![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের দেশে মানব মানবীর যে প্রণয়ের সম্পর্কগুলো হয় তার শুরুটা হয় 'ভালবাসি' বলা দিয়ে এবং সাধারণত এই শুরুর অংশটিকে প্রোপজ হিসেবে ধরা হয়। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই "ভালবাসি" বলাই প্রোপজ হয়ে যায় না। সেখানে প্রোপজে আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে। বিয়ে করার মনস্থির করলে ছেলেটি একটি আংটি মেয়েটির সামনে রেখে হাটু গেড়ে “will you marry me?” বলে বিয়ের সম্মতি চায়। এটাই মূলত তাদের প্রোপজ।
তাই সহজ ভাবে ধরলে ইউরোপ অামেরিকানদের প্রোপজ আর বাংলাদেশিদের প্রোপজ এক না। তবে মজার ব্যাপার হল একে বারে যে ভিন্ন তাও নয়।
ইউরোপ অ্যামেরিকান জুটিগুলো রিলেশন করে ঠিকই কিন্তু তারা যে বিয়ে করবেই এমন কোন কিছু ভাবে না প্রথমে।
বাংলাদেশে যারা রিলেশন করে বেশিভাগই মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এই সঙ্গীর সাথেই তাদের বিয়ে হবে। তাই রিলেশনে জড়ানোর প্রথম দিন যখন একজন আরেকজনকে 'ভালবাসি' বলে সেটাকে একরকম বিয়ের চুক্তি হিসেবে দেখা হয়।
কিন্তু এই অল্প দেখাতে ভালো লাগার মাধ্যমে বিয়ের সিদ্ধান্তের প্রাথমিক ধাপে চলে যাওয়া যে কোন মতেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয় তা তারা বুঝতে চায় না। বাকি জীবনটুকু একসাথে থাকতে হলে নিজেদের মধ্যে জানা শোনা থাকা খুবই দরকার।
এখানে ইউরোপ আমেরিকার এই দিকটা ভাল এবং যুক্তিযুক্ত যে রিলেশন মানেই বিয়ে না, বাকি জীবন একসাথে থাকা না। রিলেশনের মাঝে তারা একজন আরেকজনের কাছে আসে, একজন আরেকজনকে অনেক সময় নিয়ে বোঝে, ঘন্টার পর ঘন্টা একে অপরের সাথে সময় কাটায়, অনেক সময় পায় তারা তাদের সম্পর্ক নিয়ে ভাবার।
বেশির ভাগ সময় বাংলাদেশের ছেলেরা ১৭/১৮ বছর বয়সের উঠতি মেয়েদের রূপ-যৌবন-কথার মোহে পড়ে 'ক্রাশ' খেয়ে ফেলে। রিলেশন হয়ে গেলে মেয়েটাকে নিয়ে মানিয়ে চলার চেষ্টা করে। মানিয়ে চলা এত সোজা হয় না। অনেকসময় মানিয়ে চলার মাঝেই ঝগড়া বিবাদসহ বিভিন্ন কারণে ডিপ্রেশনে ভুগতে হয় তাদের। সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় থাকে অনেক ছেলে।
এদিকে মেয়েদের অবস্থা আরও করুণ কারণ তারা হুট করে প্রোপজ পায়। প্রোপজ কোন মুহূর্তে আসবে জানে না। প্রোপজ পাবার পর অনেক ভেবে চিন্তে রাজি হয়। এখানে তারা সাধারণ যা যা মাথায় রাখে-
ছেলেটা ফিউচার কি? ছেলেটার উচ্চতা কত, হ্যান্ডসাম কতটুকু,তার অতীতের কি অবস্থা? ছেলেটার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন? তার সাথে ছেলেটার যায় কিনা? সমাজ মেনে নিবে কিনা? বাবা মা কি মেনে নেবে? বন্ধু, ভাই বোনদের সামনে ছোট হতে হবে নাতো। এমন আরও অনেক কিছু আছে যা অল্পসময়ের মাঝেই সমাধান করতে হয় মেয়েদেরকে। কিন্তু জীবনের অনেকটা পথ পাড়ি দেয়ার জন্যে এতো বড় বড় সিদ্ধান্ত গুলোর ক্ষেত্রে যে অনেক সময় নিয়ে ভাবা দরকার, ছেলেটার সাথে মেশা দরকার তার জন্যে খুব ভালো যথেষ্ঠ সময়, সুযোগ,পরিবেশ কোনটাই পাবার সুযোগ থাকে না।এদিকে বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায়, জীবন পরিস্থিতি দিয়ে চলে, অংকের ফলাফলের মত সবসময় একই থাকে না। তাই অনেক ভেবে চিন্তে নেয়া সিদ্ধান্তও কখনও ভুল সিদ্ধান্তে পরিণত হয়।
ব্রেকআপ বাংলাদেশের মত ইউরোপ আমেরিকাতেও হয়। কিন্তু ইউরোপ আমেরিকানদের রিলেশনে কমিটমেন্ট খুব একটা থাকে না। যা থাকে তা হল ভালবাসা এবং বিশ্বাস।
কিন্তু বাংলাদেশে ব্রেকআপগুলোতে ভালবাসা এবং বিশ্বাসের সাথে সাথে অনেক স্বপ্নেরও কবর দিতে হয়। স্বপ্নগুলো- যেমন তারা বিয়ের পর কি কি করবে তার প্লান, ছেলে মেয়ের কি নাম রাখবে, ফ্যামিলিতে কিভাবে কিভাবে মানিয়ে নেবে, এক বাসায় থাকবে নাকি আলাদা বাসায় থাকবে এসব।
এতসব স্বপ্ন এবং স্বপ্নকে ঘিরে থাকা স্মৃতিকে মাটি চাপা দেয়া খুব কষ্টের হয়। ত
প্রোপজ দুই ভূখন্ডেই বিয়ের অনুমতি পত্র হিসেবে কাজ করে। সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করলে আমাদের দেশে ভালবাসি বলা মানেই বিয়ের অনুমতি দিয়ে দেয়া এই রীতিকে পরিবর্তনের সময় এসে গেছে। সবার আগে একে অন্যকে বোঝা উচিৎ। সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। তবেই আমাদের দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনগুলো অনেকাংশে দূর হতে পারে।
একটা মেয়েকে প্রপোজ করে বা একটা ছেলেকে প্রপোজ করে সারাজীবনের জন্যে সন্ধি পত্রে আবদ্ধ করার অভিসন্ধির অর্থ এটা হয় যেন বাকি জীবন তোমার সাথে কাটাতে চাই এবং সিদ্ধান্তটায় আমি সবদিক থেকে প্রস্তুত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩৪
দর্পণ বলেছেন: আহা
কত প্রেম ঝরে যায়
ভালোবাসা পথ হারায়