নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লাল রং এর চিন্তা ভাবনা

ছেলে ভাল ..

পলাশের লাল রঙ

ছেলে ভাল ....

পলাশের লাল রঙ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাইন্স নাকি কমার্স?

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪১

আমার JSC পরীক্ষার ফলাফল মানে ক্লাশ এইটের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল কি হয়েছিল মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে ভাল বলতে যা বুঝায় ফলাফল তা ছিল না। আমার কাছে গুরুত্বও ছিল না তেমন। পাস হয়েছে আর কি লাগে? আমার আর কিছু লাগে নি। বৃত্তি পরীক্ষা দেই নি কোথায় যেন ঘুরতে যাবার কারণে! পড়াশোনাটা কখনই সিরিয়াসলি নিতে পারিনি এমনকি এখনও না। যাই হোক এসব বলে পড়াশোনায় নিরুৎসাহিত না করে যা বলার জন্য লেখাটা লিখছি সেটা বলি।



ক্লাশ এইট পাশ করে যাবার পর ক্লাশ নাইন নামক ক্লাশে উঠি। রঙিন ঝকঝকে নতুন বিল্ডিংয়ে ক্লাশ শুরু হয় সম্ভবত। নতুন ক্লাশে উঠে আবিষ্কার করলাম আমার ফ্রেন্ডরা আমরা যারা এক সাথে আড্ডা মারতাম তাদের কেউ কেউ আলাদা হয়ে কমার্সে চলে গেছে। কেমন যেন খটকা লাগল! কমার্স! আলাদা একটা গ্রুপ, তাদের পড়ার বিষয় আলাদা ! তারা সাইন্স নিল না তার কারণ তারা কমার্স ভালবাসে সে জন্য নয়। তারা কমার্স বিভাগে গেল কারণ তাদের গ্রেড পয়েন্ট খারাপ, কেউ ভবিষ্যতে অল্প পড়ে ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার লোভে, কেউ হয়ত সাইন্স পড়ার ভয়ে।

আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম। কোথায় যাবো!? সাইন্স নাকি কমার্স?

আমার এমন কেউ ছিল না যে সে সময় তার কাছে গিয়ে বলে কোন পথে পা বাড়ানো উচিৎ তা জিজ্ঞেস করে একটু বুদ্ধি নেই। জাফর ইকবাল স্যারের "একটু খানি বিজ্ঞান", "আরো একটু খানি বিজ্ঞান", "কোয়ান্টাম মেকানিকস ", "থিউরি অফ রিলেটিভিটি " আর কত বিজ্ঞানের মজার মজার বই পড়ি সেই সময়। বিজ্ঞান কতটা মজার, কতটা সৃজনশীলতার, কতটা উত্তেজনার সব নিজের মাঝে অনুভব করি তখন। এত মজার, এত এত ভাল একটা সুযোগ বাদ দিয়ে কমার্সের কথা ভাবার সময়ই পেলাম না শেষে। স্বপ্ন দেখলাম বড় হয়ে বিজ্ঞানী হব, টমাস আলভা এডিশনের মত একটার পর একটা আবিষ্কার করে যাবো, আর্কিমিদিসের মত আবিষ্কারের নেশায় পাগল হব।

তখন যে আমাকে জিজ্ঞেস করত বড় হয়ে কি হবে? আমি সোজা বলতাম বিজ্ঞানী হব। কোচিংএ স্যার জিজ্ঞেস করল কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক? বলে দিলাম সিলেটের শাহজালালে ভর্তি হব। ক্লাশের অন্যান্য ছেলেরা যারা বুয়েট, মেডিকেল কলেজ বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেছিল তারা সহ স্যার আমার দিকে অবাক হয়ে চাইল। বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসার জোর তাদের এই অবাক হওয়ার লজ্জা বা পাগলামিকে গায়ে লাগতে দেয় নি। আমার মনে আছে পড়া না পারলেও বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন বিষয় গুলো নিয়ে স্যারের সাথে তর্ক করে ক্লাশের টাইম কমিয়ে দিতাম। কোচিং এ আমার নাম এক সময় বিজ্ঞানী হয়ে গেল।

এই ছিল বিজ্ঞান সাবজেক্ট নেয়ার পর ক্লাশ নাইনে আমার অবস্থা। কিন্তু অবস্থা চেন্জ হতে সময় লাগল না। দিন যেতে যেতে এক সময় বুঝতে পারি ক্লাশের সবারই প্রায় রসায়ন বইয়ের সব বিষয় মুখস্ত, অথচ আমি মুখস্থ তো দূরের কথা বুঝতেও পারি না লেখক কি বলতে চাইছে।

আস্তে আস্তে টের পাওয়া শুরু করলাম সাইন্স কেন অনেকে নিতে চায় না। কারণ তা দূর্বোধ্য সাধারণ একজনের কাছে। এবং উপযুক্ত শিক্ষক ছাড়া আর কেউ নেই তা বোঝাতে সক্ষম। আর পড়াটুকু পরীক্ষায় কমন পাওয়ার পড়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখে প্রায় সবাই।
পড়া ফাঁকি দেয়া, না বোঝা, আগ্রহ হারিয়ে ফেলা, স্যারদের অবহেলা সব দিক এক হয়ে একসময় বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসাটাকে খুন করে ফেলল প্রায়। বিজ্ঞানের বিষয় গুলোই আতঙ্কে পরিণত হল। তা ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ল পুরো ভেতরটার মাঝে।

রসায়ন এখন আমি বুঝি না, পদার্থে বারবার হোচট খাই, জীব বিজ্ঞান মুখস্ত করতে একফোটাও ভাল লাগে না। তাহলে কি ধরে নেব বিজ্ঞান বিভাগে আসাটা আমার ভুল স্বীদ্ধান্ত ছিল?কখনও মনে হয় হ্যা, কখনও মনে হয় না।

বিজ্ঞানের মজাটা আমাদের সর্বাধিক পঠিত ক্লাশের বিজ্ঞান বই গুলোতেই যদি না থাকে তাহলে সেই সব বইয়ের ক্লাশেরবই হবার কোন অধিকার নেই।
আমি চাই না আমার মত আর একটি ছেলে/ মেয়ে তাদের পছন্দের বিষয় বেছে নিয়ে পরে বিভ্রান্ত হোক। জানি না এর সমাধার কি। না হলে আমিই এক মাত্র সমস্যা যুক্ত ছেলে এই সমাজের, বাকিরা সবাই ভালই আছে। সবাই ভাল থাক এটাই চাই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:২৫

Shahjahan Ali বলেছেন: সিস্টেমটাকে যদি সমস্যাযুক্ত মনে হয় তাহলে সিস্টেমের শীর্ষে পৌঁছাতে হবে এটাকে চেঞ্জ করার জন্য। হাল ছেড়ে দিয়েন না, লেগে থাকুন। ভাল কিছুই হবে।

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট টি মন দিয়ে পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.