নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী

সাধারণত গল্প লেখি, কবিতা আর তেমন মনে আসে না। এক কথায় গল্প নিয়ে আমার বসবাস। নিজের মত জোরালোভাবে প্রকাশের চেষ্টা করি। দেশকে ভালোবাসি, প্রেমকে শ্রদ্ধা করি।

মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ রসায়নবিদের প্রেম [পর্ব-৪]

০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৬:৫৯

আগের পর্ব--->>



যুদ্ধক্ষেত্রে রসায়নবিদের পারদর্শিতা এবং রাজকুমারীর অনবরত শোক এই দুটি বিষয় লক্ষ করে সভাষদদের কেউ কেউ বলতে লাগল, এবার আবার কীসের বাঁধা - রসায়নবিদ আর রাজকুমারীর সম্বন্ধ সাধায়।

রাজাও বুঝতে পারল, রসায়নবিদ তার অগাধ জ্ঞান দিয়ে ঠিকই রাজ্য চালাতে পারবে। তবে বাঁধা যে একটা আছে এটাও বুঝতে পারলেন তিনি। রসায়নবিদের প্রেমই সেই বাঁধা। রাজপ্রাসাদের সবাই বুঝতে পারল রাজার সম্মান রেখেই রসায়নবিদের প্রেমে ভাঙন ধরাতে হবে। রসায়নবিদের বন্ধু-বান্ধব থেকে শুরু করে রাজপ্রাসাদের সবাই রসায়নবিদের প্রেমের বিপরীতে গেল এবার। একে একে সবাই গেল রসায়নবিদকে বোঝাতে।



কেউ বলে, ‘তোর মত এই সুশ্রী চেহারার সাথে মানায় না আনন্দাকে।’



‘বাবা, দেখে আসছি ছোটবেলা থেকে। এরকম প্রেম হবে না সফল।’



‘আনন্দার ভিতর কি পেলেন, সে নয় সুন্দর নয় গুণবতী!’



‘তোমার মাথাটা একেবারেই গেছে দেখছি।’



এই সময় রসায়নবিদ প্রথমবার জানতে পারল, রাজকুমারী তাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। এ সংবাদেও রসায়নবিদের প্রেম টলে না। কোনভাবেই রসায়নবিদকে বোঝানো যায় না। তবু চেষ্টা চলতেই থাকে।



যত দিন যায় রাজকুমারীর চোখের জলই শুধু বাড়তে থাকে। রাজকুমারীর চোখের জল দেখে রাতের আকাশের তারারা খসে পড়ে, জোনাকিরা আলো নিভিয়ে শোক পালন করে।



কিন্তু নিয়তিতে যা থাকে তাই ঘটে, তাই সবকিছু একই রকম রইল না। একদিন সকালে রসায়নবিদ যখন গবেষণাগার থেকে বের হল- বাগানের সব ফোটা ফুল বুজে গেল, আশে-পাশের পাখিরা উড়ে গেল, সূর্য তার মুখ লুকালো আর সবশেষে যে তাকে ছেড়ে গেল সে হল আনন্দা। যে তাকে এতদিন ভালবাসত সেও চলে গেল।



আসল ঘটনা হল- নানা জনে তার আর আনন্দার রূপের পার্থক্য নিয়ে দিনের পর দিন কটাক্ষ করে চলছিল, যা রসায়নবিদকে অস্বস্তিতে ভোগাত। তাই সে গবেষণা শুরু করে একটি রাসায়নিক পদার্থ আবিষ্কারের জন্য। যা দিয়ে সে চিরস্থায়ীভাবে কৃষ্ণবর্ণ ধারন করতে পারে। সে আনন্দাকে সুন্দর করার জন্যও গবেষণা করতে পারত, কিন্তু সে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিল। সে রাজপ্রাসাদের শান্তির কথাও চিন্তা করত। সে ভাবল, সে যদি কৃষ্ণবর্ণ হয় তবে রাজকুমারীও তাকে পছন্দ করবে না।



সেদিন সকালে রসায়নবিদ বের হয়েছিল তার আবিষ্কৃত সেই রাসায়নিক তরল দিয়ে স্নান করে, যা তার ত্বকের ক্ষতি না করেই তাকে বানিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণবর্ণ। আর এতেই যত বিড়ম্বনা। কোন বিড়ম্বনা তাকে বিচলিত করত না, যদি না আনন্দা তাকে ছেড়ে যেত। আনন্দা তাকে বিদায় বেলায় বলেছে, ‘যে তোমাকে আমি ভালোবেসেছি, এ তো সেই তুমি নও। তবে কিভাবে তোমাকে ভালোবাসি?’



আসলে আনন্দা তাকে ভালবাসলেও তার প্রেম ছিল সুশ্রী রসায়নবিদের প্রতি, এই কৃষ্ণবর্ণ রসায়নবিদের প্রতি নয়।



রাজা এ সংবাদে স্তম্ভিত হয়ে যায়। রসায়নবিদের বোকামীর জন্য তাকে কেউ কেউ পাগলও বলতে লাগল। আর প্রেমিক-প্রেমিকেরা একে মহান প্রেমিকের করুণ পরিণতি হিসেবেই দেখতে লাগল। আনন্দা এক ছলনাময়ী সুযোগ সন্ধানী নারীর নাম হয়ে গেল।



[চলবে...]



শেষ পর্ব--->>

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.