশে বসে থাকে। চৌধুরী বাড়ির অতিথিরা পালা করে গাড়িতে চড়তে থাকে। ইঞ্জিনের ভোঁ ভোঁ শব্দে সবার খেয়াল ওই দিকে চলে যায়। সবাই অবাক বিস্ময়ে দেখে গাড়ির চলে যাওয়া। যতদূর পর্যন্ত গাড়ি দেখা যায় সবাই তাকিয়ে থাকে। ধূলো উড়িয়ে গাড়ি ছুটে শহরের এই পিচঢালা রাস্তার দিকে। আর চৌধুরী সাহেব তৃপ্তির একটা হাসি দিয়ে মাঠের যেদিকে মজিদরা বসে আছে সেদিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলেন, “ওই কি আছে, এদের বিদেয় কর”। এবার সবাই ব্যাস্ত হয়ে ওঠে কিন্তু কাউকেই বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না, সবাইকে মাঠে লাইন করে বসতে বলা হয়।

বেলা অনেক হলেও সূর্যের তেজ এখনও কমেনি তবে আপাতত এদের কারো সেদিকে খেয়াল নেই সবাই লাইন করে বসে পড়ে খাওয়ার জন্য। একটু পর বড়ো বড়ো ঝুড়িতে করে ভাত আসে। সবাই প্রস্তুত হয় ভাত খাওয়ার জন্য। মজিদ তার দুই মেয়েকে তার দুই পাশে বসায়। তাদের পাতে দেয়ার সাথে সাথেই মেয়ে দুটো ব্যাস্ত হয়ে ওঠে। এই প্রচন্ড গরমে এদের মাথা হতে ঘাম গড়িয়ে শুকনো মাটিতে পড়ে। মাটিও নিমিষেই শুষে নেয় সেই একফোঁটা ঘাম মনে হয় যেন, মাটিও এদের মতো বসে আছে একফোঁটা ঘামের আশায়। মজিদ পাশে মৃদু গুঞ্জন শুনতে পায় যে, মাংস নাকি ফুরিয়ে গেছে কিন্তু মজিদ বিশ্বাস করতে পারে না কারণ তিন গরুর মাংস এতো তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ার কথা না। একটু পরে মজিদ তরকারি দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। সবার পাতে দুই টুকরা আলু আর একটু ঝোল ছাড়া আর কিছুই নেই। মজিদের এক মেয়ে প্রশ্ন করে, “ও বাবা কইলা মাংস, মাংস কই?” মজিদ কোন উত্তর দিতে পারে না শুধু মেয়ের দিকে একবার আর পাতের দিকে একবার তাকায়। মজিদ লক্ষ্য করে মেয়ে মাংস চাইলেও এখন আর তার মাংসের দিকে খেয়াল নেই। তার মেয়েদুটো গোগ্রাসে গিলতে থাকে ঝোল মাখানো ভাত, মনে হয় যেন বাতাসে মিশে থাকা মাংসের ঘ্রাণ দিয়েই সবাই ভাত খাচ্ছে। মজিদ খেতে পারে না শুধু নাড়াচাড়া করে, সে জানে তার বউ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে মাংসের জন্য সে বলে এসেছিল আসার সময় নিয়ে আসবে। মজিদ দেখে সবাই খাচ্ছে যেন এটা সবাই জানতো কিন্তু মজিদ পারে না, সে ওভাবেই বসে থাকে। ঝোল মাখানো ভাত কলাপাতায় প্যাচিয়ে সে বাড়ি আসে। কলাপাতায় মোড়ানো ভাত বউ হাতে তুলে দিয়ে ধপাস করে বসে পড়ে মাটিতে কিন্তু তার বউয়ের এদিকে খেয়াল নেই সে মাংসের আশায় কলাপাতা মোড়ানো ভাত নাড়তে থাকে এবং সবিস্ময়ে বলে, “কই মাংস কইগো?” মজিদ ধমক দিয়ে বলে, “চুপ থাক, ভাত জুটে না কপালে আবার মাংস!” মজিদের বউ বুঝতে পেরে কিছু বলে না। শুধু একমুঠো দীর্ঘশ্বাস বাতাসে ছেড়ে বলে, “হায়রে কপাল” মজিদ সারাদিনের ক্লান্তি অনুভব করতে থাকে। এতক্ষণ তার মনেই ছিলো না যে, রোদে পুড়ে খাওয়ার অপেক্ষ্যা করছিল। মজিদের বউ এসে ওকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি খাইছো? মজিদ ওর বউয়ের দিকে তাকায় আর এক ফোটা জল গড়িয়ে মাটিতে পড়ে কিন্তু মজিদের বউ বোঝতে পারে না এটা কি ঘাম না চোখের জল। মজিদ কোন কথা না বাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় তার ছয় জোড়া চোখ শূন্য দৃষ্টি দিয়ে মজিদের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে আর সারাদিনের তীর্থ যাত্রায় কথা স্মরণ করে অবুঝ দু’জোড়া চোখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে মাংসের ফেলে আসা ঘ্রাণে।

আজ গ্রামের হাট। কালকের চৌধুরী বাড়ির খাওয়ার আলোচনা থেমে নেই বোঝা যায়। সবার মুখে ওই একই কথা, একই কাহিনী। চৌধুরী সাহেবের জান্নাত প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, তার উদারতা, তার পূর্বপুরুষদের মানুষ খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা, তার আভিজাত্যের অহংকার, ক্ষমতার পরিধি ইত্যাদি। কেউ কেউ আবার ইমাম সাহেদের উদ্বৃতি দিয়ে তাকে জান্নাতের ঠিকানা লিখে দিচ্ছেন। মজিদ চা খাওয়ার জন্য একটা দোকানে ঢুকে, সেখানে গ্রামের ইমাম, মোড়ল আরো কয়েকজন বসে গল্পে মগ্ন। বিষয় ওই একটাই চৌধুরীর উদারতা। মজিদ নিচে বসে সবার কথা শুনে আর ভাবে তার মেয়ে দু’টোর মাংস খাওয়ার আকুতির কথা, তার চোখে ভেসে ওঠে কুকুরের হাড্ডি থেকে মাংস ছেড়ার দৃশ্য। সবাই চৌধুরীর প্রশংসা করতে থাকেন। হঠাৎ একজন বলে ওঠেন ‘কিরে মজিদ গেছিলি চৌধুরী গো বাড়ি, কেমন খাইলি?” মজিদ যেন সম্বতি ফিরে পায়, সে গলা নিচু করে বলে, “হ, গেছিলাম, খুব ভালো খাইছি, চৌধুরী সাহেব আসলেই মহান, তার মনটা বিশাল, একেবারে আসমানের লাহান”। চৌধুরী সাহেবের ছোট ভাই তখন গর্বের হাসি দিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেয় আর মজিদ লুঙ্গি দিয়ে চোখ মুছে। তখন সবাই বলে এটা মজিদের আনন্দের কান্না, পেট ভরে খেতে পারার কান্না। ইমাম সাহেব তখন বলেন, যে কাল হাসরের ময়দানে কঠিন সময়ে মজিদের এই চোখের জলই চৌধুরীর সাহেদের জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে সাক্ষী দিয়ে তার জান্নাতের দরজা খোলে দিবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা থাকল ।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প।
ইমাম সাহেবেরা এরকমই হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.