![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সন্ধ্যার পর যখন নিকষ কালো আধারে হিমেল বাতাস বহা শুরু হইয়ে গিয়াছে তখন বন্ধু মহলে ওরে আজ সিনেমা দেখিব , ওরে আজ সিনেমা দেখিব বলিয়া রব উঠিল চারিদিকে । মহামান্য বড় ভাই শুভর নিদের্শে এবং নির্ঝরের ল্যাপটপের উছিলায় আজ সিনেমা দেখা হইবে ।দর্শক সংখ্যা চার ।স্থান (বলা যাইবে না উপর থেকে নিষেধ আছে ,এটুকু বলা যায় যে বাড়ির ছাদ ছিল ওইটা )
ঘটনার শুরুর দিকের ঘটনা বড়ই মর্মান্তিক । আমি দেখিবো G.I.JOE , শুভ ভায়া দেখিবে রোমান্টিক_ছায়াছবি ,ছোট ভায়া সজীব দেখিবে ভূতুরে সিনেমা আর নির্ঝর দেখিবে আমরা যা দেখিব তাই । চার দর্শক চার দিকে গিয়ে বড়ই গোলযোগ বাঁধিল ! এদিকে নির্ঝর বড়ই ভাল ছেলে । ছোটদের জন্য তার মন অহরহই নীরবে কাঁদিয়া ওঠে । প্রায়ই সকালে তার বাসায় গেলে দেখা যায় তার বিছানা-বালিশ ভেজা ! আজও তাই হইল । সে ছোটদের প্রতি সম্মান দেখাইয়া সমাধান টানিল যে ছোট ভাই-য়া সজীব বলিয়াছে ভূতরে সিনেমা দেখিবে অতএব এই-টাই চলিবে । যুক্তি হিসেবে অন্ধকার কালো আকাশের দিকে আঙ্গুল উচিয়া বলিল আহা ভূতের সিনমো দেখিবার খাসা পরিবেশ । এটা বলিয়া তার VLC Media Player এ সিনেমা বসাইলো ।
শুরু হবার সাথে সাথে যা হবার তাই হইল । ঈদে কে কি কিনিলাম , কিনে আনার পর কার প্যান্ট চিপা হইছে কিন্তু দোকানদার ফেরত নেয় না , কে কোথায় ঈদ করিবে , গার্ল ফ্রেন্ডরা কোথায় ঈদ করিবে , এই কথাগুলো চৌধুরী জাফরউল্লা শারাফাত বলিলে কেমন শোনাইত আর কত শত কথা শুরু হইল আমাদের মাঝে তাহার ইয়ত্তা নাই । এদিকে সিনেমার ভেতরের নায়ক নাইকারা যে কখন কই থেকে একটা বই পেয়েছে আর সেইখান থেকে একটার পর একটা ভূত বের হচ্ছে আমরা খেয়াল ঠাওর করিতে পারি নাই । ভূত আসায় আমাদের মজলিস ভাঙ্গিয়া গেল । আমরা এক যোগে ভূতের কান্ড কারখানা দেখিতে লাগিলাম । ভূত বলিয়া ভূত, সেকি এক ভূতরে বাবা , লতানো এক গাছের ডাল দিয়া পেঁচিয়া এক মেয়ের প্রায় মারিবার দশা । এরই এক ফাঁকে মেয়েটার পায়ের কাপড় তুলিয়া দুই পায়ের ফাঁক গলাইয়া একটা দুষ্টু ডাল মেয়েটার .... (18+ বাকিটুকু বলা যাইবে না ,সিনেমা দ্রষ্টব্য ) । ইহা দেখিয়া ছোট ভাই সজীব ক্ষণে ক্ষণে শিহরিয়া উঠিল । সে থাকিতে না পারিয়া বড় ভাই শুভকে বলিয়াই ফেলিল , ভায়া , সিনেমার এই স্থানে মেয়ে না হইয়া যদি পুরুষ হইত তবে এই ডাল খানা পুরুষের কোন দিক দিয়া ঢুকিতো ? সৃজনশীল আইসা পুলাপানের মাথাও সৃজনশীল হইয়া গিয়াছে ।কত কিছু ভাবে তারা ! শুভ ভায়া কিছু বলিল না । সজীব তাহার দিকে অনেকক্ষণ চাহিয়া আছে দেখিয়া মেঘ স্বরে বলিল , সিনেমা দেখ । আমি উদাস ভাব নিয়া আকাশের দিকে চাহিলাম যেন সজীব ঘুরিয়া আমাকে আবার এই প্রশ্ন না করিয়া বসে । এই প্রশ্ন করিয়া বসিলে বড়ই বিপাকে পড়িব । উদাস ভাব মারিয়া কাজ হইল সজীব আর কোন অনর্থ না ঘটাইয়া সিনেমায় মন দিল ।আমিও দিলাম ।
