নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুলো পড়া চিঠি

স্বপ্ন আলো আঁধার

কম্পাঙ্ক

এপাড়ে আঁধার ওপাড়ে আলোর মৌনতা..।।।

কম্পাঙ্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈশাখের অবদমিত অশ্রুকণা......

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

এসো পান্তা ইলিশ খাই

একটু দাঁড়াও পান্তা ইলিশ যে খাবে তা ইলিশের দাম জানো তো!

কই না তো কত আর হবে?

হ্যাঁ তা ঠিক ই বলেছ কতই বা আর হবে এই জোড়া ইলিশ বিশ কি পঁচিশ হাজার...!!!!

সত্যিই সেলুকাস বড় বিচিত্র এই জাতি।আমরা বাংলা ভাষার দাবি তে আন্দোলন ও করতে জানি আবার পহেলা বৈশাখে মাস্তি ও করতে জানি!মহা সমারোহে বিদেশি ভাষার বানান প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে রাজি কিন্তু আই দুঃখিনী বাংলা মায়ের ভাষার বানানের যে কি দশা তার কথা কি ভেবেছি কখনও??? আমি অবশ্যই বিদেশি ভাষার বানান প্রতিযোগিতার বিরোধী নই এটা অতি অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও এই অনুষ্ঠানটি দেখি আমার ভালো লাগে কিন্তু আমি ব্যথিত এই কারণে যে কেন এমন একটি অনুষ্ঠান বাংলা বানানকে কেন্দ্র করে তৈরি হল না।

কোমল-মতি শিশুদের ডরেমন দেখা তো আমরা অতি নির্বিঘ্নে বন্ধ করেছি কিন্তু তাতে হিন্দি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেমে গেছে কি??? ওরা ছোট তাই তাদের কার্টুন বন্ধ করে দেয়া যায় কিন্তু যারা বড় তাদের অনুষ্ঠান তো বন্ধ করা হচ্ছে না। প্রতিটি উৎসবে আমরা তাদের অনুকরণে ব্যস্ত, কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয় ওই সব সস্তা রুচিহীন পোশাক আর সাজসজ্জায়। তাতে কি আমরা তো পহেলা বৈশাখ পালন করছি আলবৎ করছি, হোক না ইলিশ মাছের দাম বেশি তাতে কি, তাঁতের কাপড় পরছি লাল পাড় সাদা শাড়ি পরছি হোক না সে এক দিনের জন্য! এই তো আমাদের যথার্থ বাঙ্গালিয়ানা!!!

আমরা তাদের বাহারি পোশাকের টানে আন্দোলিত তাদের সাজসজ্জা বড়ই সুমধুর কিন্তু আমরা কি জানি যে আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্য যে নকশিকাঁথা অথবা জামদানি শাড়ি সেই সব পণ্যর সর্ব-সত্ত্ব আজ প্রায় তাদের দখলে চলে গেছে বললেই চলে! এই তথ্য আমরা কজন জানি!

আমরা হোলি খেলার কথা যতটা জানি একবার ও কি সেভাবে জানতে চেষ্টা করেছি আমাদের বৈশাখী নানা আচার-অনুষ্ঠানের খবর।নানাভাবেই তো বৈশাখকে যে কত মোহনীয় সুনির্মল রীতিতে বরণ করে আমাদের উপজাতি বাঙালিরা যেমন বৈশাবি কিংবা বিজু উৎসব তার রীতি সম্পর্কে আমরা জানতে কতটুকু ইচ্ছুক? আচ্ছা পঞ্চ বাঞ্জনের খবর কয়জন রাখি? কিন্তু পাশ্চাত্য খাবারের Kfc, Pizza Hut, Dominos ,McDonald’s তো আমাদেরই জন্য! আর হবেই বা না কেন ওইসব খাবারে তো আর বিদেশি গন্ধ নেই আছে পোড়ামাটির টান! হয়তো আজ তা আর কাছে টানেনা!

যারা বিদেশি ওইসব অনুষ্ঠানের দর্শক তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কি আছে ওইসব অনুষ্ঠানে যা আপনাদের মোহিত করে রাখে তাদের উত্তর ছিল স্বভাবতই জাঁকজমক পূর্ণ পোশাক বাহারি ঢং এর অন্দর সজ্জা কিংবা পরিশীলিত যুবার সৌন্দর্য। একবারও কিন্তু কেউ ভুলেও অভিনয় কিংবা কাহিনীর কথা উচ্চারণ করেন নি কারণ তারাও তো জানেন দুর্বলতা তা ঠিক কোথায়! যেই বাংলা সাহিত্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কিংবা বিদ্রোহী কবি নজরুলের অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ সেই বাঙালীর কি আর কিছু লাগে??? বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডার আরো বহু প্রতিভাবান লেখক এবং সাহিত্যিকের ক্ষুরধার লেখনীতে সমৃদ্ধ তাদের নাম উল্লেখ করছি না তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

আমার শুধু জানতে ইচ্ছে হয় তারা কেন আমাদের বিভিন্ন বাংলা চ্যানেল গুলোর অনুষ্ঠান নাটক দেখেন না, মানের বিচারে আমরা অনেক এগিয়ে তারা কেন একটিবার পরখ করে দেখেন না! তারা তো এই প্রবাদ টি নিশ্চয়ই জানেন যে শুধু চক চক করলেই সোনা হয় না , কিন্তু তারপর ও কেন?

কই তারা তো আমাদের টিভি চ্যানেল গুলো তাদের রাষ্ট্রে প্রচারের অনুমতি দেয় নি তবে আমরা কেন দেবো???

আমি বলছি না যে তাদের সব অনুষ্ঠান বাজে অথবা তাদের সংস্কৃতি কৃষ্টি কালচার সবই নষ্ট, কিন্তু যেখানে আমরা তাদের চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ আমার প্রশ্ন আমরা কেন তাদের অন্ধ অনুকরণ করব আমরা তো তাদের তুলনায় কম ধনি নই!

বৈশাখের অশ্রুমালা যেন নতুন চেতনার উন্মেষ ঘটায় আমার ক্ষোভ আজ তাই আমার শক্তি হোক। আমরা বুঝতে চেষ্টা করি কিংবা ভাবি কিংবা পরখ করি, আমাদের আচার অনুষ্ঠান কে আরও কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করি তবেই তো হবে বাঙ্গালিয়ানা। কারণ যে জাতি নিজের ভীত সম্পর্কে পরিপূর্ণ রূপে জ্ঞাত সেই জাতিই পারে তাদের উত্তরসূরি দের জন্য সমৃদ্ধ অবস্থান প্রস্তুত কর তে।

তাই আজ শুধু পান্তা ইলিশের একদিনের বাঙালি হয়ে কাজ নেই আমরা যেন প্রতিদিনই বাঙালি হয়েই বাঁচি, বাংলার এই উর্বর মাটিকে আরও পবিত্র করি এই আজ কামনা।

নতুন দিনের শুনছো ডাক

আনন্দে যাক এই বৈশাখ ...

নতুন বছর কাটুক ভালো

আসুক নতুন দিনে নতুন আলো।

শুভ নববর্ষ বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.