নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতির গল্প বলার ব্লগ ...

জীবন চলছে। চলতেই হবে। এই চলার পথের চেনা-অল্পচেনা অথবা অচেনা মানুষগুলোর গল্প এভাবেই বলে যাবো প্রতিনিয়ত ।

মুগ্ধ মানুষ

জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে মুগ্ধতার সাথে অনুভব করতে চাই। আর জীবনের পথে চলতে চলতেই আমার আশে-পাশের চেনা-অল্পচেনা আর অচেনা মানুষগুলোর গল্প বলে যেতে চাই।

মুগ্ধ মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প ( হতে গিয়েও হলো না )

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৯

একবার স্কুলের একটা কাজে আম্মাকে রাজশাহী যেতে হলো। সচরাচর সবাই একসাথে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয় না বলে সেবার আব্বা আর আমিও গেলাম তার সাথে। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি, মেডিক্যাল কলেজ, রুয়েটে স্কুলজীবনের বেশ কিছু বন্ধু-বান্ধব পড়াশোনা করছে। আব্বা আর আম্মাকে শিক্ষা অফিসে রেখে বেরিয়ে পড়লাম ওদের সাথে দেখা করতে। রাজশাহীতে তেমন একটা যাওয়া পড়েনি দেখে এলাকার সাম্প্রতিক পরিবর্তন তেমন বুঝতে পারিনি। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি যাওয়ার পথে বেশ আধুনিক একটা বিলডিং চোখে পড়লো। দূর থেকে বিল্ডিংটার মেইন গেটে একজনকে দেখে খুব চেনা মনে হচ্ছিল। কাছে আসতেই দেখি স্কুলের দুই ব্যাচ সিনিয়র নাফিস ভাই। চিনতে পেরেই নাফিস ভাই ডাক দিলেন, " আরে! পুষ্পা না!! "
রিকশাওয়ালাকে থামতে বললাম, ভাড়া মিটিয়ে সেখানেই নেমে পড়লাম।
"চিনতে পেরেছেন!! কত্তদিন পর দেখা!!"
"আরে! চিনতে পারবো না কেন? স্কুলের পিকনিকে রঙ মাখানো নিয়ে যে এক ঝগড়া হয়েছিল, তা কি কখনো ভুলতে পারি?"
ছোটবেলার সেসব ছেলেমানুষি মনে করে দুজনেই হাসলাম খুব।
কথায় কথায় জানলাম নাফিস ভাই প্রাইভেট একটা রিসার্চ ল্যাবে কাজ করছেন কিছুদিন হলো, যার মূল বিল্ডিংটার সামনেই দাঁড়িয়ে আছি আমরা। নাফিস ভাই ওনার অফিসে নিয়ে গেলেন। অফিসে ঢুকতেই তার জরুরী তলব। আমাকে বসতে বলে বেরিয়ে গেলেন।
অনেকক্ষণ বসে থেকে অধৈর্য হয়ে যেই উঠতে যাবো হঠাৎ শুনি গোঙানির আওয়াজ। আওয়াজ অনুসরণ করে দরজার কাছে যেতেই শুনি কে যেন বলছে, "শর্ত ভাঙার শাস্তি পেতে হবে এখন তোমাকে।"
গোঙাতে গোঙাতে অন্য কণ্ঠটি বলে উঠলো, "কিছুতেই না! জেনে-শুনে মানুষের এত বড় ক্ষতি আমি করতে দিব না। একজনের লাভের জন্য এত লাখ শিশুর জীবন বিপন্ন করার চক্রান্ত আমি সফল হতে দিতে পারি না।"