সিনেমায় একের পর এক মানুষ ভূত হইয়া যাইতেছে । একখানা বইয়ে তাহাদের পুরো ফিউচার কে কিভাবে ভূত হইয়া খেল দেখাইবে তাহা ছবি সহ হাতে-কলমে প্রিন্ট করা । আমার কাছে সোনামনিদের অ আ ক খ শেখার পুস্তক থাকিয়াও এই পুস্তকখানা কে সোজা লাগিল । কি চমৎকার চমৎকার ছবি আঁকা । এক নিঃশ্বাসেই পড়ে ফেলতে মন চাওয়ার কথা । কিন্তু পরিচালক মশাই কাউকেই বই খানা পুরোটা পড়িতে দিলেন না । নিরক্ষর করিয়া রাখিলেন । কোন এক মনীষি বলিয়া গিয়াছেন যে নিরক্ষর মানুষই প্রকৃত অন্ধ মানুষ । হাতে হাতেই তা ফলিতে লাগিল । ভূত নাকের ডগায় ঘুরিয়া বেড়ায় কিন্তু নিরক্ষর অন্ধ নায়ক নায়িকা তাহা দেখিতে পাইল না । আমিও মনে মনে একচোট গালি দিলাম পড়াশুনা বাদ দিয়া নায়ক নায়িকার লীলা করিতে কে বলিয়াছে তোমাদের ? ভূত এক এক জনকে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে বাথরুম নিয়ে যায় তারপর মারে । কোন এক বিশেষ কারণে ভূতের বাথরুম খানা বড়ই পছন্দ ।
এভাবে চলছে । সিনেমায় দুইজন বাদে সবাই ভূত হইয়া স্ব স্ব কেরামতি দেখাইতেছে । সব ভূত মিলিয়া ওই দুইজনকে মামদো ভূত বানানোর বদ পায়তারা করিতেছে ।এমন টান টান সময়ে আমি ঘাড় ঘুরিয়া অবাক খাইয়া দেখিলাম নির্ঝর ছাদের একপাশে শুইয়া আকাশের তারা নীরবে অবলোকন করিতেছে ।কখন উঠিয়া গিয়াছে খেয়াল করি নাই । হঠাৎ দরাজ গলায় গান ধরিয়া বসিলো সে,
আমার ভীনদেশী এক তারা
একা রাতেরি আকাশে.....
আমি বুঝিলাম এক বছর আগের ছ্যাকানুভূতি তাহার হৃদয়ে আবার চাগার দিয়া উঠিয়াছে ।তাহাকে ডাকাডাকিতে কাজ নাই ।কাদুক না হয় একটু ! আমি ভূত দেখি । কিন্তু কিসের কি ! শুভ ভায়া হঠাৎ বাঁকিয়া বসিল । তিনি এই অখাদ্য ভূত দেখিয়া মজা পাইতেছেন না । তাহার রোমান্টিক মুভি দরকার । নির্ঝর উঠিয়া আসিয়া এত দুঃখেই কিনা জানিনা শুভর সাথে হাত মিলাইয়া বসিল । আমরা, আমি আর সজীব গো ধরিলাম ভূতের শেষ দেখিয়া ছাড়িব ওদিকে শুভ আর নির্ঝর রোমান্টিক জিনিস পাতি দেখিয়াই ছাড়িবে । রোজা-রমজান মাস এইসব দেখা ঠিক না , আর অল্প একটু বাকি আছে , আমি রিভিউ লেখিব তাই শেষ দেখিয়াই উঠিতে হইবে আর কত কি বলিয়া বলিয়া শেষে বাকিটুকু দেখাইতে সম্মত হইল । কিন্তু তাহারা আমাদের সাথে যোগ না দিয়া নিজেরা নিজেরা সাংসারিক আলাপে মত্য হইয়া সাইডে গেল ।
সিনেমা চলিতেছে । সিনেমার শেষ অংশে আসিয়া বিধ্বস্ত নায়ক নায়িকার ভূত ছাড়াইতে ভূত-পূর্ব-নায়িকার স্তনে (স্থান বুঝাইতে এটা বলিতেই হইল আমার কুনও দোষ নাই কিন্তু ) ১০১% সহি বৈজ্ঞানীক পন্থা অবলম্বনের সহিত ডাবল সিরিন্জ ঢুকাইয়া দিল । কিন্তু কিছুই হইল না । আমি মনে মনে তাকে বলিলাম একবার না পরিলে দেখো শতবার । নায়ক আমার কথা শুনল । দানের দান তিন দান । তিন বার ট্রাইয়ের পর নায়িকার কোন সাড়া শব্দ না পাইয়া প্রায় ছাড়িয়া যাইতেই চাহিয়াছিল । আমি মনিটরে নায়কের দিকে চাহিয়া একটা মাথা নেড়ে বুঝালাম একবার পেছনে ঘুরত বাবা । নায়ক আমার ইশারা বুঝল । পেছনে ঘুরেই দেখে নায়িকার ভূত ছেড়ে পুরো মেকাপ-টেকাপ নিয়ে দাঁড়াইয়া আছে । তাহাদের মিলন হইল । কিন্তু তাহাদের মিলন দেখিবার পরেও আমার কপালে ভাজ পড়িয়া গেল । আমি আবার ভয় পাইলা গেলাম যে শুভ ভায়া তো পাশে নাই ! এহেন দৃশ্য দেখিয়া যদি ছোট ভাই সজীবের আবার সৃজনশীলতা জাগিয়া উঠে, আমাকে প্রশ্ন করিয়া বসে যে ছেলেদের তো স্তন নাই বললেই চলে ,তবে ছেলেদের ভূত ছাড়াইতে সিরিন্জটা কোথায় ঢুকাইতো ? আমি কি বলিব তখন !!! ভূতের চেয়েও সজীবের প্রশ্নের ভয়ে আমি বেশি কাঁপিতে লাগিলাম । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সজীব কিছু বলিল না ।
