নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী

সাধারণত গল্প লেখি, কবিতা আর তেমন মনে আসে না। এক কথায় গল্প নিয়ে আমার বসবাস। নিজের মত জোরালোভাবে প্রকাশের চেষ্টা করি। দেশকে ভালোবাসি, প্রেমকে শ্রদ্ধা করি।

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাবাশ ব্যাটা! চালিয়ে যা!

২৩ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৯

ফরমালিন দূরীকরণে নিয়ে এখন চলছে নরম গরম আলোচনা সমালোচনা। নির্বাচনের মাঠের মত দেশ এখন কাঁপছে ফরমালিন জ্বরে। বিশ্বকাপের জন্য ফরমালিন ইস্যুটা অতটা ভালোভাবে দাগ কাটতে পারছে না তরুণদের মনে। তবু কোন তরুণ কবি হয়তো তার ফেচবুকে একটি পোস্ট দিয়ে দিয়েছে, 'ফলের মত কিছু কবিও ফরমালিনযুক্ত।'



তবে ফরমালিন ইস্যুতে আমার মত বরাবর একরকম। যেদিন থেকে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে ঠিক সেদিন থেকে আমি এই অভিযানের বিপক্ষে। দয়া করে কেউ আমাকে জুতা দিয়ে ধোলাই করবেন না। কেননা এ মতটি একান্ত আমার এবং এর পক্ষে আমার নিজস্ব কিছু বাস্তবসম্মত যুক্তি আছে।







আমার মতে, যে প্রক্রিয়ায় ফরমালিন দূরীকরণের বৃথা চেষ্টা চলছে তা একদম বাস্তবসম্মত নয়। বরং এক ধরনের আই ওয়াশও বলতে পারেন। আর এই প্রক্রিয়ায় পথে বসবে কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কিছু মাঝারী ব্যবসায়ী আর সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষক। এরা সবাই সাধারণ মানুষ। এই সাধারণ মানুষদেরকে এক প্রকার প্রশাসনিক গ্যাঁড়াকলে ফেলা হয়েছে।



ভেবে দেখুন, বাংলাদেশের কতজন এজেন্টদের কাছ থেকে ফরমালিন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এদেরকে কি প্রশাসন চেনে না? উত্তর হচ্ছে ঠিকই চেনে এবং ভালোভাবে। কারণ প্রশাসন তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ হিসেবে পায়।



হয়তো সেজন্য এক ছটাক ফরমালিন আজো আটক হলো না। তারা বড় লাট, তাই তাদের কোটি কোটি টাকার ফরমালিন আটক করা যাবে না। তার চেয়ে যারা দরিদ্র তাদের উপর ট্রাকের চাকা তুলে দেওয়া সুবিধাজনক। প্রশাসনের এই আচরণ দরিদ্রকে চিরদিন ভোগায়।



তবে রহিম শেখেরও পাওয়ার আছে। তাই আজ ক্ষুদ্রব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নেমেছে। এতে করে আবার নানান জনের নানান কথা, কেন তারা আন্দোলনে নামবে? তারা তো ভেজাল মেশায়, তারা তো আমাদের মেরে ফেলছে।



আমি বলি, গাছকে তাজা করতে মাথায় তাপ দিলে গাছ মরে যায়। দিতে হয় গাছের গোড়ায় জল। কালকে থেকে যদি বলা হয় কীটনাশক যুক্ত সবজি ঢাকায় আসবে না। তাহলে তার পরদিন থেকে ঢাকা হবে সবজি শুন্য। কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা নামবে আন্দোলনে।



এসব চাপ ও তাপ যেয়ে পড়বে আমাদের সোনার কৃষকদের উপর। কতজন আমচাষী ফরমালিন ইস্যুর কারণে বড় ধরনের লোকসানে আছে তার খোঁজ কি কেউ নিয়েছেন?