পর্দার আড়াল থেকে এদৃশ্য দেখে আমার শরীর হিম হয়ে এলো। নাফিস ভাইয়ের গলা চেপে ধরে আসে ষন্ডামার্কা এক লোক। গায়ে সাদা এপ্রোন দেখে ধারণা করলাম নাফিস ভাইয়ের কলিগ হবে হয়ত। দরজার কাছে হঠাৎ আওয়াজ হতেই লোক ঘুরে তাকালো। আমাকে দেখেই মুখটা ভীষণরকম বিকৃত করে নাফিস ভাইকে ছেড়ে দিয়ে ছুটে এলো আমার দিকে। আমি নাফিস ভাইয়ের রুমের অন্য দরজা দিয়ে ছুটে বেরিয়ে এলাম। প্রাণপনে ছুটছি। অন্য কোন দিকে তাকানোর সময় নেই। ছুটতে ছুটে দম বেরিয়ে যাবার যোগাড়। তারপরও থামতে পারছি না। কারণ থামলেই নিশ্চিত মৃত্যু। ছুটতে ছুটে রুয়েটের প্রাঙ্গনে পৌঁছুলাম। বন্ধুরা অপেক্ষা করছি। আমাকে এভাবে ছুটতে দকেহে ওরা হতভম্ব। কিন্তু কোনকিছু ব্যাখা করার সুযোগ পেলাম না। পেছনে সেই লোককে ছুটে আসতে দেখে কিছু একটা আন্দাজ করে নিল তারা। আমাকে পালানোর একটা শর্টকাট পথ দেখিয়ে দিল। সেপথ দিয়ে পালানোর সময় শুনি কে যেন নাম ধরে ডাকছে।দকেহি এক কোনায় লুকিয়ে আছে নাফিস ভাই। সে খুব সম্ভবত আমাকে এদিকে আসতে দেখে অন্য কোন শর্টকাট দিয়ে এসে আগেই এখানে পৌছেছিল। কিছুক্ষণ বিপদের চোখের আড়াল হওয়ার দম নেয়ার একটা সুযোগ পাওয়া গেল। সেই অন্ধকার চিপাগলিতে দাঁড়িয়ে নাফি ভাই যা বললেন, সংক্ষেপে তা এমন- অনার্স ফাইনলাল দেয়ার আগেই তার কাছে পার্ট টাইম জবের একটা অফার আসে। কাজটা সেসময় খুব দরকার ছিল, তার আর কিছু না ভেবে তাদের সব শর্তে রাজি হয়ে কাজে যোগ দেন তিনি। শর্তগুলোর একটি ছিল, কি করা হচ্ছে, কেন করা হচ্ছে প্রশ্ন করা যাবে না, উত্তর কোনওভাবে জেনে ফেললেও গবেষনার উদ্দেশ্য বাইরে জানানো যাবে না।
গবেষনার কাজ চলতে লাগলো। প্রথমদিকে তেমন খটকা লাগলেও ধীরে ধীরে নাফিস ভাই কিছু একটা আন্দাজ করছিলেন। কিছুদিন আগে ব্যাপারটা পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যায় তার কাছে। অধিক লাভের জন্য শিল্প-কারখানায় ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি করা এক ধরনের রাসায়নিক তরল ব্যবহার করা হবে শিশুখাদ্যে। এমন একটা অন্যায় মেনে না নেয়ার যত ঝামেলা। আর আমি ঝামেলায় পড়লাম ঘটনার সাক্ষী হয়ে। সংক্ষেপে এটুকু বলেই নাফিস ভাই বললেন, "সময় নেই। পালাও। ওরা আমাকে তো বাঁচতে দেবে না। তোমাকেও ছাড়বে না এখন।" কথাগুলো বলেই নাফিস ভাই অন্ধকার হারিয়ে গেলেন। আমিও ছুটতে লাগলাম অলি-গলি ধরে। এক সময় দেখি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসএর কাছে চলে এসেছি। দূর থেকে দেখি বিপদ চলে এসেছে এখানেও। দিক পরিবর্তন করে আবারও ছুটছি। এভাবে ছুটতে ছুটতে বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত বিল্ডিংএ ঢুকে পড়েছি। দোতলার করিডোর ধরে পালাতে গিয়ে দেখি সে লোক পৌঁছে গেছে এখানেও। করিডোরের শেষ মাথায় একটা সিঁড়ি। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছি। শেষ ধাপে পা ফেলতেই দেখলাম মাত্র এক হাত দূরত্বে দাঁড়ানো সেই জীবন্ত বিপদ।
এখন আমি কোথায় যাব??

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:১৪

একলা চলো রে বলেছেন: একটু এলোমেলো, খাপছাড়া লেগেছে। আশা করি সামনে আরো ভালো লিখবেন।

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩২

হাসান মাহবুব বলেছেন: আরে আপনি! B:-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.