সিনেমা চলিল-নায়ক নায়িকাকে বাঁচাতে পুড়িয়া রোস্ট হইয়া ইহকাল ত্যাগ করিলো । একসময় আমি "ভুত থেকে সরাসরি মেকআপসহ নায়িকা" আর "মেইন ভূত"টার কাটাকাটি দেখিতে মন দিলাম । দেখার মত জিনিস । যে যাকে বেশি কাটিতে পারিবে সেই জিতিবে । এতক্ষণ ভূত অনেক পাওয়ার দেখাইলেও নায়িকার সামনে কেমন দুর্বল হইয়া গেল । ভূত কাটাকাটি খেলায় মন দিল । একসময় না পারিয়া নায়িকা তার বাম হাত খানা টানিয়া ছিড়িয়া ফেলিল (124hour নামের সিনামার পুলাটার ডান হাত কাটার কথা মনে করাই দিছে বেটি ),ভূতের দুই পা ঘ্যাচাং করিয়া কাটিয়া যাইতে দেখিলাম । এক সময় নায়িকা আপু এক হাত দিয়েই ভূতকে সমান দুই টুকরা করে ফেলল । নায়িকা বলে কথা । মানুষের হাতে এহেন অপদস্ত হওয়ার ভুতটা লজ্জা ,মান-অভিমান দেখিয়ে মাটির সাথে মিশিয়া গেল ( বিশ্বাস না হইলে ফিলিম দেখেন ) ।আহা ভূতেদের মান সম্মান বোধ দেখিয়া আমি বিমূগ্ধ হইয়া গেলাম । ছবি শেষ হতেই ছোট ভাই সজীব বলিল "ফাউল ছবি " ,শুভ ভায়া জিজ্ঞাসিলো "ছবি শেষ ?" , নির্ঝর দূরে থাকিয়া বলিল "দেখত ল্যাপটপে চার্জ আছে কিনা ।" .আমি নিজেকে বলিলাম "রাত ১০টা বাজে বাড়ির দরজা কি খুলিবে আজ আমার জন্য !?"
০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫২
পলাশের লাল রঙ বলেছেন: ভয় লাগার কথা বাদ দিয়া দেইখা ফ্যালেন । ধইন্যা পাতা ।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭
কেএসরথি বলেছেন: ৩য় শ্রেনীর মূভি। একবার দেখা যায়, ওতেই শেষ!
০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫
পলাশের লাল রঙ বলেছেন: ভাই আপনার এইসব ৩য় শ্রেনীর মূভি না দেখাই ভাল ।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: দেখা দরকার........
০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬
পলাশের লাল রঙ বলেছেন: কেএসরথি বলেছেন: ৩য় শ্রেনীর মূভি। দেখা আপনার উপর ।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:১৯
রহমান জর্জ বলেছেন: সাধারণ একটা বিষয়কে এত কুড়কুড়ে মুড়মুড়ে অবস্থায় পরিবেশন করার যোগ্যতা সবার থাকেনা। অসাধারণ পারফরমেন্স। বেশি বেশি ছিনেমা দেখেন। আপনার কাছ থেকে এডাল্ট মুভির ধারাভাষ্য প্রত্যাশা করছি। আশা করি সেইরাম হবে। আসে আসে দিন এ পাবলিশ হবে।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮
পলাশের লাল রঙ বলেছেন: অনেক অনেক ধইন্যা । চেষ্টা চালায় যাব ভাই ।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৪
আরিফ আরাফাত রুশো বলেছেন: ায়ক নাইকা কাকে বলেন। ওরা তো ভাই বোন ছিল।সাবটাইটেল ছাড়া দেখেচেন অথবা প্রথম পার্ট (ভুত আসার আগে) এটেনশন দেন নাই তাই ধরতে পারেন নাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:০৯
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
মুভিটার টরেন্ট ফাইল নামানো আসে, দেখতে ভয় লাগে তাই আর ডাউনলোড করা হয়নাই।
রিভিউ মচমচে হৈসে ||