যে কৃষকরা বছরের পর বছর আমাদের খাদ্যের যোগান দিয়ে আসছে তাদের নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই কারো।

সবার কথা যেন এরকম, 'মরছে মরুক!'

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ক্ষতিতে তারা আন্দোলনে নামতে পারে। কিন্তু আমাদের কৃষকদের যেন বধির করে রেখেছে সারাদেশবাসী। তাদেরকে বোকা পেয়ে তাদের নিয়ে নানান তামাশায় মিডিয়া।



মিডিয়া কৃষকের কাছে গিয়ে দেখাচ্ছে, আহা! তারা কত কালপিট! দিন-রাত শুধু কীটনাশক বা ফরমালিন স্প্রে করে।



তবে কখনো কি আমরা কোনদিন ভেবেছি, কৃষি-নির্ভর এই দেশে কৃষকদের শিক্ষিত করার দরকার। তাদের কৃষিশিক্ষা প্রদানের জন্য সরকারকে চিৎকার করে একটিবারও কি বলেছি আমরা! আমি জানি, আমার কৃষক ভাইয়েরা অত কিছু বোঝে না। তাই বলে কি তাদের উৎপাদিত খাবার খাওয়া শিক্ষিত জানোয়ার আমরা!



খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, ফরমালিন ইস্যুতে যারা ফল ঢাকায় আনে তারা বলেছে, তারা বিকল্প পদ্ধতি চায়। তবে আফসোস তাদের বিকল্প পদ্ধতি কেউ দেখিয়ে দেবে না, শুধু ঘৃণাই করে যাবে। তাদের মুখে থুতু দেবে।



অবস্থা এরকম যে, আমাদের সোনার কৃষকদের মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ না দিতে গিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা আরাম কেদারায় দোল খাবে, আর তারা ভুল করলেই সব দোষ তাদের। এটা সবাই মেনে নিতে পারলেও আমি পারব না।



আমার বিশ্বাস আমাদের কৃষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিলে তারা উৎপাদনকালে ফসলে কীটনাশক ব্যবহারবিধি মেনে চলবে। আর প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ সম্পর্কে কৃষক-ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত জ্ঞান দিলে অধিকাংশই তা মেনে চলবে। আবার মনে রাখতে হবে, এদেশে এক কেজি আম, এক ছড়ি কলা অথবা এক কেজি সবজি উৎপাদন হয় না। এদেশে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আম কিংবা সবজি কিভাবে সংরক্ষন করে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো যায়, তার পদ্ধতি আবিষ্কার করা কৃষক কিংবা ব্যবসায়ীদের কাজ নয়!তবে পদ্ধতি না বাতলে দিয়ে হুটহাট কৃষক-ব্যবসায়ীদের প্রতি অনাচার করা চলবে না।



আমার এক কথা, আমাদের কৃষকদের উপর প্রভাব পড়ে এমন কোন আইন তা যদি ফরমালিন বিষয়ক নীতিও হয়, তাহলে আর চুপ থাকবো না। উপদেশ হলো- কৃষকদের প্রশিক্ষিত করুন। আইন করে শুধু পুলিশের পুলিশের পকেট ভারী হবে। তার চেয়ে বরং চলুন শুরু করি আরেক আন্দোলন, 'কৃষকদের কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত করার আন্দোলন।'



যে আন্দোলন দেখে আমাদের কৃষকেরা বলবে, 'সাবাশ ব্যাটা! চালিয়ে যা!'



প্রশিক্ষিত কৃষক ছাড়া আমরা কোনদিনই কীটনাশক ও ফরমালিনমুক্ত খাবার খাওয়ার আশা করতে পারি না। তাই আমাদের প্রয়োজনে, আজ অথবা কাল, আমাদের একাজে এগিয়ে আসতেই হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫১

পাগলামৃদুল বলেছেন: আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত।

২৩ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী বলেছেন: ধন্যবাদ বস! সামু ব্লগে আপনিই প্রথম আমাকে টোকা দিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.