![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Function of journalism INFORMATION ,
আমরা তথ্যের সাগরে ডুবে আছি। প্রতিনিয়ত দশদিকের দশটা তথ্য আমাদের সামনে আসছে যাচ্ছে। কোনটা আমরা গ্রহণ করছি কোনটা এড়িয়ে যাচ্ছি। যেগুলো গ্রহণ করছি সেগুলোর মাঝে ফিল্টার করে দরকারিগুলো মনে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটা যে শুধু আমাদের কাছে আসছে তা না আমরাও চাই তথ্য আমাদের কাছে আসুক। তথ্যের জন্য আমরা জীবনের অর্ধেক সময় ব্যয় করে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। আমাদের সার্টিফিকেটগুলো আমরা কতটুকু তথ্যগ্রহণ করতে পেরেছি তার পরিমাপক হিসেবে কাজ করে।
আমাদের গুরুজনরা বলে প্রচুর বই পড়তে। কারণ একটাই আমাদের মাঝে তথ্যের ভান্ডার বাড়বে।
আমরা একে অপরের সাথে তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমেই যোগাযোগ করি। অর্থাৎ আমরা যদি কোন ভাবে তথ্য আদানপ্রদান বন্ধ করি আমরা বিকলাঙ্গ বা মৃত হিসেবে পরিগণিত হয়ে যাই। তথ্যই আমাদের প্রাণ।
মানুষ একা বাস করতে পারবে না কারণ একা একা তথ্য আদানপ্রদান হয় না। তথ্যই মানুষের মনন তৈরি করে।
যার কাছে যত তথ্য আছে তাকে আমরা তত সমাদর করি। বিপদে তার কাছেই ছুটে যাই। তাকে মনে রাখি। তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করি।
আমাদের টিভি, রেডিও, নিউজ পেপার, ফোন ইন্টার্নেট সব তথ্য আদান প্রদানের কাজে লাগে। টিভি, রেডিও, নিউজ পেপার আমাদের কাজের তথ্যের চেয়ে অকাজের তথ্য বেশি দেয়। ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করে। টিভি, রেডিও, নিউজ পেপারের বিজ্ঞাপনে আমরা যেসব তথ্য পাই তা আমাদের কৃত্রিম চাহিদার সৃষ্টি করে। যেমন -
সালমান খান "ডার কে আগে জিত হে" বলে যে পানীয়র অ্যাড দেখায় তাতে আমরা যা যা তথ্য পাই-
একজন মানুষ কিছু খাচ্ছে,
খাবার কারণে তার সাহস বাড়ছে
সাহসের কারণে সে সফল হচ্ছে
কিন্তু এটা দেখার পর আমাদের আবেগ এই তথ্যকে গুলিয়ে ফেলে যা দেখায় -
সালমান খাননননননননননন!
সর্বনাস প্যারাসুটে!!!!
"ডারকে আগে জিত হে"
এখানে আমাদের অবচেতন মন পানীয়র নাম মুখস্থ করে আমাদের তথ্য ভান্ডারে জমা রাখে। দোকানে গেলে আমাদের তথ্য ভান্ডার আমাদের ওই পানীয়টা নিতেই প্ররোচিত করে।
এখানে প্রথমত সালমান খান কে? একজন মানুষ। কিন্তু মিডিয়ার কারসাজিতে তাকে সুপার হিউম্যান হিসেবে আমাদের তথ্য দেয়। তার তৈরি ট্রেডিশনে আমাদের প্রভবিত করে। আমরা তার জামা কাপড় ব্রেসলেট থেকে শুরু করে তার পানীয় পর্যন্ত মনে রাখছি।
দ্বিতীয়ত পানীয়র শুধু গুণগুলোর তথ্য পাচ্ছি।
এমনি ভাবে RFL কোম্পানিকে খুব কম মানুষি চিনত। বিজ্ঞাপনের প্রসারে এখন সবাই একে চেনে।
একটা সিনেমা যখন শুরু হয় তখন থেকেই আমাদের কিছু তথ্য দিতে শুরু করে। আমরা তথ্য গ্রহণের পর যখন বিচার করি তখন আমাদের মাথায় যা আসে-
নায়ক টা গরীব!আহারে!
নায়িকাটা কি সুন্দর!
নায়িকার বাপ একটা চামার! নায়কটা এত ভাল অথচ টাকার কাছে মেয়েকে বিক্রি করার ধান্দায় আছে।
মিশা সওদাগর কি নিষ্ঠুর, নায়ক কিভাবে একে শায়েস্তা করবে?
আমাদের হাতে কিছু তথ্য আছে। কিন্তু পরিপূর্ণ তথ্য নেই যে কি হবে শেষে।
এখানে কথা হচ্ছে নায়ক, নায়িকা, বাবা মা এসব একটা সিনেমায় আমাদের যা যা তথ্য দিচ্ছে সবই কৃত্রিম। কেউ ই বাস্তবে নেই বা বাস্তবে ঘটছে না। অথচ আমাদের মাঝে বাকি তথ্যটুকু পাবার ক্ষুধা জেগেছে। এবং আমরা সিনেমার শেষ পর্যন্ত দেখে যাচ্ছি।
এখান থেকে আমি এটাই বুঝাতে চাচ্ছি আমাদের জীবনে তথ্যের প্রয়োজনীয়তা কতটা। আমাদের যেমন খাদ্য গ্রহণ করে পেটকে বাঁচাতে হয়, তেমনি তথ্য গ্রহণ করে নিজের মনকে বাঁচাতে হয়। যার কাছে তথ্য নেই বা আদানপ্রদানের ক্ষমতা নেই সে আমাদের কাছে মৃত। বর্তমানে আমেরিকা সারাবিশ্বের উপর নিজের কতৃত্ব খাটাতে পারছে কারণ তার কাছে সারা বিশ্বের প্রায় সকল কিছুর তথ্য আছে। কেউ এগুলোও তারা তথ্য পায়, কেউ পিছিয়ে গেলেও তারা তথ্য পায়। সে অনুযায়ী কাজও হাতে নেয়।
সবশেষে সাংবাদিকের কাজ হল এই তথ্য বেচে উপার্জন। অনেকটা হোটেলে খাদ্য পরিবেশনের মত। খাবার নিম্নমানের বা বিস্বাদ হলে হোটেলের যত চাকচিক্যথাকুক না কেন সেই হোটেলে কেউ আসবে না। তেমনি তথ্য ত্রুটিপূর্ণ বা মিথ্যা হলে সেই তথ্যও বাজারে চলবে না। তাই তথ্যের উপর গুরুত্ব দেয়া উচিৎ সবার আগে। লেখক- মোজাহিদুল ইসলাম Student Journalism and media studies dept. Stamford University Bangladesh
©somewhere in net ltd.