![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণত গল্প লেখি, কবিতা আর তেমন মনে আসে না। এক কথায় গল্প নিয়ে আমার বসবাস। নিজের মত জোরালোভাবে প্রকাশের চেষ্টা করি। দেশকে ভালোবাসি, প্রেমকে শ্রদ্ধা করি।
গালিব অতি সাধারণ ছেলে, ঢাকাতে এক পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ে। রুম থেকে বের হবার সময় গায়ে বডি স্প্রে না দিয়ে গালিব মাথায় আচ্ছা মত খাঁটি সরিষার তেল মর্দন করে। জামার উপরের বোতামটা এটে নকিয়া ১১০০ মডেলের ফোন হাতে নিয়ে বের হয় গালিব, কাঁধে থাকে একটা কবিয়ালি ব্যাগ। বন্ধুরা তাকে ‘আবুল’ বলে সম্বোধন করে।
যেখানে বন্ধুরা এন্ড্রয়েড ফোন নিয়ে ফেচবুকিং নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তখন গালিব তার ১১০০ মডেলের নকিয়াটি ঝাঁকিয়ে আলো ঠিক করে সময় দেখে। মাঝে মাঝেই তাকে ফোনটা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। কথা বলতে বলতে হুট করে বন্ধ হয়ে যায় তার ফোন। তখন ফোনটাকে জোরে একটা আছাড় দেয় গালিব। এই আছাড়েই তার ফোনের সার্ভিসিং হয়ে যায়। ফোন সার্ভিসিং-এর এই আজব পন্থা গালিবের একান্ত নিজস্ব।
সেদিন ক্যাম্পাসে যাবার পর তার বন্ধু ইমন তাকে ডেকে বলে, ‘এই আবুল, এদিক আয়। দেখ দেখ ঐ মেয়েটা কত সুন্দুর!’
গালিব জানে এখন তাকে নিয়ে স্পস্ট তামাশা হবে। ইমনের কথায় গালিব মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। গালিব মনে করে, মেয়েদের দিকে এক পলকের বেশী তাকালে পাপ হয়। তবে এই একপলকেই মেয়েটির সৌন্দর্য দর্শন তার শেষ, আসলেই দেখার মত রমণী সেই মেয়েটি।
আরেক বন্ধু শরিফ বলে, ‘তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না রে। দেখ আমি কিভাবে মেয়েটাকে ইমপ্রেস করি।’
এই বলে শরিফ গেল সেই মেয়ের দিকে। কিছুক্ষণ বুক ফুলিয়ে মেয়েটির চারপাশ ঘুরে শেষে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ফিরে আসলো। মেয়েটিকে কিছু বলার সাহস হয় না শরিফের। ফিরে এসে বলে, ‘ইমন রে, বড় আপু মনে হয়!’
ইমন বলে, ‘তুই যে কত পারিস আমার জানা আছে। এরকম ডজন ডজন মেয়ে আমার পকেটে থাকে বুঝলি!’
এমন সময় ইমনের ফোনে একটা ফোন আসে। ইমন তার এন্ড্র্য়েড ফোনটা পকেট থেকে বের করে। ওপাশ থেকে কিছু বলার আগেই ইমন বলে, ‘ময়না পাখি, তুমি কেমন আছো?’
তার একটু পর রাগত কণ্ঠে ইমন বলে, ‘কি কইলা তুমি? এই কইলাম, আর কখনো ফোন দিবা না তুমি।’
এসব কাণ্ড কারখানা দেখে গালিব মুচকি হাসে। ইমন প্রথমে ইতস্ততঃ হয়, পরে নিজেকে স্বাভাবিক করে তাচ্ছিল্য স্বরে বলে, ‘কি বুঝলি রে আবুল? এটা তো কেবল একটা গেল।’
গালিব তার নকিয়া ১১০০ ফোনটা বের করে দু’চার ঝাঁকি দিয়ে আলো এনে সময় দেখে বলে, ‘চল, ক্লাসের সময় হয়েছে।’
ক্লাসে প্রথম সারির এক কোনায় গালিবের অবস্থান। ক্লাস রুমের কিংবা শিক্ষকের পরিবর্তন হলেও তার অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয় না।
ক্লাস রুমে নাম প্রেজেন্টের সময় প্রতিদিন গালিবকে পড়তে হয় বিপদে। অন্যরা যখন হর হামেশে ‘ইয়েস স্যার’ কিংবা ‘প্রেজেন্ট স্যার’ বলে, গালিব তখন বলে, ‘উপস্থিত’। অনেক কষ্ট করেও গত তিন বছরে নাম প্রেজেন্টের সময় গালিব ‘ইয়েস স্যার’ কিংবা ‘প্রেজেন্ট স্যার’ আনতে পারে নি। এই দুইটা শব্দ যেন তার জম। রুমে আয়নার সামনে ফার্স্ট ইয়ারে কত প্র্যাকটিস করেছে গালিব, তবে স্যার নাম প্রেজেন্টের সময় যেই বলেছে, ‘একুশ!’ অথবা ‘টোয়েন্টি ওয়ান’, গালিবের মুখ থেকে অটোমেটিক বের হয়ে গেছে, ‘উপস্থিত!’
ক্লাসের কোন মেয়ে গালিবের দিকে ফিরে তাকায় না। হয়তো সে দেখতে কালসিটে কিংবা তার হাতে নকিয়া ১১০০ থাকে বলে।
এসকল নানাবিধ কারণে আজকাল গালিবের নিজেরও ইচ্ছে হয় একটা প্রেম করে বন্ধুদের দেখিয়ে দিতে। তবে যখনই সে তার কালসিটে মুখটা আয়নাতে দেখে তখনি তার মন খারাপ হয়ে যায়। তার মনে প্রশ্ন জাগে, এই কালসিটে ছেলের সাথে প্রেম করবে কে?
তার রুমের আর সবাই প্রেম করে, রাতের পর রাত জেগে ফোনে খুনসুটি করে। তবে সে যে বড্ড একা। বাবা-মাকে হারানো একটি ছেলে কত কষ্ট করে এত পর্যন্ত এসেছে তার কোন ব্যাখ্যা নেই। এতিমখানা থেকে ভার্সিটিতে আসতে কারো জীবনে কত সংগ্রাম থাকে তা শুধু যার জীবন সেই বোঝে। তাই বলে কি তার সাধ-আহ্লাদ থাকবে না?
তাই সহজ-সরল গালিব একদিন ঠিক করে বসে যে করেই হোক সে প্রেম করবেই।
[চলবে...............]
২৬ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:২৫
মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী বলেছেন:
২| ২৭ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:০২
এম. এ. হায়দার বলেছেন: খাইছে... যে করেই হোক প্রেম করবেই! ছেলে বলে কি!!
দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় আছি...
৩| ২৭ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫
আহসানের ব্লগ বলেছেন: +
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
আপেক্ষিক বলেছেন: হাহা। নিজের নামে প্রেম!!!! প্রথমে ভাবছিলাম মির্জা গালিবের গজলের বই থেকে নেওয়া পরে দেখি অন্য ব্যাপার!!!